যারা বিদেশ যাওয়ার বৈধ ভিসা পেয়েছেন কিন্তু বিদেশ যাওয়া টাকা নিয়ে চিন্তিত অথবা সব কিছু ঠিকঠাক থাকা সত্ত্বেও শুধুমাত্র টাকার অভা্বে যেতে পারছেন না, তাদের দুশ্চিন্তা দূর করার জন্য বিদেশ গমনেচ্ছুদের বিদেশ যাওয়া ঋণ দিচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকসহ আরও অন্যান্য ব্যাংক।
টাকা না থাকলেও শুধু বিদেশে চাকরি পেলে আপনাকে ঋণ দেবে ব্যাংক। সে টাকায় আপনি বিদেশ যেতে পারবেন। বেতন পেয়ে ওই টাকা ব্যাংকের মাধ্যমে দেশে পাঠিয়ে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হচ্ছে প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক, সোনালী, অগ্রণী,
পূবালী, এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক। তারা ৯ থেকে ১৪ শতাংশ সুদে এই ঋণ দিচ্ছে। নিচে কয়েকটি ব্যাংকের নাম ও ঋণ নেয়ার নিয়ম এবং প্রক্রিয়া তুলে ধরা হলোঃ
প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক
প্রবাসীদের জন্য সরকার প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক চালু করেছে। প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংক বিদেশ যেতে ইচ্ছুকদের স্বল্প সুদে ঋণ দিয়ে থাকে। তাদের প্রকল্পের নাম ‘অভিবাসন ঋণ প্রকল্প’। বিদেশ যেতে ইচ্ছুক কিন্তু আর্থিকভাবে খুব বেশি স্বচ্ছল নয়। তাদের জন্যই
জামানত ছাড়া সরকারিভাবে ঋণ দিচ্ছে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক। এখানে ঋণ পাওয়ার
জন্য বাড়তি কোনো টাকা খরচ করতে হয় না।
আবেদনের নিয়ম:
প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক থেকে ঋণ পাওয়ার পূর্বশর্ত হচ্ছে বিদেশে যাওয়ার ভিসা
নিশ্চিত হতে হবে। ভিসা পাওয়ার পর প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ প্রবাসীকল্যাণ
ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর ঋণের আবেদন করতে হবে। এ সময়ে প্রয়োজন
হয় নিজের হাতে লেখা অভিবাসন ব্যয়ের বিবরণী, আবেদনকারির জামিনদারদের
প্রত্যেকের দুই কপি সত্যায়িত ছবি, ভোটার আইডি কার্ডের সত্যায়িত ফটোকপি
এবং বর্তমান ও স্থায়ী ঠিকানাসহ পৌরসভা বা ইউনিয়ন পরিষদ থেকে নাগরিক
সার্টিফিকেটের সত্যায়িত ফটোকপি। এ ছাড়া আবেদনকারীর সব আয় নিযুক্ত
প্রতিনিধির মাধ্যমে এই ব্যাংকে পাঠানো হবে মর্মে ১৫০ টাকার নন-জুডিশিয়াল
স্ট্যাম্পে অঙ্গিকারনামাও তৈরি করতে হবে। ভিসা সঠিক কি না, তা ব্যাংক
থেকে যাচাই করা হয় বলে ভিসাসংক্রান্ত কাগজপত্রও দেখানোর প্রয়োজন পড়ে। এসব
কাগজ পত্রের মধ্যে রয়েছে দূতাবাস থেকে ইস্যু করা ভিসা বা লেবার কন্ট্রাক্ট,
শারীরিক যোগ্যতার সার্টিফিকেট, বিএমইটি থেকে পাওয়া স্মার্ট কার্ড,
ম্যানপাওয়ার ক্লিয়ারেন্স কার্ড, প্রশিক্ষণ ও অভিজ্ঞতার সার্টিফিকেট,
বিমানের টিকিট, পাসপোর্ট ইত্যাদি। বলা হচ্ছে যে প্রবাসীকল্যাণ ব্যাংক থেকে
ঋণ নেওয়ার সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এখানে কোনো ধরনের জামানত প্রয়োজন হয়
না। তবে দুজন সক্ষম ব্যক্তিকে গ্যারান্টার বা জামিনদার হিসেবে দেখাতে হয়।
বিদেশ যাওয়ার দুই মাস পর থেকে ঋণের টাকা জমা দিতে হয়। ঋণ শোধ করা যাবে দুই
থেকে তিন বছরেও। এই ঋণে সুদের হারও কম—শতকরা ৯ ভাগ।
সাধারণত আবেদনের পর দুই দিনের মধ্যেই ঋণের টাকা পাওয়া যায়। অনেক সময় তিন
ঘণ্টার মধ্যেও ঋণ দেওয়া হয়। এটি নির্ভর করে গ্রাহকের চাহিদা এবং ভিসা সঠিক
আছে কি না তা যাচাইয়ের ওপর। ঋণ দেওয়ার সময় সরকার নির্ধারিত খরচ এবং
চাহিদার ওপর নির্ভর করে ৪০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা পর্য্ন্ত ঋণ দেওয়া হয়ে
থাকে।
৭১-৭২, পুরাতন এলিফ্যান্ট রোড, ইস্কাটন, ঢাকা – ১০০০।
ই-মেইল: info@pkb.gov.bd
ওয়েবসাইট: www.pkb.gov.bd
সোনালী ব্যাংক
সোনালি ব্যাংকের এই ঋণ প্রকল্পের নাম ‘প্রবাসী কর্মসংস্থান ঋণ
প্রকল্প’। ঋণের পরিমাণ সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা এবং পরিশোধের মেয়াদ সর্বোচ্চ ৩
বছর। বিদেশ যাওয়ার পরে দুই বছরে ২৪ কিস্তি বা তিন বছরে বা ৩৬ কিস্তিতে ঋণ
পরিশোধ করতে হবে। প্রতি মাসে একটি করে কিস্তি দিতে হবে। ঋণের সুদের হার সরল
সুদে ১২ শতাংশ।
প্রবাসী কর্মসংস্থান ঋণ প্রকল্প
| ||||||||||||||||||||||||||||||
| ||||||||||||||||||||||||||||||
ওয়েবসাইট: www.sonalibank.com.bd/pkrp | ||||||||||||||||||||||||||||||
অগ্রনী ব্যাংক
অগ্রনী ব্যাংকের প্রকল্পের নাম ‘প্রবাসী ঋণ প্রকল্প’ এবং ঋণের পরিমাণ
সর্বোচ্চ ৩ লাখ টাকা। ১৫ থেকে ১৮ মাসের কিস্তিতে অর্থাৎ সর্বোচ্চ দেড়
বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। সুদের হার ৯ শতাংশ।
অগ্রণী বিদেশ যাওয়ার লোন (abjl) এর বিস্তারিত দেখুনঃ
ওয়েবসাইট: www.agranibank.org/abjl
পূবালী ব্যাংক
পূবালী ব্যাংক তাদের প্রকল্পটির নাম দিয়েছে ‘নন-রেসিডেন্ট ক্রেডিট
স্কিম’। ঋণের পরিমাণ সর্বোচ্চ আড়াই লাখ টাকা এবং ঋণ পরিশোধের মেয়াদ ২ বছর
অর্থাৎ ২৪ মাস। মাসিক কিস্তিতে টাকা পরিশোধ করতে হবে। সুদের হার ১৩ শতাংশ।
ঝামেলামুক্ত ও দ্রুত সময়ে এ ঋণ দেওয়া হয়। উল্লেখিত নিয়ম-কানুনসহ
ঋণগ্রহীতা, গ্যারান্টার ও ব্যাংকের মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তিনামা করতে হবে।
তবে কোনো জামানতের প্রয়োজন নেই।
এনআরবি গ্লোবাল ব্যাংক
প্রকল্পটির নাম ‘এনআরবি মাইগ্রেশন লোন’। সর্বোচ্চ ঋণের পরিমাণ ৩ লাখ
টাকা এবং সুদের হার ১৪ শতাংশ। ১২, ২৪ ও ৩৬ মাসিক কিস্তিতে অর্থাৎ এক, দুই ও
তিন বছরে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। গ্রেস প্রিরিয়ড ৩ মাস। বিদেশ যাওয়ার ৩ মাস
পর থেকে ঋণের মাসিক কিস্তি পরিশোধ করতে হবে। ১৮-৫৫ বছর বয়সীদের এই ঋণ দিয়ে
থাকে ব্যাংকটি।
উল্লেখ্য যে, প্রবাসী কল্যাণ ব্যাংকের মতোই সব ব্যাংকের ঋণের আবেদন ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর করতে হবে।
অভিবাসন ঋণ / মাইগ্রেশন লোন. অভিবাসন লোন
No comments:
Post a Comment