নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। শরীফ বায়জীদ মাহমুদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ ।
আপনার জিজ্ঞাসার ২০২৮ পর্বে রোগমুক্তি বা চাকরি প্রাপ্তির কোনো দোয়া আছে কি না, সে সম্পর্কে ইমেইলে জানতে চেয়েছেন আনিসুর রহমান আনিস। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : মনের আশা, উদ্দেশ্য পূরণ, যেমন : রোগমুক্তি কিংবা চাকরিপ্রাপ্তির জন্য আল্লাহর কাছে কখন, কীভাবে প্রার্থনা করলে অথবা কী আমল করলে মনোবাসনা আল্লাহ পূরণ করবেন? কোরআন হাদিসের আলোকে উত্তর জানতে চাই।
উত্তর : আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে যেকোনো সময় আল্লাহর বান্দারা চাইতে পারেন। আল্লাহর বান্দাদের দোয়া করার জন্য, চাওয়ার জন্য আল্লাহ রাব্বুল আলামিন বারবার অনুপ্রাণিত করেছেন, উৎসাহিত করেছেন। আল্লাহ সুবাহানাহুতায়ালা এরশাদ করেন, ‘তোমাদের রব এ কথা ঘোষণা দিচ্ছেন, তোমরা আমাকে ডাকো, আমি তোমাদের ডাকে সাড়া দেব। যখনই আল্লাহর বান্দা দোয়া করে থাকে, আমি তাঁদের দোয়ায় সাড়া দিয়ে থাকি।’ সুতরাং দোয়ার ব্যাপারে আল্লাহতায়ালা অনেক আয়াত অবতীর্ণ করেছেন, যার মাধ্যমে আমরা জানতে পেরেছি যে, আল্লাহর বান্দা যখনই আল্লাহর কাছে চাইবে, যে অবস্থায় চাইবে, প্রত্যেকটি অব্স্থায় আল্লাহ সুবানাহুতায়ালা বান্দাদের ডাকে সাড়া দেবেন।
তবে কিছু কিছু সময় আছে যে সময়গুলো দোয়া পূরণের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ওই গুরুত্বপূর্ণ সময়গুলো আপনাকে জানতে হবে, জেনে আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে আপনি মেহেরবানি করে চাইবেন। তাহলে আল্লাহ সুবাহানাহুতায়ালা আপনার দোয়াটি কবুল করবেন। দোয়া কবুলের সময়গুলো হচ্ছে আজান এবং একামতের মাঝে, বৃষ্টি অবতীর্ণ হওয়ার সময়, মুসাফির ব্যক্তির সফরের সময়, রোজাদার ব্যক্তি রোজারত অবস্থায়, সন্তানের জন্য পিতার দোয়া। এই কতগুলো পর্যায় আল্লাহ রাব্বুল আলামিন জানিয়ে দিয়েছেন, যাতে আল্লাহর বান্দারা ওই সময়গুলোতে দোয়া করতে পারেন। যেমন : রাতের শেষ তৃতীয়াংশে, রাতে ঘুম থেকে ওঠার পর, নবী (সা.) বলেছেন, ‘ঘুম থেকে জাগার পর আল্লাহর বান্দা দুই রাকাত নফল নামাজ পড়বে, তার পর আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে যেই ফরিয়াদ করবে আল্লাহতায়ালা সেই দোয়া কবুল করবেন।’
সহিহ বুখারি হাদিসের মধ্যে রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, ‘কোনো ব্যক্তি যখন আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে মিনতির সঙ্গে সুরা ইউনুস দোয়াটি পড়বে, আল্লাহ তায়ালা তাঁর যে বালা-মুসিবত আছে, সেটিকে দূর করবেন এবং তাঁর দোয়া কবুল করবেন।’ ঠিক যেই প্রেক্ষাপটগুলোতে আল্লাহতায়ালা দোয়া কবুল করবেন বলে ঘোষণা করেছেন, সেই প্রেক্ষাপটগুলো ভালো করে জেনে, সেই অবস্থায় আল্লাহর কাছে দোয়া করার চেষ্টা করুন। তবে এগুলোর মধ্যে আল্লাহর সবচেয়ে কাছে বান্দারা পৌঁছাবে যখন আল্লাহর বান্দারা সেজদাহরত অবস্থায় থাকবে। তাই সেজদাহে আপনি আল্লাহর কাছে দোয়া করতে পারেন।
No comments:
Post a Comment