যারা সফল এবং সম্পদশালী তারা বলেন, যা সঞ্চয় তা-ই আসলে সত্যিকার সম্পদ। ভবিষ্যতকে নিরাপদ করতে সঞ্চয়ের বিকল্প নেই।
সাধারণ নিয়মটি হলো, আয়ের অন্তত ১০ শতাংশ সঞ্চয় করতে হয়। বছরের শুরু থেকেই যারা সঞ্চয়ের নয়া পরিকল্পনা হাতে নিয়েছেন, তাদের সাধুবাদ জানাতেই হয়। কিন্তু যারা এখনও নেননি তাদের দ্রুত বিশেষ কর্মসূচি গ্রহণ করা উচিত। এটা সঞ্চয়ের কর্মসূচি। অনেকেই খরচ কুলিয়ে উঠে সঞ্চয় করতে পারেন না বলে অজুহাত দাঁড় করান। অথচ চাইলেই প্রতিদিন সহজ কিছু উপায়ে সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন। বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছে সেইসব উপায়ের কথা।
সাপ্তাহিক 'মানি ডেট'
যদি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হতে চান তবে প্রতি সপ্তাহের একটি দিনকে 'মানি ডেট' নির্ধারণ করুন। অর্থব্যবস্থাপনার জন্যে ঠাণ্ডা মাথায় পরিকল্পনা করা দরকার।
হতে পারে ছুটির দিনটিতে কিছু সময় আপনি হিসাব নিয়ে বসবেন। কত খরচ হলো, কী কী কাটছাঁট করা যায়, কী পরিমাণ সঞ্চয় করা সম্ভব ইত্যাদি নিয়ে বসতে হবে। প্রতি সপ্তাহের জন্যে আপনি নতুন করে পরিকল্পনা করতে পারেন। এতে করে অল্প সময়ের জন্যে বাজেট গোছাতে পারবেন এবং সঞ্চয় বের করে আনা সহজ হবে। কয়েক সপ্তাহ করে যেতে পারলে অভ্যস্ত হয়ে পড়বেন। এরপর আর চিন্তা নেই। সপ্তাহজুড়ে প্রতিদিনই কিছু কিছু সঞ্চয়ের অভ্যাস গড়ে তুলুন।
বাজেট প্রস্তুতের অ্যাপ
পকেটে স্মার্টফোন তো আছেই। কাজেই সেখানে একটি বাজেট ট্র্যাকিং অ্যাপ ডাউনলোড করে নিন। এটা কিন্তু দারুণ কাজের, যদি ব্যবহারটা বুঝে নিতে পারেন। কত আসছে, কত যাচ্ছে, কোনটে বেহিসেবী যাচ্ছে তার সবই বের করে দেবে অ্যাপ। পরিমিত ব্যয়ের অভ্যাস গড়ে দেবে এই অ্যাপ। সেই সঙ্গে অপ্রয়োজনী খরচের খাতও চোখের সামনে ভেসে উঠবে। এতে করে আপনি সহজেই প্রতিদিন কিছু পরিমাণ অর্থ জমা রাখতে পারবেন।
ধূমপান ত্যাগ করুন
এটা কেবল স্বাস্থ্য সচেতনতামূলক বার্তাই নয়। অর্থ সঞ্চয়ের বড় উৎস। ধূমপানের পেছনে যে পরিমাণ ব্যয় করতেন তা সঞ্চয়ের সিদ্ধান্ত নিন। দেখবেন, সঞ্চয় ফুলে-ফেঁপে উঠছে। আয়ের বড় একটা অংশ এর পেছনে নষ্ট হয়। প্রতিদিন যে পরিমাণ খরচ করতেন, তা জমাতে থাকুন।
অপ্রয়োজনীয় 'সাবস্ক্রিপশন' বাদ দিন
মোবাইলে অনেক ধরনের সেবাই আমরা নিয়ে থাকি। এর কিছু আছে যা কেবল শখের বশে করা হয়। কিন্তু পরে আর ওগুলো কোনো কাজে লাগে না। কিন্তু এসব সাবস্ক্রিপশন নিয়মিত চার্জ কেটে নেয়। এতে আপনার অগোচরেই মোবাইলের খরচ বেড়ে যাবে। তাই খুঁজে খুঁজে যত সাবস্ক্রিপশন করেছেন সেগুলো বের করুন। এবার বাতিলের তালিকা করুন। দেখবেন, বেশ কিছু অর্থ বেঁচে যাবে।
ক্রয়ের আগে...
নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিস তো কিনতেই হবে। কিন্তু তেমন দরকার নেই কিংবা শখের এমন কিছু কেনার আগে আবারো ভেবে দেখুন। শখ পুরোপুরি বাদ দিতে বলা হচ্ছে না। কিন্তু কিছু শখ হয়তো না মিটলে কিছু যাবে আসবে না। এগুলো কেনার সময় দ্বিতীয়বার ভাবতেই হবে। এটা কী আদৌ জরুরি? এটা কী কী প্রয়োজন মেটাবে? না হলে কী আপনার সমস্যা সৃষ্টি হবে? এগুলো ভাবুন। 'না' বোধক উত্তর বেশি আসলে অর্থটা সঞ্চয়ের হিসাবে ফেলে দিন। এভাবে প্রতিদিনই সামান্য হলেও কিছু পয়সা পকেটেই থেকে যাবে। এগুলো চিহ্নিত করুন। আর সঞ্চয়ের খাতে ফেলে দিন।
No comments:
Post a Comment