কানঃ শীতে কানে যেসব সমস্যা হয়ঃ কানে পুঁজের চিকিৎসা কী? কানের সমস্যায় দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যানঃ
শীতে কানে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা হয়। এনটিভির নিয়মিত আয়োজন স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানের ২৫৯৪তম পর্বে এ বিষয়ে কথা বলেছেন ডা. এম এন ফারুক। বর্তমানে তিনি ঢাকা ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজের ইএনটি সার্জারি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান হিসেবে কর্মরত আছেন।
প্রশ্ন : শীতকালে কানের কী কী সাধারণ সমস্যা হয়ে থাকে?
উত্তর : কানের তিনটি অংশ—বহিঃকর্ণ, অন্তঃকর্ণ, মধ্যকর্ণ। কানের বাইরের অংশেও নাকের মধ্যে অ্যালার্জির বিষয় হয়। বাইরের কানের অ্যালার্জি হয়। এটি হলে অসম্ভব চুলকানি হবে। ত্বকগুলো আঙুলের সঙ্গে বেরিয়ে চলে আসবে। এটি পরে এক্সিমার মতো হতে পারে। ত্বকের সমস্যা হতে পারে। কারণ, বহিঃকর্ণ চামড়া দিয়ে ঢাকা থাকে। কিন্তু মূল সমস্যা হয় মধ্যকর্ণে। মধ্যকর্ণে কোনো ত্বক থাকে না, অর্থাৎ চামড়া দিয়ে ঢাকা থাকে না। এটা থাকে মিউকাসের দিকে, অর্থাৎ ঝিল্লি দিয়ে। আর মধ্যকর্ণটি মানুষের নাকের পেছনের একটি টিউব দিয়ে লাগানো থাকে, ইউসটেশিয়ান টিউব। এই ইউসটেশিয়ান টিউবটি গলার সঙ্গে মানুষের মধ্যকর্ণের সঙ্গে যুক্ত। দুর্ভাগ্যবশত ছোট বাচ্চাদের এটা খুব বেশি চওড়া ও ছোট। বড়দের এটি লম্বা ও একটু চিকন। এটার কাজটা হলো বাইরের ও মধ্যকর্ণের বাতাসের চাপ সমান রাখে। সমান রাখতে হয়। কেন সমান রাখে? এটি না থাকলে আপনি কানে শুনতে পাবেন না। সঠিকভাবে শোনার জন্য আপনাকে মিডলেয়ার এবং বাইরের বাতাসের যে চাপটা, সেটা সমান থাকতে হবে।
সাধারণত দেখবেন, আপনি যখন বিমানে উড়তে যান, তখন আপনার কানটা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তখন আপনাকে বলা হয় যে আপনি একটি চুইংগাম খান। চুইংগাম খেলে ইউটেশন টিউবটা খুলে যাবে। খুলে গেলে সেখানকার চাপটা সমান থাকবে, আপনি ঠিকমতো শুনতে পাবেন না।
উত্তর : কানের তিনটি অংশ—বহিঃকর্ণ, অন্তঃকর্ণ, মধ্যকর্ণ। কানের বাইরের অংশেও নাকের মধ্যে অ্যালার্জির বিষয় হয়। বাইরের কানের অ্যালার্জি হয়। এটি হলে অসম্ভব চুলকানি হবে। ত্বকগুলো আঙুলের সঙ্গে বেরিয়ে চলে আসবে। এটি পরে এক্সিমার মতো হতে পারে। ত্বকের সমস্যা হতে পারে। কারণ, বহিঃকর্ণ চামড়া দিয়ে ঢাকা থাকে। কিন্তু মূল সমস্যা হয় মধ্যকর্ণে। মধ্যকর্ণে কোনো ত্বক থাকে না, অর্থাৎ চামড়া দিয়ে ঢাকা থাকে না। এটা থাকে মিউকাসের দিকে, অর্থাৎ ঝিল্লি দিয়ে। আর মধ্যকর্ণটি মানুষের নাকের পেছনের একটি টিউব দিয়ে লাগানো থাকে, ইউসটেশিয়ান টিউব। এই ইউসটেশিয়ান টিউবটি গলার সঙ্গে মানুষের মধ্যকর্ণের সঙ্গে যুক্ত। দুর্ভাগ্যবশত ছোট বাচ্চাদের এটা খুব বেশি চওড়া ও ছোট। বড়দের এটি লম্বা ও একটু চিকন। এটার কাজটা হলো বাইরের ও মধ্যকর্ণের বাতাসের চাপ সমান রাখে। সমান রাখতে হয়। কেন সমান রাখে? এটি না থাকলে আপনি কানে শুনতে পাবেন না। সঠিকভাবে শোনার জন্য আপনাকে মিডলেয়ার এবং বাইরের বাতাসের যে চাপটা, সেটা সমান থাকতে হবে।
সাধারণত দেখবেন, আপনি যখন বিমানে উড়তে যান, তখন আপনার কানটা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। তখন আপনাকে বলা হয় যে আপনি একটি চুইংগাম খান। চুইংগাম খেলে ইউটেশন টিউবটা খুলে যাবে। খুলে গেলে সেখানকার চাপটা সমান থাকবে, আপনি ঠিকমতো শুনতে পাবেন না।
শীতকালে বাচ্চাদের গলার সংক্রমণ খুব বেশি হয়। গলায় টনসিল, এডিনয়েড আরো অন্যান্য যে ফ্যারিংস, এই সব জায়গায় সংক্রমণ হলে ওই সংক্রমণের যেসব জীবাণু আছে, ওটা সেই টিউব দিয়ে সরাসরি মধ্যকর্ণে চলে যায়। মধ্যকর্ণে গিয়েই এর সংক্রমণ শুরু করে দেয়। শুরু করলে সেখানে প্রথমে তরল জমে। তরল জমে এটা সংক্রমিত হয়। পুঁজ হয়। আপনি যদি কোনো চিকিৎসা না করেন, এই পুঁজ কোথায় যাবে? সে তখন কানের পর্দাকে ছিদ্র করে এই বহিঃকর্ণ দিয়ে বের হয়ে চলে আসে। এর জন্য সে কম শুনতে পায়। তার কানের বধিরতা বেড়ে যায়। এই জন্য আপনি দেখবেন যে বেশিরভাগ ছেলে বা মেয়ে যাদের বয়স সাতের কম, ছয়-সাত এই রকম, স্কুল থেকে তার শিক্ষক এসে হয়তো মাকে বলে, আপনার ছেলেটা কিন্তু মনোযোগী নয়। আসলে সে কিন্তু মনোযোগী। তবে সে শুনতে পারছে না। কারণ, সর্দি-কাশির জন্য তার কানের মধ্যে গ্লু জাতীয় জিনিস জন্মে। অত্যন্ত সাধারণ কারণে যে বধিরতা হয় বাচ্চাদের, এটা তার জন্য হয়। আর বড়দের প্রায় একই কারণে হয়; ধূমপান করে, বাইরের আবহাওয়া ঠান্ডা, সে ঠান্ডা পানীয় খাচ্ছে। ড্রিংকস করছে, ঠান্ডা পানি খাচ্ছে, বরফ খাচ্ছে, আইসক্রিম খাচ্ছে এবং সে সিগারেট খাচ্ছে। ওই একই কারণে তার মধ্যকর্ণের মধ্যে সংক্রমণটা চলে যায়। চলে গেলে তখনই তার এসব সমস্যা হয়। সেও বধির হয়ে যায়। বধির হয়ে গেলে, কানের পর্দা ছিদ্র হয়ে, কান দিয়ে পানি পুঁজ এসব পড়ে। শেষ পর্যন্ত আপনাকে কিন্তু এই রোগীটাকে অস্ত্রোপচার করতে হবে। যখনই পুঁজটা বের হবে, পর্দা যেহেতু ছিদ্র হয়ে গেল, এর প্রকৃতগতভাবে নিরাময়টি অত্যন্ত কম।
কানে পুঁজের চিকিৎসা কী?
শীতকালে গলার সমস্যা থেকে অনেক সময় কানের সমস্যা শুরু হয়। কান দিয়ে পুঁজও পড়ে। তবে এর চিকিৎসা কী?
শীতকালে গলার সমস্যা থেকে অনেক সময় কানের সমস্যা শুরু হয়। কান দিয়ে পুঁজও পড়ে। তবে এর চিকিৎসা কী?
প্রশ্ন : এই ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ চিকিৎসা পদ্ধতিটা কী?
উত্তর : প্রথমত আপনি তাকে বলবেন, ধূমপান করবেন না। ঠান্ডা জিনিস খাবেন না। আইসক্রিম খাবেন না। এরপরও যদি তার এটি হয়, কান দিয়ে তার পুঁজ পড়ে, তার মানে হলো পর্দাটা ছিদ্র হয়ে গেল। ছোট বাচ্চাদেরও হতে পারে। বড়দেরও হতে পারে। এখন বেশিরভাগ রোগী অস্ত্রোপচার করতে মানা করে। তখন আপনি বাধ্য তাকে কনজারভেটিভ চিকিৎসা দিতে। তাকে ওষুধপত্র দিতে হবে। তখন আপনি তাকে পরামর্শ দেবেন এই সর্দি কাশির ভেতর যাবেন না। তাকে আপনি রক্ষা করবেন যেন শীত না লাগে। সে যেন আইসক্রিম না খায় এবং খুব ধুলাবালিতে সে যেন না যায়। আর তাকে একটি অ্যান্টিবায়োটিক দিতেই হবে। কারণ, যেহেতু এটি জীবাণু দিয়ে আক্রান্ত। একটি অ্যান্টি হিসটামিন দিতে হবে। এখন অ্যান্টি হিসটামিনগুলো অনেক ধরনের হয়। আগে দেখা যেত একটি হিসটাসিন খেলে আপনি সারাদিন ঘুম আসতেন। আজকাল সেটা হয় না।
তবে এখন কিছু ওষুধ আছে, এগুলো খেলে ঘুম হবে না। কিন্তু আপনার সর্দি কাশি বন্ধ হয়ে যাবে। বন্ধ হয়ে গেলে আপনি যদি দেখেন যে তারপরও পুঁজ পড়ছে, তখন আপনি কানকে পরিষ্কার করে দিয়ে, তাকে একটি কানের ড্রপ দিতে হবে। এর মধ্যে অ্যান্টিবায়োটিক ও স্টেরয়েড থাকে। তাকে এক মাস পর্যন্ত এই ওষুধটা দিতে হবে। সবচেয়ে বিপদ হলো এই যখনই মধ্যকর্ণ সংক্রমিত হয়,তখন সাথে আবার ফাঙ্গাস সংক্রমণ হতে থাকে। তখন তাকে অ্যান্টিফাঙ্গাল যে লোকাল ক্রিমগুলো থাকে, সেই ক্রিম দিনে তিনবার লাগাবেন। এটাও এক মাস।
যখন আস্তে আস্তে জায়গাটি শুষ্ক হয়ে যাবে। তখন তাকে আপনি জিজ্ঞেস করবেন, ভাই আপনার কান কি ছিদ্র অবস্থায় থাকবে? যদি এমনই রাখতে চান আপনি ৪০ ভাগ কম শুনবেন। একটি স্বাভাবিক লোকের চেয়ে আপনি ৪০ ভাগ কম শুনতে পাবেন। কিন্তু আপনি একেবারে বধির হয়ে যাবেন না। ৬০ ভাগ শুনতে পাবেন। তবে আবার যখন সর্দি কাশি হবে আবার একই সমস্যা হবে। তাহলে আবার আপনাকে একইভাবে চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হবে। অথবা আপনার অস্ত্রোপচার যদি করে দিই পর্দা তৈরি করে দেওয়া হচ্ছে। পাশাপাশি যেই জায়গাটা সংক্রমণটা থাকে, সেটা আমরা ফেলে দেব। এটি করে দিয়ে নতুন পর্দা লাগিয়ে দেব। এতে আপনি প্রায় স্বাভাবিক শুনতে পাবেন। সে যদি এটিও করতে না চায় এবং তার বধিরতা যদি খুব বেশি বেড়ে যায়, যে সে স্বাভাবিক কাজ করতে পারছে না, তখন আপনারা তাকে হেয়ার রিংয়ের কথা বলবেন। এটি দিলে সে একদম স্বাভাবিক শুনতে পাবে। কিন্তু তার ওই একই অবস্থার জন্য আবার পুঁজ পড়তে পারে। এটা একটা সামাজিক সমস্যা।
আরেকটি জিনিস হলো যে গোসল করার সময় যেন কোনোভাবে পানি না যায় কানে। কানে পানি যাবেই আপনি যেভাবে গোসল করেন। এখন কান আটকে দেওয়ার জন্য এক ধরনের প্লাক পাওয়া যায়, ওটা আটকে দেবেন। ওটা আবার গোসল করার পর আপনি খুলে রেখে দেবেন। অথবা এক টুকরো তুলার মধ্যে জলপাইয়ের তেল দিয়ে কানটা বন্ধ করে গোসল করতে হবে।
প্রশ্ন : কী কী উপায় মেনে চললে এই ধরনের রোগই হবে না?
উত্তর : এটি অসম্ভব। বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সে মাঠে খেলবেই, সে ঘেমে যাবেই। ঘেমে গেলে ঠান্ডা পানি খাবে বা আইসক্রিম খাবে। তখনই তার গলায় সমস্যা হবে। গলায় দুটো সমস্যা বেশি হয়। একটি হলো ফ্যারিংজাইটিস, আর টনসিলে প্রদাহ হয়, এডিনয়েডগুলো তখন বড় হয়ে যায়। এমন অবস্থায় শুরুতেই চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন হয়। আমাদের দেশে কানের পর্দায় ছিদ্র আছে এমন রোগ ৪০ ভাগ।
কানের সমস্যায় দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যানঃ
কানের সমস্যা থেকে অনেক সময় বধিরতা পর্যন্ত হতে পারে। যাদের কানের পর্দায় সমস্যা বা কানে পুঁজ পড়ছে, তাদের দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন।
কানের সমস্যা থেকে অনেক সময় বধিরতা পর্যন্ত হতে পারে। যাদের কানের পর্দায় সমস্যা বা কানে পুঁজ পড়ছে, তাদের দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন।
প্রশ্ন : এ ধরনের রোগীদের ক্ষেত্রে আপনার পরামর্শ কী?
উত্তর : আমি তাদের বলব, আপনার ধারের কাছে যে স্বাস্থ্য সেন্টার থাকে, বেশির ভাগ মেডিকেল কলেজে এর ফ্রি চিকিৎসা করা হয়। এ জন্য কোনো পয়সা আপনাকে দিতে হবে না, যদিও দু-তিন ঘণ্টার অস্ত্রোপচার এটা। কোনো টাকা-পয়সা এর জন্য লাগবে না। বিনা পয়সায় অধিকাংশ জায়গায় এই চিকিৎসা হয়। আর হেয়ার রিং এখন সব জায়গায় পাওয়া যায়। এমনকি গ্রামে, উপজেলা শহরে সব জায়গায় এটি পাওয়া যায় এবং অত্যন্ত ভালো মানের পাওয়া যায়। এটা আপনার ভেতরের কানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না।
উত্তর : আমি তাদের বলব, আপনার ধারের কাছে যে স্বাস্থ্য সেন্টার থাকে, বেশির ভাগ মেডিকেল কলেজে এর ফ্রি চিকিৎসা করা হয়। এ জন্য কোনো পয়সা আপনাকে দিতে হবে না, যদিও দু-তিন ঘণ্টার অস্ত্রোপচার এটা। কোনো টাকা-পয়সা এর জন্য লাগবে না। বিনা পয়সায় অধিকাংশ জায়গায় এই চিকিৎসা হয়। আর হেয়ার রিং এখন সব জায়গায় পাওয়া যায়। এমনকি গ্রামে, উপজেলা শহরে সব জায়গায় এটি পাওয়া যায় এবং অত্যন্ত ভালো মানের পাওয়া যায়। এটা আপনার ভেতরের কানকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে না।
No comments:
Post a Comment