শত্রুতার মাঝেও ইরানি যে পণ্য মন জয় করেছে আমেরিকানদের

রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে ইরান ও আমেরিকার মধ্যে শত্রুতাপূর্ণ অবস্থান বিরাজ করছে বহু দিন ধরে। কিন্তু এর মাঝেও ইরানি গালিচার সবচেয়ে বড় ক্রেতায় পরিণত হয়েছে আমেরিকা। গত বছর দেশটি ১৯ কোটি ৬০ ডলারের ইরানি গালিচা আমদানি করেছে। এ তথ্য দিয়েছেন ইরানের জাতীয় গালিচা কেন্দ্রের প্রধান হামিদ কারগার।

আমেরিকায় দীর্ঘকাল ধরেই সমাদৃত হয়ে আসছে ইরানি হাতেবোনা গালিচা। কিন্তু ২০১০ সালে আরোপিত নিষেধাজ্ঞার জেরে আমেরিকার বাজারে ইরানি গালিচা জৌলুস হারাতে বাধ্য হয়েছিল। সে সময়ে বাজারে ঢোকে পাকিস্তান, ভারত, তুরস্ক এবং চীনের তুলনামূলক সস্তা গালিচা।

অতীতে বিশ্ব বাজারে চীন প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে বিবেচিত হলেও বর্তমানে ইরানের গালিচা আমদানি করছে দেশটি; এ ছাড়া ইরানি গালিচার সর্ববৃহৎ আমদানিকারী দেশে পরিণত হয়েছে আমেরিকা। এ কথা জানান কারগার। তেহরানে গালিচা মেলা শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।

ইরানি হাতেবোনা গালিচার ২৩তম মেলায় এই প্রথমবারের মতো অংশ নেবেন মার্কিন ১৪ ব্যবসায়ী। সপ্তাহব্যাপী এ মেলা চলতি মাসের ২৩ তারিখে শুরু হবে। গালিচা ছাড়াও ইরানি ক্যাভিয়ার, পেস্তা এবং জাফরানের ব্যাপক চাহিদা রয়েছে আমেরিকায়।

ইরানের উৎপাদিত কয়েকটি ঐতিহ্যবাহী প্রধান পণ্যের একটি হচ্ছে গালিচা। ইরানি গালিচার খ্যাতি জগৎজোড়া। ইরানি গালিচার ইতিহাস প্রায় ২৫০০ বছরের পুরোনো।

ইরানি সংস্কৃতির একটি বড় জায়গা দখল করে আছে গালিচা। এগুলোর অধিকাংশই হাতেবোনা। বর্তমানে ইরানি গালিচা পৃথিবীর ১০০টিরও বেশি দেশে রফতানি হচ্ছে। তবে এখন হাতেবোনা গালিচার সঙ্গে সেখানে মেশিনের মাধ্যমেও গালিচা তৈরি হচ্ছে।

বর্তমান আধুনিক সময়ে ইরানে গালিচা শিল্প অনেকটা যন্ত্রনির্ভর হয়ে পড়েছে। হাতেবোনা গালিচার অত্যধিক মূল্যের কারণে যন্ত্রনির্ভর গালিচা শিল্পের দ্রুত উদ্ভব ঘটছে। এ ছাড়া পৃথিবীর বেশ কয়েকটি দেশ বর্তমানে গালিচা শিল্পে এগিয়ে আসায় এ খাতে প্রতিযোগিতারও সৃষ্টি হচ্ছে। এর মধ্যেও ইরানি গালিচা শিল্প তার ঐতিহ্য ধরে রাখার চেষ্টা করে যাচ্ছে।

No comments:

Post a Comment