শিশুর এক বছর হওয়ার আগে যেসব খাবার শিশুকে দেয়া বিপদজনক তার একটি তালিকা এখানে দেখানো হল।
১. গরুর দুধ
শিশুর প্রথম বছরের আগে গরুর দুধ না দেয়াই ভালো। কারণ গরুর দুধে থাকে বেশি
প্রোটিন এবং সোডিয়াম যা শিশুর ছোট পেটে তা পরিপাক করতে ব্যাঘাত ঘটায়। এছাড়া
গরুর দুধে মায়ের দুধ ও ফর্মুলা দুধের থেকে কম আয়রন এবং অত্যাবশ্যকীয়
ফ্যাটি অ্যাসিড কম থাকে। কিন্তু আয়রন এবং ফ্যাটি অ্যাসিড শিশুর বৃদ্ধির
জন্য অত্যাবশ্যক। অনেক শিশুর ক্ষেত্রে যদি কম বয়সে গরুর দুধ দেয়া হয় তাহলে
অ্যাসিডিটির ও অ্যালার্জির সৃষ্টি করতে পারে।
২. সামুদ্রিক মাছ
টুনা, স্যামন, কোরাল ইত্যাদি সামুদ্রিক মাছে উচ্চ পরিমাণে পারদ থাকে তাই
এগুলো শিশুদের দেয়া ঠিক নয়। পাস্তুরাইজেশন ছাড়া দুধে অনেক ধরনের বিপদজনক
ব্যাকটেরিয়া থাকে। পাস্তুরাইজেশন ছাড়া দুধ তাই ছোট শিশুদের দেয়া উচিত না।
৩. মধু
শিশু জন্মের পর পরই অভিভাবকরা তাকে মধু চাটতে দেন। কিন্তু বাচ্চারা এক বছর
না হওয়া পর্যন্ত এটা কোনভাবে দেয়া উচিত নয়। শিশুর ৬ মাস বয়স পর্যন্ত মধু তো
দূরের কথা কোনও খাবার শিশুর মুখে দেয়া যাবে না। কারণ এক বছর পর্যন্ত শিশুর
বটুলিজম হওয়ার আশঙ্কা থেকে যায়, আর মধু এই ছত্রাক বহন করে।
৪. কিশমিশ
এই বয়সে তাদের কিশমিশ খাওয়ানো ভালো নয়। কিছুটা বড় হওয়ার পর দিতে হবে। কারণ
কিসমিসে প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন বিদ্যমান থাকে। যা এক বছরের কম শিশু গ্রহণ
করতে সক্ষম হয় না।
৫. চকলেট
শিশুদের সবচেয়ে প্রিয় খাবার চকলেট। তবে এতে ব্যবহার করা কোকো বাচ্চাদের হজম
শক্তি নষ্ট করে এবং দাঁতের ক্ষতি করে। এ থেকে অনেক শিশুর অ্যালার্জি দেখা
দিতে পারে। তাই যথাসম্ভাব চকলেট না দেওয়ায় ভাল আর ১বছরের আগে তো একদমই
দেওয়া যাবে না।
৬. ডিম
এই বয়সে ডিম কিছুটা অ্যালার্জি উৎপাদক খাবার। তবে সবার সমস্যা হবেই তা নয়।
তাই পরিবারে যদি কারো ডিমে অ্যালার্জি থাকে সেক্ষেত্রে কিছুদিন অপেক্ষা করে
দেয়াই উত্তম। যদি অ্যালার্জির কোন সমস্যা না থাকে তাহলে ডিম খেতে কোন
সমস্যা হওয়ার কথা না। তবে দিতে হবে ধীরে ধীরে।
৭. বড় ফল ও সবজির বড় টুকরো
এই বয়সে সবজির বড় টুকরো যেমন গাজর, শশা ইত্যাদির এবং ফলের বড় টুকরো যেমন
আপেল, নাশপাতি ইত্যাদি দেয়া উচিত নয়। ভালভাবে রান্না করে ছোট টুকরো করে বা
পিষে দিতে হবে।
৮. শক্ত চকলেট বা জেলি
এই বয়সে এই খাবারগুলো শিশুদের দেয়া যাবে না, বর্জন করতে হবে। তা না হলে এতে শিশুর হজম শক্তি কমে যাবে।
৯. বাদাম
চিনাবাদাম বা এই ধরনের কিছু বাদাম অ্যালার্জির সৃষ্টি করে থাকে তাই সবচেয়ে
ভালো হয় এসব খাবার শিশুর এক বছর বয়স হওয়ার আগে না দেয়া। আর যদি পরিবার কোন
সদস্যের বাদামে অ্যালার্জি থাকে তাহলে বেশ কিছুদিন অপেক্ষা করে দিতে হবে বা
ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে দিতে হবে।
১০. লবণ
শিশুদের কিডনি লবণ ও সোডিয়াম সহ্য করতে পারে না। কারণ লবণেই রয়েছে প্রচুর
সোডিয়াম যা শিশুর পাকস্থলীতে খাবার পরিপাকে সমস্যার সৃষ্টি করে। তাই শিশুর
খাবারে লবণ না মেশানই ভালো। তবে এক বছর পরে শিশুর খাবারে অল্প অল্প করে লবণ
মেশাতে পারেন। কিন্তু এক বছরের আগে মোটেও শিশুর খাবার তৈরিতে লবণ ব্যবহার
করা যাবে না।
No comments:
Post a Comment