অনেকেরই স্বাস্থ্যকরভাবে ওজন কমানোর জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি নেই। ওজন কমানো শুধু ক্যালোরি কমানোর বিষয়ই না।
কেননা সঠিক পরিমাণে পুষ্টি না থাকলে নিম্ন হারে ক্যালোরিযুক্ত খাদ্যাভ্যাসের ফলে উপকারের চেয়ে ক্ষতিই বেশি হতে পারে।
ভারসাম্যপূর্ণ খাদ্যাভ্যাসের জন্য জরুরি পুষ্টি উপাদানগুলো হলো, প্রোটিন, ফ্যাট, কার্বোহাইড্রেটস, মিনারেল ইত্যাদি। আর প্রচুর পরিমাণে পানিও পান করতে হবে।
এখানে ওজন কমানোর জন্য জরুরি পুষ্টি উপাদানগুলোর একটি তালিকা দেওয়া হলো।
১. আরজিনিন
গবেষণায় দেখা গেছে, ১২ সপ্তাহ ধরে স্থুলতায় আক্রান্ত নারীদেরকে আরজিনিন সমৃদ্ধ খাবার খেতে দেওয়ার ফলে তাদের কোমরের সাইজ কমেছে ৩ ইঞ্চি করে এবং ওজন কমেছে ৬.৫ পাউন্ড।
২. ম্যাগনেশিয়াম
এই খনিজ উপাদানটি চর্বি পোড়াতে সহায়ক। উচ্চহারে ম্যাগনেশিয়াম আছে এমন খাবার খেলে দেহে গ্লুকোজ এবং ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে থাকে।
৩. পটাশিয়াম
পটাশিয়ামও আপনার পেটের মেদভুড়ি কমাতে সহায়ক। এছাড়া ব্যায়ামের পর মাংসপেশির ক্ষয়রোধেও কার্যকর এটি।
এছাড়া দেহ থেকে অতিরিক্ত সোডিয়াম বের করে দিয়ে ফাঁপাভাবও কমায়।
৪. কোলিন
এটি চর্বি কমাতে সহায়ক বি ভিটামিন। লিভারের চারপাশে চর্বি জমাতে সহায়ক জিন প্রতিরোধ করে এটি। সুতরাং কোলিন সমৃদ্ধ খাবার প্রতিদিনই খান।
৫. প্রতিরোধক শ্বেতসার
এটি ধীরগতির কার্বোহাইড্রেটস নামেও পরিচিত। ক্ষুদ্রান্তের ভেতর দিয়ে হজম না হয়েই চলে যায় বৃহদান্ত্রে। এবং উপকারি ব্যাকটেরিয়াদের খাবার হয়। যার ফলে দীর্ঘক্ষণ পেট ভারা থাকার অনুভূতি বজায় থাকে। এবং অতিরিক্ত চর্বি পোড়ায়।
৬. ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড
জমে থাকা চর্বি কমায়। যাদের দেহে ওমেগা ৩ ফ্যাটি এসিড বেশি থাকে তারা দুই বছর বেশি বাঁচেন বলেও গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে।
৭. লিউসিন
এই অ্যামাইনো এসিডটি প্রোটিন শুষে নেওয়ার সক্ষমতা বাড়ায়। চর্বি কমিয়ে ছিপছিপে গড়ন এনে দেয় এটি।
৮. ভিটামিন ডি
ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণে সহায়ক এই ভিটামিন। এটি আপনার ওজন কমানোর ডায়েটে অবশ্যই থাকা উচিত। আর এটি বিশেষকরে পেটের চর্বি কমাতে বেশ কার্যকর।
৯. মনোস্যাচুরেটেড ফ্যাট
পেটে মেদ জমতে দেয় না এই পুষ্টি উপাদানটি। ওলেইক এসিড সমৃদ্ধ অ্যাভোকাডোর অর্ধেকটা খাওয়ার কয়েকঘন্টা পরও খাবার খাওয়ার আকাঙ্খা ৪০% কম থাকে।
১০. ক্যালসিয়াম
চর্বি পোড়াতে সহায়ক। এছাড়া দেহকে দীর্ঘক্ষণ শক্তির যোগানও দেয়। ফলে ক্ষুধার তীব্রতায় আপনি অস্বাস্থ্যকর খাবার খাবেন না।
১১. ভিটামিন সি
পেটে চর্বি জমাতে সহায়ক কর্টিসোল এর উচ্চ মাত্রার ফলে স্ট্রেস তৈরি হয়। আর ভিটামিন সি এমন একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা স্ট্রেস মোকাবিলায় এবং ফলত ওজন কমাতে সহায়ক।
১২. সেলেনিয়াম
যাদের থাইরয়েডের সমস্যা আছে তাদের দেহে সেলেনিয়ামের ঘাটতি লক্ষ্য করা যায়। এছাড়া হজম প্রক্রিয়ায় ধীর গতি এবং স্থুলতায় আক্রান্ত হওয়ার সমস্যাও দেখা যায়। প্রতিদিন মাত্র ৮০ মাইক্রোগ্রাম সেলেনিয়াম দেহে প্রবেশ করলে অ্যান্টি-থাইরয়েড অ্যান্টিবডি কমে আসে।
১৩. ভিটামিন বি
ভিটামিন বি ১২ শক্তির দুটি উৎস হজমে সহায়ক- চর্বি এবং কার্বোহাইড্রেটস।
১৪. জিঙ্ক
যাদের দেহে ইনসুলিনের মাত্রা কম তাদের যথেষ্ট পরিমাণে ইনসুলিন নিঃসরণ হয় না। যার ফলে শক্তি কমে যেতে পারে এবং বেশি খাবার খাওয়ার আকাঙ্খা হতে পারে। সুতরাং জিঙ্ক খেলে দেহে ইনসুলিন নিঃসরণের মাত্রা ঠিক থাকে।
১৫. ট্রিপটোফ্যান
ঘুম ভালো হলে ওজন কমে। এটি আমাদের দেহকে শক্তি পুনরুদ্ধারে এবং মাংসপেশি গড়ে তুলতে সহায়তা করে। কিন্তু আপনি যদি যথেষ্ট পরিমাণে ঘুমাতে না পারেন তাহলে অ্যামাইনো এসিড- ট্রিপটোফ্যান সমৃদ্ধ খাবার খেতে হবে। যেটি সেরোটোনিন এর অগ্রদূত এবং মেলেটোনিনে রুপান্তরিত হয়; যা ভালো ঘুমের সহায়ক। ওজন কমাতে সহায়ক সেরা একটি পুষ্টি উপাদান এটি।
No comments:
Post a Comment