উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে (১৬৫০) চাকরির বিজ্ঞপ্তি

হতে চান উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা?
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে ১৬৫০ জন নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে সরকারের কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। অনলাইনে আবেদন করা যাবে ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর শূন্য পদে ১৬৫০ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিয়োগ দেবে। নিয়োগ বিজ্ঞপ্তিটি ছাপা হয়েছে ২৫ জানুয়ারির জনকণ্ঠে।


কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে (www.dae.gov.bd) পাওয়া যাবে দরকারি তথ্য।

আবেদনের যোগ্যতা
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে আবেদন করতে চাইলে কোনো স্বীকৃত ইনস্টিটিউট থেকে কৃষিবিজ্ঞানে চার বছর মেয়াদি ডিপ্লোমা থাকতে হবে। হতে হবে বাংলাদেশের নাগরিক। ২৫ জানুয়ারি ২০১৮ তারিখে বয়সসীমা সাধারণ প্রার্থীদের বেলায় ১৮ থেকে ৩০ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের বয়সসীমা ১৮ থেকে ৩২ বছর।
জেলা কোটার বিপরীতে শূন্য পদে এসব নিয়োগ দেওয়া হবে। জেলা কোটা না থাকায় শেরপুর, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, খুলনা, বাগেরহাট, বরিশাল, পটুয়াখালী, ভোলা, বরগুনা ও রাজবাড়ী জেলার প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন না। তবে রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দববান বাদে অন্য সব জেলার এতিমখানার নিবাসী ও শারীরিক প্রতিবন্ধী প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবেন।

অনলাইনে আবেদন 
আবেদন করতে হবে অনলাইনে।
টেলিটকের www.daesaao.teletalk.com.bd বা www.dae.teletalk.com.bd এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের dae.gov.bd ওয়েরসাইটে আবেদন ফরম পাওয়া যাবে। প্রয়োজনীয় নির্দেশনা অনুসারে আবেদন ফরম পূরণ করতে হবে। আবেদন ফরম পূরণ ও পরীক্ষা ফি জমা দেওয়া শুরু হবে ১ ফেব্রুয়ারি সকাল ১০টা থেকে। শেষ সময় ২৮ ফেব্রুয়ারি বিকেল ৫টা। আবেদন করার পর মোবাইলে একটি ইউজার আইডি আসবে। এটি পরবর্তী কার্যক্রমের জন্য সংরক্ষণ করতে হবে। আবেদনের ৭২ ঘণ্টার মধ্যে এসএমএসের মাধ্যমে পরীক্ষার ফি বাবদ ১০০ টাকা জমা দিতে হবে।

প্রবেশপত্র ও ফলাফল অনলাইনে
অধিদপ্তরের পারসোনেল শাখা সূত্রে জানা যায়, নির্ধারিত তারিখ ও সময়ের মধ্যে পাওয়া সব আবেদন যাচাই-বাছাই শেষে যোগ্যদের তালিকা অধিদপ্তরের ওয়েরসাইটে (www.dae.gov.bd) প্রকাশ করা হবে। যোগ্য ব্যক্তিরা ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে লিখিত পরীক্ষার প্রবেশপত্র সংগ্রহ করতে পারবেন। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার সময়সূচি অধিদপ্তরের ওয়েবসাইট ও মোবাইলে এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের তালিকাও প্রকাশ করা হবে অনলাইনে। উত্তীর্ণদের নির্ধারিত তারিখের মধ্যে প্রয়োজনীয় সনদ ও কাগজপত্র জমা দিতে হবে। যোগাযোগের জন্য সচল রাখতে হবে আবেদন ফরমে দেওয়া মোবাইল নম্বর।

পরীক্ষা পদ্ধতি
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (পারসোনেল) এবং বিভাগীয় বাছাই ও নির্বাচন কমিটির সদস্যসচিব মো. মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, দুই ধরনের পরীক্ষার মাধ্যমে প্রার্থী বাছাই করা হয়। প্রথমে নেওয়া হয় এমসিকিউ পদ্ধতির লিখিত পরীক্ষা। তবে এ পদে সরাসরি লিখিত নিয়োগ পরীক্ষা নেয় না কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া হয়।
তিনি আরো জানান, লিখিত ও মৌখিক দুই পরীক্ষা মিলে ১০০ নম্বর বরাদ্দ। এর মধ্যে এমসিকিউ টাইপের লিখিত পরীক্ষায় ৭০ এবং ভাইভায় থাকে ৩০ নম্বর। লিখিত পরীক্ষায় ৫০ নম্বরের ডিপার্টমেন্টাল প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। বাকি ২০ নম্বরের প্রশ্ন করা হয় বাংলা, ইংরেজি, গণিত, সাধারণ জ্ঞান ও কম্পিউটার বিষয়ে। তবে চাইলে প্রশ্নপত্র প্রণয়ন, নম্বর বণ্টন ও অন্যান্য বিষয়ে পরিবর্তন আনতে পারে কর্তৃপক্ষ।

লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি
রংপুর বিভাগের বদরগঞ্জ উপজেলায় কর্মরত এবং ২০১৬ সালের পরীক্ষায় নিয়োগপ্রাপ্ত উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা জিয়াউর রহমান জানান, ৭০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষায় ১০০টি প্রশ্ন থাকতে পারে। সময় এক ঘণ্টা। ডিপার্টমেন্টাল ৫০ নম্বরে কৃষি যন্ত্রপাতি, কৃষি সম্প্রসারণ, কৃষি উত্পাদন নীতি, কৃষি উন্নয়ন, মাঠ ফসলের চাষাবাদ, রোগবালাই ও পোকামাকড় দমন, উদ্যান ফসলের চাষাবাদ, সবজি চাষ, উদ্ভিদের পুষ্টি ও সার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে বেশি প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। তাই পাঠ্য বইয়ের এ বিষয়গুলো পড়তে হবে বেশি করে।
একই উপজেলায় কর্মরত তারিকুল ইসলাম জানান, ডিপার্টমেন্টালের সব প্রশ্নই করা হয় কৃষি ডিপ্লোমা পাঠ্য বই থেকে। পাঠ্য বইয়ের বাইরে সাধারণত প্রশ্ন আসে না। বাংলা ও ইংরেজি বিষয়ে ব্যাকরণ অংশ থেকে বেশি প্রশ্ন করা হয়ে থাকে। অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির বাংলার পদ্য ও গদ্য অংশের সঙ্গে ব্যাকরণ ও ইংরেজি গ্রামার অংশ ভালোভাবে পড়তে হবে। গণিতে ঐকিক নিয়ম, শতকরা, সুদকষা, লসাগুসহ নানা বিষয়ে সংক্ষিপ্ত প্রশ্ন থাকে। অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির পাঠ্য বইয়ের গণিত চর্চা করতে হবে। সাধারণ জ্ঞান ও কম্পিউটার বিষয়েও প্রশ্ন করা হয়। বাজারে প্রচলিত ভালো মানের একাধিক বই পড়লে এতে ভালো করা যাবে।

মৌখিক পরীক্ষায় করণীয়
লিখিত পরীক্ষায় ভালো ফল করলেই ডাক পড়বে মৌখিক পরীক্ষা বা ভাইভার জন্য। মো. মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, অনেক প্রার্থী আছেন, যাঁরা লিখিত পরীক্ষায় বেশ ভালো ফল করেন কিন্তু ভাইভা বোর্ডে নিজেকে উপস্থাপন করতে পারেন না। যার ফলে ছিটকে পড়েন চাকরির প্রতিযোগিতা থেকে। ভাইভা বোর্ডে দেখা হয় উপস্থাপন দক্ষতা। দেখা হয় সাধারণ জ্ঞানের পরিধি, কাজের আগ্রহসহ নানা দিক। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে ইউনিয়ন পর্যায়ের প্রান্তিক কৃষকদের নিয়ে কাজ করতে হয়। সে ক্ষেত্রে তাঁদের মনোভাব কতটা ইতিবাচক, তা-ও দেখা হয়।
ভাইভা বোর্ডে নিজেকে সাবলীলভাবে উপস্থাপন করতে হবে। জিয়াউর রহমান জানান, সাধারণ জ্ঞান, সাম্প্রতিক আলোচিত ঘটনা ছাড়াও প্রার্থীর এলাকার সবচেয়ে উত্পাদনশীল বা জনপ্রিয় ফসলের বিষয়ে প্রশ্ন করা হতে পারে। জানতে চাওয়া হতে পারে নিজের সম্পর্কে, পড়ার বিষয় সম্পর্কেও।

পরীক্ষার সহায়ক যত কিছু
চার বছর মেয়াদি কৃষি ডিপ্লোমার পাঠ্য বইগুলো লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষার সবচেয়ে সহায়ক। অষ্টম থেকে দশম শ্রেণির বাংলা, গণিত ও ইংরেজি বইও ঘাঁটতে হবে। তারিকুল ইসলাম জানান, সাম্প্রতিক সময়ে একই পদে ২০১১, ১৩, ১৫ ও ২০১৬ সালে লোকবল নিয়োগ পরীক্ষা নেওয়া হয়েছে। বিগত বছরের নিয়োগ পরীক্ষার প্রশ্নগুলো সংগ্রহ করে সমাধান করলে কাজে দেবে। এতে পরীক্ষা সম্পর্কেও একটি ধারণা হবে।

বেতন-ভাতা
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাকে জেলা ও উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অধীনে ইউনিয়ন পর্যায়ে কাজ করতে হবে। পদায়ন করা হবে জেলা কোটা, মুক্তিযোদ্ধা কোটা, প্রতিবন্ধী কোটাসহ অন্যান্য কোটা অনুসারে। নিয়োগপ্রাপ্ত একজন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা ২০১৫ সালের জাতীয় বেতন স্কেলের ১১তম গ্রেড অনুসারে ১২৫০০-৩০২৩০ টাকা স্কেলে মাসিক বেতন পাবেন। 


No comments:

Post a Comment