নতুন ব্যবসার জন্য বিশেষজ্ঞের ১০ পরামর্শ

যারা ব্যবসা শুরু করতে যাচ্ছেন কিংবা ছোটখাটো ব্যবসা শুরু করেছেন, তাদের দরকার বিশেষজ্ঞ ও অভিজ্ঞদের পরামর্শ। নয়তো বড় ধরনের হোঁচট খেতে পারেন।
সিলিকন ভ্যালির ইনভাইজন কনসালটেন্ট স্টিভ টোবাক নব্য ব্যবসায়ীদের জন্য দিয়েছে বেশ কিছু টিপস। এগুলো মেনে চললে আপনি অনেক সমস্যা ও সমূহ বিপদ এড়িয়ে যেতে পারবেন।

পরামর্শগুলো জেনে নিনঃ
০১. সবার আগে অর্থের জোগান ঠিক করুন। ব্যবসার জন্য পর্যাপ্ত অর্থ ব্যাংকে জমা রাখুন। ভবিষ্যতেও যেন ঘাটতি না পড়ে তার নিশ্চিত করুন। অর্থের অভাবেই সম্ভাবনাময় ব্যবসাগুলো ব্যর্থ হয়।
০২. যেকোনো ফার্ম বা ব্যবসার ৯০ শতাংশ সমস্যার উদয় ঘটে ব্যবস্থাপনার দুর্বলতার কারণে। যখন ব্যবসার কাজ মনপুতঃ হচ্ছে না তখন প্রথম কাজ হলো ব্যবস্থাপনাকে আয়নার সামনে দাঁড় করানো। নিজেও আয়নার সামনে দাঁড়ান। কী ভুল হচ্ছে বুঝে নিন।
০৪. প্রত্যেক ব্যবসাকে এগিয়ে নেওয়ার প্রাণশক্তি হলো তার সেরা কর্মচারীরা। তাদের বিষয়ে মনোযোগী হোন। ভালো কর্মী পেলে আপনার ব্যবসা এগিয়ে যাবে। আর তাকে হারালে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।
০৬. 'হ্যাঁ' বলাটা সহজ। এটা বলতেও ভালো লাগে। তাই বেশি বেশি 'হ্যাঁ' বলুন। তবে 'না' বলতেও শিখতে হবে। এই দুই শব্দের সঠিক ব্যবহার জানুন। এই দুই শব্দের ব্যবহারে বোঝা যায় আপনি সমস্যা চিহ্নিত করতে সক্ষম এবং এ বিষয়ে সচেতন।
০৭. বেশিরভাগ উদ্যোক্তা তার ক্রেতাদের দিকে তেমন মনোযোগ দেন না। তারা পণ্যের দিকেই পুরো ধ্যান দেন। কিন্তু পণ্যের পাশাপাশি ক্রেতাদেরও মূল্য দিতে হবে। কারণ এরাই আপনার ব্যবসাকে টিকিয়ে রাখে। তারা একবার নাখোশ হয়ে ফিরে গেলে আর পাবেন না।
০৮. প্রতিষ্ঠান চালাতে অবশ্যই নিজের সামর্থ্য বিবেচনা করতে হবে। আর প্রতিষ্ঠান কীভাবে চালাতে হবে তার পদ্ধতিও মাথায় থাকতে হবে। এ দুয়ের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠান চালাতে হবে। পরিচিত মানুষদের দিয়ে কাজ করালে তাদের ভুল কথায় প্রভাবিত হবেন না।
০৯. স্বচ্ছতা কিন্তু অনেক সময়ই সমস্যা সৃষ্টি করে। তাই কৌশলী হতে হবে। যেসব বিষয় খোলাসা করা দরকার তা একবারে খোলাখুলি বলবেন। আর যা শেয়ার করা যাবে না তা করতে যাবেন না।
১০. আপনার বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পত্তিগুলো রক্ষা করুণ ও সুরক্ষিত থাকুন। বেশিরভাগ লোকই জানেন না কপিরাইট, ট্রেডমার্ক, ট্রেড সিক্রেট এবং পেটেন্টের মধ্যে পার্থক্য কী? দুঃখজনক ব্যাপার হচ্ছে, বুদ্ধিবৃত্তিক সম্পদগুলো যদি আপনি রক্ষা না করে চলেন তবে দ্রুতই প্রতিযোগিতায় নামার যোগ্যতা হারাবেন।

কিশমিশের অসাধারণ স্বাস্থ্য উপকারিতা

কিশ‌মিশ মসলা জাতীয় এক‌টি বি‌শেষ খাবার। প্র‌তি‌দি‌নের খাবারের তালিকায় হয়ত কিশমিশ থাকে না। কিন্তু কিশমিশ ব্যবহার সাধারণত হয়ে থাকে বিশেষ খাবার তৈরিতে। কেক, ফিরনি, পোলাও, কোরমা, সেমাই ইত্যাদি খাবারে অন্যান্য মশলার পাশাপাশি স্বাদ বাড়াতে ব্যবহার করা হয় কিশমিশ। অথচ কিশমিশ রাখা উচিত প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায়। কারণ ছোট থেকে বড় সবার জন্যই কিশমিশ খুবই উপকারী।

আপ‌নি হয়ত এটা জা‌নেন না যে, প্রতি ১০০ গ্রাম কিশমিশে রয়েছে:-
এনার্জি ৩০৪ কিলোক্যালরি, কার্বোহাইড্রেট ৭৪.৬ গ্রাম, ডায়েটারি ফাইবার ১.১ গ্রাম, ফ্যাট ০.৩ গ্রাম, প্রোটিন ১.৮ গ্রাম, ক্যালসিয়াম ৮৭ মিলিগ্রাম, আয়রন ৭.৭ মিলিগ্রাম, পটাশিয়াম ৭৮ মিলিগ্রাম ও সোডিয়াম ২০.৮ মিলিগ্রাম।

কিশ‌মি‌শের গুণাগুণ বা উপকারীতাঃ
এবার জেনে নিন কিশমিশের কিছু অসাধারণ গুণের কথা–

১. বয়সের ছাপ বিলম্বিত করে:
কিশমিশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, যা আমাদের শরীরের কোষগুলোকে ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা করে। ত্বক ভালো রাখে, বু‌ড়ি‌য়ে যাওয়া রক্ষা ক‌রে, বয়সের ছাপ সহজে পড়তে দেয় না।

২. মুখের স্বাস্থ্যবান্ধব:
কিশমিশ মিষ্টিজাতীয় খাবার হলেও দাঁত বা মুখের কোনো ক্ষতি করে না। বরং মুখের স্বাস্থ্য বা ওরাল হেলথের পক্ষে কিশমিশ বিশেষভাবে উপকারী। এর ফাইটোনিউট্রিয়েন্ট ওরাল ব্যাকটেরিয়া নিমূর্ল করতে সাহায্য করে।

৩. দাঁতের জন্য ভালো:
কিশমিশের শর্করা মূলত ফ্রুক্টোজ এবং গ্লুকোজ জাতীয়। ফলে দাঁতে কোনো ক্যাভিটি তৈরি হয় না। সকালের নাশতা অথবা দুপুরের সালাদে কিশমিশ রাখতে পারেন নির্দ্বিধায়।

৪. ফলের বিকল্প:
গাজর, নানা রকম ফল নিয়মিত খেতে বলা হয় দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখা ও ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বজায় রাখার জন্য। কারণ এগুলোতে থাকে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট, ভিটামিন, ক্যারোটিনয়েড ইত্যাদি। সঠিক পরিমাণে এগুলো পেতে গেলে দিনে অন্তত ৩টি ফল খাওয়া উচিত। সব সময় তা সম্ভব নাও হতে পারে। বিকল্প হিসেবে তখন খেয়ে নিতে পারেন একমুঠো কিশমিশ।

৫. শক্তি প্রদানকারী:
কিশমিশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট যা তাৎক্ষণিকভাবে শক্তি প্রদান করে। একমুঠো কিশিমিশ বাদামের সাথে মিশিয়ে খান। এতে প্রচুর পরিমাণে এনার্জি, প্রোটিন এবং ফাইবার পাবেন।

৬. কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে:
কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে কিশমিশ খুব কাজে দেয়। কোষ্ঠবদ্ধতা দূর করতে রোজ খানিকটা কিশমিশ খান।

৭. রক্তস্বল্পতা দূর করে:
কিশমিশে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম, আয়রন ও পটাশিয়াম। যা রক্তস্বল্পতা দূর করে ও রক্তের সংবহন ঠিক রাখতে সাহায্য করে।

৮. যৌন শ‌ক্তি বৃ‌দ্ধি ক‌রে:
কিশ‌মি‌শে যৌবন ধ‌রে রাখার উপাদান অ‌নেক। এ‌তে যেমন ক্যাল‌রি থা‌কে; তেম‌নি ক্যাল‌সিয়া‌মের প‌রিমানও অ‌নেক বে‌শি বিদ্যমান। তাছাড়া কিশ‌মি‌শের পু‌ষ্টি উপাদানগু‌লো যৌন শ‌ক্তি বৃ‌দ্ধি‌তে বি‌শেষভা‌বে কাজ ক‌রে থা‌কে। এজন্য প্র‌তি‌দিন সকা‌লে কিছু কিশ‌মিশ খে‌তে হ‌বে।

জি‌পি‌তে মাত্র ১৭৯ টাকায় ৪ জি‌বি ইন্টার‌নেট

গ্রামীন‌ফোন গ্রাহকরা মাত্র ১৭৯ টাকায় ৪ জি‌বি ইন্টার‌নেট পা‌চ্ছেন ৭ দি‌নের জন্য!

এছাড়াও ৬ জুলাই পর্যন্ত কেনা ইন্টারনেট প্যাক-এ ২০% বোনাস প্রযোজ্য হবে।

Grameenphone 4GB Internet Only 179TK

জি‌পি‌তে ১৭৯ টাকায় ৪ জিবি ইন্টারনেট ৭ দিনের জন্যে। (এসডি, ভ্যাট, এসসি অন্তর্ভুক্ত)।
জি‌পি ইন্টার‌নেট অফার‌টি অ্যাক্টিভেট করতে ডায়াল করুন *১২১*৩০৮৪#
পরবর্তী নোটিশ না দেয়া পর্যন্ত ‌জি‌পি অফার চলবে।
১৭৯ টাকায় ৪ জিবি ইন্টারনেট অফার সকল জিপি গ্রাহকের জন্যে প্রযোজ্য।
অটো রিনিউয়াল প্রযোজ্য নয়।
ইন্টারনেট ভলিউম শেষ হবার পর ইন্টারনেট ব্যবহারে কাস্টমার এর টাকা ১.২২ /MB (SD+VAT+SC সহ) চার্জ প্রযোজ্য হবে সর্বোচ্চ ২৪৪ টাকা পর্যন্ত (SD+VAT+SC সহ)।
গ্রামীন‌ফো‌নের অফার টি সক্রিয় থাকা অবস্থায় গ্রাহক পুনরায় এই প্যাক (১৭৯ টাকায় ৪ জিবি ) ক্রয় করলে অব্যবহৃত ডাটা ভলিউম নতুন প্যাকের সাথে যোগকরা হবে।
ইন্টারনেট ব্যালেন্স চেক করতে ডায়াল করুন *১২১*১*৪#
ইন্টারনেট প্যাকেজ বাতিল করতে ডায়াল করুন *১২১*৩০৪১#
এই অফারটি skitto গ্রাহকদের জন্য প্রযোজ্য নয়।

@Grameenphone 4GB Internet 179tk, গ্রামীন‌ফোন নতুন ইন্টার‌নেট অফার, gp 4gb internet offer, ‌জি‌পি অফার, gp eid offer, gp 4gb 179tk offer, জি‌পি ইন্টার‌নেট অফার, gp new internet offer

জি‌পি ২০৪৯ এম‌বি মাত্র ১২৯ টাকায়

গ্রামীন‌ফোন গ্রাহকরা মাত্র ১২৯ টাকায় ২জি‌বি প‌রিমাণ ইন্টার‌নেট পা‌চ্ছেন! যার মেয়াদ ৭ দিন।।

এছাড়াও ৬ জুলাই পর্যন্ত কেনা ইন্টারনেট প্যাক-এ ২০% বোনাস প্রযোজ্য হবে।

Grameenphone 2049MB Internet at Tk 129 for 7 Days

গ্রামীন‌ফো‌নে ২০৪৯ মেগাবাইট ইন্টারনেট মাত্র ১২৯ টাকায় (এসডি+ভ্যাট+এসসি সহ) ৭ দিনের মেয়াদে।
গ্রামীন‌ফো‌নের ইন্টার‌নেট অফারটি উপভোগ করতে গ্রাহকদের *121*3058# ডায়াল করতে হবে।
পরবর্তী ঘোষণা না দেয়া পর্যন্ত জি‌পির 2049MB 129TK অফারটি চলবে।
অফারটি গ্রামীন‌ফো‌নের সকল প্রিপেইড ও পোস্টপেইড গ্রাহকদের জন্য প্রযোজ্য।
অফার চলাকালীন সময়ে জি‌পি গ্রাহক ইন্টার‌নেট অফারটি যত খুশি ততবার নিতে পারবেন।
ইন্টারনেট ভলিউম শেষ হবার পর ইন্টারনেট ব্যবহারে কাস্টমার এর টাকা ১.২২ /MB (SD+VAT+SC সহ) চার্জ প্রযোজ্য হবে সর্বোচ্চ ২৪৪ টাকা পর্যন্ত (SD+VAT+SC সহ)।
অব্যবহৃত ডাটা ভলিউম পরবর্তীতে নেয়া ডাটার সাথে যোগ হবে যদি মেয়াদ থাকাকালীন সময়ে একই প্যাক ক্রয় করেন।
ইন্টারনেট ব্যালেন্স জানতে ডায়াল করুন
*121*1*4#
ইন্টারনেট অফারটি বাতিল করতে ডায়াল করুন *121 * 3041#
এই অফারটি skitto গ্রাহকদের জন্য প্রযোজ্য নয়।

@Gp offer, GP 2049MB for 7 Days at Tk 129, gp eid offer, grameenphone internet offer, 2017

হজম ঠিক রাখবেন যেসব উপা‌য়ে

হজম ঠিক রাখতে ৬ পরামর্শ

উৎসবের নিমন্ত্রণে নানা রকমের উপাদেয় খাবার খেতে তো ভালোই লাগে। কিন্তু হজম ঠিকমতো না হলেই মন-মেজাজ খারাপ হয়। বেশি ভারী ও তেল-মসলাযুক্ত খাবার খেয়ে শুরু হতে পারে পেটব্যথা, পেট ফাঁপা, ঢেকুর ওঠা, পায়ুপথে বাতাস নির্গমন বা ডায়রিয়ার মতো সমস্যা। এগুলোর বেশির ভাগই হজমে গন্ডগোলের কারণে হয়ে থাকে।

বদহজম, অ্যাসিডিটি, পেটে অতিরিক্ত গ্যাস, ঢেকুর ও বাতাস নির্গমনের মতো বিরক্তিকর সমস্যা থেকে রেহাই পেতে কিছু পরামর্শ মেনে চলতে পারেন:

* খাওয়ার সময় তাড়াহুড়া করবেন না। সময় নিয়ে, ধীরে-সুস্থে ভালো করে চিবিয়ে খাওয়া শেষ করবেন। তাড়াহুড়া করে খেতে গিয়ে খাবার ঠিকমতো হজম হয় না। তা ছাড়া পেটে খানিকটা বাতাসও ঢুকে যায়।

* খাওয়ার সময় ও মাঝখানে বেশি পানি পান করলে পাকস্থলীর অ্যাসিড দুর্বল হয়ে পড়ে এবং ভালো করে খাবার ভাঙতে পারে না। তাই খাওয়ার অন্তত ৩০ মিনিট আগে এক গ্লাস পানি পান করুন। খাওয়ার সময় বেশি পানি নয়। খাওয়া শেষে আবার একটু সময় পর পানি পান করবেন।

* একেক জনের একেক ধরনের খাবার হজম করতে সমস্যা হয়। যাঁদের ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স আছে, তাঁরা দুধ ও দুধের তৈরি খাবার খেতে পারেন না। অনেকের মিষ্টিজাতীয় দ্রব্যে (যেমন: ফলের রস বা জুস, চকলেট ইত্যাদি) সমস্যা হয়। কারও সমস্যা হয় রুটি, যব বা ডালজাতীয় খাবারে। কার কোনটাতে সমস্যা, সেটা তিনিই ভালো ধরতে পারবেন। তাই বদহজমের রোগীর দুধ নিষেধ বা মিষ্টি নিষেধ—এ জাতীয় কথা ঢালাওভাবে বলা যায় না।

* ধূমপান, চুইংগাম চিবোনো ও স্ট্র দিয়ে জুস জাতীয় কিছু খেলে পেটে গ্যাস হওয়ার প্রবণতা বাড়ে। তাই এ ধরনের অভ্যাস বর্জন করুন।

* পেটে গ্যাস সমস্যা তৈরি করতে পারে কৃত্রিম চিনি, অতিরিক্ত তেল-চর্বিযুক্ত খাবারও। তাই এগুলো খেতে হবে হিসাব করে।

* কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পেট ফাঁপে। তাই কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে আঁশযুক্ত খাবার খান, পর্যাপ্ত পানি পান করুন।

ডা. মৌসুমী মরিয়ম সুলতানা
মেডিসিন বিশেষজ্ঞ, ইব্রাহিম জেনারেল হাসপাতাল, মিরপুর, ঢাকা

ছোলার ৫টি পুষ্টিগুণ

ছোলা অত্যন্ত পুষ্টিকর একটি খাবার। প্রতিদিনের ইফতারিতে মুড়ি-পিঁয়াজুর সাথে ছোলা না হলে কী ইফতার জমে! দীর্ঘক্ষণ ভিজিয়ে রেখে ইফতারিতে তেল-মশলায় ভাজা ছোলা আমাদের সংস্কৃতি অংশ হয়ে গেছে। ছোলায় আমিষের পরিমাণ মাংস বা মাছের আমিষের পরিমাণের প্রায় সমান। ছোলার ডাল, তরকারিতে ছোলা, সেদ্ধ ছোলা ভাজি, ছোলার বেসন- নানান উপায়ে ছোলা খাওয়া যায়। ছোলার কিছু চমকপ্রদ গুণাগুণ হলো-

১. রমজানে জনপ্রিয় ছোলা
রমজান মাসে ইফতারের সময় জনপ্রিয় খাবার হলো ছোলা। আমাদের দেশে ছোলার ডাল নানাভাবে খাওয়া হয়। ছোলা দেহকে করে শক্তিশালী, হাড়কে করে মজবুত, রোগ প্রতিরোধক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য এর ভূমিকা অপরিহার্য।
২. হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে
গবেষকরা দেখিয়েছেন যে, খাবারে ছোলা যুক্ত করলে টোটাল কোলেস্টেরল এবং খারাপ কোলেস্টেরল এর পরিমাণ কমে যায়। ছোলাতে দ্রবণীয় এবং অদ্রবণীয় উভয় ধরনের খাদ্য আঁশ আছে যা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে দেয়। আঁশ, পটাসিয়াম, ভিটামিন ‘সি’ এবং ভিটামিন বি-৬ হৃদযন্ত্রের স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সাহায্য করে। ফলে হৃদরোগের ঝুঁকি কমে যায়।
৩. রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ছোলা
আমেরিকান মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণায় দেখানো হয় যে, যে সকল অল্পবয়সী নারীরা বেশি পরিমাণে ফলিক এসিডযুক্ত খাবার খান তাদের হাইপারটেনশন এর প্রবণতা কমে যায়। যেহেতু ছোলায় বেশ ভাল পরিমাণ ফলিক এসিড থাকে সেহেতু ছোলা খেলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।
৪. ক্যান্সার রোধে:
ফলিক এসিড রক্তের অ্যালার্জির পরিমাণ কমিয়ে এ্যজমার প্রকোপ কমিয়ে দেয়। নিয়মিত ছোলা খান এবং সুস্হ থাকুন। কোরিয়ান গবেষকরা তাদের গবেষণায় প্রমাণ করেছেন যে, বেশি পরিমাণ ফলিক এসিড খাবারের সাথে গ্রহণের মাধ্যমে নারীরা কোলন ক্যান্সার এবং রেক্টাল ক্যান্সার এর ঝুঁকি থেকে নিজিদেরকে মুক্ত রাখতে পারেন।
৫. ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে ও যৌনশক্তি বৃদ্ধিতে
ছোলার শর্করা বা কার্বোহাইডেটের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কম। তাই ডায়াবেটিক রোগীদের জন্য ছোলার শর্করা ভাল। প্রতি ১০০ গ্রাম ছোলায় ক্যালসিয়াম আছে প্রায় ২০০ মিলিগ্রাম, লৌহ ১০ মিলিগ্রাম, ও ভিটামিন এ ১৯০ মাইক্রোগ্রাম। এছাড়া আছে ভিটামিন বি-১, বি-২, ফসফরাস ও ম্যাগনেসিয়াম। এর সবই শরীরের উপকারে আসে। যৌনশক্তি বৃদ্ধিতে এর ভূমিকা যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। ছোলা বা বুটের শাকও শরীরের জন্য ভীষণ উপকারী। প্রচুর পরিমাণে ডায়াটারি ফাইবার বা আঁশ রয়েছে এই ছোলায় ও ছোলার শাকে। ডায়াটারি ফাইবার খাবারে অবস্থিত পাতলা আঁশ, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে।

তাই শুধু রমজান মাস নয়, ১২ মাসেই ছোলা হোক আপনার সঙ্গী। কাঁচা ছোলা ভিজিয়ে কাঁচা আদার সঙ্গে খেলে শরীরে আমিষ ও অ্যান্টিবায়োটিকের চাহিদা পূরণ হয়। আমিষ মানুষকে শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যবান বানায় এবং অ্যান্টিবায়োটিক যে কোনো অসুখের জন্য প্রতিরোধ গড়ে তোলে।

চাক‌রি‌তে 'জেলা কোটা'র নতুন হার

"সর্বোচ্চ ঢাকা, সর্বনিম্ন বান্দরবান"

সরকারি, স্বায়ত্তশাসিত, আধা-স্বায়ত্তশাসিত, বিভিন্ন করপোরেশন ও দপ্তরে সরাসরি নিয়োগে জেলার জনসংখ্যার ভিত্তিতে জেলাওয়ারি পদ বিতরণের হার (কোটা) নতুন করে নির্ধারণ করে দিয়েছে সরকার।
জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় ২০১১ সালের আদমশুমারির পরিসংখ্যার অনুযায়ী এই হার নির্ধারণ করে পরিপত্র জারি করেছে।
আগে ২০০১ সালের আদমশুমারির পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে ২০০৯ সালে ২০ ডিসেম্বর জেলাওয়ারি কোটার হার নির্ধারণে করে দিয়েছিল সরকার।
জনসংখ্যা অনুযায়ী সরকারি চাকরিতে ঢাকা জেলার জনগণ সর্বোচ্চ ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ এবং বান্দরবান জেলার মানুষ সব থেকে কম শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ কোটা পাবেন।
পরিপত্রে বলা হয়েছে, ২০১১ সালে আদমশুমারির নতুন রিপোর্ট প্রকাশ হওয়া, বিভিন্ন জেলার জনসংখ্যার হ্রাস-বৃদ্ধি এবং নতুন করে দুটি বিভাগ সৃষ্টি হওয়ায় জেলাওয়ারি পদ বিতরণের শতকরা হার সংশোধন করা হয়েছে।
জেলাওয়ারি পদ বিতরণের শতকরা হার নতুন করে নির্ধারণ করে এ সংক্রান্ত আগের পরিপত্র বাতিল করেছে সরকার।

কোন জেলার কত কোটা

ঢাকা বিভাগ : ঢাকা ৮ দশমিক ৩৬ শতাংশ, গাজীপুর ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ, মানিকগঞ্জ শূন্য দশমিক ৯৭ শতাংশ, মুন্সীগঞ্জ এক শতাংশ, নারায়ণগঞ্জ ২ দশমিক ০৫ শতাংশ, নরসিংদী ১ দশমিক ৫৪ শতাংশ, ফরিদপুর ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ, গোপালগঞ্জ শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশ, মাদারীপুর শূন্য দশমিক ৮১ শতাংশ, রাজবাড়ী শূন্য দশমিক ৭৩ শতাংশ, শরিয়তপুর শূন্য দশমিক ৮০ শতাংশ, কিশোরগঞ্জ ২ দশমিক ০২ শতাংশ এবং টাঙ্গাইল ২ দশমিক ৫০ শতাংশ কোটা পাবে।

ময়মনসিংহ বিভাগ : ময়মনসিংহ ৩ দশমিক ৫৫ শতাংশ, জামালপুর ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ, নেত্রকোণা ১ দশমিক ৫৫ শতাংশ এবং শেরপুর জেলা শূন্য দশমিক ৯৪ শতাংশ কোটা পেয়েছে।

চট্টগ্রাম বিভাগ : চট্টগ্রাম ৫ দশমিক ২৯ শতাংশ, বান্দরবান শূন্য দশমিক ২৭ শতাংশ, কক্সবাজার ১ দশমিক ৫৯ শতাংশ, ব্রাহ্মবাড়িয়া ১ দশমিক ৯৭ শতাংশ, চাঁদপুর ১ দশমিক ৬৮ শতাংশ, কুমিল্লা ৩ দশমিক ৭৪ শতাংশ, খাগড়াছড়ি শূন্য দশমিক ৪৩ শতাংশ, ফেনী এক শতাংশ, লক্ষ্মীপুর ১ দশমিক ২০ শতাংশ, নোয়াখালী ২ দশমিক ১৬ শতাংশ, রাঙ্গামাটি শূন্য দশমিক ৪১ শতাংশ কোটা পেয়েছে।
রাজশাহী বিভাগ : রাজশাহী ১ দশমিক ৮০ শতাংশ, জয়পুরহাট শূন্য দশমিক ৬৩ শতাংশ, পাবনা ১ দশমিক ৭৫ শতাংশ, সিরাজগঞ্জ ২ দশমিক ১৫ শতাংশ, নওগাঁ ১ দশমিক ৮১ শতাংশ, নাটোর ১ দশমিক ১৮ শতাংশ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ১ দশমিক ১৪ শতাংশ এবং বগুড়া জেলা ২ দশমিক ৩৬ শতাংশ কোটা পাবে।
রংপুর বিভাগ : রংপুর ২ শতাংশ, দিনাজপুর ২ দশমিক ০৮ শতাংশ, গাইবান্ধা ১ দশমিক ৬৫ শতাংশ, কুড়িগ্রাম ১ দশমিক ৪৪ শতাংশ, লালমনিরহাট শূন্য দশমিক ৮৭ শতাংশ, নীলফামারী ১ দশমিক ২৭ শতাংশ, পঞ্চগড় শূন্য দশমিক ৬৯ শতাংশ, ঠাকুরগাঁও শূন্য দশমিক ৯৭ শতাংশ কোটা পেয়েছে।
খুলনা বিভাগ : খুলনা ১ দশমিক ৬১ শতাংশ, যশোর ১ দশমিক ৯২ শতাংশ, ঝিনাইদহ ১ দশমিক ২৩ শতাংশ, মাগুরা শূন্য দশমিক ৬৪ শতাংশ, নড়াইল শূন্য দশমিক ৫০ শতাংশ, বাগেরহাট ১ দশমিক ০২ শতাংশ, সাতক্ষীরা ১ দশমিক ৩৮ শতাংশ, চুয়াডাঙ্গা শূন্য দশমিক ৭৮ শতাংশ, কুষ্টিয়া ১ দশমিক ৩৫ শতাংশ এবং মেহেরপুর জেলা শূন্য দশমিক ৪৫ শতাংশ কোটা পেয়েছে।
বরিশাল বিভাগ : বরিশাল ১ দশমিক ৬১ শতাংশ, ভোলা ১ দশমিক ২৩ শতাংশ, ঝালকাঠি শূন্য দশমিক ৪৭ শতাংশ, পিরোজপুর শূন্য দশমিক ৭৭ শতাংশ, বরগুনা শূন্য দশমিক ৬২ শতাংশ এবং পটুয়াখালী ১ দশমিক ০৭ শতাংশ কোটা পেয়েছে।
সিলেট বিভাগ : সিলেট ২ দশমিক ৩৮ শতাংশ, মৌলভীবাজার ১ দশমিক ৩৩ শতাংশ, সুনামগঞ্জ ১ দশমিক ৭১ শতাংশ এবং হবিগঞ্জ জেলা ১ দশমিক ৪৫ শতাংশ কোটা পেয়েছে।

চিকুনগুনিয়া প্রতিরোধে করণীয়

চিকুনগুনিয়া হচ্ছে মশাবাহিত একটি রোগ। এক ধরণের ভাইরাস দিয়ে এই রোগ হয়। আমাদের অতি পরিচিত ডেঙ্গু জ্বরের সাথে এই রোগের বেশ কিছুটা মিল রয়েছে। ডেঙ্গুর মতো এ ভাইরাসটিও এডিস ইজিপ্টাই এবং এডিস অ্যালবপ্টিকাস মশার কামড়ের মাধ্যমে এই রোগ ছড়ায়। চিকুনগুনিয়া ডেঙ্গুর মতই মানবদেহে থেকে মশা এবং মশা থেকে মানবদেহে ছড়িয়ে থাকে। চিকুনগুনিয়া মূলত: আফ্রিকান একটি রোগ।
তবে সম্প্রতি এটি বাংলাদেশে ছড়িয়ে পড়ছে। কিন্তু এটি নিয়ে আতঙ্ক বা উদ্বেগের তেমন কিছু নেই। এর কোন নির্দিষ্ট ওষুধ নেই। প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ খেলে এবং সঠিকভাবে বিশ্রাম নিলে এ রোগ ভালো হয়ে যায়।এই রোগের সুপ্তিকাল ৩ থেকে ৭ দিন পর্যন্ত।

চিকুনগুনিয়ার লক্ষণগুলো
অন্যান্য সকল ভাইরাস জ্বরের মতোই। জ্বরের সাথে হাড়ের জোড়ায় তীব্র ব্যথাই এই রোগের একমাত্র স্বতন্ত্র উপসর্গ। সাথে থাকে মাথা ব্যথা, চোখ জ্বালাপোড়া, বমি ভাব, বমি, শারীরিক দুর্বলতা, সর্দি-কাশি ইত্যাদি। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিন থেকে চার দিনের মধ্যে জ্বর সেরে যায়। তবে অস্থিসন্ধির ব্যথা মাসের পর মাস থাকতে পারে। ব্যথার তীব্রতাও প্রচণ্ড। ফলে রোগীর স্বাভাবিক হাঁটাচলা, হাত দিয়ে কিছু ধরা এমনকি হাত মুঠ করতেও বেশ কষ্ট হতে পারে। বর্তমানে চিকুনগুনিয়া অনেক দেখা যাচ্ছে। সুতরাং লক্ষণ দেখে সন্দেহ হলে ল্যাবটেস্ট করা উচিত। অসুস্থতার প্রথম ৫ দিনের মধ্যে পিসিআর টেস্ট করলে রোগ ধরা যায়। ভাইরাসের অ্যান্টিবডি দেখেও রোগ নির্ণয় করা যায়। তবে তার জন্য উপসর্গ সূচনা হওয়ার ৫ বা তার বেশি দিনের পরে সিরাম নমুনা সংগ্রহ করা উচিত। যদি প্রাথমিক ফলাফল নেতিবাচক হয় এবং ডেঙ্গু বা চিকুনগুনিয়া সন্দেহের সাথে থাকে, তবে অসুস্থতার পর সাত দিন বা তারও পরে আইজিএম অ্যান্টিবডি সনাক্ত করতে পুন:পরীক্ষা করা যেতে পারে।

অন্যান্য ভাইরাস জ্বরের মতো চিকুনগুণিয়া রোগের নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা নেই। এর চিকিৎসা মূলত রোগের উপসর্গগুলো কমানো। ধীরে ধীরে রোগটি ভাল হয়ে যায়। রোগীকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে রাখতে হবে এবং প্রচুর পানি এবং অন্যান্য তরল জাতীয় খাবার খেতে দিতে হবে। জ্বরের জন্য প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধই যথেষ্ট। রোগীকে আবার যেন মশা না কামড়ায় এ জন্য তাকে মশারির ভেতরে রাখা উচিত। কারণ আক্রান্ত রোগীকে মশা কামড় দিয়ে কোন সুস্থ লোককে সেই মশা কামড়ালে ওই ব্যক্তিও এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে।

এই রোগ প্রতিরোধে কোন টিকা বা ভ্যাক্সিন নেই। সুতরাং ব্যক্তিগত সচেতনতাই চিকুনগুনিয়া ভাইরাস সংক্রমণ প্রতিরোধ ভূমিকা রাখতে পারে। মশা কামড় থেকে বেঁচে থাকাই চিকুনগুনিয়া থেকে বাঁচার সবচেয়ে ভালো উপায়। শরীরের বেশির ভাগ অংশ ঢাকা রাখা (ফুল হাতা শার্ট এবং ফুল প্যান্ট পরা), জানালায় নেট লাগানো, প্রয়োজন ছাড়া দরজা-জানালা খোলা না রাখা, ঘুমানোর সময় মশারি ব্যবহার করা এবং শরীরে মশা প্রতিরোধক ক্রিম ব্যবহার করার মাধ্যমে মশার কামড় থেকে বাঁচা যায়।
মশার জন্মস্থান ধ্বংস করতে হবে। আবাসস্থল ও এর আশপাশে মশার প্রজনন ক্ষেত্র নষ্ট করতে হবে। বাসার আশপাশে ফেলে রাখা মাটির পাত্র, কলশী, বালতি, ড্রাম, ডাবের খোসাসহ যেসব জায়গায় পানি জমতে পারে, সেখানে এডিস মশা প্রজনন করতে পারে। এসব স্থানে যেন পানি জমতে না পারে সে ব্যাপারে লক্ষ রাখতে হবে এবং নিয়মিত বাড়ির আশ-পাশে পরিষ্কার রাখতেই হবে। তাহলেই কেবল চিকুনগুনিয়ার হাত থেকে আমরা সকলেই নিরাপদ থাকতে পারবো।

ডা.মো.ফজলুল কবির পাভেল
রেজিস্টার (মেডিসিন)
রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল

ঈদে ভাড়া বে‌শি নি‌লে অভিযোগ করবেন কোথায়?

প্রতিবছরই দুই ঈদে অনিয়মকে নিয়ম মেনেই বাড়তি ভাড়া আদায় করে বাস মালিকরা। কর্তাব্যক্তিরা বলছেন, ‘ঈদে ঘরমুখো মানুষের কাছে বাড়তি ভাড়া আদায় করা যাবে না, বাড়তি ভাড়া আদায় অবৈধ।
প্রমাণ হলে শাস্তি হবে। ’ তবু কর্তাব্যক্তিদের এসব হুঁশিয়ারি উপেক্ষা করেই চলে বাড়তি ভাড়া আদায়ের মহা উৎসব! যুক্তি—‘ঈদের সময় বাস ঢাকায় ফিরতিকালে যাত্রী পায় না, তাই একটু বেশি নেয়!’ অন্যদিকে বাড়তি ভাড়া আদায়ের শাস্তির জন্য আইন আছে; কিন্তু শাস্তি কী বা অভিযোগ কোথায় জানাতে হবে তা জানা নেই বেশির ভাগ যাত্রীরই। এই যখন পরিস্থিতি, তখন রাজধানী ঢাকায় বসবাসরত প্রায় পৌনে দুই কোটি মানুয়ের সঙ্গে প্রতিদিন নতুন করে যুক্ত হচ্ছে এক হাজার ৪০০ নতুন মুখ। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে রাজধানীতে আসা এই মানুষগুলো পুরো বছর শিকড়ের টানে গ্রামে যেতে না পারলেও বছরের দুটি ঈদে ফেরার চেষ্টা করে। শুধু ঈদ এলেই ছুটে চলা এই মানুষগুলোর যাতায়াতের গুরুত্বপূর্ণ বড় একটি মাধ্যম হয় দূরপাল্লার বাস। কিন্তু বাড়তি আনন্দ নিয়ে বাড়ির উদ্দেশে রওনা দিলেও প্রথমেই গুনতে হয় বাড়তি ভাড়া। বিআরটিএর দেওয়া ভাড়ার তালিকা সে সময় হয়ে যায় দুই অথবা তিনের ঘরের নামতার মতো।

বিআরটিএর দেওয়া তথ্য মতে, মে ২০১৬-র সর্বশেষ নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী কিলোমিটারপ্রতি ১.৪২ টাকা হারে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। বিভাগীয় শহর, রাজধানীসহ ৩৭৬টি রোডে দূরপাল্লার বাসের ভাড়া নির্ধারণ করে দিয়েছে বিআরটিএ। অথচ ব্যতিক্রম ছাড়া ঈদের সময় বিআরটিএর নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে ১০০ থেকে ৩০০ টাকা পর্যন্ত বাড়তি ভাড়া নেওয়া হয়। বিগত কয়েক বছরের প্রেক্ষাপট বিবেচনায় এনে এবারের ঈদে ভাড়া বাড়ার আগেই গাবতলী, মহাখালী, সায়েদাবাদ, গুলিস্তান বাস টার্মিনালগুলোতে ঘুরে আসন্ন ঈদে এই পরিস্থিতিতে সাধারণ একজন যাত্রী আইনগত কী সুবিধা পেতে পারে এবং বাড়তি ভাড়া আদায়ের কোনো বৈধতা আছে কি না, সে বিষয়ে অনুসন্ধান করে কালের কণ্ঠ। এ সময় নির্ধারিত ভাড়া থেকে যেকোনো সময় বাড়তি আদায় করাটাই অপরাধ বলে জানায় বিআরটিএ কর্তৃপক্ষ। তবে অনেক চেষ্টা করেও জানা গেল না কী শাস্তি হতে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিআরটিএর এক কর্মকর্তা জানালেন, ‘বাড়তি ভাড়া আদায় অবশ্যই একটি বড় সমস্যা। মূল সমস্যার কথা কেউ বলে না। তাই এর কোনো সমাধানও সম্ভব নয়। এই বাড়তি ভাড়া নিয়ন্ত্রণ ও নির্ধারণ আসলে সরকারেরই একটি শক্তি নির্ধারণ করে। তাই এর সমাধানও অনেকটা কঠিন!’ কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে, মাত্র কয়েক হাজার বাস ব্যবসায়ীর অর্থ আর ক্ষমতার কাছে কিভাবে ১৬ কোটি সাধারণ মানুষ নতি স্বীকার করে ভোগান্তি মেনে নেবে?

গাবতলী টার্মিনালে গিয়ে দেখা গেল, কয়েকজন যাত্রী চুয়াডাঙ্গা যাওয়ার জন্য পূর্বাশা বাসের জন্য অপেক্ষা করছেন। কথা বলার চেষ্টা করতেই তাঁরা এগিয়ে এলেন এবং জানালেন, একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন তাঁরা। একজন বললেন, ‘যেতাম আরো পরে, কিন্তু ওই সময় বাড়তি ভাড়ার সঙ্গে যুক্ত হয় অসহনীয় যানজট, যা কষ্টসাধ্য ও ব্যয়বহুল। ’ মহাখালী বাস টার্মিনালে গিয়ে কয়েকজন যাত্রীর সঙ্গে কথা বললে জানালেন, ‘বাড়তি ভাড়া নেওয়া এ আর নতুন কী। প্রতিবছরই এমনটা ঘটে। পুরো বছর ভাড়া এক আর ঈদের সময় ভিন্ন।’
কাউন্টারগুলোতে গেলে কথা বলতে নারাজ অনেকেই। দু-একজন বললেন, যানজটের কারণে একবার ট্রিপ নিয়ে যেতেই কষ্ট হয়, আবার আসার সময় আসি খালি। যাত্রী পাওয়া যায় না। আসার সময়ের তেল খরচের টাকা কে দেবে! ভাড়া বাড়লেও কিছু করার নেই। আমাদের তো পোষাতে হবে!’ এ প্রসঙ্গে রাজশাহীগামী এক যাত্রীর সঙ্গে কথা বললে তিনি বলেন, ‘তাহলে কি যানজট আর নানা সমস্যার দায় আমাদের মতো সাধারণ যাত্রীদেরই নিতে হবে? বাস মালিকরাও তো সারা বছর কোনো রকম বাধা ছাড়া ব্যবসা করে যাচ্ছে। তারা কেন দায় নেবে না?’
গোপলগঞ্জ যাবেন বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া তাহেরুল ইসলাম বাপ্পি, কথা হলো গুলিস্তান বিআরটিসি টার্মিনালে—বললেন, ‘ভাই, এসেছিলাম ঈদের অগ্রিম টিকিটের জন্য, এসে জানলাম ১৫ রমজানের পর নাকি টিকিট ছাড়বে! প্রতিবছর ৩০০ টাকার টিকিট ৫০০ বা তারও বেশি টাকা দিয়ে কিনতে হয়, এবার নাকি আরো বেশি হবে টিকিটের দাম! নির্ধারিত ভাড়ার চেয়ে এত বেশি ভাড়া নেওয়ার যৌক্তিকতা খুঁজে পাই নারে ভাই।

’টুঙ্গিপাড়া এক্সপ্রেসের রাব্বি নামের এক কন্ডাক্টর বলেন, ‘ঢাকা থেকে ৪৫০ টাকার ভাড়া হবে ৬০০ টাকা আর এসি বাসে সব সময়ের ভাড়া ৫৫০ টাকা হলেও ঈদে এটা বেড়ে হতে পারে ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা। ’
ঈদে বাড়তি ভাড়া আদায়ের বৈধতার বিষয়ে বিআরটিএ সদর কার্যালয়ের পরিচালক (ইঞ্জি.) মো. নূরুল ইসলাম বলেন, ‘ভাড়ার বিষয়টি আমরাই নির্ধারণ করে থাকি। ঈদে বা অন্য যেকোনো সময় বাড়তি ভাড়া আদায়ের কোনো বৈধতা বিআরটিএ দেয় না। নির্ধারিত ভাড়ার বেশি আদায় করলে ভ্রাম্যমাণ আদালত ব্যবস্থা নেবেন, সেই সঙ্গে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তো আছেনই। এ ধরনের সমস্যার ব্যাপারে কেউ অভিযোগ করতে চাইলে আমাদের ওয়েবসাইটে (www.brta.gov.bd) গিয়ে অভিযোগের জন্য একটি ফরম পূরণ করতে হবে। তারপর কর্তৃপক্ষ ব্যবস্থা নেবে।
’শাস্তি কী হতে পারে—এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমাদের মুখপাত্র পরিচালক রোড সেফটি বলতে পারেন। ’ বিষয়টি জানতে রোড সেফটির পরিচালক শেখ মোহাম্মদ মাহবুব-ই-রাব্বানীর সঙ্গে কথা বলার জন্য দীর্ঘ সময় অপেক্ষা করলেও তাঁকে পাওয়া যায়নি।

একজন যাত্রী হিসেবে এ ধরনের ভোগান্তিতে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তর থেকে কী সুবিধা পাওয়া যেতে পারে? এ বিষয়ে কথা বললে জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের পরিচালক মঞ্জুর মোর্শেদ চৌধুরী বলেন, ‘বাড়তি ভাড়া আদায়ের বিষয়ে যদি কোনো যাত্রী ওই বাসের ড্রাইভার, কন্ডাক্টর বা মালিকের বিরুদ্ধে অভিযোগ জমা দেয়, আমরা দুই পক্ষকে ডেকে বিষয়টি জানব। তারপর প্রয়োজন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে ভোক্তা অধিকার অধিদপ্তর কেন্দ্র।’
জানা যায়, অপরাধের ধরন অনুযায়ী শাস্তি হতে পারে এক বছর থেকে তিন বছরের জেল এবং ৫০ হাজার থেকে অনধিক দুই লাখ টাকা অর্থদণ্ড বা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত করতে পারে। আদায়কৃত জরিমানার ২০ শতাংশ দেওয়া হবে অভিযোগকারীকে।
অভিযোগ করতে হবে অবশ্যই লিখিতভাবে, ফ্যাক্স, ই-মেইল (nccc@dncrp.gov.bd), ওয়েবসাইট (http://dncrp.portal.gov.bd/) এবং অফিস চলাকালে সরাসরি মোবাইলে ০১৭৭৭৭৫৩৬৬৮ নম্বরে।
এছাড়া সরাসরি কারওয়ান বাজার জাতীয় ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের অফিসে অভিযোগ করা যাবে। অভিযোগের জন্য অভিযোগ ফরম সংগ্রহ করে পূরণের সঙ্গে অবশ্যই বাড়তি ভাড়া আদায়ের টিকিট অথবা প্রমাণ পেশ করতে হবে।
ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণ আইন, ২০০৯-এর ধারা ৬০ অনুযায়ী, কোনো ব্যক্তিকে কারণ উদ্ভব হওয়ার ৩০ দিনের মধ্যে এ আইনের অধীনে অভিযোগ দায়ের করতে হবে; অন্যথায় ওই অভিযোগ গ্রহণযোগ্য হবে না।