বন্ধু-বান্ধব বা পরিবারের সঙ্গে দূরে কোথাও বা দেশের বাইরে যখন ভ্রমণে যাবেন, তার আগে পরিকল্পনা করে নিন। ভ্রমণের জন্য আপনি অনেক পরিকল্পনা করে থাকলেও ছোট কিছু ভুলের কারণে আপনার পুরো আনন্দ ভ্রমণ নিরানন্দে পরিণত হ্য়। তাই আপনার আনন্দ ভ্রমণ আরো প্রাণবন্ত ও আনন্দময় করতে আপনাদের জন্য সামান্য দরকারি কিছু টিপস দিচ্ছি। আশা করছি আপনাদের ভালো লাগবে, থাকতে পারবেন চাপমুক্ত।
ঘুরতে যাওয়ার আগে গুরুত্বপূর্ণ কিছু টিপস জেনে নিন...
১. বিদেশে ভ্রমণের প্রস্তুতি হিসেবে লাগেজে ঠিক কী কী থাকা উচিত, ঘুরতে যাওয়া এবং অনেক লম্বা সময়ের জন্য থাকা—দুই ক্ষেত্রের জন্যই দুই ধরনের লিস্ট করবেন, ট্যুরের কাজকর্মের একটি খসড়া প্ল্যান করুন । এতে অনেক সময় বাঁচবে, সঙ্গে সহজ হয়ে যাবে ভ্রমণ।
২. যাওয়ার সময় ব্যাগ যতটা সম্ভব হালকা করুন। অপ্রয়োজনীয় জিনিস নেবেন না। তবে পরিধেয় কাপড়গুলো ভালোভাবে গুছিয়ে নিন। সঙ্গে রাখতে পারেন লোশন, ক্রিম, বডি স্প্রে, টুথব্রাশ, পেস্ট, শ্যাম্পু, চিরুনি, লিপজেল, ক্যাপ/হ্যাট, ছোট্ট ছাতা, রুমাল, ওয়েট টিস্যু, প্রয়োজন অনুযায়ী ইত্যাদি জিনিস ছোট কোনো পকেট থাকলে তাতে রাখতে পারেন অথবা অন্য কোনো পকেটে ভরে লাগেজে নিতে পারেন।পুরুষরা যাঁরা নিয়মিত সেভ করেন, তাঁরা রেজর-ফোম, এসব নিতে ভুলবেন না যেন।
৩. আপনার স্যান্ডেল-জুতা পলিথিন বা কাগজে মুড়িয়ে লাগেজের একপাশে রাখতে পারেন। খেয়াল করবেন একেবারে নতুন কিংবা শক্ত জুতা হলে আপনি ভালোভাবে হাঁটতে পারবেন না বা হাঁটলে পায়ে ফোসকা পড়ে যাবে।
৪. আগেভাগেই জেনে রাখুন এলাকার কোথায় কী পাওয়া যায়। না হলে বিড়ম্বনায় পড়তে পারেন। ট্যুরিস্ট রেস্টুরেন্টগুলো এড়িয়ে চলাই ভালো। যেখানে বেড়াতে গিয়েছেন, সেখানে আশপাশে ঘুরে লোকাল বসবাসকারীরা যেখানে খাবার খায়, সেখানে খাওয়া-দাওয়া সারলে খরচটা অনেক কমে আসবে।
৫. পকেট খরচ বাঁচিয়ে শিক্ষার্থীরা ভ্রমণে গেলে খরচ বেশি না কম হবে চিন্তায় পড়ে যায়, সে ক্ষেত্রে একদম ভ্রমণ মৌসুমে না গিয়ে একটু আগে বা পরে যান। যেমন ঠিক এই সময়টাই এমন একটা সময়। ভ্রমণ মৌসুমে গেলে সব কিছুতেই একটু বেশি খরচ হয়। তবে একেবারে অফসিজনে যাওয়াটা একদমই উচিত নয়।
৬ . ঘুরতে গিয়ে কোনো রেস্টুরেন্টে খাওয়ার থেকে কোনো দর্শনীয় স্থানে পিকনিক করতে পারেন। এতে আপনি স্থানীয় সংস্কৃতি, রীতিনীতি খুব কাছে থেকে উপলব্ধি করতে পারবেন আর খরচটাও কমবে। হালকা শুকনো খাবার ও পানি রাখা অত্যন্ত জরুরি।
৭ . ভ্রমণ স্থানে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় যাওয়ার অভ্যন্তরীণ ব্যবস্থা ভালোভাবে জেনে নিন। ভ্রমণের স্থান সম্পর্কে যথাযথ জ্ঞান না থাকলে ট্যাক্সি বা রেন্ট-এ-কারে অনেক সময় অনেক হয়রানির স্বীকার হতে হয়।
৮. আপনি যদি ভ্রমণে গিয়ে নিজেই গাড়ি চালান, তাহলে ওই এলাকার ট্রাফিক সম্পর্কে সচেতন থেকে ড্রাইভ করুন। গাড়ি পার্কিংয়ের ব্যাপারে একটু সতর্ক থাকুন।
৯. সঙ্গে কিছু বাড়তি টাকা রাখুন। হঠাৎ কোনো দুর্ঘটনা ঘটে গেলে কাজে আসবে। আর সাগরপাড়ে একদমই অসতর্কতা নয়। একটু অসাবধানতার কারণে যেতে পারে আপনার ও আপনার প্রিয় মানুষটির প্রাণ।
১০. ভ্রমণে নিজের কাছে বহন করবেন যে ব্যাগ, সেখানে আপনার দরকারি ছোটখাটো জিনিস রাখুন, এতে ঝামেলা অনেক কমে যাবে। অন্য সবকিছু একটা ব্যাগে নিন।
অনেক ব্যাগ হলে দেখা যাবে এগুলোর দিকেই আপনাকে বারবার খেয়াল রাখতে হচ্ছে। এ ছাড়া বাড়িতে যে কাপড় পরবেন, তা লাগেজের একপাশে রাখবেন। ইজি ও আরামদায়ক পোশাক নিন। বিশেষ করে সেখানকার আবহাওয়া অনুযায়ী তথ্য জেনে আপনি আপনার বাইরে পরার কাপড় গোছাতে পারেন।
১১. ক্যামেরা কিন্তু ভ্রমণের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ। এক্সট্রা ব্যাটারি, মেমোরি কার্ড চেক করুন।
১২. আপনার মোবাইল ও ল্যাপটপ নিলে অবশ্যই মনে করে তার চার্জারটি ব্যাগে রাখতে ভুল করবেন না। আপনি চাইলে চার্জারটি লাগেজের পকেটযুক্ত ব্যাগে রাখতে পারেন।
১৩. ইয়ারফোন বা এমপিথ্রি ভ্রমণের সময় নিয়ে যেতে পারেন। গানে গানে পথ চললে ভ্রমণ আরো উপভোগ্য হবে।
১৪. অর্থ ছাড়া তো ভ্রমণের কথা চিন্তাই করা যায় না। তবে যে দেশ বা স্থানে যাবেন, সে অনুযায়ী মুদ্রা এক্সচেঞ্জ করে নিন। কিছু পরিমাণ ভাংতি অবশ্যই সঙ্গে রাখুন।
১৫. সঙ্গে দু-একটা বইও নিন। অবশ্যই বড় কোনো উপন্যাস নয়। হালকা ম্যাগাজিন হলে ভালো হয়। এ ছাড়া সঙ্গে খাতা-কলম নিতে পারেন। হঠাৎ কোনো জরুরি তথ্য পেলে নোট করা যাবে তাতে। তা ছাড়া বলা তো যায় না, কোনো সুন্দর স্থান দেখে আপনার ভেতর কবিত্বও চলে আসতে পারে।
১৭. আপনার ঠিকানা, যেখানে যাবেন তার ঠিকানা, নিকটতম কোনো বন্ধু অথবা আত্মীয়স্বজনের নম্বর আপনার লাগেজের ভেতর ছোট নোটবুকে রাখতে পারেন। সবকিছু গোছানো শেষ হলে আবার একটু মনে মনে চিন্তা করতে পারেন লাগেজে কী কী নেওয়া হয়নি।
১৮. ব্যাগে শেষবারের মতো চেক করুন, পাসপোর্ট এবং টিকেট ব্যাগে আছে কি না, যেটি আপনি আগেই গুছিয়ে রাখবেন ব্যাগে।
No comments:
Post a Comment