প্রযুক্তি বিষয়ে ভুল ধারণা

প্রযুক্তি বিষয়ে বেশ কিছু ধারণা বহু আগে থেকেই প্রচলিত রয়েছে। তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে এ ধারণাগুলোর অনেকগুলোই অকার্যকর হয়ে গেছে।
তবে মানুষ এখনো সেই পুরনো ধারণাই বিশ্বাস করে চলেছে।
ব্যাটারি বিষয়ে ভুল ধারণা
ব্যাটারি কেনার পর তা ভালোভাবে ফুল চার্জ করে নিতে হবে। এটি কখনোই সারারাত চার্জে দেওয়া যাবে না। ওভারচার্জ হয়ে যাবে। চার্জ একেবারে শুন্য করা যাবে না। দিনে একবারের বেশি চার্জ করা যাবে না। ইত্যাদি বহু তথ্য আমরা পেয়ে থাকি ব্যাটারির আয়ু বাড়ানোর জন্য। তবে বাস্তবতা হলো এগুলো পুরনো ব্যাটারির প্রযুক্তি অনুযায়ী। বিশেষ করে নিকেল ক্যাডমিয়াম ব্যাটারির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য।
কিন্তু বর্তমানে লিথিয়াম ব্যাটারি ব্যবহৃত হয়। এসব ব্যাটারির নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা যেমন ভালো তেমন অতিরিক্ত চার্জ হওয়া প্রতিরোধ করার ব্যবস্থাও থাকে। এ কারণে আধুনিক ফোনের ব্যাটারি নিয়ে তেমন চিন্তা না করলেও চলে।
প্রাইভেট ব্রাউজিং নিরাপদ
প্রাইভেট ব্রাউজিং নামে একটি বিষয় রয়েছে বিভিন্ন ব্রাউজারে। অনেকে মনে করেন এর মাধ্যমে ব্রাউজ করলে আপনি যে সাইটেই যান না কেন, তাতে কোনো অসুবিধা হবে না। যদিও ধারণাটি ভুল। প্রাইভেট ব্রাউজিংয়ে আপনার ব্রাউজারে এর হিস্টোরি থাকবে না। কিন্তু এর হিস্টোরি থেকে যাবে আপনার ইন্টারনেট সার্ভিস প্রোভাইডারের কাছে। এছাড়া গুগলে যদি আপনি লগইন করে থাকেন তাহলে তাদের কাছেও এর হিস্টোরি থাকতে পারে।
বড় মেমোরির শক্তিশালী স্মার্টফোন
স্মার্টফোনের ক্ষেত্রে অনেকেই এখন বেশি র্যাম, বেশি স্টোরেজ, দ্রুতগতির প্রসেসর, বেশি মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা, উচ্চ রেজুলিশনের স্ক্রিন ইত্যাদিতে আগ্রহী হয়ে উঠছেন। তবে এসব সংখ্যা বেশি মানেই আপনার স্মার্টফোন ভালো নয়। সেলফি তুলতে যেমন ২০ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা লাগে না তেমন ফোরকে স্ক্রিনও প্রয়োজন হয় না। আবার অনেক স্মার্টফোন কম কনফিগারেশনেই ভালো চলে। তাই শুধু সংখ্যাই সবকিছু নয়।
স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা
মোবাইলের স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা কমিয়ে দিয়ে অনেকেই ব্যাটারি বাঁচানোর চেষ্টা করেন। যদিও এতে চোখের ওপর বাড়তি চাপ পড়ে। তাই এটি অটো-ব্রাইটনেসে রাখতে পারেন। এক্ষেত্রে স্ক্রিনের উজ্জ্বলতা নিজে থেকেই ঠিক হবে। একেবারে অন্ধকারে অবশ্য অনেক মোবাইল ফোনের এ সেটিংটা কাজ করে না। তখন আলোতে নিয়ে তা ৪০%-এ ঠিক করে নিতে পারেন।
দামি ফোন বহুদিন ব্যবহার করবেন?
মোবাইল ফোন এখন বছরখানেক চলার পরেই অকার্যকর হওয়া শুরু হয়। আর তাই আপনি একটি ফোন কিনে বছরের পর বছর স্বাচ্ছন্দ্যের সঙ্গে ব্যবহার করতে পারবেন না। আর এর পেছনে রয়েছে নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলোই। এমনকি অ্যাপলের আইফোনও এর ব্যতিক্রম নয়। প্রতিষ্ঠানগুলো চায় আপনি পুরনো ফোনটি ফেলে দিয়ে নতুন করে কিনুন। এজন্য অনেক মোবাইল ফোন নির্মাতা প্রতি বছরের সফটওয়্যার আপডেটেই ফোনটি স্লো করে দেওয়ার ব্যবস্থা রাখে।
ডিলিট মানেই চিরতরে মুছে ফেলা নয়
আপনার কম্পিউটার বা মোবাইল ফোনের মেমোরিতে যে জিনিসগুলো ছিল, তা মুছে ফেলে ফোনটি বিক্রি করে দেওয়া মোটেই বুদ্ধিমানের কাজ নয়। কারণ মুছে ফেলা জিনিসও অনেকে পুনরুদ্ধার করতে পারে। এক্ষেত্রে আপনি যদি মেমোরি খালি করে সে স্থানে অন্য কোনো ফাইল (অডিও/ভিডিও//কনটেন্ট) দিয়ে বোঝাই করেন তাহলে কিছুটা কাজ হবে। তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য কিছু টুল ব্যবহার করতে পারেন। কারণ ডিলিট করা মানেই মুছে ফেলা নয়- তা মেমোরিতে থেকে যায়।

নাকের পলিপের উপসর্গ ও চিকিৎসা

সাধারণত নাকের এক ধরনের বোটা থাকে। এটা দেখে অনেকে নাকে পলিপ হয়েছে বলে ধরে নেয়। এই ধারনাপি একেবারেই ভুল। পলিপ নাকের গভীরে হয়ে থাকে। নাকের মধ্যে এক ধরনের মাংস পিণ্ডকে পলিপ বোঝানো হয়। এটি অনেকটা স্বচ্ছ। পলিপ দুই ধরনের হতে পারে।

নাকের এ রোগ ও তার চিকিৎসা নিয়ে পরামর্শ দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের নাক কান ও গলা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ডা. কামরুল হাসান তরফদার। সাক্ষাতকার নিয়েছেন একুশে টিভি অনলাইন প্রতিবেদক তবিবুর রহমান।

অ্যাসাইনমেন্ট লেখার নিয়ম

অনেকেই মনে করেন অফিসিয়াল অ্যাসইনমেন্ট লেখার জন্য নির্দিষ্ট কোনো বিষয়ে পড়াশোনা থাকা জরুরি। ধারণাটি একদম ভুল।
কেননা এ বিষয়ে না পড়েও লেখা যায়। কেউ যদি কোনো অফিসিয়াল অ্যাসাইনমেন্ট বা প্রতিবেদন লিখতে চান তার জন্য কিছু কৌশল আয়ত্তে রাখা জরুরি। অ্যাসাইনমেন্ট লেখার কিছু কৌশল নিয়েই এ আলোচনা—

কোরআনে উল্লেখিত অধিকারভুক্ত দাসী কারা?

প্রশ্ন : সূরা নিসার তিন নম্বর আয়াত ও সূরা মমিনের পাঁচ নম্বর আয়াতে যে অধিকারভুক্ত দাসীর কথা বলা হয়েছে, এই অধিকারভুক্ত দাসী বলতে কী বুঝানো হয়েছে? সেটি একটু জানতে চাই।

উত্তর : আল্লাহসুবানাহুতায়ালা সূরা নিসা, সূরা মমিনসহ কোরআনে কারিমের অনেক আয়াতের মধ্যে অধিকারভুক্ত দাসীর কথা উল্লেখ করেছেন। এখানে দাসী বলতে যেসময়ে দাসী কেনা হতো,সেইসময়ের বিধানের কথা আলোচনা করা হয়েছে। কারণ তখনকার সময়ে দাস-দাসী বিক্রি হতো। সেই রকম দাসদাসী যদি থাকে, তাহলে তাঁদের বিধান হচ্ছে এটি।

ইসলামে পশু-পাখির অধিকার

ইসলাম শাশ্বত ও চিরন্তন ধর্ম। এর বিধিবিধান সব কিছু পরিব্যাপ্ত, বিস্তৃত। মানবজীবনের সব দিক আলোচিত হয়েছে এখানে। মানুষ ছাড়া অন্যান্য প্রাকৃতিক উপাদানের প্রসঙ্গও এ ধর্মে উপেক্ষিত হয়নি। পশু-পাখি প্রকৃতির অন্যতম উপাদান। এগুলোর ব্যাপারেও রয়েছে ইসলামের সুস্পষ্ট বিধান।

ইসলামে জীব-জন্তু ও প্রাণীকুলের অধিকারও স্বীকৃত

প্রাণিকুলের অধিকার রক্ষা ও তাদের কল্যাণার্থে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৪ অক্টোবর পালিত হয় ‘বিশ্ব প্রাণী দিবস’। ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে ১৯৩১ সালে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের এক সম্মেলনে দিবসটি ঘোষণা করা হয়।
প্রাণিকুলের অধিকার রক্ষা ও তাদের কল্যাণার্থে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৪ অক্টোবর পালিত হয় ‘বিশ্ব প্রাণী দিবস’। ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে ১৯৩১ সালে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের এক সম্মেলনে দিবসটি ঘোষণা করা হয়।
অনেকেই মনে করেন, হাল সময়েই কেবল পশু-প্রাণীর অধিকারের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করা হচ্ছে। বিষয়টি তেমন নয়। মানব সভ্যতার শুরু থেকেই বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। এক্ষেত্রে মানবতার ধর্ম ইসলামেরও রয়েছে বিশাল ভূমিকা। শেষ নবী হজরত মুহাম্মদ (সা.) পশু-প্রাণীর অধিকার রক্ষায় সোচ্চার ছিলেন। জীব-জন্তু ও পশু-পাখি সংরক্ষণ এবং তাদের অধিকারের ব্যাপারে নবী করিম (রা.)-এর ব্যাপক দিকনির্দেশনা রয়েছে।
ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি হলো, পশু-পাখি ও জীব-জন্তু আল্লাহতায়ালার অনন্য দান ও নিয়ামত। আল্লাহতায়ালা মানুষের উপকার ও সুবিধার জন্য এসব সৃষ্টি করেছেন। তাই এসবের কোনো ক্ষতি করা চলবে না। এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে কারিমে ইরশাদ হয়েছে, ‘নিশ্চয় আমি আদম-সন্তানকে মর্যাদা দান করেছি, আমি তাদেরকে স্থলে ও জলে চলাচলের বাহন দান করেছি; তাদের উত্তম জীবনোপকরণ প্রদান করেছি এবং তাদের অনেক সৃষ্ট বস্তুর ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করেছি।’ -সূরা বনি ইসরাইল: ৭০
ইসলাম জীব-জন্তু সংরক্ষণের নির্দেশ দিয়েছে। অযথা কোনো পশুকে হত্যা বা উচ্ছেদ করতে নিষেধ করেছে। নবী করিম (সা.) জীব-জানোয়ারকে লক্ষ্য বানিয়ে তার দিকে তীর নিক্ষেপ করতে নিষেধ করেছেন। হাদিসে আছে, একদা ইবনে ওমর (রা.) কোরাইশের কিছু যুবকের কাছ দিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি লক্ষ্য করলেন, যুবকেরা পাখি ও মুরগিকে তাক করে (তীর নিক্ষেপ করে) লক্ষ্যবস্তুতে সঠিকভাবে আঘাত করার বিষয়ে প্রতিযোগিতা করছে। যখন তারা ইবনে ওমরকে দেখল, দৌড়ে পালাল। তখন ইবনে ওমর তাদের লক্ষ্য করে বললেন: ‘আল্লাহর রাসূল (সা.) যারা প্রাণীকে লক্ষ্যবস্তু বানায় তাদের অভিশাপ করেছেন।’ –সহিহ মুসলিম
পশু-পাখি সঠিকভাবে লালন-পালনের জন্যও গুরুত্বারোপ করা হয়েছে ইসলামে। এ সংক্রান্ত প্রসিদ্ধ একটি ঘটনা হাদিসে এসেছে, ‘এক মহিলাকে শাস্তি প্রদান করা হয়েছে একটি বিড়ালকে আটক রেখে খাবার ও পানি না দেওয়ার কারণে। যদি সে বিড়ালটিকে ছেড়ে দিত তাহলে পোকা-মাকড় খেয়ে হলেও বাঁচতে পারত।’ –সহিহ বোখারি
হজরত আয়েশা (রা.) বর্ণনা করেন, ‘আল্লাহর রাসূল (সা.)-এর পাশ দিয়ে কোনো বিড়াল হেঁটে গেলে তিনি তাকে পানির পাত্র এগিয়ে দিতেন এবং বিড়াল তা থেকে পান করত।’ -দারে কুতনি
আরেক হাদিসে এসেছে, ‘একদা এক ব্যক্তি হাঁটতে হাঁটতে পিপাসার্ত হয়ে গেল। অতঃপর লোকটি একটি কূপে নেমে পানি পান করে আসতেই একটি কুকুরকে পিপাসায় কাতরাতে দেখলেন; দেখলেন কুকুরটি তৃষ্ণায় ভিজা মাটি খাচ্ছে। তখন তিনি মনে মনে বললেন: কুকুরটির আমার মতোই পিপাসা লেগেছে, অতঃপর তিনি আবারও কূপে নেমে জুতায় পানি ভরে; পানিসহ জুতা মুখে করে উপরে এসে কুকুরটিকে পানি পান করালেন। অতঃপর আল্লাহ তার ওপর খুশি হয়ে তাকে ক্ষমা করে দিলেন। সাহাবিরা বললেন, হে আল্লাহর রাসূল, পশুর মধ্যেও কি আমাদের কোনো পুণ্য আছে? নবী (সা.) বললেন, প্রত্যেক প্রাণের মধ্যেই প্রতিদান রয়েছে।’ –সহিহ বোখারি
অন্য এক হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, একদা নবী করীম (সা.) একটি উটের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছিলেন। তিনি লক্ষ্য করলেন, উটটির পেট পিঠের সঙ্গে লেগে গেছে। তখন নবী (সা.) বললেন, এই অবোধ পশুর ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় কর। সবল অবস্থায় এর পিঠে আরোহণ কর এবং সবল অবস্থায় একে ভক্ষণ কর।’ –সুনানে আবু দাউদ
হালাল যেসব পশুর গোশত খাওয়ার অনুমতি ইসলাম দিয়েছে, সেগুলো জবাই করার সময় পশুর সঙ্গে সদয় আচরণ ও দয়া প্রদর্শনের নির্দেশ ইসলাম দিয়েছে। ইসলাম বলেছে, এগুলোকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে সুন্দরভাবে জবাই করতে হবে, যাতে তাদের কষ্ট কম হয়।
পক্ষান্তরে যেসব পশু হিংস্র ও মানুষের ক্ষতি করে সেসব পশুকে সুন্দরভাবে হত্যার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোনোভাবেই ওই সব পশুকে কষ্ট দিয়ে মারা যাবে না। এগুলোকে আগুনে পুড়িয়ে মারা যাবে না।
হাদিসে এসেছে, ‘ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, একদা এক ব্যক্তি একটি ভেড়া জবাই করার জন্য শোয়ানো অবস্থায় রেখে চাকুতে ধার দিচ্ছিলেন। তখন নবী (সা.) বললেন, তুমি কি পশুটিকে দু’বার মারতে চাও? তুমি কি পশুটিকে শোয়ানোর আগে চাকুতে ধার দিয়ে নিতে পারতে না?
অন্য হাদিসে এসেছে, ‘ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, একদা আমরা রাসূল (সা.)-এর সঙ্গে সফরে ছিলাম। নবী (সা.) তার হাজত (প্রাকৃতিক প্রয়োজন) পূরণের জন্য গেলে আমরা একটি পাখিকে দুটি ছানাসহ দেখতে পেলাম এবং আমরা পাখির বাচ্চা দুটি নিয়ে এলাম। এ অবস্থায় পাখিটি বাচ্চা দুটির মায়ায় আমাদের পিছু নিল এবং ডাকাডাকি করছিল। নবী (সা.) হাজত থেকে ফিরে এ দৃশ্য দেখে বললেন, কে এদেরকে পিতা-মাতা থেকে ছিন্ন করে ভীতির মধ্যে ফেলে দিল, যাও বাচ্চা দুটিকে তাদের পিতা-মাতার কাছে ফিরিয়ে দাও।’
কোনো পশু রোগাক্রান্ত হলে তাকে দ্রুত চিকিৎসার বিষয়েও জোর দেওয়া হয়েছে। রোগাক্রান্ত পশুকে সুস্থ পশু থেকে পৃথক রাখতে বলা হয়েছে। যাতে করে অন্য পশু রোগাক্রান্ত না হয়।
এভাবেই ইসলাম পশু-পাখি ও প্রাণীর বিষয়ে নানা দিক-নির্দেশনা দিয়েছে। তাই এসবের প্রতি উত্তম ও দয়ার্দ্র ব্যবহার কাম্য। এসব ইসলামের শিক্ষাও বটে।

আ‌র্থিং ও নিউট্রাল বিষ‌য়ের ধারণা

আমাদের অনেকের মাঝেই বিদ্যু‌তের ফেজ, নিউট্রাল এবং আর্থিং কি এবং এসব বিষয় নিয়ে অ‌নেক ভুল ধারনা ও বিভিন্ন প্রশ্ন থাকে।
আজকের লেখাতে এই বিষয়গুলো বিস্তারিত আলোচনা হবে। সহজ কথায়, "'ফেজের মধ্যে ভোল্টেজ ও কারেন্ট থাকে', 'নিউট্রালের মধ্যে রিটার্নিং কারেন্ট থাকে' এবং 'আর্থিং এর মধ্যে ভোল্টেজ ও কারেন্ট কোনটাই থাকে না'"।

অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স সম্পন্ন না করতে পারলে করণীয়

অনেকেই চিকিৎসকের পরামর্শ মতো অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়া শুরু করে। তবে ভুলে হয়তো একবেলার ডোজ বা দুই বেলার ডোজ বাদ দিয়ে দেয়। কোর্স সম্পন্ন করতে না পারার মতো এই ধরনের সমস্যায় করণীয় কী? তা জানানোর জন্য কথা বলেছেন ডা. রফিক আহমেদ। বর্তমানে তিনি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের বক্ষব্যাধি ও মেডিসিন বিভাগে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত।
প্রশ্ন : যেই জ্বরে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন নেই, সেখানে যদি অ্যান্টিবায়োটিক খাই, আর যেখানে প্রয়োজন যেখানে যদি প্রয়োজনের তুলনায় কম খাই, তাহলে কী ক্ষতি হতে পারে?
উত্তর : এটি একটি মহামারি সমস্যা। আমি চিকিৎসক। আপনাকে এক সপ্তাহ অ্যান্টিবায়োটিক খাওয়ার জন্য দিলাম। আপনি দুই দিন খাওয়ার পর দেখলেন আপনার জ্বর নেই। ওষুধ বন্ধ করে দিলেন। অনিয়মিত অপর্যাপ্ত অ্যান্টিবায়োটিক, বেশি ক্ষতি করে। এখানে ড্রাগ রেজিসটেন্স বলে একটি শব্দ আছে। আমরা তো শুধু অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করি ব্যাক্টেরিয়ার জন্য।
ধরলাম একটি ভাইরাল জ্বরে অ্যান্টিবায়োটিক দিয়েছি। যদি তাকে বুঝাতে পারি যে এটি এই কয়দিন খাওয়া লাগবে তাহলে ভালো হয়। কাউন্সেলিং খুব ভালো। আর রোগী যদি সেই কয়েকদিন খায়, অ্যান্টিবায়োটিকের যদি অপব্যবহারও হয়, তাহলেও ড্রাগ রেজিসটেন্স হবে। ব্যাক্টেরিয়াগুলো পরে আর স্বাভাবিকভাবে ধ্বংস করা যাবে না। এই ড্রাগ রেজিসটেন্স পুরো পৃথিবীর জন্য হুমকি স্বরূপ।
প্রশ্ন : অ্যান্টিবায়োটিকের কোর্স শুরু করার পরে অনেক সময় বাদ পড়ে যেতে পারে। সে ক্ষেত্রে আপনার পরামর্শ কী?
উত্তর : অ্যান্টিবায়োটিক আমি দিয়েছিলাম, সেটি খাচ্ছে না, ২৪ ঘণ্টা পর যদি আসে, আমরা অন্য ওষুধ দেই। কারণ অ্যান্টিবায়োটিকের গায়ে স্পষ্ট করে লেখা থেকে রেজিস্টার্ড ফিজিশিয়ানের পরামর্শ ছাড়া সেবন নিষিদ্ধ। আমি বুঝব, এটা একদিন/ দুই দিন সেবন করার পর গ্যাপ দিয়েছে। তখন আমি সীদ্ধান্ত নেব যে এই গ্রুপ আর তাকে দেব না, অন্য গ্রুপে চলে যাব।
আসলে যদি ডোজ বাদ পড়ে যায়, আর সেটা যদি ২৪ ঘণ্টার ওপরে হয়, তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। চিকিৎসক এই ওষুধ বাদ দিয়ে নতুন গ্রুপের কোনো অ্যান্টিবায়োটিক দেবেন।

কম্পিউটারের মাদারবোর্ড কেনার সময় যে বিষয় গুলো জানা জরু‌রি

ক‌ম্পিউটা‌রের মেইন‌বোর্ড বা মাদার‌বোর্ড নির্বাচন গুরুত্বপূর্ণ এক‌টি বিষয় । কম্পিউটারের নতুন মাদারবোর্ড কেনার সময় কি কি বিষয়ের উপর লক্ষ্য রাখতে হবে তা জানা আবশ্যক। অনেক সময় কম্পিউটারের মাদারবোর্ড নষ্ট হয়ে যায় বা কম্পিউটার কনফিগারেশন আপগ্রেড করার জন্য নতুন মাদারবোর্ডের প্রয়োজন হয়। ক‌ম্পিউটা‌রের স‌র্বোচ্চ Performance পাওয়ার জন্য উন্নতমা‌নের মাদার‌বোর্ড আর প্র‌সেস‌র আবশ্যক। তাই বর্তমানে বাজারে যে সকল Mainboard রয়েছে সেখান থেকে ভাল দেখে একটা বেছে নিন।

কম্পিউটারের মাদারবোর্ডের সঙ্গে মাইক্রোপ্রসেসর, প্রধান মেমরি এবং কম্পিউটারের অন্যান্য অপরিহার্য অংশগুলো যুক্ত থাকে। কি-বোর্ড,মাউসসহ সব ইনপুট/আউটপুট যন্ত্রাংশ মাদারবোর্ডের সঙ্গেই যুক্ত থাকে।
তাই কম্পিউটার কেনার ক্ষেত্রে অবশ্যই মাদারবোর্ড এর বিষয়গুলো খেয়াল করে কিনতে হবে।

মাদারবোর্ড কেনার সময় অবশ্যই নিচের বিষয় গুলো লক্ষ্য রাখুনঃ

১. বাজারে আসা সর্বশেষ মাদারবোর্ডটি কেনার চেষ্টা করুন। কারণ এতে আপনি সর্বশেষ নতুন ফিচার গুলো পাবেন। মাদারবোর্ডটি কোন কোন স্পিডের প্রসেসরকে সাপোর্ট করে এবং সর্বশেষ মডেলের প্রসেসর ও র‌্যাম সাপোর্ট করে কিনা তা যাচাই করে নিন। যদি সম্ভব হয় অনলাইন থেকে মাদারবোর্ড সম্পর্কিত কিছু তথ্য সংগ্রহ করুণ। আর কোন কারনে আপনার বর্তমান মাদারবোর্ডটি নষ্ট হয়ে গেলে তার জন্য বর্তমান প্রসেসরের সাথে মিল রেখে নতুন মাদারবোর্ড সংগ্রহ করবেন।
প্রসেসর বাস স্পিড, মাদারবোর্ডের বাস স্পিডের সাথে সক্ষম কিনা তা দেখে নিন। বাস স্পিড বেশি হলে কম্পিউটারের কাজের স্পিড ভালো হবে ও কাজের ক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ্য অনুভব করবেন।

২. অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যেন মাদারবোর্ডের বাস স্পিডের সঙ্গে ক্যাশ মেমোরির স্পিডও যেন কোন সমস্যা না হয়।

৩. একটি মাদারবোর্ড আপনি কম পক্ষে ৩ বৎসর (ওয়ারেন্টি থাকে) অনায়া‌সে ব্যবহার করতে পারবেন (এর চাই‌তে বে‌শিই হয়)। তাই ভবিষ্যতের কথা বিবেচনা করে উক্ত মাদারবোর্ডটি সর্ব্বোচ্চ কত ক্ষমতা পর্যন্ত র‌্যাম ও প্রসেসর সাপোর্ট করবে সেটি মাথায় রাখুন।

৪. মাদারবোর্ডে র‌্যাম স্লট কয়টি এবং কতটুকু পরিমাণ পর্যন্ত সমর্থন করবে তা বিবেচনায় রাখবেন। কারণ যত বেশি ক্ষমতা সম্পন্ন র‌্যাম ব্যবহার করবেন, আপনার পিসি তত বেশি দ্রুত কাজ করবে।

 

৫. মাদারবোর্ডে হার্ডডিস্ক লাগানোর জন্য কয়টি পোর্ট আছে তা দেখে নিন। বেশি পোর্ট থাকলে সেটি অবশ্যই আপনার জন্য ভাল হবে। আর একটু বড় মাপের মাদারবোর্ড নিলে অন্যান্য আনুসাঙ্গিক যন্ত্র লাগাতে সুবিধা পাবেন।
৬. মাদারবোর্ডে কতগুলো ইউএসবি পোর্ট আছে তা দেখে নিন। যত বেশি পোর্ট পাবেন তত বেশি ইউএসবি ডিভাইস ব্যবহারের সুযোগ পাবেন। চেষ্টা করুন USB 3.0 ভার্সনের মাদারবোর্ড নেওয়া। আপনি যদি গান শোনার ভক্ত হয়ে থাকেন তা হলে ভালো built-in Sound card সহ মাদারবোর্ড নিন।

 

৭. মাদারবোর্ডে কি কি ধরনের স্লট আছে এবং কয়টি করে আছে তা দেখে নিন। এ ক্ষেত্রে PCI এবং ISA স্লটগুলোর বিষয়ে খেয়াল রাখবেন। ভালো গেমস খেলার জন্য High End Graphic Card এর প্রয়োজন হয়। তাই PCI Express স্লট কয়টি তা দেখে নিন। কারণ SLI বা Crossfire করতে হলে এ বিষয় গুলো মাথায় রাখা উচিৎ।

মাদারবোর্ড ক্রয়ের সময় কোম্পানির নামগুলো ভালো করে দেখে নিন। মাদারবোর্ড প্রস্তুতকারক কোম্পানিগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো আসুস, গিগাবাইট, ইন্টেল (বর্তমানে উৎপাদ‌নে নাই), স্টা‌রেক্স, ইস‌নিক ইত্যাদি। বর্তমানে পৃথিবীর সবচেয়ে বড় মাদারবোর্ড প্রস্তুতকারক কোম্পানি হলো গিগাবাইট ও আসুস। তাই এই দুটি বড় এবং বেস্ট ব্র্যান্ড।

পাসপোর্ট, পুলিশ ভেরিফিকেশন ও জাতীয় পরিচয় পত্র ফি অনলাইনে

ঘরে বসেই অনলাইনে পাসপোর্ট, পুলিশ ভেরিফিকেশন এবং জাতীয় পরিচয় পত্র সংশোধন বা উত্তোলন সংক্রান্ত ফি জমা দিতে চালু হলো ই-চালান (ইলেক্ট্রনিক-চালান) পদ্ধতি। এর মাধ্যমে দালালের দৌরাত্ব এবং ভোগান্তি যেমন কমবে, তেমনি সময়মত চালানের অর্থ সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে সরকারি কোষাগারে জমা হবে।

সং‌শ্লিষ্ট সূত্রম‌তে, কেবলমাত্র তিনটি সংস্থার সেবা দিয়ে ই-চালান পদ্ধতি চালু হলেও আগামী এক বছর অর্থাৎ পরবর্তী বছরের এপ্রিল মাসের মধ্যে পর্যায়ক্রমে সরকারের অন্যান্য সকল মন্ত্রণালয় বা সংস্থার সরকারি ফি আদায় কিংবা লেনদেন এর মাধ্যমে করা যাবে। সরকারি ফি প্রদানের ক্ষেত্রে ই-চালান পদ্ধতি অর্থ ও সময়ের অপচয় হ্রাসে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করা হ‌চ্ছে।

অর্থ বিভাগের নির্দেশনায় ও তত্ত্ববধানে প্রধানমনত্রীর কার্যালয়েরর একসেস টু ইনফরমেশন (এটুআই) প্রোগ্রাম থেকে ই-চালান পদ্ধতি চালু করা হয়েছে। অনলাইন ব্যাংকিং সুবিধা রয়েছে এমন যে কেউ ই-চালানের মাধ্যমে অনলাইনে রাজস্ব জমা দিতে পারবে।
তথ্য প্রদানের পর নির্দিষ্ট ফরম- অনলাইনে পূরণ করার পর ’পরিশোধের পদ্ধতি’ অংশ গিয়ে ‘অনলাইন পরিশোধ’ অপশনটি নির্বাচন করে নির্দিষ্ট একাউন্ট থেকে অর্থ স্থানান্তরের মাধ্যমে চালানের অর্থ জমা দেওয়া যাবে।
সূ‌ত্রে আরও জানানো হয়, সরকারি বিভিন্ন সেবার ফি আদায় ও লেনদেনের ক্ষেত্রে চালান ব্যবহৃত হয়। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে ব্যাংক অথবা ফটোকপির দোকান থেকে সেবাগ্রহীতার চালান ফরম সংগ্রহ করতে হয়। ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে এ চালান কার্যটি সম্পন্ন করতে গিয়ে একজন নাগরিকের অতিরিক্ত সময় ও অর্থ ব্যয় হয় এবং যাতায়াতের ভোগান্তি আছে। একইভাবে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক বা প্রতিষ্ঠানগুলোর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের দৈনিক হিসাব মিলানো, নির্ধারিত প্রতিষ্ঠানের অনুকূলে অর্থ প্রেরণ এবং দাপ্তরিক কাজ সম্পন্ন করতে বাড়তি ব্যয় ও মানসিক চাপ তৈরি হয়।
এ ছাড়া সরকারি সেবার ফি ম্যানুয়াল পদ্ধতিতে গ্রহণ ও দাপ্তরিক কার্যক্রম পরিচালিত হওয়ায় সরকারের কোষাগারে যথাসময়ে সেটি জমা হয় না। চালানের মাধ্যমে কোন প্রতিষ্ঠানের কাছে কত টাকা জমা আছে বা লেনদেন চলমান রয়েছে তার কোন সঠিক তথ্য থাকে না। কিন্তু ই-চালান পদ্ধতির মাধ্যমে এসব সমস্যা সহজে দূর হবে ।

ই-চালান পদ্ধতি ব্যবহার করে ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে পারে জনগণ। এতে দালালের দৌরাত্ব কমবে। তাই জনগণের কাছে ই-চালানের বিষয়টি নিয়ে যেতে হবে।
সরকারের সব প্রেমেন্টই ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতি হ‌লে যথা সময়ে সরকারি কোষাগারে এর অর্থ জমা হবে। এ ছাড়া জনগণও ভোগান্তি থেকে রেহাই পাবে। অনিয়ম ও বন্ধ হবে।