রক্তচাপ মোকাবিলায় ৯ খাদ্য

রক্তচাপ শুধু উচ্চ মানসিক বা শারীরিক চাপ নয়। এর ফলে আপনার মৃত্যুও হতে পারে।
স্থুলতা, জিনগত কোনো ত্রুটি, অতিরিক্ত মদপান, উচ্চহারে লবণ ভক্ষণ, অ্যারোবিক এক্সারসাইজ না করা, জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি এবং বেশি পেইন রিলিভার খাওয়া প্রভৃতি উচ্চ রক্তচাপের কারণ। দীর্ঘমেয়াদি রক্তচাপ মোকাবিলায় সাধারণত ওষুধ খেতে বলা হয়।
তবে এর পাশাপাশি যদি আপনি কিছু খাবার নিয়মিতভাবে খান তাহলে আপনার রক্তচাপ আরো ভালো নিয়ন্ত্রণে থাকবে। আসুন জেনে নেওয়া যাক সেগুলো কী।

১. কলা
সব মৌসুমেই সহজলভ্য এই ফলটিতে আছে প্রচুর পরিমাণে পটাশিয়াম যা আমাদের দেহে সোডিয়ামের প্রভাব ১০%-এরও বেশি কমাতে পারে। এটি কিডনিকেও শক্তিশালী করে। সুতরাং প্রতিদিন অন্তত একটি বা দুটি কলা খাওয়ার চেষ্টা করুন।
২. সেলারি শাক
এতে আছে ৩-এন-বুটিলফ্যাথালাইড নামের একটি ফাইটোক্যামিক্যাল যা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে বেশ সহায়ক। এটি আমাদের দেহের রক্তচলাচলের শিরা-উপশিরার ভেতরের দেয়ালের মাংসপেশিকে শিথিল করে এবং রক্তচলাচলের পথে আরো বেশি জায়গা তৈরি করে রক্তের প্রবাহকে চাপ ছাড়াই চলাচলে সহায়তা করে।
ফাইটোক্যামিক্যালস স্ট্রেস হরমোনের উৎপাদনও কমিয়ে দেয়। স্ট্রেস হরমোন রক্তের শিরাগুলোকে সংকুচিত করে ফেলে এবং উচ্চ রক্তচাপ সৃষ্টি করে।
৩. মরিচ
যারা মাঝারি মাত্রার উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত তারা কালো এবং লাল মরিচ খেলে বেশি উপকার পাবেন। মরিচ খেলে রক্তের শিরা-উপশিরাগুলো আরো প্রসারিত হয়। এছাড়া রক্তের প্লেটলেটগুলোকেও একসঙ্গে মিশে যেতে বাধা দেয় মরিচ। ফলে রক্তপ্রবাহ অবাধ থাকে।
৪. পেঁয়াজ
পেঁয়াজও রক্তচাপ কমায়। পেঁয়াজে আছে কোয়েরসেটিন নামের একটি অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্ল্যাভোনোল। এতে আরো আছে সালফার-ভিত্তিক কম্পাউন্ড যা উচ্চ রক্তচাপের সঙ্গে লড়াই করে এবং উচ্চ রক্তচাপ কমায়।
৫. মধু
এতে আছে ওলিগোস্যাচারিডস নামের একটি কার্বোহাইড্রেটস যা রক্তের শিরাগুলোর ওপর শীতল প্রভাব ফেলে। এতে আরো আছে এমন সব অ্যামাইনো এসিড এবং অন্যান্য পুষ্টিগুন যা সিস্টোলিক রক্তচাপ কমায় লক্ষণীয়ভাবে।
৬. রসুন
বেশ কিছু গবেষণায় রসুনের রক্তচাপ কমানোর ক্ষমতা প্রমাণিত হয়েছে। কাঁচা বা রান্না করা রসুন দুটোই উচ্চ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ করে এবং কোলোস্টেরল এর মাত্রা কমায়। রসুনে আছে অ্যালিসিন যা নাইট্রিক অক্সাইড এবং হাইড্রোজেন সালফাইড উৎপাদন উৎসাহিত করে। হাইড্রোজেন সালফাইড এমন একটি উপাদান যা রক্তপ্রবাহের গতি বাড়ায়, গ্যাস অপসারণ করে এবং হৃদপিণ্ডের ওপর চাপ কমায়। যার ফলে উচ্চ রক্তচাপের বিপজ্জনক প্রভাব এড়ানো সম্ভব হয়।
৭. মেথি বীজ
এতে সোডিয়ামের পরিমাণ খুবই কম থাকে। ফলে আপনি একটি ভেষজ হিসেবে একে প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় যুক্ত করতে পারেন। এটি রক্তচাপ কমাতে কার্যকর একটি নিম্ন-সোডিয়াম উপাদান। মেথি বীজে থাকা উচ্চ পটাশিয়াম এবং উচ্চ খাদ্য আঁশ উচ্চ রক্তচাপ কমাতে সহায়ক।
৮. লেবু
আমাদের রক্তের শিরাগুলোর অনমনীয় হয়ে পড়া ঠেকাতে এবং রক্তচাপ কমাতে কার্যকর লেবু। লেবুতে আছে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট যা আমাদের রক্তের শিরা-উপশিরাগুলোকে নরম এবং নমনীয় করে তোলে। লেবু ভিটামিন সি-র সমৃদ্ধ উৎস যা ফ্রি র্যাডিকেলস এর ক্ষতিকর প্রভাব নিষ্ক্রিয় করতে সহায়ক।
৯. তরমুজ
তরমুজের বীজে আছে কিউকারবিটাসিন নামের একটি উপাদান যা রক্তের নালীগুলোকে প্রসারিত করে তাদের ওপর রক্তচাপ কমায়। এই ফলটি এল-সাইট্রুলিনেরও একটি সমৃদ্ধ উৎস। যা রক্তের প্রবাহ ঠিক রাখতে এবং রক্তচাপ কমাতে সহায়ক। তরমুজে আছে প্রচুর পরিমাণে অ্যামাইনো এসিড যা রক্তচাপকে আপনার দেহের ক্ষতি করতে বাধা দেয়।

No comments:

Post a Comment