সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষায় অংশ নিতে ১৩ হাজার পদের
বিপরীতে আবেদন করেছেন ২৪ লাখের বেশি
প্রার্থী। নিয়োগ পরীক্ষা আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে হতে পারে বলে জানিয়েছে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর।
প্রাইমারি স্কুলের
সহকারী শিক্ষক নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করার পর গত ২০১৮
সালের ১ আগস্ট থেকে
৩০ আগস্ট পর্যন্ত অনলাইনে আবেদন চাওয়া হয়। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা অধিদপ্তরের
অতিরিক্ত মহাপরিচালক সোহেল আহমেদ জানান, ১৩ হাজার ১০০টি
সহকারী শিক্ষক পদের বিপরীতে আবেদন চাওয়া হয়েছিল। এতে সারা দেশ থেকে আবেদন জমা পড়েছে ২৪ লাখের বেশি।
তুমুল প্রতিযোগিতামূলক এ পরীক্ষায় টিকতে
হলে চাই জোর প্রস্তুতি।
একাধিক দিনে পরীক্ষা
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্র জানায়, সর্বশেষ নিয়োগে প্রায় ১২ লাখ প্রার্থী
আবেদন করেছিলেন। এবার প্রার্থীসংখ্যা দ্বিগুণ। সোহেল আহমেদ জানান, নিয়োগ পরীক্ষা এক দিনে নেওয়া
সম্ভব নয়। তাই ফেব্রুয়ারি মাসের প্রতি শুক্রবার এ পরীক্ষা নিতে
মন্ত্রণালয়ের মতামত চাওয়া হয়েছে। অনুমতি পেলে ফেব্রুয়ারিতে এই পরীক্ষা নেওয়া
শুরু হবে।
পরীক্ষার আয়োজনের প্রস্তুতি চূড়ান্ত পর্যায়ে বলেও জানান তিনি। এ ছাড়া পরবর্তী
দুই মাসের মধ্যে নেওয়া হতে পারে মৌখিক পরীক্ষা।
পরীক্ষা পদ্ধতি
প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর সূত্রে জানা গেছে, লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা
নেওয়া হবে। লিখিত পরীক্ষায় ৮০ এবং মৌখিক
পরীক্ষায় বরাদ্দ ২০ নম্বর। লিখিত
পরীক্ষা হয় বহু নির্বাচনী
বা এমসিকিউ পদ্ধতিতে। সময় ১ ঘণ্টা ২০
মিনিট। ৮০টি নৈর্ব্যক্তিক প্রশ্ন থাকে। প্রতিটি প্রশ্নের পূর্ণমান ১। বাংলা, ইংরেজি,
গণিত ও সাধারণ জ্ঞান
থেকে প্রশ্ন আসে। প্রতিটি সঠিক উত্তরে ১ নম্বর পাওয়া
যাবে। প্রতিটি ভুল উত্তরে কাটা যাবে ০.২৫ নম্বর।
বাংলায় ভয় অকারণ
কুমিল্লার মুরাদনগর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক জ্যোত্স্না আরা জানান, বাংলা অংশে ব্যাকরণ থেকে বেশি প্রশ্ন আসে। ব্যাকরণ অংশে পদপ্রকরণ, শব্দ, বাক্য, ধ্বনি, সন্ধিবিচ্ছেদ, কারক বিভক্তি, সমাস থেকে প্রশ্ন করা হয়। এককথায় প্রকাশ, বাগধারা, বিপরীত শব্দ, সমার্থক শব্দ, পারিভাষিক শব্দ থেকেও প্রশ্ন করা হয়।
২০১৩ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া মুন্সী মোহাম্মদ শাহজাহান জানান, উল্লেখযোগ্য কবি-সাহিত্যিকদের জীবন ও সাহিত্যকর্ম, বাংলা
ভাষা ও সাহিত্যের ইতিহাস
সম্পর্কে জানতে হবে। গল্প, কবিতা বা উপন্যাসের রচয়িতা
থেকে প্রশ্ন বেশি আসে।
ইংরেজিতে গ্রামারে গুরুত্ব
২০১২ সালে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া নাজমা ইয়াসমিন জানান, বেসিক গ্রামার জানতে হবে। Spelling, Right forms
of verb, Antonym, Synonym থেকে
প্রশ্ন বেশি আসে। পড়তে হবে Preposition, Parts of
Speech, Tense, Transformation, Voice, Narration।
নারায়ণগঞ্জ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক তারকানাথ বণিক জানান, মুখস্থ রাখতে হবে Antonym, Synonym,
Spelling| Translation আসবেই।
গণিতে বারবার চর্চা
জ্যোৎস্না আরা জানান, গণিতের জন্য মৌলিক বিষয়গুলো যেমন সুদ-কষা, লাভ-ক্ষতি, ঐকিক নিয়ম, ভগ্নাংশ, লসাগু, গসাগু নির্ণয়, ধারাপাত এবং বীজগণিতের প্রথম পর্যায়ের কিছু অঙ্ক থেকে প্রশ্ন আসতে পারে। পুরনো পাঠ্যক্রমের ষষ্ঠ থেকে অষ্টম ও নবম-দশম
শ্রেণির গণিত বই অনুসরণ করতে
হবে। দেখে যেতে হবে এইচএসসি পর্যায়ের বইও। বীজগণিত থেকেও প্রশ্ন থাকতে পারে। জ্যামিতির সাধারণ সূত্র ও সংজ্ঞা থেকেও
প্রশ্ন আসে। প্রতিটি প্রশ্নের সমাধানের জন্য এক মিনিটের বেশি
সময় পাওয়া যায় না। তাই শিখতে হবে শর্টকাট টেকনিক।
সাধারণ জ্ঞানে সাম্প্রতিকে জোর
বাংলাদেশের স্বাধীনতা, অভ্যুদয়ের ইতিহাস, জাতীয় বিষয়াবলি থেকে প্রশ্ন আসে। আন্তর্জাতিক অংশে দক্ষিণ এশিয়া এবং এশিয়া সম্পর্কিত প্রশ্ন বেশি দেখা যায়। খেলাধুলা, সংস্থা, পুরস্কার, দিবস ইত্যাদি থেকে প্রশ্ন আসে। সাধারণ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসংশ্লিষ্ট প্রশ্ন আসতে
পারে।
২০১২ সালে প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পাওয়া কৃষ্ণ অধিকারী জানান, সাম্প্রতিক বিষয়াবলি থেকে প্রশ্ন বেশি থাকে। বিশেষত গত এক বছরের
জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিশ্বে
ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলোকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। দেখতে পারেন গোলাম মোস্তফা কিরণের ‘আজকের বিশ্ব’ ও সেলিম গাজীউর
রহমানের ‘স্বপ্নপূরণ’ বই দুটি। চোখ
রাখতে পারেন কারেন্ট অ্যাফেয়ার্সবিষয়ক সাময়িকী ও দৈনিক পত্রিকায়।
পরীক্ষার হলে করণীয়
কৃষ্ণ অধিকারীর পরামর্শ, যে প্রশ্নগুলো সহজেই
উত্তর করা যায়, তা শুরুতেই দাগিয়ে
ফেলতে হবে। কোনো প্রশ্নে বেশি সময় নষ্ট করা যাবে না, কোনো প্রশ্ন না পারলে পরের
প্রশ্নে চলে যেতে হবে। অনুমাননির্ভর উত্তরের চেয়ে না দাগানোই ভালো।
তবে চারটি অপশনের মধ্যে দুটি ভুল উত্তর বের করতে পারলে বাকি দুটির মধ্যে একটি বেছে নেওয়া যেতে পারে। প্রথমবার যেটি সঠিক বলে মনে হয়, উত্তর সঠিক হওয়ার সম্ভাবনা সেটির বেশি!
মৌখিক পরীক্ষাও গুরুত্বপূর্ণ
লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের মৌখিক পরীক্ষায় ডাকা হবে। পরিপাটি হয়ে যেতে হবে। মৌখিক পরীক্ষায় থাকবে ২০ নম্বর। প্রার্থীর
নিজের সম্পর্কে, নিজ জেলার থানা বা উপজেলার আয়তন,
জনসংখ্যা, সংস্কৃতি, জেলার ইতিহাস, বিখ্যাত ব্যক্তি, রাজনীতি ইত্যাদি সম্পর্কে প্রশ্ন করা হতে পারে। সাধারণ জ্ঞান থেকে প্রশ্ন করা হতে পারে। সমসাময়িক বিষয় থেকেও প্রশ্ন থাকে।
dpe প্রবেশপত্র ডাউনলোড ও অন্যান্য তথ্য
প্রার্থীরা http://dpe.teletalk.com.bd ওয়েবসাইট থেকে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে পারবেন। ওএমআর শিট পূরণের নির্দেশাবলি এবং পরীক্ষাসংক্রান্ত অন্যান্য তথ্য ওয়েবসাইট (www.dpe.gov.bd) থেকে পাওয়া যাবে।
১৭ তারিখের আপডেট খবরঃ
প্রাথমিকের শিক্ষক নিয়োগ পরীক্ষা মার্চে
পরীক্ষা গ্রহণের পদ্ধতি ও প্রার্থীদের আসনবিন্যাসেও পরিবর্তন আনা হবে এবারের নিয়োগ পরীক্ষায়। পাশাপাশি বসা পরীক্ষার্থীদের মধ্যে যাতে একই সেট না পড়ে সে জন্য এবার ডিজিটাল পদ্ধতিতে প্রার্থীদের প্রশ্ন সেট নির্ধারণ করা হবে। পরীক্ষার্থীর রোল নম্বরের ওপর প্রশ্ন-সেট নির্ধারণ করা হবে। এবার পরীক্ষাকেন্দ্র পরিদর্শক নিয়োগের ক্ষমতা কেন্দ্র সুপারের কাছে থাকবে না। এক প্রতিষ্ঠানের শিক্ষককে অন্য প্রতিষ্ঠানে দায়িত্ব দেয়া হবে। বুয়েটের সফটও্যায়ারের মাধ্যমে পরীক্ষার্থীর সিট-বিন্যাস, পরিদর্শক নির্বাচনসহ যাবতীয় কার্যক্রম পরিচালনা করা হবে। hhh hh
-
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নতুন করে ১৩ হাজার ১ শ’ ‘সহকারী শিক্ষক’ নিয়োগ পরীক্ষা আগামী ১৫ মার্চ ২০১৯ থেকে শুরু হবে। ওই আসনের বিপরীতে সারা দেশে আবেদন করেছেন রেকর্ড সংখ্যক ২৪ লাখের বেশি প্রার্থী। তাই সারা দেশে পর্যায়ক্রমে এবং চার-পাঁচে ধাপে নিয়োগ পরীক্ষা অনুষ্ঠানের সিদ্ধান্ত হয়েছে। ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি পরীক্ষার কারণে ওই নিয়োগ পরীক্ষা পিছিয়ে ১৫ মার্চ করা হয়েছে।
পরীক্ষার সময়সূচি, ওএমআর ফরম ডিজাইন ও পরীক্ষার্থীদের আসন বণ্টন, প্রশ্ন বণ্টন, পরীক্ষা খাতা মূল্যায়ন, ফল প্রকাশসহ সব কার্যক্রম বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) তৈরি করা বিশেষ সফটওয়ার দিয়ে পরিচালিত হবে। বুয়েটের তৈরি করা নতুন এ সফটওয়ার প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয় অনুমোদন করেছে।
গত পরশু মন্ত্রণালয়ে ওই নিয়োগ কমিটির বৈঠকে পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ এবং বুয়েটের সফটওয়ারের অনুমোদন দেয়া হয়। এবারো আগের মতোই লিখিত ও মৌখিক দুই ধাপে পরীক্ষা নিয়ে চূড়ান্ত নিয়োগপ্রাপ্তদের বাছাই করা হবে। আগের নিয়ম অনুযায়ী এমসিকিউ পদ্ধতির লিখিত পরীক্ষা ৮০ নম্বর ও ভাইভায় ২০ নম্বর থাকবে। এ ছাড়া পরীক্ষাপদ্ধতি, প্রশ্নের ধরন, ফল প্রকাশের আগের ধারা পরিবর্তন আনার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বৈঠক সূত্রে জানা গেছে, পরীক্ষার প্রশ্নফাঁস রোধে প্রশ্নে সংখ্যা হবে ৮-১০ সেট বা তারও বেশি, একেক জেলায় ও একেক ধাপের পরীক্ষার প্রশ্নের সাথে অন্য জেলার ও ধাপের পরীক্ষার প্রশ্নের মিল হবে না। নির্ধারিত প্রশ্নের সেট পরীক্ষার দিন সকালে জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে ছাপানো হবে এবং কেন্দ্রে পাঠানো হবে। যে ধাপে ও যেসব জেলার পরীক্ষা শেষ হবে সেসব ধাপের ও জেলার পরীক্ষার ফল-পরবর্তী নির্ধারিত দিনেই প্রকাশ ও আগেই মৌখিক পরীক্ষা আয়োজন করে চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হবে। ওই সব জেলায় নিয়োগপ্রক্রিয়া শুরু হবে।
#dpe #Primary #School #Teacher #Exam #Circular
No comments:
Post a Comment