জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম প্রফেসর ড. আবু বকর মুহাম্মদ জাকারিয়া।
জুমাবারের বিশেষ আপনার জিজ্ঞাসার পর্বে মৃত বাবার জন্য চল্লিশা পালন করা যাবে কি না, সে সম্পর্কে জানতে চেয়ে সাভার থেকে টেলিফোন করেছেন শামিমা।
প্রশ্ন : গত ফেব্রুয়ারি মাসের ১২ তারিখে আমার বাবা মারা গেছেন। এখন আমাদের চারদিন বা চল্লিশা পালন করা কি আবশ্যক?
উত্তর : চল্লিশা পালন করা বেদাত, এটা করা যাবে না। চারদিন, চল্লিশা শরিয়ত এগুলো অনুমোদন করে না। রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবদ্দশায় তাঁর কন্যারা মারা গেছেন, কিন্তু তিনি (সা.) এসব কিছু করেননি। রাসুলুল্লাহ (সা.) পৃথিবী থেকে চলে গেছেন, তখন তাঁর সাহাবিরা জীবিত ছিলেন, তাঁর কন্যারা ছিলেন, তাঁরা কেউ এসব করেননি। এর অর্থ হচ্ছে এ জাতীয় কিছু করা যাবে না। তবে কী করা যাবে?
সব থেকে বড় যেটা করতে পারেন, সেটা হচ্ছে সদকাতুল জারিয়া। ধরেন কোথাও মানুষের পানির সমস্যা হচ্ছে, সেখানে আপনি আপনার বাবার উদ্দেশ্যে একটি নলকূপ স্থাপন করতে পারেন। সেখানে যত দিন পানির সরবরাহ চলবে, তত দিন সদকায়ে জারিয়া হতে থাকবে। অনুরূপভাবে কোথাও মসজিদ নির্মাণ করে দিলে সেখানে যত দিন ইবাদত হতে থাকবে তত দিন আপনার বাবার কবরে সওয়াব পৌঁছাতে থাকবে। আবার যদি সম্পূর্ণ কাজ করে দেওয়ার সামর্থ্য না থাকে তাহলে যতটুকু করে দেওয়ার সামর্থ্য আছে, ততটুকু করে দেবেন।
আর যদি লোক খাওয়াতে চান, সেটাও পারবেন, তবে সুনির্দিষ্ট নিয়ম নির্ধারণ না করে। যেমন নির্দিষ্ট দিনে নয় বা ঘটা করে নয়। জন্মবার্ষিকীতে নয়, মৃত্যু বার্ষিকিতেও নয়। চল্লিশ দিন নয় বা এক বছরে নয়। বরং আপনার উচিত হবে ব্যাপকভাবে গরিবদের খাওয়াবেন আর দোয়া করবেন যে আল্লাহ আমার বাবার জন্য তুমি কবুল করো। এ ক্ষেত্রে আপনার বাবার যেসব বন্ধু-বান্ধব ছিল, তাদেরও দাওয়াত দিয়ে খাওয়াতে পারেন।
রুসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন যে কারো বাবা মারা গেলে তার বন্ধু-বান্ধবদের খাওয়ানোটা তার বাবার প্রতি ভালো ব্যবহারের একটি নমুনা। বাবার বন্ধু-বান্ধবদের ডেকে তাদের সাথে ভালো ব্যবহার করা, সম্মান করা, খাওয়ানো এর মধ্যে অন্তুর্ভুক্ত হবে। এ ক্ষেত্রেও সওয়াব হবে।
খাওয়ানোটা কোনো সুনির্দিষ্ট জায়গায় নয়। আর মেজবানি খাওয়ানোর যে সিস্টেম, সেটা না করে গরিবদের খাওয়ার টাকাও দিতে পারেন। সাথে দোয়াও করতে পারেন। এগুলোই আপনার বাবার কাজে লাগবে।
No comments:
Post a Comment