আমাদের জীবন কিছু সময়ের সমষ্টি। প্রতিনিয়ত তা ক্ষয়প্রাপ্ত হচ্ছে। বরফবিক্রেতার যেমন সময় যত অতিক্রান্ত হয়, তার পুঁজি তত নিঃশেষ হয়ে যায়। আমাদের জীবনও ঠিক তেমনি। যত দিন যাচ্ছে, আমাদের হায়াত তত হ্র্রাস পাচ্ছে। অর্থাৎ আমরা মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাচ্ছি। মৃত্যুর ব্যাপারে আস্তিক-নাস্তিকের মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। সবাই স্বীকার করে, জন্মেছি যেহেতু মৃত্যু একবার আসবেই। নাস্তিকের কথা বাদ দিলে আমরা যারা মুসলিম, তারা সবাই বিশ্বাস করি, এ মৃত্যুই শেষ নয়। এরপর আরেকটি জগৎ আছে, যেখানে দুনিয়ার কৃতকর্মের বদলা দেয়া হবে।
এখন আমরা দেখি বিশ্বাসীদের জীবনে দ্বীন পালনের অবস্থা কেমন? আমাদের মধ্যে একটি বিরাটসংখ্যক মানুষ দ্বীনের কোনো বিধিবিধানই মান্য করে না। নামাজ-রোজা-জাকাত-হজ বা উপার্জনে হালাল-হারাম কোনো কিছুরই তোয়াক্কা করে না। মাঝে মধ্যে জুমার নামাজ বা বছরে দু’বার ঈদের নামাজ আদায় করে থাকে। বিধিবিধান পালনের কথা বললে তাদের জবাব হয়; নামাজ না পড়লেও আমাদের ঈমান ঠিক আছে। অথচ কুরআন ও হাদিসের বর্ণনা মতে, নামাজ আদায় মুসলমান হওয়ার জন্য ন্যূনতম শর্ত।
হাদিসের ভাষা হলো: যে ইচ্ছাকৃতভাবে নামাজ ছেড়ে দিলো সে কুফুরি করল।
রাসূল সা: ও সাহাবায়ে কেরামের যুগে কেউ জামাতে হাজির না হলে মনে করা হতো, সে ঈমানহারা হয়ে গেছে। কুরআন নামাজ না পড়াকে জাহান্নামে যাওয়ার কারণ বা পরকাল অবিশ্বাসের ফল হিসেবে উল্লেখ করেছে। যেমন: সূরা মুদ্দাসসিরে বলা হয়েছে,
‘জাহান্নামিদের জিজ্ঞেস করা হবে, কোন জিনিস তাদেরকে জাহান্নামে নিয়ে এলো?’ তারা বলবে, ‘আমরা নামাজি লোকদের মধ্যে গণ্য ছিলাম না’।
সূরা বাকারায় বলা হয়েছে, ‘নামাজ নিঃসন্দেহে কঠিন কাজ। কঠিন নয় আল্লাহর সে সব অনুগত বান্দাহদের, যারা আল্লাহর সাথে সাক্ষাতের ভয় রাখে’।
আমাদের সমাজে এমন চরিত্রের লোকের সংখ্যাই বেশি।
আর একদল রয়েছে, যারা ইসলামকে দ্বীন ও দুনিয়া দু’টি ভাগে ভাগ করে নিয়েছে। এরা নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, তাসবিহ-তাহলিল, জিকির-আজগার, মসজিদ-মাদরাসা নির্মাণ, মিলাদ-ওয়াজ মাহফিল ইত্যাদি যেসব কাজে দ্বীনদারির রঙ রয়েছে, তাতে মোটামুটি নিষ্ঠাবান। কিন্তু ব্যবসায়-বাণিজ্য, চাকরি, লেনদেন, আচার-আচরণ, আত্মীয়স্বজনসহ ও মানুষের হক আদায়ে তত নিষ্ঠাবান নয়। অনেক সময় অর্থনীতি ও রাজনীতির অঙ্গনে ইসলামের দুশমনদের সাথেই তাদের নিবিড় সম্পর্ক। এরা বিশ্বাসগতভাবে ধর্মনিরপেক্ষ। তাদের স্লোগান, ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার। ধর্মকে ব্যক্তিগত বিষয় বিবেচনা করে সমাজ ও রাষ্ট্রে ধর্মের প্রভাব তারা অস্বীকার করে। অথচ আল্লাহপাক ইসলামকে একমাত্র দ্বীন ও পূর্ণরূপে ইসলামে দাখিল হওয়ার জন্য নির্দেশ দিয়েছেন।
ইসলামে ধর্মনিরপেক্ষতার কোনো সুযোগ নেই। মানবজীবনের ব্যাপ্তি যতখানি ইসলাম ঠিক ততখানি এবং ইসলামের দাবি হলো; অংশবিশেষ নয়, সম্পূর্ণটাই মানতে হবে। আমাদের লেনদেন, ব্যবসায়-বাণিজ্য, চাকরি, আচার-আচরণ সব ক্ষেত্রে ইসলামের সুস্পষ্ট বিধান রয়েছে এবং তা মেনে চলা নামাজ-রোজার মতোই ফরজ। যেমন: একজন ব্যবসায়ী অবশ্যই সঠিক পরিমাপের সাথে সাথে কোনো ধোঁকা-প্রতারণার আশ্রয় নেবে না বা ভেজাল দেবে না বা ফরমালিন মেশাবে না, অর্থাৎ ক্রেতা ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা তার হক নষ্ট হয় এমন কিছু করবে না। একজন চাকরিজীবী কেবল সময়মতো অফিসই করবে না, সাথে সাথে সে অত্যন্ত নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে দায়িত্ব পালন করবে এবং যে কাজ আধা ঘণ্টায় সম্ভব, সে কাজে কখনোই এক ঘণ্টা লাগাবে না। আর তা করা হলে সেটা হবে সুস্পষ্ট জুলুম। ঘুষ নেয়ার তো প্রশ্নই ওঠে না এবং তা হবে জ্বলন্ত আগুন ভক্ষণ করার শামিল। ঘুষদাতা ও গ্রহীতা যে জাহান্নামি সে ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। অফিস আদালতে খেয়ানত একটি সাধারণ ব্যাপার হয়ে পড়েছে।
খেয়ানত প্রসঙ্গে রাসূল সা: বলেছেন, ‘আমরা যখন কাউকে দায়িত্ব প্রদান করি, সে যদি এক টুকরো সুতা বা তার চেয়েও কোনো ক্ষুদ্র জিনিস খেয়ানত করে, তবে কিয়ামতের দিন খেয়ানতের বোঝা মাথায় করে সে উত্থিত হবে।
আর কর্তব্যকর্মে ফাঁকি দেয়া পূর্ণ মুসলমান কল্পনাও করতে পারে না। কারণ কর্মস্থলে বিলম্বে উপস্থিতি আর মসজিদে নামাজের জামাতে বিলম্ব-দুটোতেই গোনাহ রয়েছে। তবে গোনাহের পরিমাণ কোনটাতে বেশি সেটা বলা ভারী মুশকিল। কারণ মানুষকে পূর্ণাঙ্গভাবে আল্লাহর গোলামির মধ্যে নিয়ে আসার জন্যই ফরজ করা হয়েছে নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাতের মতো আনুষ্ঠানিক ইবাদত বন্দেগি। নামাজের জন্যও নামাজ নয়, আবার রোজার জন্যও রোজা নয়।
আল্লাহর বাণী, ‘নিশ্চয়ই আমি মানুষকে কেবল আমার গোলামির (ইবাদত) জন্যই সৃষ্টি করেছি’। একজন গোলাম তখনই তার মনিবের গোলামি করতে পারে যখন সে তার মনিবকে স্মরণ ও ভয় করে। নামাজ মানুষের মধ্যে আল্লাহর স্মরণ জাগরুক করে রাখে। মুয়াজ্জিনের আজান ধ্বনিতে একজন মুমিনের ঘুম ভাঙে। নামাজের দিকে এসো, কল্যাণের দিকে এসো; এ আহ্বানে সে ছুটে আসে মসজিদ পানে এবং মসজিদে উপস্থিত হয়ে প্রমাণ করে যে, সে একজন মুসলিম। হাত বেঁধে অত্যন্ত নম্র ও বিনয়ের সাথে ওয়াদা করে যে, ‘আমরা কেবল তোমারই গোলামি করি এবং তোমারই নিকট সাহায্য চাই’। একবার দু’বার নয়, নানা কর্মব্যস্ততার মাঝে বারবার মসজিদে এসে তাকে একই প্রতিশ্রুতি দিতে হয়। এ মুমিন কিভাবে আল্লাহর নাফরমানি করবে? লজ্জা বলতে তো কিছু আছে। বারবার আল্লাহর গোলামির কথা স্মরণ করে দেয় বলেই নামাজকে জিকর বলা হয়েছে। এ নামাজের মধ্য দিয়েই বান্দাহ সারাক্ষণ আল্লাহকে স্মরণ করে।
আল্লাহর ভাষায়, ‘তোমরা নামাজ সমাপনান্তে রুজির জন্য বেরিয়ে পড়ো আর আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করো’। অর্থাৎ আমি যে কাজই করি না কেন, সে কাজে আল্লাহর দেয়া নিয়ম ও বিধিবিধান অনুসরণ করার নামই আল্লাহর স্মরণ।
এ স্মরণ সর্বক্ষণ-সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত এবং সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয়।
আল্লাহর ভাষা, ‘তোমরা শোয়া, বসা ও দণ্ডায়মান অবস্থায় আল্লাহকে স্মরণ কর’।
মানুষ এ তিন অবস্থার বাইরে থাকতে পারে না। কোনো একটা মুহূর্ত বা কোনো একটা কাজের ব্যাপারে মুমিন ধর্মনিরপেক্ষ থাকতে পারে না। যখনই সে কোনো বিষয়ে ধর্মনিরপেক্ষ হয়ে যায়, তখনই সে আল্লাহর গোলামির বাইরে শয়তানের গোলামিতে চলে যায়।
আর আল্লাহর দাবি, ‘তোমরা শয়তানকে অস্বীকার করে কেবল আমারই আনুগত্য করো’।
নামাজ যেমন মানুষকে বারবার আল্লাহর গোলামির কথা স্মরণ করিয়ে দেয়, তেমনি রোজা মানুষের মধ্যে আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করে। রোজা দীর্ঘমেয়াদি টানা এক মাসব্যাপী এক প্রশিক্ষণ। সুবহে সাদিক থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত সে কেবল আল্লাহরই ভয়ে পানাহারসহ তার রবের নিষিদ্ধ কাজ থেকে নিজেকে দূরে রাখে। দুনিয়ার কেউ দেখে না, দেখেন কেবল আল্লাহ। গোপন ও প্রকাশ্য সব বিষয়ে আল্লাহ অবহিত এ বোধ-উপলব্ধি রোজা মানুষের মধ্যে সৃষ্টি করে। তাকওয়া বা আল্লাহর ভয় সৃষ্টি করার ক্ষেত্রে রোজা অনন্য। রোজার কোনো বিকল্প নেই। আর যার মধ্যে আল্লাহর স্মরণ ও তাকওয়া আছে, তার দ্বারা আল্লাহর নাফরমানি বা গোনাহের কাজ অসম্ভব। রমজান মাসে নিষিদ্ধ কাজ আল্লাহ সাময়িকভাবে নিষেধ করেছেন বলে তা থেকে সে বিরত থাকে। আল্লাহ যা হারাম করেছেন অন্য সময় বা রমজান মাসে কেমন করে তা সে করবে?
ইসলাম সদাচরণের ওপর জোর তাগিদ দিয়েছে। সদাচরণের বড় হকদার হলেন আপন বাবা-মা। স্বামী-স্ত্রী, সন্তানসহ নিকটবর্তী আত্মীয়স্বজন এবং আল্লাহর সব সৃষ্টিই সদাচরণ পাওয়ার দাবিদার। বাবা-মায়ের সাথে সন্তানের আচরণ এবং সন্তানের সাথে বাবা-মা’র আচরণ, স্বামী-স্ত্রীর পারস্পরিক আচরণ, আত্মীয়স্বজন, প্রতিবেশী, বন্ধুবান্ধব, অধীন চাকর-চাকরানি, মুসলিম-অমুসলিম নির্বিশেষে মানুষের সাথে আচার আচরণের ব্যাপারে ইসলাম নিরপেক্ষ নয়। ইসলাম মানুষের সাথে ব্যবহার কেমন হবে তা সুস্পষ্ট করে দিয়েছে। বাবা-মায়ের সাথে সদাচরণের তাগিদ দিয়ে বলা হয়েছে: ‘তারা উভয়ই বা কোনো একজন বার্ধক্যে উপনীত হলে উহ শব্দটি উচ্চারণ করো না’। সন্তানের জন্য তার বাবা-মায়ের খেদমতের সুযোগ পাওয়া বড় সৌভাগ্যের ব্যাপার। সহজ জান্নাতপ্রাপ্তির গ্যারান্টি। বাবা-মায়ের জন্য দোয়া করার ভাষাও আল্লাহ শিখিয়ে দিয়েছেন এবং সেখানে শৈশবে বাবা-মা সন্তানকে যে স্নেহযত্ন ও আদর দিয়ে লালনপালন করেছেন, সেটা স্মরণ করেই আল্লাহর কাছে দোয়া করতে বলেছেন।
বাবা-মা ছাড়াও সব মানুষের সাথে সদাচরণের বিষয়টিকে ইসলাম অত্যন্ত গুরুত্ব দিয়েছে। মানুষ কেন সব সৃষ্টিই ভালো আচরণ পাওয়ার দাবি রাখে। অপ্রয়োজনে গাছের একটি পাতা ছেড়াও পছন্দনীয় নয়। ভারবাহী পশুকে অতিরিক্ত বোঝা দেয়া অপরাধ। কোনো পশু-পাখিকে আটকে রেখে ক্ষুধায় কষ্ট দেয়া গোনাহের শামিল। পশু-পাখির সাথে আচরণ যদি এমন হয়ে থাকে, তাহলে সৃষ্টির সেরা ও আল্লাহর প্রতিনিধিদের সাথে কেমন আচরণ ইসলাম দাবি করতে পারে। মানুষের সাথে দুর্ব্যবহার তো স্বয়ং আল্লাহর সাথেই দুর্ব্যবহার।
আল্লাহর নবী বলেন, ‘ভূপৃষ্ঠে যারা রয়েছেন, তাদের সাথে সদাচরণ করো, তাহলে আসমানে যিনি রয়েছেন তিনিও তোমাদের সাথে সদাচরণ করবেন’।
তিনি আরো বলেন, ‘যারা বড়দের সম্মান ও ছোটদের স্নেহ করে না তারা আমাদের সমাজভুক্ত নয়’।
মুসলিম সমাজেরই যদি কেউ না হয়ে থাকে, তাহলে তার নামাজ-রোজায় আল্লাহর প্রয়োজনটা কী? আজকে আমাদের সমাজে প্রবীণরা বড় অবহেলার পাত্র। বৃদ্ধাশ্রমের ধারণা সমাজে চালু হয়েছে। একজন বৃদ্ধ-বৃদ্ধা তার আত্মীয়পরিজন পরিবেষ্টিত হয়ে জীবনের শেষ দিনগুলো কাটাবে এটাই স্বাভাবিক। আমাদের সবারই উচিত যারা প্রবীণ, আমাদের বয়োজ্যেষ্ঠ তারা যেন যথাযথ ভক্তি ও সম্মান পান। আমাদের বুঝতে হবে যে দয়া করে না, সে দয়া পায় না। সাথে সাথে যারা কনিষ্ঠ তারা যেন আমাদের স্নেহ, যত্ন ও আদর থেকে বঞ্চিত না হয়।
ইসলামের বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচারের মধ্যে ধর্মনিরপেক্ষ গোষ্ঠীর বড় প্রচারণা হলো; সন্ত্রাস ও সাম্প্রদায়িকতা। ইসলামের পূর্ণাঙ্গতাই যারা বিশ্বাসী তারা কখনোই না সন্ত্রাসী আর না সাম্প্রদায়ীক।
রাসূল সা: বলেন, ‘আল্লাহর রাস্তায় যুদ্ধরত একজন মুসলিমকে হত্যা করা এবং একজন অমুসলিমকে হত্যা করা সম অপরাধ’।
‘ওই ব্যক্তি মু’মিন নয়, যে পেটপুরে খায় অথচ তার প্রতিবেশী অভূক্ত থাকে’।
এখানে কে মুসলিম আর কে অমুসলিম সেটা বিবেচ্য নয়।
মদিনায় একদিন হজরত আলী রা: নামাজের উদ্দেশ্যে মসজিদে যাচ্ছিলেন। এমতাবস্থায় তার সামনে এক বয়োবৃদ্ধ ইহুদি খুব ধীরে হাঁটছিলেন। তাকে অতিক্রম করে যাওয়াটা আলী রা: পছন্দ করলেন না। তাই তিনি তার পশ্চাতে ধীরে চললেন। আলী রা:-এর এ আচরণ আল্লাহর কাছে খুবই পছন্দনীয় হলো এবং তিনি তাঁর রাসূল সা:কে ওহি করলেন। আলী রা: জামাতে শরিক না হওয়া পর্যন্ত রাসূল সা: রুকুতে দীর্ঘ সময় কাটালেন।
আরেক দিনের ঘটনা। সাহাবায়ে কেরামসহ রাসূল সা: অবস্থানকালীন একটি শববহনকারী কিছু লোক অতিক্রম করলে রাসূল সা: সম্মানার্থে দাঁড়িয়ে যান। সাহাবায়ে কেরাম বলেন, হে রাসূল সা:, এটা একজন ইহুদির লাশ। তিনি জবাবে বলেন, এটা একজন মানুষের লাশ।
এ হলো অমুসলিম সম্পর্কে ইসলামের দৃষ্টিভঙ্গি। আর সন্ত্রাসের তো প্রশ্নই ওঠে না।
আল্লাহর বাণী, ‘নিশ্চিত ধ্বংস তাদের জন্য, যারা মানুষকে সামনাসামনি গালাগাল ও পেছনে দোষ প্রচার করে’।
ইসলামের নবীর কথা, ‘ওই ব্যক্তি মুমিন নয়, মুমিন নয়, মুমিন নয়, যার হাত ও মুখের অনিষ্ঠ থেকে অন্যরা নিরাপদ নয়’।
মুমিন শব্দগত অর্থ হলো: যার থেকে সবাই নিরাপদ।
ইসলামের দুশমনরা কিছু লোককে বিভ্রান্ত করে চরমপন্থার দিকে ঠেলে দিয়েছে। ফিতরাতের ধর্ম ও মানবধর্ম ইসলামের ওরা কেউ নন। আল্লাহ তায়ালা কুরআন মজিদে যত নবী-রাসূল ও ঈমানদারের বর্ণনা দিয়েছেন, তাঁদের সন্ত্রাসী বা চরমপন্থী হিসেবে উপস্থাপন না করে নিপীড়িত ও নির্যাতিত হিসেবেই উল্লেখ করেছেন। বরং তাঁদের প্রতিপক্ষের চরম জুলুম-নির্যাতনের মোকাবেলায় পরম ধৈর্য অবলম্বনের জোর তাগিদ দিয়েছেন। মদিনায় একটি ইসলামি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার পরই কেবল রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থাপনায় যুদ্ধের ডাক দেয়া হয়েছে।
ইসলাম আমাদের মানতে হবে ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানে অর্থাৎ আনুষ্ঠানিক ইবাদত-বন্দিগিতে, সাথে সাথে মানতে হবে আমাদের আচরণে, লেনদেনে, ব্যবসায়-বাণিজ্যে, চাষাবাদে, চাকরি, রাজনীতিতে-অর্থনীতিতে অর্থাৎ জীবনের সব ক্ষেত্রে। কেবল তখনই প্রতিপালিত হবে আল্লাহর আহ্বান, ‘হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা পূর্ণরূপে ইসলামে দাখিল হও’।
প্রফেসর তোহুর আহমদ হিলালী
উপাধ্যক্ষ (অব:), কুষ্টিয়া সরকারি কলেজ।
No comments:
Post a Comment