বর্তমান বাজারে কয়েকটি ব্র্যান্ডের কোল্ড ড্রিংক খাওয়া আর বিষ খাওয়া একই কথা। এক গবেষণা থেকে এই তথ্য- ৫টি ব্র্যান্ডের কোল্ড ড্রিংকে পাওয়া গেছে কয়েকটি বিষাক্ত ধাতু; সেগুলি নামজাদা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি পেপসিকো এবং কোকা কোলার তৈরি করা।
একটি সরকারি সমীক্ষা রিপোর্টে সামনে এল মারাত্মক সব তথ্য। জানা গেল, ৫টি নামজাদা ঠান্ডা পানীয়ের বোতলে রয়েছে বিষাক্ত ৫টি ধাতু। এই ৫টি ধাতু হল— অ্যান্টিমোনি, শিসা, ক্রোমিয়াম, ক্যাডমিয়াম, এবং কম্পাউন্ড ডিইএইচপি অথবা ডাই (টু-ইথাইলহেক্সলি) প্যাথলেট। যে ৫টি ব্র্যান্ডের কোল্ড ড্রিংকে পাওয়া গেছে এই সমস্ত বিষাক্ত ধাতু সেগুলি নামজাদা মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি পেপসিকো এবং কোকা কোলার তৈরি করা।
রিপোর্টে প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী, পেপসি, কোকা কোলা, মাউন্টেন ডিউ, স্প্রাইট, এবং সেভেন আপ— এই ৫টি কোল্ড ড্রিংকে রয়েছে বিষাক্ত ধাতব উপাদান। সমীক্ষাটি পরিচালনা করেছে ভারত সরকারের গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্য সংস্থা ড্রাগস টেকনিক্যাল অ্যাডভাইসরি বোর্ড (ডিটিএবি)। ৫টি কোল্ড ড্রিংক-এর মধ্যে স্প্রাইট কোকা কোলার মালিকানাধীন। আর বাকি চারটির প্রস্তুতকর্তা পেপসিকো।
ডিটিএবি-র নির্দেশে এই সমীক্ষা পরিচালনা করেছিল কলকাতা নির্ভর সংস্থা অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ হাইজিন অ্যান্ড পাবলিক হেলথ, যা আদপে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীন একটি সংস্থা। সংস্থাটি গত ফেব্রুয়ারি-মার্চ মাসে বাজার থেকে বিভিন্ন কোল্ড ড্রিংকের ৪টি করে ৬০০ মিলির বোতল নমুনা হিসেবে সংগ্রহ করে পরীক্ষা করে। পরীক্ষার ফলে দেখা যায়, ৫টি ঠাণ্ডা পানীয়ের বোতলে রয়েছে বিষাক্ত ধাতব উপাদান।
রিপোর্টে আরও জানানো হয়েছে, ফ্রিজ থেকে বার করে এইসব কোল্ড ড্রিংকের বোতল ঘরের স্বাভাবিক তাপমাত্রায় রেখে দিলে ধাতব উপাদানের বিষময়তা আরও বৃদ্ধি পায়।
ওয়ার্ল্ড হেল্থ অর্গানাইজেশনের মতে, শিসা আর ক্যাডমিয়াম হল মানবদেহের পক্ষে সবচেয়ে ক্ষতিকর ১০টি ধাতব উপাদানের মধ্যে অন্যতম। এই দু’টি উপাদান যখন পানীয়ের মাধ্যমে শরীরে প্রবেশ করে, তখন মস্তিস্ক এবং স্নায়ুতন্ত্রে অত্যন্ত ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। শিশুদের ক্ষেত্রে এই ক্ষতিকরটাআরও বেশি। এই ধরনের উপাদান শরীরে বেশি পরিমাণে প্রবেশ করলে কোমায় পর্যন্ত আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। কাজেই স্বাস্থ্য দফতরের উদ্যোগে যতদিন না কোল্ড ড্রিংকসে বিষাক্ত উপাদানের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা হচ্ছে, ততদিন পর্যন্ত এই ধরনের ঠান্ডা পানীয় এড়িয়ে চলাই স্বাস্থ্যকর বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
অতএব নিজেরা সতর্ক হোন, পাশাপাশি এই খবর শেয়ার করে সতর্ক করুন অন্যদেরও।
No comments:
Post a Comment