এখন থেকে সঞ্চয়পত্রের সুদ সরাসরি চলে যাবে
গ্রাহকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে। কালো টাকা এবং অতিরিক্ত বিনিয়োগ বন্ধ করতে সঞ্চয়পত্র
বিক্রির কার্যক্রম পরীক্ষামূলকভাবে অটোমেশন (অনলাইন) পদ্ধতিতে শুরু করেছে জাতীয় সঞ্চয়পত্র
অধিদফতর। আগামী ৩০ জুনের মধ্যেই দেশব্যাপী এটি শুরুর জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে
নির্দেশনা দিয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এর মাধ্যমে সঞ্চয় স্কিমের সুদ ও আসল সরাসরি গ্রাহকের
ব্যাংক হিসাবে পাঠিয়ে দিতে চায় সরকার। নতুন ডাটাবেজ চালু করা হলে ৫০ হাজার টাকার বেশি
সঞ্চয়পত্র কিনতে চেকের মাধ্যমে টাকা পরিশোধ করতে হবে। দিতে হবে জাতীয় পরিচয়পত্র ও ই-টিন
সনদের কপি।
সঞ্চয়পত্র বিক্রিতে শৃঙ্খলা আনতে
এরই
মধ্যে
রাজধানীতে অনলাইনে সঞ্চয়পত্র বিক্রি শুরু
হয়েছে
।
আগামী
১
জুলাই
থেকে
সারা
দেশে
অনলাইনের মাধ্যমে এটি
বিক্রি
করা
হবে।
আর
সঞ্চয়পত্র কিনতে
লাগবে
জাতীয়
পরিচয়পত্র ও
ইটিআইএন। এ
জন্য
‘জাতীয়
সঞ্চয়
স্কিম
অনলাইন
ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম’ চালু
করা
হয়েছে।
এই
সিস্টেমের মাধ্যমে ডাটা
বেইস
তৈরি
করা
হবে।
কালো
টাকা
দিয়ে
ও
বেনামে
সঞ্চয়পত্র কেনা
এবং
সীমার
অতিরিক্ত বিনিয়োগ ঠেকাতে
সরকার
এই
পদক্ষেপ নিয়েছে। ওই
পদক্ষেপ যথাযথভাবে বাস্তবায়নের জন্য
গতকাল
বৃহস্পতিবার দেশে
সব
বাণিজ্যিক ব্যাংককে নির্দেশ দিয়ে
একটি
সার্কুলার জারি
করেছে
বাংলাদেশ ব্যাংক।
প্রাথমিকভাবে অটোমেশন পদ্ধতি চালু হয়েছে
বাংলাদেশ ব্যাংকের মতিঝিল শাখায়, সোনালী ব্যাংকের মতিঝিল শাখায়, জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদফতরের
ব্যুরো অফিস (গুলিস্তান) এবং বাংলাদেশ পোস্ট অফিসের প্রধান কার্যালয়ে। পরীক্ষামূলকভাবে
তিন মাস চলার পর অটোমেশন প্রক্রিয়া সারাদেশে বিভাগীয়, জেলা শহরের কার্যালয়ে শুরু হওয়ার
কথা রয়েছে। এর অংশ হিসেবে অর্থ মন্ত্রণালয়ের সরকারি ব্যয়-ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ
কর্মসূচির আওতায় সোনালী ব্যাংক, জাতীয় সঞ্চয়পত্র অধিদফতর এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের কর্মকর্তাদের
৪২টি ব্যাচে ভাগ করে দিনব্যাপী প্রশিক্ষণও দেয়া হয়েছে।
সার্কুলারে বলা
হয়েছে,
সরকারি
ব্যয়
ব্যবস্থাপনা শক্তিশালীকরণ কার্যক্রমের অংশ
হিসেবে
সঞ্চয়পত্র অনলাইনে বিক্রি
করার
উদ্যোগ
নেওয়া
হয়েছে।
ঢাকা
মহানগরে এই
অনলাইন
পদ্ধতি
চালু
হয়েছে।
চলতি
এপ্রিলে বিভাগীয় শহরে
এবং
জুনের
মধ্যে
সারা
দেশে
অনলাইন
পদ্ধতি
চালু
করা
হবে।
১
জুলাই
থেকে
এই
সিস্টেমের বাইরে
সঞ্চয়পত্রে কোনো
লেনদেন
হবে
না।
সঞ্চয়পত্র বিক্রির টাকা
ব্যাংকে সরকারি
অ্যাকাউন্টে ক্রেটিড করতে
হবে।
এর
বিপরীতে প্রদত্ত মুনাফার টাকা
একই
হিসাবে
ডেবিট
করা
হবে।
এ
ছাড়া
গ্রাহকের মুনাফা
ও
আসল
অর্থ
অ্যাকাউন্টে ছাড়া
দেওয়া
যাবে
না।
বাংলাদেশ ব্যাংক
সূত্রে
জানা
গেছে,
বাজেট
ব্যবস্থাপনায় শৃঙ্খলা আনতে
ওই
উদ্যোগ
নেওয়া
হয়েছে।
সঞ্চয়পত্র কেনার
নতুন
নিয়ম
অনুযায়ী, এক
লাখ
টাকার
বেশি
সঞ্চয়পত্র কিনতে
হলে
জাতীয়
পরিচয়পত্রের কপি
এবং
ই-টিআইএন সনদ জমা
দিতে
হবে।
তবে
এক
লাখ
টাকা
পর্যন্ত নগদ
অর্থে
সঞ্চয়পত্র কেনা
যাবে।
টাকার
পরিমাণ
এর
বেশি
হলে
অবশ্যই
ব্যাংক
চেকের
মাধ্যমে পরিশোধ
করতে
হবে।
এ
জন্য
সঞ্চয়কারীর ব্যাংক
হিসাব
নম্বর
ও
মোবাইল
ফোন
নম্বর
দিতে
হবে।
এ
ছাড়া
নতুন
ফরম
এবং
‘ম্যানডেট’ ফরম
সংগ্রহ
করে
পূরণ
করে
জমা
দিতে
হবে।
যাঁদের
আগে
থেকে
সঞ্চয়পত্র আছে
তাঁরাও
ম্যানডেট ফরম
পূরণ
করে
অনলাইন
ব্যাংকিংয়ের মাধ্যমে মুনাফা
নিতে
পারবেন।
সরকারের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর আওতায়
উচ্চ
সুদে
বর্তমানে চার
ধরনের
সঞ্চয়
প্রকল্প চালু
আছে।
এক
ব্যক্তি কত
টাকার
সঞ্চয়পত্র কিনতে
পারবেন
সে
বিষয়ে
নির্দিষ্ট সীমা
আছে।
কেউ
সীমার
বেশি
সঞ্চয়পত্র কিনলে
সঞ্চয়পত্র বিধি
অনুযায়ী অতিরিক্ত বিনিয়োগের ওপর
তিনি
কোনো
সুদ
পাবেন
না।
তবে
সঞ্চয়পত্রের নির্দিষ্ট ডাটা
বেইস
না
থাকায়
অনেকে
ভিন্ন
অফিস
থেকে
বিপুল
অঙ্কের
সঞ্চয়পত্র কিনছেন। ফলে
সঞ্চয়পত্র বিক্রি
বাড়ছে
ব্যাপক
হারে।
এর
সুদ
পরিশোধ
বাবদ
বাজেট
থেকে
সরকারকে গুনতে
হচ্ছে
মোটা
অঙ্কের
অর্থ।
অর্থ
মন্ত্রণালয় সূত্রে
জানা
গেছে,
সঞ্চয়পত্র থেকে
সরকারের ঋণ
এতটাই
বেড়েছে
যে,
বর্তমানে বছরে
এ
ঋণের
সুদবাবদ সরকারকে ব্যয়
করতে
হচ্ছে
৫৫
হাজার
কোটি
টাকার
বেশি।
সরকারি
চাকরিজীবীদের বেতন-ভাতায় বছরে যে
পরিমাণ
অর্থ
খরচ
হয়
তার
থেকেও
এ
ব্যয়
১
হাজার
কোটি
টাকা
বেশি।
শিগগিরই সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের লাগাম
টানতে
চায়
সরকার।
এজন্য
এ
খাতে
বিনিয়োগে কড়াকড়ি
আরোপ
করা
হচ্ছে।
No comments:
Post a Comment