মিলিয়নিয়র হতে চাইলে যে কাজগু‌লো করা আবশ্যক

মি‌লিয়‌নিয়র, বিলিয়‌নিয়র কে না হ‌তে চায় ! মুক্তবাজার অর্থনীতিতে যে কেউই যতো চাইবেন ততোই টাকা আয় করতে পারবেন। এমনটাই মত আত্মপ্রতিষ্ঠিত মিলিয়নিয়র স্টিভ সেইবোল্ডের। ইনি আবার বিশ্বের ১,২০০ শীর্ষ ধনী লোককে নিয়ে গবেষণাও করেছেন।

৩০ বছর বয়সের মধ্যেই মিলিয়নিয়র হতে চাইলে আপনার জন্য এখানে রইল ১১ পরামর্শ। যারা তরুণ বয়সেই মিলিয়নিয়র হয়েছেন এবং যারা শতশত আত্মপ্রতিষ্ঠিত মিলিয়নিয়রদের নিয়ে গবেষণা করেছেন তারা এই পরামর্শগুলো
দিয়েছেন।

১. উপার্জন বাড়ানোর ওপর ফোকাস করুন
শুধু সঞ্চয় করে আপনি এখন আর মিলিয়নিয়র হতে পারেবন না, বলেছেন গ্রান্ট কার্ডোন। ২১ বছর বয়সে ঋণে জর্জরিত দশা থেকে ৩০ বছর বয়সের মধ্যেই মিলিয়নিয়র বনে গেছেন এই আত্মপ্রতিষ্ঠিত শীর্ষ ধনী। তিনি বলেন, “মিলিয়নিয়র হতে চাইলে আপনার প্রথম পদেক্ষেপটিই হবে উপার্জন বাড়ানোর দিকে নজর দেওয়া”।
“প্রথমদিকে মাসে আমার আয় ছিল ৩ হাজার ডলার। এর ৯ বছর পর মাসে আমার আয় গিয়ে দাঁড়ায় ২০ হাজার ডলারে। টাকার পেছনে দৌঁড়ানো শুরু করুন। তাহলে টাকাও আপনার হাতে এসে ধরা দিবে এবং নতুন নতুন সুযোগ আপনার হাতের মুঠোয় এসে যাবে”।

২. আয়ের বহুবিধ উৎস তৈরি করুন
উপার্জন বাড়ানোর একটি উপায় হলো আয়ের উৎস বাড়ানো। লেখক থমাস সি. কর্লি পাঁচ বছর ধরে আত্মপ্রতিষ্ঠিত মিলিয়নিয়রদের নিয়ে গবেষণা করে দেখতে পেয়েছেন, তাদের বেশিরভাগই আয়ের একাধিক উৎস তৈরি করেছেন। ৬৫ শতাংশের একই সঙ্গে ৩টি আয়ের উৎস ছিল, ৪৫ শতাংশের ছিল ৪টি উৎস আর ২৯ শতাংশের ছিল ৫টি বা আরো বেশি আয়ের উৎস।

৩. বিনিয়োগের জন্য সঞ্চয় করুন
মিলিয়নিয়র গ্রান্ট কার্ডোনের মতে, অর্থ সঞ্চয়ের একমাত্র কারণ হতে পারে তা পূনর্বিনিয়োগ করা। আপনার সঞ্চিত অর্থ যে অ্যাকাউন্টে রাখবেন বিনিয়োগের প্রয়োজন ছাড়া তাতে কখনো হাত দিবেন না।

৪. দৃঢ়সঙ্কল্প হোন
মাত্র ২২ বছর বয়সে মিলিয়নিয়র বনে যাওয়া টাকার হিউ বলেন, “সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগবেন না। যে কোনো কাজই মনোযোগ সহকারে এবং দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিয়ে করুন। এতে কাজের উৎপাদনশীলতা ও গতি বাড়বে। আর আপনার মনের জোর যত বেশিই হোক না কেন দিনের একটা সময়ে গিয়ে তা পড়তির দিকেই গড়িয়ে যাবে। সূতরাং দ্রুত ও সহজেই পরিবর্তনযোগ্য এমন সিদ্ধান্ত নিয়ে এবং সহজ কাজ স্বয়ংক্রিয়ভাবে সম্পন্ন করার সক্ষমতা অর্জনে আগ্রাসী পরিকল্পনা করে মনের ক্ষমতা সংরক্ষণ করুন”।
“আগামী কাল কর্মস্থলে আমি কোন পোশাকটি পরে যাবো এবং পরের এক সপ্তাহ প্রতিদিন সকালের নাস্তায় কী খাব তা আমার আজই জানা আছে। আপনার নিজের কী তা জানা আছে?”
গবেষণায় আরো দেখা গেছে, মিলিয়নিয়রদের প্রায় সবার মধ্যেই দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের অসাধারণ ক্ষমতা রয়েছে।

৫. জাহির করতে যাবেন না বরং কাজ করে দেখান
মিলিয়নিয়র গ্রান্ট কার্ডোন বলেন, “আমার ব্যবসা ও বিনিয়োগগুলো থেকে একাধিক এবং নিরাপদ আয়ের উৎস তৈরি না হওয়া পর্যন্ত আমি আমার প্রথম বিলাসি ঘড়ি বা গাড়িটি কিনিনি। মিলিয়নিয়র হওয়া পর্যন্ত আমি আমার টয়োটা ক্যামরি গাড়িটিই চালাতাম। কাজের মাধ্যমে নিজেকে পরিচিত করে তুলুন; আপনি কী বিলাসি দ্রব্য ব্যবহার করলেন বা না করলেন তার ভিত্তিতে নিজেকে পরিচিত করাতে যাবেন না”।

৬. টাকার ব্যাপারে আপনার দৃষ্টিভঙ্গি বদলান
মিলিয়নিয়র স্টিভ সেইবোল্ড বলেন, “অর্থ উপার্জনের ব্যাপারে আপনি কীভাবে চিন্তা করেন এবং কী বিশ্বাস করেন তা থেকেই মূলত আপনার ধনী হওয়ার পথে যাত্রা শুরু হয়”।
দিনশেষে, “একটাই গোপন বিষয় থাকে: চিন্তা,”। সাধারণ মানুষেরা যখন বিশ্বাস করেন, ধনী হওয়া না হওয়ার বিষয়টা তাদের নিয়ন্ত্রণে নেই, তখন ধনী মানুষেরা জানেন, অর্থ উপার্জনের বিষয়টি তাদেরই ভেতরের কাজ”।

৭. নিজের জন্য বিনিয়োগ করুন
মিলিয়নিয়র টাকার হিউ বলেন, “আমি যত নিরাপদ বিনিয়োগ করেছি তার মধ্যে সবেচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগটি ছিল নিজের মধ্যে নিজের ভবিষ্যতের জন্য বিনিয়োগ করা। প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিটের জন্য পড়ার অভ্যাস গড়ে তুলুন, গাড়ি  চালানোর সময় রেডিওতে প্রাসঙ্গিক অনুষ্ঠান শুনুন, আর হন্যে হয়ে বিজ্ঞ ও বিশ্বস্ত পরামর্শদাতার অনুসন্ধান করুন।
মজার তথ্য হলো, আজকালকের অনেক সফল ধনী ব্যক্তিই প্রচুর পড়াশোনা করেন। যেমন, ওয়ারেন বাফেটের কর্মদিবসগুলোর ৮০ শতাংশই ব্যয় হয় পড়াশোনার পেছনে!

৮. আত্মকর্মসংস্থান করুন
মিলিয়নিয়র সেইবোল্ড বলেন, “কর্মজীবিদের মধ্যে সেরারাই জানেন দ্রুত ধনী হওয়ার একমাত্র পথ হলো আত্মকর্মসংস্থান করা”।
সেরারা যখন ব্যবসা-বাণিজ্য করে নিজেরাই নিজেদের ভাগ্য বদলের পথে পা বাড়ান সাধারণরা তখন একটি চাকরি-বাকরি যোগাড় করেই জীবন-জীবিকা নিশ্চিত করার চিন্তায় বুঁদ হয়ে থাকেন।

৯. লক্ষ্য নির্ধারণ করুন এবং তা অর্জন করে দেখান
আপনি যদি সত্যি সত্যিই অর্থ উপার্জন করতে চান তাহলে আপনাকে প্রথমেই পরিষ্কার লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে এবং তা অর্জনের জন্য নির্দষ্ট পরিকল্পনা করতে হবে। টাকা হাওয়ায় ভেসে আসবে না।
প্রথমেই পরিষ্কার লক্ষ্য নির্ধারণ করতে হবে এবং তা অর্জনের জন্য নির্দষ্ট পরিকল্পনা করতে হবে। টাকা হাওয়ায় ভেসে আসবে না। এর জন্য আপনাকে পরিশ্রম করতে হবে। আর বেশিরভাগ লোকই তারা যা চান তা পান না কারণ তারা আসলে জানেন না তারা কী চান। কিন্তু ধনী লোকেরা পরিষ্কার জানেন তারা আসলে সম্পদই চান।

১০. যাদের আপনি সমীহ করেন তাদের সঙ্গে সময় কাটান
অ্যান্ড্রু কার্নেগি খালি হাতে শুরু করে যুক্তরাষ্ট্রের শীর্ষ ধনী হয়েছেন। এর সকল কৃতিত্ব তিনি একটি নীতির উপরই আরোপ করেন: দ্য মাস্টার মাইন্ড। তিনি নিজেক সবসময়ই মেধাবী লোকদের দিয়ে ঘিরে রাখতেন। আর মানু্ষ যাদের সঙ্গে ওঠাবসা করে তাদের মতোই হয়। এ কারণেই ধনীরা শুধু ধনীদের সঙ্গেই মিশতে চান।

১১. বড় চিন্তা করুন
গ্রান্ট কার্ডোন বলেন, “আমি জীবনে একবারই সবচেয়ে বড় ভুলটি করেছি। আর তা হলো, বড় করে চিন্তা না করা। আমি আপনাকে বলবো ১ মিলিয়ন নয় একবারে ১০ মিলিয়নের স্বপ্ন দিয়েই শুরু করুন। দুনিয়ায় টাকার কোনে অভাব নেই। অভাব শুধু একটাই- বড় চিন্তা ও বড় স্বপ্নের মানুষ নেই”।
© KalerKantho-Online


^
^
ধনী হওয়ার উপায় কি? কো‌টি প‌তি হ‌তে কি কাজ করা.!  ৩০ বছর বয়সেই মিলিয়নিয়র হতে চাইলে ২০ এর মধ্যে করতে হবে ১১টি কাজ ! কো‌টিপ‌তি হ‌তে চাই... লাখপ‌তি... বড়‌লোক হওয়ার উপায় ।। কিভা‌বে কো‌টি প‌তি হওয়া যায় ?

No comments:

Post a Comment