অনেক খাবার আমরা খাই শরীরের ভালোর জন্য। সেই স্বাস্থ্যকর খাবারের মধ্যে একটি অন্যতম খাবার হলো বাদাম। বাদামের ভালো চর্বি হৃৎপিণ্ডের জন্য খুব ভালো। এ ছাড়া ওজন কমাতেও অনেকে বাদাম খেয়ে থাকেন। রক্তের কোলেস্টেরল কমাতে বাদাম অনেক উপকারী একটি খাবার। বাদামের আঁশ, ভিটামিন ও মিনারেল স্বাস্থ্যের জন্য খুব ভালো।
তবে অনেকেই ওষুধের মতো মুঠি মুঠি বাদাম খায় স্বাস্থ্যের ভালোর জন্য। মূলত অনেক গুণের এই বাদাম তখনই স্বাস্থ্যকর, যখন কেউ পরিমিত পরিমাণে খেয়ে থাকে। স্বাস্থ্যকর হলেও অতিরিক্ত কখনোই স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয়।
বাদামে রয়েছে প্রচুর চর্বি। এই চর্বি ভালো হলেও এটি থেকে আসে প্রচুর ক্যালরি। তাই অতিরিক্ত বাদাম খেলে চাহিদার বেশি ক্যালরি গ্রহণ থেকে ওজন বাড়ার ঝুঁকি থাকে।
বাদাম প্রোটিনের অনেক ভালো উৎস। তাই অতিরিক্ত বাদাম খাওয়া মানে অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ করা। এ ছাড়া বাঙালি হিসেবে আমরা অন্যান্য প্রোটিন, যেমন—ডাল, মাছ, ডিম, মাংস ইত্যাদি খেয়ে থাকি। তাই অতিরিক্ত প্রোটিন গ্রহণ কিডনির জন্য ঝুঁকির কারণ হয়ে দাঁড়ায়।
বাদাম খাওয়ার সময় অনেকে লবণ খেয়ে থাকে। এটি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। কারণ, লবণের সোডিয়াম রক্তচাপ বাড়িয়ে দিতে পারে।
বাদামে প্রচুর আঁশ থাকে। তাই বাদাম বেশি খেলে অনেকের বদহজম, পাতলা পায়খানা বা গ্যাস হতে পারে। এ ছাড়া বাদাম খেলে ক্ষুধা কমে যায়। তাই যাদের খাবারে রুচি কম বা যাদের ওজন কম, তারা বাদাম খেলে অন্যান্য খাবার কম খাওয়া হবে। এটি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়।
বাদামে প্রচুর ম্যাগনেসিয়াম থাকে। এই উপাদান অনেক ওষুধের কাজে বাধা দেয়। তাই বাদাম গ্রহণের কারণে অনেক ম্যাগনেসিয়াম থেকে ওষুধের কার্যকারিতা কমে যেতে পারে। এ ছাড়া যাদের রক্তে ম্যাগনেসিয়াম বেড়ে যায়, তারা বেশি বাদাম খেলে ক্ষতিকর।
বাদামে অনেকের অ্যালার্জি রয়েছে, বাদাম খেলে অনেকের অনেক অ্যালার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। অনেকের মাথা ঘোরে, এটাও একরকম অ্যালার্জি।
তাই হৃৎপিণ্ডকে ভালো রাখতে বা ওজন কমাতে অনেক বাদাম খেয়ে স্বাস্থ্যের অন্যান্য ঝুঁকি না বাড়ানোই ভালো। পরিমিত বাদাম স্বাস্থ্যের জন্য খুবই উপকারী। তাই বড় বয়ামে বা জারে বাদাম না রেখে ছোট ছোট প্যাকেটে বা নিজের হাতের একমুঠ বাদাম বিকেলের নাশতা হিসেবে অথবা মধ্যসকালে খেতে পারেন।
তামান্না চৌধুরী
প্রধান পুষ্টিবিদ, অ্যাপোলো হাসপাতাল।
No comments:
Post a Comment