মুখশ্রী আকর্ষণীয় করে তুলতে সাজসজ্জা কিংবা নিকটাত্মীয়ের বিয়ের উপহার মানেই সোনার গয়না। এমন একটা ধারণা তো কমবেশি রয়েছেই। কিন্তু বর্তমান বাজারে সোনা আর হিরের গয়নার দাম যে উর্দ্ধমুখী! কী করবেন? গয়না তো পড়তেই হবে, উপহারতো দিতেই হবে, কিন্তু কোন গয়না? এখানে দেয়া হলো পকেট বাঁচিয়ে গয়না কেনার ১০টি উপায় সাথে গয়নার বর্তমান বাজাদরও—
১| ২২ ক্যারোট ইয়েলো গোল্ডের গয়নার দামই সবচেয়ে বেশি। কারণ তাতে সোনার পরিমাণ থাকে ৯১.৬ শতাংশ। এর পরিবর্তে যদি ১৮ ক্যারোট হোয়াইট গোল্ডে গয়না গড়ানো যায় বা কেনা যায়, তবে তাতে সোনার পরিমাণ থাকবে ৭৫ শতাংশ। বাকিটা থাকবে প্যালাডিয়াম অথবা রুপো।
২| হোয়াইট গোল্ডের মতোই যখন সোনার সঙ্গে কপার মিশিয়ে অ্যালয় গোল্ড তৈরি করা হয়, তখন তাকে বলে রোজ গোল্ড। এই গয়নার চাহিদা হোয়াইট গোল্ডের মতো না হলেও দক্ষ স্বর্ণকারের হাতে পড়লে এই গয়নাও নজর কাড়বে সকলের।
৩| বিদেশে ১০ ক্যারোট, ৯ ক্যারোট গোল্ড জুয়েলারি পরারও চল রয়েছে। এগুলি আমাদের স্থানীয় বাজারের পাশাপাশি অনলাইনেও কেনা যায়। তবে অবশ্যই নামী সাইট থেকে কিনতে হবে।
৪| সোনার গয়নার পরিবর্ত হিসেবে যুগ-যুগ ধরে মা-বোনরা রুপোর উপরে সোনার জল করা গয়না গড়িয়ে এসেছেন। তেমন জল-করা গয়না কিন্তু সোনার গয়নাকেও টেক্কা দিতে পারে। তার জন্য অত্যন্ত দক্ষ স্বর্ণকার প্রয়োজন আর প্লেটিংয়ের পরিমাণ বেশি পাতলা হলে গয়নার রং কিন্তু সোনার গয়নার মতো হবে না।
৫| রূপোর উপরে সোনার জল করা গয়নার ক্ষেত্রে একটু রঙিন পাথর দেওয়া সেটিংয়ের গয়না গড়ালে বোঝাই যাবে না বেস-মেটালটি আসলে সোনার না রুপোর। এই ধরনের গয়না দেখতে খুব আকর্ষণীয় হয় অথচ কেউ টেরও পায় না যে সোনা নয়।
৬| লো-ক্যারাট সোনার গয়না বা গোল্ড প্লেটেড গয়না হালকা ডিজাইনের করলেই ভাল। বেশি ভারী গয়না গড়ালে ধরা পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা।
৭| হিরের পরিবর্ত হিসেবে আমেরিকান ডায়মন্ডের গয়না অনেক পুরনো ট্রেন্ড হয়ে গিয়েছে। বরং ইদানীং খুব সুন্দর সুন্দর সেমি-প্রেশাস স্টোন জুয়েলারি পাওয়া যায় স্টার্লিং সিলভার বা অন্যান্য ধাতুতে সেটিং করা। অ্যামেথিস্ট, অ্যাকোয়ামেরিন, পেরিডট, টোপাজ, কোয়ার্টজ ইত্যাদি জুয়েলারি কেমন চোখজুড়োনো হয়, তা ভাল কোনও জুয়েলারি শপে গেলেই দেখতে পাবেন।
৮| হিরের গয়নার পরিবর্ত হতে পারে কুন্দন এবং জড়োয়া গয়না। এই গয়নাগুলি পরার চল বাঙালিদের মধ্যে অপেক্ষাকৃত কম, তবে সাম্প্রতিক কালের কসমোপলিটন বাঙালি মেয়েরা সব ধরনের লুক স্পোর্ট করতে ভালবাসেন। নিকটাত্মীয়ের উপহার হিসেবে কুন্দনের আংটি বা দুল কিন্তু বেশ ভাল। হাজার দুয়েকের মধ্যেই দাম হবে।
৯| খাঁটি রুপোর ডিজাইনার গয়নাও কিন্তু উপহারের জন্য বেশ ভাল, বিশেষ করে যদি সেই মেয়ে একটু স্টাইলিশ এবং ইন্টেলেকচুয়াল হন। রুপোর গয়নায় কেমন করে সমস্ত অকেশনে নিজেকে সাজাতে হয়, তার উজ্জ্বল উদাহরণ বিখ্যাত শিল্পপতি হর্ষ নেওটিয়ার স্ত্রী, সোশ্যাল ওয়ার্কার মধু নেওটিয়া।
১০| ৮০-র দশকে মুক্তোর গয়না পরার চল খুব বেশি ছিল। সেই ফ্যাশন সময়ের সঙ্গে সঙ্গে পালটেছে কিন্তু টিকে রয়েছে আজও। কালচার্ড পার্ল ও স্টার্লিং সিলভার দিয়ে সুন্দর গয়না গড়ানো যায়। অথবা সিম্পল একটা পার্ল স্ট্রিং লুক সেট করে দিতে পারে।
যেখানে পাবেনঃ অভিজাত পোশাক প্রতিষ্ঠান আড়ং, কে ক্রাফট, অঞ্জন’স, ওজি, রঙ, দেশাল, নগরদোলা প্রভৃতি দোকানেও বাহারি মানের গহনার ছড়াছড়ি। রাজধানীর প্রায় প্রতিটি মার্কেটেই রয়েছে গহনার দোকান। তবে গাউছিয়া মার্কেটের সামনে রাস্তার ওপর বসা ইমিটেশন গহনার দোকানগুলো হচ্ছে কমদামে গহনা কেনার সবচেয়ে ভাল জায়গা। ফুটপাথের এসব দোকানে কানের দুল, মালা, চুলের ক্লিপ হিজাবের ব্রুজ প্রভৃতির বিক্রি বেশি। মৌচাক মার্কেটের পাশ ঘেঁষেও বসেছে এসব ইমিটেশনের গহনার দোকান।
রাজধানীর চাঁদনী চক, নিউ মার্কেট, বসুন্ধরা সিটি, যমুনা ফিউচার পার্ক, কর্ণফুলী গার্ডেন সিটি ও বায়তুল মোকাররম মার্কেটের গহনার দোকানগুলো ছাড়াও বাংলাদেশের স্থানীয় জেলা বা বিভাগীয় শহরের বড় বড় জুয়েলারী দোকানেও পাওয়া যায়। শপিংমলগুলোতে গহনার দাম নির্ধারিত থাকলেও বেশিরভাগ দোকানগুলোতে তা থাকে না এবং এসব দোকানে ক্রেতাদের ভিড়ও বেশি। এখন খুব বেশি কালার ম্যাচিং গহনার চল নেই। কারণ, যে কোন একটা মোটামুটি মানানসই হাতের ব্রেসলেট, কানের টপ, পুঁতি ও পিতলের সমন্বয়ে তৈরি লহরী গহনা পরলেই পোশাকের সঙ্গে মানিয়ে যায়। যার ফলে খুব একটা গহনা পরে না মেয়েরা।
এসব গহনার দরদামঃ
বড়দের কানের দুল ছোট-বড় সাইজের ইমিটেশন ও পাথরের পাওয়া যাবে ১৫০ থেকে ৪০০ টাকার মধ্যে। হাতের ব্রেসলেট ২০০ থেকে ৪০০, চুড়ি গোল্ডেন এ্যান্টিক, সুতার কাজ করা সেটসহ ২০০-৪৫০, পায়েল ১০০-২০০, থাই কাঁকড়া নর্মাল ৫০, স্টোন বসানো ১৫০, স্টোন বসানো সাইড কিপ ১০০-১৫০, রিং ১০০-৩০০, লকেট ১০০ ও স্টোন বসানো গলার সেট ৬০০ টাকার মধ্যে ইত্যাদি। এছাড়াও বাজারে এসবের পাশাপাশি পাওয়া যাচ্ছে হ্যান্ডমেড কাঠের, মেটাল, পিওর সিলভার, অক্সি-সিলভার, গোল্ড পলিশ, গোল্ড প্লেটেড ইত্যাদির গহনা। এসব গহনার মধ্যে নেকলেস, মাদুলি, ঝুমকা, কানের দুল, ফিঙ্গার রিং, খোঁপার কাঁটা, বাজু, পায়েল, ব্রেসলেট, পায়েল ইত্যাদি রয়েছে। ডিজাইনের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়েছে ফোরাল, জিওমেট্রিক ইত্যাদি মোটিফ।
নিউমার্কেট গাউছিয়া ও চাঁদনীচক মার্কেটে পাথরের সেটগুলো ৮০০ টাকা থেকে ২ হাজার টাকা, কুন্দন সেট ৫ থেকে ৭ হাজার টাকা, এডি (পাথর) সেট ৩ হাজার ৫০০ থেকে ১২ হাজার টাকায় বিক্রি হচ্ছে। ইমিটেশনের মালার সেট সাড়ে ৩০০ টাকা থেকে ১ হাজার টাকা, কানের দুল ১০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, চুড়ি ২০০ টাকা থেকে ১ হাজার ৫০০ টাকা, হাতের ব্রেসলেট ৭০ টাকা থেকে সাড়ে ৮০০ টাকা, আংটি ১০০ থেকে সাড়ে ৩০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।
গাওসিয়াতে সেট চুড়ির দাম ১০০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকা। কানের টপ ২০ টাকা থেকে ৫৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। তবে ভাল স্টোনের দুল কিংবা মালার দাম ৫৫০ টাকা থেকে ৩ হাজার টাকা পর্যন্ত। বিভিন্ন ধরনের লকেটসহ চিকন চেন পাওয়া যাচ্ছে ১৫০ টাকা থেকে ৬০০ টাকা পর্যন্ত। এছাড়া ক্লিপ বিক্রি হচ্ছে ১০ টাকা থেকে ২০০ টাকায়। এছাড়া বিভিন্ন ডিজাইনের চুড়ির বিক্রিও বেশ ভাল।
রাজধানীসহ অধিকাংশ মার্কেটগুলোতে সোনার গহনার দাম মধ্যবিত্তের ক্রয়-ক্ষমতার বাইরে চলে যাওয়ায় বর্তমানে রুপার ওপর সোনার প্রলেপ দেয়া গহনা বেশি কিনছেন মধ্যবিত্ত নারীরা। এসব দোকানে তাই ভিড়ও বেশি। মৌচাক মার্কেটে দেখা মেলে রুপার ওপর সোনার প্রলেপ দেয়া গয়না।
ঢাকায় ডায়মন্ডের গহনার দরদামঃ
কেনাকাটায় স্বর্ণ কিংবা রুপার গহনার মধ্যে সন্তুষ্ট থাকলেও উচ্চ মধ্যবিত্ত এবং উচ্চবিত্তদের বেশি আগ্রহ ডায়মন্ডের গহনায়। আল হাসান ডায়মন্ড গ্যালারি, ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড, অলংকার নিকেতন, ভেনাস ডায়মন্ড কালেকশন, আফতাব জুয়েলার্স, ডায়মন্ড গার্ডেন, ডায়মন্ড হ্যাভেন, সঙ্গিনী ডায়মন্ডসহ প্রতিটি শোরুমে পাওয়া যাচ্ছে হীরার গহনা।
বসুন্ধরার ডায়মন্ড গার্ডেন, গুলশানের ডায়মন্ড ওয়ার্ল্ড, বেইলি রোডের ডায়মন্ড গ্যালারিতে মানভেদে এক ক্যারেট মানের বোম্বে কাট হীরার দাম ৬০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা। আর একই মানের বেলজিয়াম কাট হীরার দাম ৩ থেকে ৪ লাখ টাকা। ডায়মন্ডের কানের দুলের দাম পড়বে ১৩ হাজার থেকে ২৫ হাজার টাকা, নাকফুল ২ হাজার ৯০০ থেকে ৭ হাজার ২০০ টাকা, আংটির দাম পড়বে সাড়ে ১১ হাজার থেকে ৫০ হাজার টাকা, লকেট ৭ হাজার থেকে ৫০ হাজার।
^
^
#jewelry, white gold, diamond, #budget, kundan, @semi precious stone
For more wooden crafts with low price in bangladesh please visit my feriwala facebook page : https://www.facebook.com/feriwalaltd/
ReplyDeleteকাঠের তৈরি রং এর কাজ করা কানের দুল, গলার গহনা, হাতের চুরি ও ঘর সাজানোর জন্য হাতের তৈরি ভিবিন্ন জিনিস। আমাদের সকল পন্য দেখতে আমাদের ফেসবুক পেজ https://www.facebook.com/feriwalaltd ভিজিট করুন।