হার্ট অ্যাটাক বা হৃদরোগ বনাম নারী-পুরুষ ও শিশু

হৃদ‌রোগ বা হার্ট অ্যাটাক হলে তাৎক্ষণিক বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে। তবে না ঘাবড়ে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ যদি প্রকাশ পায়, তাহলে একে অবজ্ঞা করা উচিত নয়।
একটা শিশু যদি বলে আমার বুকে ব্যথা হচ্ছে, অনেক রোগী কিন্তু বলে আমরা বুক ব্যথা বা বুক ধড়ফড় করছে, মা যদি পর্যবেক্ষণ করে একটি শিশুর যেভাবে দুধ টেনে টেনে খাওয়ার কথা সে খাচ্ছে না; তার মনে হচ্ছে একটু শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, একে পরীক্ষা করা উচিত। একটি তরুণ বা যুবক যদি বলে আমার বুক ধড়ফড় হয় বা বুক ব্যথা হয়, তাহলে গুরুত্বের সঙ্গে নিতে হবে। এগুলোকে ডাক্তাররা একটু পর্যবেক্ষণ করলে ভালো হয়। অনেক কার্ডিওলজিস্ট আছে, তা‌দের এগুলো দেখানো উচিত।

চি‌কিৎসকরা সবার সমস্যা হয়ত পাবে না। তবে যেটি পাবে, সেটিই তাদের কাছে শতভাগ। তারা যেন রোগীর সমস্যা খুব দ্রুততম সময়ের মধ্যে ধরতে পারে এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা ব্যবস্থায় চলে যেতে পারে। তাই এসব সমস্যা পু‌ষে না রে‌খে প্রাথমিক অবস্থা‌তেই ডাক্তা‌রের পরামর্শ অনুযায়ী চল‌তে হ‌বে।

হৃদরোগ বা হার্ট ডিজেস কি সব বয়সে হয়?
হৃৎপিণ্ড শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। আর এর অসুখ মানেই রাজ্যের দুশ্চিন্তা। হৃৎপিণ্ডের অসুখ কিন্তু সব বয়সে হতে পারে। আগে ধারণা করা হতো, হৃৎপিণ্ডের অসুখ কেবল প্রবীণ বয়সেই হয়, তবে এখন দৃশ্যপট বদলেছে। সব বয়সের লোকেরই হৃৎপিণ্ডের অসুখ হতে পারে।
হৃদরোগের অনেক ব্যাপ্তি আছে। জন্মের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত যেকোনো বয়সের শিশু, তরুণ, যুবক, যুবতী প্রত্যেকেই হৃদরোগে আক্রান্ত হতে পারে। আসলে বয়স অনুযায়ী হৃদরোগকে ডাক্তাররা বেশি গুরুত্ব দি‌য়ে থা‌কে।

হৃদরোগের ঝুঁকি আছে নারী ও শিশুদেরও
হৃদরোগের বিভিন্ন ধরন রয়েছে। আগে চিন্তা করা হতো শিশু, তরুণ এদের খুব একটা হৃদরোগ হওয়ার কথা নয়। তবে শিশুদের যদি শ্বাসকষ্ট হয়, শিশুর অভিভাবক যদি লক্ষ করেন, একটি শিশুর স্বাভাবিক যে আচরণ, দুধ খাওয়ার সময় তার যে মুখের মধ্যে যদি কষ্ট থাকে, তাহলে তাঁরা চিকিৎসকের কাছে আসেন।
দেখা যায় অনেক শিশু কিন্তু জন্মগত হৃদরোগ নিয়ে জন্ম নেয়। আসলে হৃদরোগ দুই রকম। একটি হলো, মায়ের পেট থেকে কিছু হার্টের সমস্যা নিয়ে একটি শিশু পৃথিবীতে আসতে পারে। যেহেতু তার হার্টের গঠনের কিছু পরিবর্তন আছে, সেই কারণে তার কিছু জটিলতা হয়। তার শরীরে কিছু কষ্ট আসে। এটি শিশুদের হৃদরোগ, যাকে চি‌কিৎসকরা জন্মগত হৃদরোগ বলে।
আর জন্মের পর বিভিন্ন কারণেই হৃদরোগ হয়। শিশুদের ক্ষেত্রে কারণগুলো হলো জন্মগত হৃদরোগ। কখনো কখনো শিশু জন্ম নেয় হৃদরোগ নিয়ে। মা-বাবা বোঝে না বা সঠিক চিকিৎসকের কাছে পর্যবেক্ষণের অভাবে ওরা সেটি নিয়ে থাকে। তরুণ বয়সে বুক ধড়ফড় নিয়ে, শ্বাসকষ্ট নিয়ে এরা কখনো চিকিৎসকের কাছে যায়। তখন ধরা পড়ে তার হার্টের ভেতরে জন্মগত হৃদরোগ। জন্মগত হৃদরোগ, তবে তরুণ বয়সে গিয়ে তার লক্ষণ প্রকাশ করে।
আর কিছু কিছু হৃদরোগ আছে, যেটি তরুণ বয়সেও হতে পারে। সেটা হলো গলাব্যথার কারণে রিউম্যাটিক হার্ট ডিজিস হয়। রিউমাটিক ফিবার বা বাতজ্বর থেকে ধীরে ধীরে হার্টের ভালভের অংশগুলোকে ডাক্তাররা লিফলেট বলে, এগুলো ধীরে ধীরে আক্রান্ত হয়। কখনো কখনো ভালভের ডায়ামিটার ছোট হয়ে যায়, কখনো কখনো ঠিকমতো বন্ধ হয় না ইত্যাদি কারণে যে রোগগুলো হয়, এগুলোকে চি‌কিৎসকরা বাতজ্বরজনিত হৃদরোগ বলে। সাধারণত ৫ থেকে ১৫ বছরে হৃদরোগ হয়। সুতরাং এই বয়সও কিন্তু হৃদরোগ থেকে মুক্ত নয়।

নারী‌দের হার্ট ডি‌জিস বা হৃদরোগ
আগে সাধারণত বলা হয়, নারীদের হৃদরোগ কম হয়। তবে নারীদেরও হৃদরোগ হতে পারে। এ ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থা কিন্তু খুব গুরুত্বপূর্ণ। এখন অনেক রোগী আ‌ছে, যারা গর্ভাবস্থার শেষের দিকে বা গর্ভাবস্থা হওয়ার পরে, এক ধরনের শ্বাসকষ্ট আসে। একে বলা হয় প্রি-পারটাম ডাইলেটেট কার্ডিওমায়োপ্যাথি অথবা পোস্ট পারটাম।
প্রসবের পর হার্টের পাম ধীরে ধীরে কিন্তু কমে যায়। এটি মারাত্মক হৃদরোগ। শ্বাসকষ্ট নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসে। চিকিৎসক যদি সঠিকভাবে মূল্যায়ন না করে, সাধারণত শ্বাসকষ্ট মনে করে বা ব্রঙ্কিয়াল অ্যাজমা মনে করে বা সর্দিকাশিজনিত মনে করে, তাহলে এর পরিণতি খুবই মারাত্মক। তবে এ ক্ষেত্রে এক্স-রে ইসিজি ও ইকোকার্ডিওগ্রাম দিয়ে পরিপূর্ণভাবে একে নির্ণয় করা যায়।





@হার্ট অ্যাটাক কি? জন্মগত হৃদরোগের মধ্যে প্রচলিত কোনগুলো? #হার্ট-এটাক , কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে কোন সমস্যা হয় এবং এর পরে কোনগুলো হয়? #হার্টঅ্যাটাক , হৃদরোগ কি বয়স্ক লোকদেরই হয়? #হৃদ‌রোগ। হার্ট অ্যাটাক হলে তাৎক্ষণিক কী হতে পারে?

No comments:

Post a Comment