হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয়ের চাকরি প্রস্তুতি : CGA Job Exam Preparation

হিসাব মহানিয়ন্ত্রকের কার্যালয় এবং এর আওতাধীন দপ্তরগুলোর অধীনে অডিটর পদে ৫৩৮টি ও জুনিয়র অডিটর পদে ৪৫৭টি শূন্য পদে জনবল নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে। অডিটর পদে আবেদন করতে হলে প্রার্থীকে স্বীকৃত বিশ্ববিদ্যালয় হতে স্নাতক পাস হতে হবে।
আর উচ্চ মাধ্যমিক পাস হলেই জুনিয়র অডিটর পদের জন্য আবেদন করা যাবে।


আবেদনের শেষ সময়
৫ মে ২০২০

২০১৮ সালে নিয়োগ পাওয়া অডিটর মিজানুর রহমান নিয়োগ পরীক্ষার প্রস্তুতির বিষয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন...

নিয়োগ প্রক্রিয়া যেভাবে
নিয়োগ পরীক্ষাগুলো সাধারণত সর্বমোট ১০০ নম্বরের হয়ে থাকে। অডিটর নিয়োগ পরীক্ষা সাধারণত দুই ধাপে সম্পন্ন হয়। প্রথম ধাপে প্রিলিমিনারি (এমসিকিউ পদ্ধতি) পরীক্ষা হয় ৭০-৮০ নম্বরের ওপর। তারপর মৌখিক পরীক্ষা হয় ২০-৩০ নম্বরের ওপর। তবে প্রার্থী বেশি হলে ক্ষেত্র বিশেষে প্রিলিমিনারি পরীক্ষার পরে লিখিত পরীক্ষাও নেওয়া হয়। আর জুনিয়র অডিটর নিয়োগ পরীক্ষা হয় তিন ধাপে। প্রথম ধাপে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয় ৭০-৮০ নম্বরের ওপর।

দ্বিতীয় ধাপে হয় কম্পিউটার ব্যাবহারিক পরীক্ষা। মূলত কম্পিউটার চালনা ও বাংলা-ইংরেজিতে টাইপের গতি দেখা হয়। উভয় ভাষায় ২০টি শব্দ/মিনিট থাকলে টাইপিং পর্বে পাস করা যায়। এরপর মৌখিক পরীক্ষার মুখোমুখি হতে হবে।



প্রিলিমিনারি পরীক্ষা যেভাবে
অডিটর ও জুনিয়র অডিটর—দুই পদেই সাধারণত ৭০-৮০ নম্বরের প্রিলিমিনারি (এমসিকিউ পদ্ধতিতে) পরীক্ষা হয়। প্রতিটি প্রশ্নের মান ১ করে। আর প্রশ্নপত্রে নেগেটিভ মার্কিংয়ের বিষয়ে লেখা না থাকলে কোনো নেগেটিভ মার্কিং হবে না। পরীক্ষায় সাধারণত বাংলা, ইংরেজি, গণিত ও সাধারণ জ্ঞান (সমসাময়িক ঘটনাবলি, দৈনন্দিন বিজ্ঞান, কম্পিউটার ইত্যাদি) থেকে প্রশ্ন হয়। পরীক্ষায় বিষয়ভিত্তিক নম্বর বণ্টন হয় সাধারণত—বাংলা ১৫-২০, ইংরেজি ২০, গণিত ২০, সাধারণ জ্ঞানে ১৫-২০ নম্বর। এ ছাড়া বিষয়ভিত্তিক আলাদাভাবে পাস করার কোনো বাধ্যবাধকতা নেই।



বিষয়ভিত্তিক প্রস্তুতির পরামর্শ
বাংলা : বিগত সালের প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে বাংলা অংশে সাহিত্য ও ব্যাকরণ উভয় থেকেই প্রশ্ন এসে থাকে। ব্যাকরণ অংশে ধ্বনি, বর্ণ, শব্দ, পদ, বাক্য, প্রত্যয়, সন্ধি, সমাস, প্রয়োগ, অপপ্রয়োগ, উপসর্গ, ণ-ত্ব ও ষ-ত্ব বিধান, বানান ও বাক্যশুদ্ধি, পরিভাষা, সমার্থক শব্দ এবং বিপরীতার্থক শব্দ, এককথায় প্রকাশ, বাগ্ধারা, প্রবাদ বাক্য প্রভৃতি থেকে প্রশ্ন এসে থাকে। ব্যাকরণ অংশে প্রস্তুতির জন্য নবম-দশম শ্রেণির বোর্ড ব্যাকরণ বইটি ভালো করে পড়া যেতে পারে। এবার আসা যাক বাংলা সাহিত্যে। এই অংশের প্রস্তুতির ক্ষেত্রে আপনাকে কৌশলী হতে হবে। শুরুতেই বলে রাখি, বাংলা সাহিত্যের প্রস্তুতির শুরুটাই হওয়া উচিত বিগত বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষাগুলোর সব প্রশ্ন সমাধান করার মাধ্যমে। একটু খেয়াল করলেই দেখা যায়, প্রাচীন ও মধ্যযুগের বাংলা সাহিত্যের ওপর প্রায় একই ধরনের প্রশ্ন বারবার আসে। ভাষা আন্দোলন ও মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক গল্প-উপন্যাস ও বিভিন্ন পত্রিকার প্রকাশ সাল ও সম্পাদকের নাম পরীক্ষায় আসে। বাজারে ভালো মানের একটি গাইড বই অনুসরণ করলে ভালো প্রস্তুতি নেওয়া সম্ভব।



ইংরেজি : ইংরেজি অংশ, গ্রামার ও সাহিত্য অংশ থেকে প্রশ্ন এসে থাকে। তবে বেশির ভাগ প্রশ্ন গ্রামার অংশ থেকে এসে থাকে। বিগত সালের প্রশ্নগুলো থেকে দেখা গেছে, সবচেয়ে বেশি প্রশ্ন আসে Idioms and pharase, Synonyms and Anonyms, appropriate prepositions, Modals & Group verbs, Corrections, Participle, Infinitive, Gerund প্রভৃতি। এ ছাড়া গ্রামারের অনান্য গুরুত্বপূর্ণ টপিক থেকেও প্রশ্ন আসে। ইংরেজি ভিত মজবুত করে এই টপিকগুলো বেশি বেশি চর্চা করা যেতে পারে। প্রতিদিন কমপক্ষে ২ ঘণ্টা ইংরেজির জন্য বরাদ্দ রাখলে ভালো ফল দেবে। আর সাহিত্য অংশ থেকে ইংরেজি সাহিত্যের যুগ বিভাগ, কিছু লিটারেরি টার্ম, বিখ্যাত গ্রন্থগুলোর লেখকের নাম প্রভৃতি থেকে বেশি প্রশ্ন এসে থাকে। এ ছাড়া অন্যান্য বিষয় থেকেও প্রশ্ন মাঝেমধ্যে আসতে দেখা যায়। তবে বিগত সালের বিভিন্ন চাকরির পরীক্ষায় আসা প্রশ্নগুলো বেশি বেশি চর্চা করলে কমন পড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।

জুনিয়র অডিটর নিয়োগ পরীক্ষা হয় তিন ধাপে। প্রথম ধাপে প্রিলিমিনারি পরীক্ষা হয় ৭০-৮০ নম্বরের ওপর। দ্বিতীয় ধাপে হয় কম্পিউটার ব্যাবহারিক পরীক্ষা। মূলত কম্পিউটার চালনা ও বাংলা-ইংরেজিতে টাইপের গতি দেখা হয়।



গণিত : গণিত অংশে মুখস্থ করার বিষয় তেমন নেই। পরীক্ষার হলে ঠাণ্ডা মাথায় উত্তর বের করতে হয়। তাই এই অংশে ভালো করতে হলে গণিতের ভিত্তিটা মজবুত করতে হবে। বুঝে বুঝে প্রতিদিন নিয়মিত গণিত অনুশীলন করতে হবে। গণিতের ভিত্তি মজবুত না থাকলে আজ থেকেই শুরু করে দিন লড়াই।

গণিতের জন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ২ ঘণ্টা সময় বরাদ্দ রাখুন। গণিতের ভিত্তি মজবুত করার জন্য ইন্টারনেটের বিভিন্ন ওয়েবসাইটের সাহায্য নেওয়া যেতে পারে। এ ছাড়া ইউটিউবেও গণিতের প্রস্তুতির জন্য বেশ কয়েকটি ভালো চ্যানেল রয়েছে। সেখান থেকে ভিডিও দেখেও গণিত শেখা যেতে পারে। গণিতের সূত্রগুলো লিখে পড়ার টেবিলের সামনে টানিয়ে তাতে বারবার চোখ বুলানো যেতে পারে। গণিতের ভিত্তি মজবুত হলে অল্প সময়ে এমসিকিউ গণিতের উত্তর করার জন্য শর্টকাট নিয়ম শেখা যেতে পারে।

তবে ভুলেও শুরুতে শর্টকাট নিয়ম শিখবেন না।

বিগত সালের প্রশ্নগুলো বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, বাস্তব সংখ্যা, লসাগু, গসাগু, শতকরা, সরল ও যৌগিক মুনাফা, অনুপাত ও সমানুপাত, লাভ ও ক্ষতি, বীজগাণিতিক সূত্রাবলি, সরল, বহুপদী উত্পাদক, সূচক, লগারিদম, কোণ, ত্রিভুজ ইত্যাদি টপিক থেকে সাধারণত বেশি প্রশ্ন আসে। সহায়ক বই হিসেবে বাজারের ভালো মানের একটি গাইড বই ও ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণির একাডেমিক গণিত বইগুলো অনুশীলন করতে হবে।



সাধারণ জ্ঞান : সাধারণ জ্ঞান কয়েক ধরনের প্রশ্ন এসে থাকে। স্থায়ী সাধারণ জ্ঞান ও সাম্প্রতিক সাধারণ জ্ঞান। এ ছাড়া সাধারণ জ্ঞান অংশে দৈনন্দিন বিজ্ঞান, কম্পিউটার ও তথ্য-প্রযুক্তি থেকেও প্রশ্ন এসে থাকে। সাধারণ জ্ঞানে ভালো প্রস্তুতির জন্য নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা পড়ার বিকল্প নেই। বাজারের প্রচলিত ভালো মানের একটি গাইড বই থেকে গুরুত্বপূর্ণ টপিকগুলো পড়তে হবে। যেমন—ভাষা আন্দোলন, মুক্তিযুদ্ধ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বাংলাদেশের সংবিধান, সরকারব্যবস্থা, জাতীয় সম্পদ, জাতীয় অর্জন, অর্থ বাজেট, পুরস্কার, চলচ্চিত্র, খেলাধুলা, আন্তজার্তিক রাজনীতি, জাতিসংঘসহ বিভিন্ন সংস্থা ও সংগঠন, বৈশ্বিক চুক্তি, সম্মেলন প্রভৃতি টপিক ভালো করে পড়তে হবে। বিগত সালের বিভিন্ন নিয়োগ পরীক্ষায় আসা প্রশ্নগুলো ব্যাখ্যাসহ পড়তে পারলে ভালো। এ ছাড়া অডিটর সম্পর্কিত কিছু প্রশ্নও আসতে দেখা গেছে।

কম্পিউটার অংশে প্রস্তুতির জন্য মাধ্যমিকের কম্পিউটার, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বই থেকে প্রস্তুতি নেওয়া যেতে পারে। আর দৈনন্দিন বিজ্ঞানের প্রস্তুতির জন্য নবম-দশম শ্রেণির সাধারণ বিজ্ঞান বইটা থেকে প্রস্তুতি নিতে পারলে ভালো হয়। এ ছাড়া দৈনিক পত্রিকার তথ্য-প্রযুক্তি পাতা পড়লে বেশ কাজে দেবে।









আবেদন শুরুঃ ০৫ এপ্রিল ২০২০ তারিখ সকাল ১০:০০ টা।
আবেদনের শেষঃ ০৫ মে ২০২০ তারিখ বিকাল ০৫:০০ টা পর্যন্ত।

আবেদনের নিয়ম
আগ্রহী প্রার্থীরা অনলাইনে http://cga.teletalk.com.bd ওয়েবসাইটের মাধ্যমে আবেদন করতে পারবেন।



No comments:

Post a Comment