সারা বিশ্বের হিসাবে নারীদের মধ্যে স্তন ক্যানসারের অবস্থান এক নম্বরে। তবে বাংলাদেশে এর অবস্থান দ্বিতীয়। প্রথম হলো জরায়ুমুখের ক্যানসার। স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে নিয়মিত পরীক্ষা করা জরুরি। প্রাথমিক অবস্থায় স্তন ক্যানসারের চিকিৎসা নিলে রোগ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
স্তন ক্যানসার নির্ণয়ে যেসব পরীক্ষা হয়
১. ম্যামোগ্রাম
২. আলট্রাসনোগ্রাম
৩. এফএনএসি (ফাইন নিডল অ্যাসপিরেশন সাইটোলজি)
৪. নিডল (কোর) বায়োপসি
৫. এক্সিসন বায়োপসি
৬. রক্ত পরীক্ষা
এ ছাড়া ক্যানসার শরীরের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়েছে কি না, সেটা দেখার জন্যও কিছু পরীক্ষা করা হয়। পরীক্ষাগুলো হলো :
১. পেটের আলট্রাসনোগ্রাম
২. হাড়ের স্ক্যান
৩. সিটি স্ক্যান
৪. এমআরআই
৫. পিইটি স্ক্যান
স্তন ক্যানসার প্রতিরোধের উপায়
পরিবর্তনযোগ্য ঝুঁকির কারণগুলোর বিষয়ে সচেতন হওয়া এবং সেগুলো এড়িয়ে চলাই হলো স্তন ক্যানসার প্রতিরোধের প্রধান ধাপ। যেমন : পুষ্টিকর খাবার খাওয়া, অধিক চর্বি ও মসলাযুক্ত খাবার কম খাওয়া, পরিশ্রমহীন জীবন পদ্ধতি পরিবর্তন করা, নিয়মিত ব্যায়াম করা, অতিরিক্ত ওজন ঝেড়ে ফেলা, শিশুকে নিয়মিত স্তন্যদান, ধূমপান এবং মদ্যপান পরিহার করা ইত্যাদি।
প্রাথমিক অবস্থায় স্তন ক্যানসার শনাক্ত করা গেলে এর নিরাময় সম্ভব। তাই ক্যানসার প্রতিরোধের একটি গুরুত্বপূর্ণ অনুষঙ্গ হলো প্রাথমিক অবস্থায় এ রোগ শনাক্ত করা।
চল্লিশোর্ধ্ব নারীদের বছরে একবার ম্যামোগ্রাম করানো উচিত। এতে অনেক ক্ষেত্রেই রোগ প্রাথমিক অবস্থাতেই ধরা পড়ে।
২০-৪০ বছরের নারীদের তিন বছরে একবার অভিজ্ঞ ডাক্তারের কাছে স্তন পরীক্ষা করা উচিত।
২০ বছর বয়স থেকে মেয়েদের নিয়মিত নিজের স্তন নিজেই পরীক্ষা করা উচিত। একে বলে সেলফ এক্সামিনেশন। এর সঠিক পদ্ধতিটি কোনো ডাক্তারের কাছ থেকে শিখে নিতে হবে।
চিকিৎসা
বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি স্তন ক্যানসারে ব্যবহৃত হয়। সার্জারি, কেমোথেরাপি, হরমোনথেরাপি, টার্গেটথেরাপি, রেডিওথেরাপি। রোগের পর্যায় অনুযায়ী চিকিৎসা পদ্ধতি বেছে নেওয়া হয়। কখনো একক, কখনো সম্মিলিত চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়।
একবার ভালো হয়ে গেলে রোগ আবার ফিরে আসতে পারে। তাই চিকিৎসার পর নিয়মিত ফলোআপ করতে হয়।
সূচনায় ধরা পড়লে স্তন ক্যানসার সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। তাই সচেতনতাই হতে পারে এই প্রাণঘাতী রোগের একমাত্র রক্ষাকবচ।
ডা. গুলজার হোসের উজ্জ্বল
রেসিডেন্ট, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ।
No comments:
Post a Comment