পৃথিবী দ্রুত বদলে যাচ্ছে। সময়ের প্রয়োজনে বদলে যাচ্ছে কর্মক্ষেত্রও। চাকরি নামের সোনার হরিণের পেছনে ছুটে ব্যর্থ হয়ে অনেকেই হয়ে উঠছেন উদ্যোক্তা। তবে কীভাবে উদ্যোক্তা হবেন আর কোন বিষয়টি নিয়ে কাজ শুরু করলে সফল উদ্যোক্তা হওয়া যায় সে বিষয়ে অনেকেরই কোনো ধারণা নেই। অনেকেই মার্কেট বিশ্লেষণ না করে উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখতে গিয়ে পুঁজি হারিয়ে ফেলছেন। কেউবা বড় পুঁজির অভাবে উদ্যোক্তা হতে সাহস পাচ্ছেন না। যারা স্বল্প পুঁজিতে সময়োপযোগী বড় ব্যবসা করতে চান তাদের জন্য আদর্শ কর্মক্ষেত্র হতে পারে দেশ-বিদেশের এয়ার টিকিট বিক্রি করা। মানুষ এখন প্রচুর ভ্রমণ করছে। সহজলভ্য এবং দ্রুত সময়ে পৌঁছে যাওয়া যায় বলে মানুষ এয়ার ট্রিপে যেতে পছন্দ করছেন। আগামী দিনে এ ক্ষেত্রে ব্যাপক সম্ভাবনা বাড়বে। তাই এখনই সময় রাজকীয় এয়ার টিকিট ব্যবসা শুরু করা।
এয়ার টিকিট ব্যবসা কতটা সম্ভাবনাময় :
দিন দিন ভ্রমণপিপাসু মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। বাংলাদেশে বিদেশি পর্যটকের সংখ্যা না বাড়লেও দেশের অভ্যন্তরীণ পর্যটন খাতে এক নীরব বিপ্লব এসেছে। বিভিন্ন দেশের সঙ্গে বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপন হওয়ায় এখন প্রচুর মানুষ বিদেশে ঘুরতে যাচ্ছে। সেইসঙ্গে ব্যবসায়িক কাজে বিদেশে যাওয়াও প্রচুর বেড়েছে। এ চাহিদার কথা মাথায় রেখে দেশে এখন দুই হাজারের বেশি ট্রাভেল এজেন্সি কাজ করছে। আর প্রায় সহস্রাধিক লাইসেন্সপ্রাপ্ত হজ এজেন্সি রয়েছে। বাংলাদেশে প্রতি মাসে ১৬শ’ কোটি টাকার এয়ার টিকিটের ব্যবসা হয়। আগামী দিনে এ সংখ্যা অনেক বেশি বাড়বে। ফলে সামনে প্রচুর ট্র্যাভেল এজেন্সির প্রয়োজন হবে। এখনই সময় আগামীর জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করা
কারা এ ব্যবসায় আসতে পারেন :
আপনি যদি ভ্রমণপ্রিয় হন তাহলে একজন ট্রাভেল এজেন্ট হিসেবে নিজের ক্যারিয়ার গড়ার কথা ভাবতে পারেন। একজন ট্রাভেল এজেন্ট ভ্রমণ বিষয়ে পরামর্শ দেন, ট্রাভেল প্যাকেজ তৈরি করেন, কোথায় কোন সময় বেড়ান যায় ও কেমন খরচ এসব বিষয়ে খোঁজ-খবর রাখেন, রিজার্ভেশন এবং ভিসার ব্যবস্থা করেন। এখন মানুষ অনেক বেড়াতে পছন্দ করেন। আগের তুলনায় পারিবারিক ট্যুর, বন্ধুদের সঙ্গে বেড়ান এমনকি একা ঘুরতে যাওয়া মানুষের সংখ্যা বাড়ছে। এদের সবারই প্রয়োজন পড়ে একজন ট্রাভেল এজেন্টকে। আপনার বুদ্ধিমত্তা এবং শ্রম দিয়ে পেশাটিকে আরও চমকপ্রদ অবস্থায় নিতে পারেন আপনি নিজেই।
এখানে কী ধরনের কাজ করতে হয় :
যে কোনো ধরনের টিকিট ও হোটেল বুকিং, ক্যান্সেল, রিফান্ড করা; টিকিট ইসু্যু সংক্রান্ত যে কোনো ডকুমেন্ট সংরক্ষণ করা; গ্রাহকদের কাছ থেকে সময়মতো অর্থ বুঝে নেয়া; গ্রাহকসেবা নিশ্চিত করা ও গ্রাহকদের সঙ্গে সুসম্পর্ক রাখা; গ্রাহকদের যে কোনো অভিযোগের সুরাহা করা; গ্রাহকদের সময় ও বাজেট অনুযায়ী ট্যুরিস্ট ডেসটিনেশন ও ট্যুর প্যাকেজ সম্বন্ধে ধারণা দেয়া; গ্রাহকদের ভিসা সম্পর্কিত ব্যাপারে সাহায্য করা; এয়ারলাইন্স কোম্পানি ও হোটেলগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক রাখা এবং তাদের বিভিন্ন অফার সম্পর্কে আপটুডেট থাকা; দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক সেলস রিপোর্ট তৈরি করা।
কোথায় শিখবেন, কী শিখবেন :
যারা এ ব্যবসায় আসতে চান তারা ট্রাভেল প্লানিং কোর্স করতে পারেন। এখন বিভিন্ন জায়গায় ট্রাভেল প্ল্যানিং কোর্স চালু আছে। এখানে রিজার্ভেশন সিস্টেম, ট্রাভেলের নিয়মকানুন (দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক), মার্কেটিং এসব বিষয়ে জানতে পারবেন। অনলাইনেও অনেক ট্রেনিং কোর্স পাবেন, যা আপনাকে সহযোগিতা করবে। কিছু প্রোগ্রামে ইন্টার্নশিপের ব্যবস্থাও থাকে। এছাড়া দক্ষ এজেন্সিদের থেকেও নানা পরামর্শ নিতে পারেন। এসব দক্ষতা অর্জনের ফলে আপনার ক্লায়েন্টকে আশ্বস্ত করতে পারবেন যে আপনিই সবচেয়ে ভালো ট্যুর প্ল্যান দিচ্ছেন, সবচেয়ে কম খরচে কিন্তু সবচেয়ে বেশি সুবিধার সঙ্গে।
কেমন বাজেট হওয়া উচিত, কতটা ঝুঁকি আছে :
শুরুর দিকে একটি গোছানো অফিস, ট্রেড লাইসেন্স এবং ইন্টারনেট সংযোগসহ কম্পিউটার প্রয়োজন। এরপর এয়ার টিকিট বিক্রির জন্য অগ্রিম টাকা দিয়ে ব্যালেন্স নিয়ে রাখতে হবে। প্রাথমিক অবস্থায় এক থেকে পাঁচ লাখ টাকার ব্যালেন্স নিয়ে ব্যবসাটা শুরু করা যেতে পারে। এরপর প্রয়োজন বুঝে ব্যালেন্স বাড়ানো যেতে পারে। আর ব্যালেন্স যে কোনো সময় রিফান্ড দিয়ে টাকা ফেরত নেয়ার ব্যবস্থাও রয়েছে। ফলে এই ব্যবসায় কোনো ঝুঁকি নেই।
কেমন লাভ হতে পারে :
লাভের হিসাবটা নির্ভর করছে আপনার দক্ষতার ওপর। বাজেট কম থাকলে একই টাকা মাসে একাধিকবার ব্যবহার করা যেতে পারে। পাঁচ লাখ টাকা মাসে তিনবার ব্যবহার করলেও মাসে একই টাকা দিয়ে ১৫ লাখ টাকার ব্যবসা করা সম্ভব। তবে প্রাথমিক বিনিয়োগ সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারলে শুধু টিকিট বিক্রি করেই মাসে ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা আয় করা সম্ভব। একই টাকা একাধিকবার ব্যবহার করে ছোট টিকিট ব্যবসায়ীরা মাসে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত আয় করে থাকেন। এছাড়া ট্যুর প্যাকেজ, হোটেল বুকিং, ভিসা প্রোসেসিং, হজ-উমরাসহ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাজ করে আরও অনেক বেশি আয় করা সম্ভব।
এয়ার টিকিট ব্যবসার সব সাপোর্ট এক জায়গায় :
এয়ার টিকিট ব্যবসা করার জন্য এয়ারলাইন্সগুলোর সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ থাকলে ভালো। কিন্তু নতুন উদ্যোক্তাদের সেখানে পৌঁছা বেশ কঠিন। এছাড়া নিজস্ব ওয়েবসাইটে এয়ারলাইন্সের এপিআই (এয়ারলাইন্সের টিকিট বিক্রির সিস্টেম নিজের ওয়েবসাইটে থাকার সিস্টেম) বসানোর প্রক্রিয়া সময় ও প্রচুর অর্থসাপেক্ষ ব্যাপার। এসব নানা জটিলতাকে পানির মতো সহজ করে দিয়েছে দেশের শীর্ষ এয়ার টিকিট বিক্রেতা প্রতিষ্ঠান ২৪ টিকিট ডটকম (www.24tkt.com)। এজেন্ট হিসেবে তাদের ওয়েবসাইটে লগইন করলেই সেখানে শুধু লগইন করা এজেন্টের তথ্য দেখা যাবে। একইসঙ্গে এক ওয়েবসাইটেই এটুজেড সাপোর্ট পাওয়া যাবে। আর যাদের বেশি ইনভেস্ট করার সক্ষমতা রয়েছে এবং বড় পরিসরে ব্যবসা করতে চান তারা ২৪ টিকিটের নামেই ব্রাঞ্চ নিতে পারেন।
কোথায় যোগাযোগ করবেন :
এয়ার টিকিট ও ট্র্যাভেল এজেন্সি সম্পর্কিত যে কোনো ধরনের ব্যবসায়িক সহযোগিতার জন্য দেশসেরা টিকিট ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান ২৪ টিকিট ডটকমের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এ জন্য তাদের ওয়েবসাইট www.24tkt.com বা ফেসবুক পেজ www.facebook.com/24tkt বা মেইলে ask-24tkt.com অথবা সরাসরি কথা বলার জন্য ০১৩১৮-২৪৫৭৯০ এই নম্বরে ফোন করতে পারেন। এছাড়া তাদের মহাখালী ডিওএইচএস, যমুনা ফিউচার পার্ক বা সিলেট অফিসেও যোগাযোগ করতে পারেন।
Bd air ticket business idea/ plan
No comments:
Post a Comment