শীতে নবজাতক শিশুর সর্দি-কাশি হলে উৎকণ্ঠিত হবেন না।
নবজাতক বলতে জ্নের পর থেকে ২৮ দিন পর্যন্ত বয়সী শিশুকে বোঝায়। এই শিশুদের শীতের সময় সবচেয়ে বেশি যে সমস্যা হয় তা হচ্ছে ঠান্ডা লাগা। শিশু ঘনঘন হাঁচি দেয়, নাক বন্ধ থাকে, শব্দ হয়, মাঝেমধ্যে কাশিও হয়। মা-বাবা, আত্মীয়স্বজন উদ্বিগ্ন মনে শিশুকে হাসপাতাল বা চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান। অথবা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই স্থানীয় ওষুধের দোকান থেকে নিউমোনিয়া হয়েছে ভেবে অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ কিনে শিশুকে খাওয়াতে থাকেন। কখনো কখনো চিকিৎসকদের মধ্যে কেউ কেউ অকারণেই অ্যান্টিবায়োটিক ওষুধ, এমনকি ইনজেকশন পর্যন্ত দেন, যা একদম ঠিক নয়।
আসল কথা হলো নবজাতক পৃথিবীতে নতুন। মাতৃগর্ভের উষ্ণতা থেকে মাত্র পৃথিবীতে এসেছে। শীতের ঠান্ডা বাতাস শিশুর নাক দিয়ে প্রবেশ করে নাক ও শ্বাসনালিতে সুড়সুড়ি দেয়, ফলে শিশুর হাঁচি বা কাশি হয়। নাকের ভেতরের চামড়া ফুলে উঠলে শিশুর নাক বন্ধ থাকে। এ ক্ষেত্রে খেয়াল করুন আপনার শিশু দ্রুত শ্বাস নিচ্ছে কি না (মিনিটে ৬০ বার বা তার বেশি)। বুকের পাজরের নিচের অংশ ভেতরে ঢুকে যাচ্ছে কি না, যদি হয় তাহলে বুঝতে হবে শিশুর নিউমোনিয়া হয়েছে। যদি উল্লিখিত লক্ষণ দুটো থাকে বা শিশু নিস্তেজ হয়ে যায়, কম খায় বা শ্বাস-প্রশ্বাসের কষ্ট হয় তাহলে জরুরিভিত্তিতে শিশুকে চিকিৎসকের কাছে বা হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে। সাধারণ ঠান্ডায় অ্যান্টিবায়োটিকের কোনো প্রয়োজন নেই- এ কথাটি আমরা যেন ভুলে না যাই।
নাক বন্ধ থাকলে শুধু নরম কাপড় দিয়ে বা কটন বাডে দুই ফোঁটা ‘নরমাল ড্রপ’ দিয়ে নাক মুছে দিলেই শিশু আরাম পাবে ও খেতে পারবে।
শিশুর যাতে ঠান্ডা না লাগে এ জন্য গরম কাপড় দিয়ে শিশুকে বিশেষ করে তার মাথা ঢেকে রাখুন। নরম কাপড়ের টুপি পরান। দু-তিন দিন পরপর কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করান। আর বারবার শিশুকে মায়ের দুধ দিন। মায়ের বুকের দুধ শিশুর রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়; সেই সঙ্গে মায়ের মমতা শিশুকে উষ্ণ রাখে। আপনি ও আপনার নবজাতক সুস্থ থাকুন।
অধ্যাপক ডা· তাহমীনা বেগম
শিশু বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল।
শিশু বিভাগ, বারডেম হাসপাতাল।
No comments:
Post a Comment