আশরাফুল আলম থেকে ‘হিরো আলম’

রূপকথার পর্ব থেকে সিনেমার জীবন সহজ নয়। তবুও যৌবনের উত্তাল দিন আর তারুণ্যের উচ্ছ্বাসে ভেসে আসা জীবনের স্বপ্নগুলো রঙিন মোড়কে বাঁধা থাকে না সবসময়। যে যেভাবে পারে আগাতে থাকে। কার ভাগ্য কীভাবে বদলে যায় তা বলা কঠিন। এই ধরুন হালের রূপকথার রাজপুত্র ‘হিরো আলম’! সামান্য একজন কেবল অপারেটর থেকে এখন একজন রিয়েল হিরোই বলতে হবে তাঁকে। সারা জীবন অনেকে চেষ্টা করেও এমন জনপ্রিয়তা পায়নি। সেখানে হিরো আলম এখন পর্যন্ত চূড়ান্তভাবে সফল একজন মানুষ। সম্প্রতি তিনি বলিউডের প্রতাপশালী নায়ক সালমান খানকে পিছনে ফেলেছেন গুগলে খোঁজ করার দৌড়ে! শেষ হতে চলা এ বছরে বাংলাদেশে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে (বিশেষ করে ফেসবুক এবং ইউটিউবে) তুমুল ঝড় তুলেছিলেন হিরো আলম। রেশটা পার্শবর্তী দেশ ভারতেও পড়েছিল।
পেশায় ক্যাবল অপারেটর ব্যবসায়ী হিরো আলম, ক্রিকেটার, তারকা অভিনেতাদের সঙ্গে সেলফি তোলাসহ নানা কারণে আলোচিত ছিলেন মূলধারার গণমাধ্যমেও! আলটিমেট ইন্ডিয়ার বরাত দিয়ে বার্তা সংস্থা ইউএনবির খবরে গুগলে কাকে সবচেয়ে বেশিবার খোঁজা হয়, তার একটি তালিকা করে ইয়াহু ইন্ডিয়া। এ বছরও
তারা সেই তালিকা করতে জরিপ চালিয়েছে। জরিপে দেখা গেছে, ‘সুলতান’ তারকা সালমান খানকে পেছনে ফেলেছেন বাংলাদেশি হিরো আলম। এ বছর সালমানের চেয়েও বেশিবার খোঁজা হয়েছে হিরো আলমকে। ‘দাবাং’ তারকা সালমান খান ইন্টারনেটে ভারতে সবচেয়ে জনপ্রিয়। দেশটিতে তাঁকে সবচেয়ে বেশি খোঁজা হয়েছে। তবে গুগল কিংবা ইউটিউব সার্চ গ্রাফ প্রকাশ করেনি বার্তা সংস্থাটি।

আল্টিমেট ইন্ডিয়ার খবরে বলা হয়, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক জনপ্রিয় বাংলাদেশের হিরো আলম। ইউটিউবে প্রকাশ করা তাঁর নিজস্ব ভিডিওগুলোও অনেক জনপ্রিয়। ভিডিওগুলোর নির্দেশনাও দেন হিরো আলম। ভিডিওগুলোর মূল চরিত্রে অভিনয় করেন তিনি। মানুষ তাঁকে নিয়ে সমালোচনা ও হাসাহাসিও করেন। এই হাসাহাসি বা সমালোচনাই তাঁকে বেশি জনপ্রিয় করে তুলেছে। হিরো আলমের আসল নাম আশরাফুল আলম। বাড়ি বগুড়া। ডিশ লাইনে নিজস্ব চ্যানেলে তিনি ভিডিও প্রচার করেন। বিভিন্ন জনপ্রিয় গানের সঙ্গে নায়িকাসহ অভিনয় করেন হিরো আলম। স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনও করেছেন তিনি। যদিও ভোটে জিততে পারেননি। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার পর বেশ কয়েকটি টিভি চ্যানেলের অনুষ্ঠানে ও বিজ্ঞাপনেও দেখা গেছে হিরো আলমকে।

হিরো আলম আলোচনায় আসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তাঁর কিছু ভিডিও ভাইরাল হলে। পরবর্তী সময়ে সামাজিক মাধ্যম থেকে চলে আসেন মুলধারার গণমাধ্যমের টাইমলাইনে। পেশায় ক্যাবল অপারেটর ব্যবসায়ী হিরো আলম শখের বশে মিউজিক ভিডিও তৈরি করতেন। সেই থেকে আগে থেকেই আগ্রহের জায়গা ছিল মিডিয়া পাড়া। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম তাঁর আগ্রহের জায়গায় অবস্থান সুসংহত করতে ব্যাপক ভূমিকা রেখেছে। হিরো আলমের উত্থানটা এত তাড়াতাড়ি হয়েছে যেটা স্মরণ করিয়ে দেয় রূপকথার সেই রাজপুত্রদের ঘটনা। সত্যিই রূপকথার গল্পের সফল নায়ক আমাদের ‘হিরো আলাম’ - bangladeshi hero alom!

ফয়জুল্লাহ ওয়াসিফ
শিক্ষার্থী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়।

No comments:

Post a Comment