বিয়ের আগে জানতে হবে...

অসহায় কাউকে ভালোবেসে কোটিপতির কন্যার নিদারুণ কষ্টে দিনযাপনের চিত্র নাটক-সিনেমায় হরহামেশাই দেখা যায়। আবার বিত্তবান অনেক পুরুষকেই অভাবগ্রস্ত কাউকে ভালোবসে বিয়ে করতে দেখা যায়। তবে রুপালি পর্দার বাইরে, বাস্তব জীবনে আর্থিক স্বাচ্ছন্দ্যের আবশ্যকতার কথা অস্বীকার করেন না কেউ। বিশেষত বিয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে অর্থের প্রভাব অনস্বীকার্য।
বর্তমান তো বটেই, ভবিষ্যতের সুখ নিশ্চিত করতে অর্থনৈতিক পরিকল্পনার বিকল্প নেই। তাই বিয়ের পরেই স্বামী-স্ত্রীর উচিত অর্থনৈতিক পরিকল্পনাগুলো ঠিক করে নেওয়া। একে ছোট সময়ের লক্ষ্য, মাঝারি সময়ের লক্ষ্য ও বড় সময়ের লক্ষ্য—এমন তিন ভাগে বিভক্ত করে নেওয়াই ভালো।
বাংলায় একটি কথা প্রচলিত আছে— দরজা দিয়ে অভাব এলে, ভালোবাসা জানালা দিয়ে পালায়। কথাটা কতটা খাঁটি, তা নিয়ে অল্প-বিস্তর তর্ক-বিতর্ক থাকতেই পারে। কিন্তু অনেকেই যে এ বাক্যকে মেনে নিয়েছেন, তা বলার অপেক্ষা থাকে না। তাই বিয়ে করার আগে ভবিষ্যৎ জীবন যাতে সুখের হয়, সে ব্যাপারে নিশ্চিত হবে। আসুন দেখে নেওয়া যাক কীভাবে তা সম্ভব।
বিয়ের পর কোনোভাবেই একগুচ্ছ টাকা খরচ করা চলবে না, বরং পরিকল্পনামাফিক নতুন জায়গায় বিনিয়োগ করা উচিত। এতে ভবিষ্যৎ জীবনের নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। তবে এই সিদ্ধান্ত একা নেওয়া কোনোভাবেই ঠিক হবে না। স্বামী-স্ত্রী একসঙ্গে বসে করণীয় ঠিক করতে হবে।
পাশাপাশি খরচ ও আয়ের ব্যাপারে পরিকল্পনা করতে হবে। আয় বুঝে ব্যয় করার প্রবণতা গড়ে তুলতে হবে। ৬০ বছর বয়সের পর সাধারণত মানুষের আয়ের উৎস বন্ধ হয়ে যায়। তাই সেই সময়ের কথা মাথায় রেখে সঞ্চয় করতে হবে।
অর্থনৈতিক পরিকল্পনা সম্পর্কে ‘কোয়ান্ট ক্যাপিটালস’-এর ভাইস প্রেসিডেন্ট বিকাশ পুরি জানান, যুগলদের অবশ্যই একে অপরের অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে জেনে নেওয়া উচিত। মাসিক বেতন, বিনিয়োগের পরিমাণ, জীবনবীমা নিয়েও দুজনের খোলামেলা কথা বলতে হবে। এসব ব্যাপারে অবশ্যই সঙ্গীকে সত্যি বলার পরামর্শ পুরির।
এ ছাড়া আরো একটি গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিয়েছেন বিকাশ পুরি। তিনি জানিয়েছেন, বিবাহিত জীবনে দুজনের মধ্যে বোঝাপড়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সঙ্গীকে জানিয়ে তবেই বিনিয়োগ করা উচিত বলে তিনি মনে করেন। এ ছাড়া টাকা নিয়ে কথা বলার ব্যাপারে ইতস্ততা কাটিয়ে খোলাখুলি পরিকল্পনা করা উচিত বলে জানিয়েছেন তিনি। তিনি বলেছেন, কারো কাছ থেকে টাকা ধার নেওয়ার প্রয়োজন পড়লেও তা অবশ্যই সঙ্গীকে বলা উচিত এবং এ ব্যাপারে আলোচনা করা উচিত।
এ ছাড়া তিনি আরো একটি ব্যাপারে গভীর গুরুত্ব দিয়েছেন। বিয়ের পর দুজনের বোঝাপড়ার ভিত্তিতে একটি ‘জরুরি তহবিল’ গড়ে তুলে সেখানে নিয়মিত অর্থ সঞ্চয় করার পরামর্শ দেন তিনি।

No comments:

Post a Comment