শিশুরা অবুঝ; তাই শিশুদের প্রতি প্রয়োজন হয় বাড়তি যত্ন, আর অসুখ বিসুখে নিবিড় পরিচর্যা ও সময়োপযোগী পদক্ষেপ। বিভিন্ন কারণে শিশুদের রোগ বালাই হয়ে থাকে। যার মধ্যে অন্যতম হলো ডায়রিয়া। আবার বিভিন্ন শিশু রোগে অভিভাবকরা প্রায়ই ডাক্তারের ব্যাবস্থাপত্র ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে থাকে। এটা মোটেও গ্রহনযোগ্য নয়। অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার খুব বুঝে শুনে করা প্রয়োজন। যে কোনো রোগের ক্ষেত্রেই অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার ঠিক নয়।
যদিও বিভিন্ন রোগের নিরাময়ে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। কিন্তু অনেক বাবা-মা চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়াই অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করেন এবং ঠিকমতো কোর্সও পূরণ করেন না। এতে হিতে বিপরীত হয়।
আবার অনেক সময় খুব ছোট বাচ্চার ক্ষেত্রে মা-বাবারা অ্যান্টিবায়োটিক দিতে ভয় পান। এটিও সঠিক সিদ্ধান্ত নয়।
শিশুর ডায়রিয়াঃ ডায়রিয়া খুব প্রচলিত রোগ হলেও সময়মতো চিকিৎসা না নিলে এ থেকে মৃত্যুর ঝুঁকিও হতে পারে। শিশুদের ডায়রিয়া প্রতিরোধে মায়ের বুকের দুধ খুব জরুরি। বড়দের তুলনায় শিশুরা ডায়রিয়ায় বেশি আক্রান্ত হয়। অনেক সময় অভিভাবকরা বুঝতে পারে না যে কোনটি ডায়রিয়া, আর কোনটি ডিসেনট্রি !
ডায়রিয়ার ক্ষেত্রে বড়দের তুলনায় শিশুরা বেশি ঝুঁকিপ্রবণ। তবে এর মধ্যেও কিছু শিশু বেশি ঝুঁকিপ্রবণ হয়। শিশুর ডায়রিয়া খুব মারাত্মক অবস্থায় চলে গেলে হাসপাতালে
নেওয়া প্রয়োজন।
এনটিভির স্বাস্থ্য প্রতিদিন অনুষ্ঠানে শিশুদের অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ ও ডায়রিয়া বিষয়ে কথা বলেছেন কুমিল্লা ট্রমা সেন্টারে শিশু বিভাগের পরামর্শক ডা. ইফতেখার উল হক খান। নিচে তা তুলে ধরা হলোঃ
শিশুর ডায়রিয়ায় কী করবেন?
প্রশ্ন : ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে কী কী লক্ষণ দেখলে কেবল ঘরেই চিকিৎসা করবে? আর কী কী লক্ষণ দেখলে শিশুকে চিকিৎসকের কাছে নেবে?
উত্তর : আমি প্রথমে যেটি বলব, যদি বাচ্চা বুকের দুধ খেয়ে থাকে, তাকে বুকের দুধ সঠিকভাবে নিয়মিত খাইয়ে যেতে হবে। ছয় মাসের নিচের বাচ্চা শুধু বুকের দুধ খাবে। আর ছয় মাস-পরবর্তী বাচ্চাদের বুকের দুধ চলবে, পাশাপাশি অন্যান্য স্বাভাবিক খাবার—বাচ্চাটি যেটি পাচ্ছিল, এটা খেয়ে যাবে।
আর আমরা যেটা বলি, সে হয়তো স্বাভাবিকভাবে দু-তিনবার খাচ্ছিল, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে এটা বাড়িয়ে দিতে হবে। হয়তো পাঁচ বা ছয়বার দেওয়া লাগবে। যদিও সে খেতে চাইবে না। তাকে অবশ্যই এটি দিতে হবে।
আর তাকে ঘন ঘন খাবার স্যালাইন দিতে হবে। যদিও সে খেতে চাইবে না, তবে অবশ্যই খেতে হবে। অবশ্যই প্রতিবার খাবারের পর স্যালাইন দিতে হবে। যেই পানিটা বেরিয়ে যাচ্ছে, সেটা পূরণের জন্য অবশ্যই স্যালাইন দিতে হবে।
উত্তর : আমি প্রথমে যেটি বলব, যদি বাচ্চা বুকের দুধ খেয়ে থাকে, তাকে বুকের দুধ সঠিকভাবে নিয়মিত খাইয়ে যেতে হবে। ছয় মাসের নিচের বাচ্চা শুধু বুকের দুধ খাবে। আর ছয় মাস-পরবর্তী বাচ্চাদের বুকের দুধ চলবে, পাশাপাশি অন্যান্য স্বাভাবিক খাবার—বাচ্চাটি যেটি পাচ্ছিল, এটা খেয়ে যাবে।
আর আমরা যেটা বলি, সে হয়তো স্বাভাবিকভাবে দু-তিনবার খাচ্ছিল, ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হলে তাকে এটা বাড়িয়ে দিতে হবে। হয়তো পাঁচ বা ছয়বার দেওয়া লাগবে। যদিও সে খেতে চাইবে না। তাকে অবশ্যই এটি দিতে হবে।
আর তাকে ঘন ঘন খাবার স্যালাইন দিতে হবে। যদিও সে খেতে চাইবে না, তবে অবশ্যই খেতে হবে। অবশ্যই প্রতিবার খাবারের পর স্যালাইন দিতে হবে। যেই পানিটা বেরিয়ে যাচ্ছে, সেটা পূরণের জন্য অবশ্যই স্যালাইন দিতে হবে।
প্রশ্ন : কী পরিমাণ স্যালাইন দেবে?
উত্তর : এ ক্ষেত্রে আমরা বলি, দুই বছরের নিচের বাচ্চার ক্ষেত্রে ৫০ থেকে ১০০ এমএল খাবে, প্রতিবার বমি বা পাতলা পায়খানার পর এটা দেবে। বমি ও পাতলা পায়খানার পরে খাওয়াবে।
একটি গ্লাসে মোটামুটি আড়াই আউন্স থাকে। সে ক্ষেত্রে ছোট একটি বাচ্চা, দুই বছরের নিচের একটি বাচ্চার ক্ষেত্রে মোটামুটি আধা গ্লাস থেকে এক গ্লাস খেতে হবে। দুই বছর থেকে ১০ বছরের আগের একটি বাচ্চার ক্ষেত্রে এক গ্লাস থেকে দুই গ্লাস খাওয়াবে, আর ১০ বছর যদি শিশুর বয়স হয়ে থাকে, যতটা পারে ততটা খাবে।
প্রশ্ন : গরমের সময়ের ডায়রিয়ার তুলনায় শীতে ডায়রিয়ার পার্থক্য কী?
উত্তর : এখন আসলে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদের দেশের ডায়রিয়াগুলো বেশির ভাগ হয় শীতকালে, ভাইরাসজনিত ডায়রিয়া বেশি হয়। এগুলো বেশির ভাগ পানিবাহিত নয়, যার জন্য শীতকালে রোটা ভাইরাস ডায়রিয়াতে প্রচণ্ডভাবে আক্রান্ত হচ্ছে সারা দেশে। মোটামুটি একটি মহামারী আকারে হচ্ছে।
রোটা ভাইরাস ডায়রিয়া। দেখা যাচ্ছে এটি ছয় মাসের পর থেকে হচ্ছে, দুই বছর থেকে তিন বছরের বাচ্চাদের হচ্ছে, প্রাথমিক অবস্থায় শুধু বমি নিয়ে আমাদের কাছে আসছে। ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে কমে যাচ্ছে। কিন্তু পাতলা পায়খানা শুরু হচ্ছে এবং মারাত্মক আকারে হচ্ছে অনেক সময়। আর শিশুকালে যে ডায়রিয়া হচ্ছে, এর বেশিরভাগই হয় পানিবাহিত বা অন্যান্য ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণে। এগুলো সাধারণত বর্ষা ঋতুতে বা গ্রীষ্মকালে হয়।
শিশুর ডায়রিয়া প্রতিরোধে মায়ের বুকের দুধ
প্রশ্ন : শিশুদের ডায়রিয়া প্রতিরোধে করণীয় কী?
উত্তর : ডায়রিয়া প্রতিরোধে একটি কথাই বলব, মায়ের বুকের দুধ নিয়মিত খাওয়াতে হবে। এটা আমরা সব জায়গায় বলি। আমাদের গণমাধ্যমকে আরো বেশি অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে।
উত্তর : ডায়রিয়া প্রতিরোধে একটি কথাই বলব, মায়ের বুকের দুধ নিয়মিত খাওয়াতে হবে। এটা আমরা সব জায়গায় বলি। আমাদের গণমাধ্যমকে আরো বেশি অগ্রণী ভূমিকা নিতে হবে।
প্রশ্ন : কত বয়স পর্যন্ত দুধ খাওয়াতে হবে?
উত্তর : ছয় মাস পর্যন্ত শুধু মায়ের বুকের দুধ খাবে, দুই বছর পর্যন্ত বাড়তি খাবারের পাশাপাশি বুকের দুধ চলবে।
আরেকটি বিষয় হলো সচেতনতা। ব্যক্তিগত পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলতে হবে। পরিবারের সবাইকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার প্রতি আরো বেশি যত্নবান হতে হবে। যেমন শিশুকে কখনোই বাসি খাবার খাওয়ানো যাবে না। যে খাবার দিবে, সেটা অবশ্যই ঢেকে রাখা খাবার দিবে। সতেজ খাবার দিতে হবে। বাইরের কেনা কোনো খাবার দেওয়া যাবে না। এগুলো একটি। নখ কাটা , পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলতে হবে।
আর শেষে আমি বলব ভ্যাকসিনের কথা। এই মুহূর্তে কিন্তু আমাদের দেশে কিছু ভ্যাকসিন পাওয়া যায়, যেগুলো দিলে কিন্তু শিশুরা মোটামুটি ডায়রিয়া থেকে অনেকাংশে মুক্ত থাকতে পারবে।
শিশুর ডায়রিয়া না কি ডিসেনট্রি?
প্রশ্ন : শিশুরা পাতলা পায়খানা করলে অনেক মা মনে করেন ডায়রিয়া হয়েছে এবং তিনি চিন্তিত হন। অনেক সময় ডিসেনট্রির সঙ্গে ডায়রিয়াকে গুলিয়ে ফেলেন। একটি শিশুর ডায়রিয়া হয়েছে কি না সেটা বোঝার উপায়গুলো কী?
উত্তর : শিশু যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিন বার বা তার বেশি পরিমাণে পাতলা বা তরল পায়খানা করে থাকে, সেটা ডায়রিয়া। তবে এর মধ্যে কথা আছে, বাবা মাকে বুঝতে হবে, শিশু স্বাভাবিক অভ্যাসের চেয়ে বেশি মল ত্যাগ করছে কি না। এর সাথে দুটো কথা যোগ করব। ছয় মাসের নিচের বাচ্চারা বুকের দুধ খায়, তারা স্বাভাবিকভাবে ঘন ঘন পাতলা পায়খানা করতে পারে, যাকে আমরা ডায়রিয়া হিসেবে বলি না। আরেকটি আমরা পাই একটু বড় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে। তিন বছর, চার বছরের বাচ্চারা দেখা যায় যে গ্লুকোজ আছে বা ফ্রুকটোজ আছে- এমন কিছু খাবার বা জুস খাচ্ছে, যার জন্য ডায়রিয়ার মতো হচ্ছে। ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হচ্ছে। তবে এ দুটো কিন্তু ডায়রিয়া নয়। এই দুটো জিনিস ছাড়া যদি বাবা মা বুঝতে পারেন, বাচ্চার যে স্বাভাবিক অভ্যাস ছিল, এর চেয়ে অনেক বেশি বার পায়খানা করছে, অথবা পরিমাণে অনেক বেশি হচ্ছে, তারল্য অনেক বেড়ে গেছে, তাহলে বাবা মা মোটামুটি ধরে নিতে পারেন যে তার শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
উত্তর : শিশু যদি ২৪ ঘণ্টার মধ্যে তিন বার বা তার বেশি পরিমাণে পাতলা বা তরল পায়খানা করে থাকে, সেটা ডায়রিয়া। তবে এর মধ্যে কথা আছে, বাবা মাকে বুঝতে হবে, শিশু স্বাভাবিক অভ্যাসের চেয়ে বেশি মল ত্যাগ করছে কি না। এর সাথে দুটো কথা যোগ করব। ছয় মাসের নিচের বাচ্চারা বুকের দুধ খায়, তারা স্বাভাবিকভাবে ঘন ঘন পাতলা পায়খানা করতে পারে, যাকে আমরা ডায়রিয়া হিসেবে বলি না। আরেকটি আমরা পাই একটু বড় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে। তিন বছর, চার বছরের বাচ্চারা দেখা যায় যে গ্লুকোজ আছে বা ফ্রুকটোজ আছে- এমন কিছু খাবার বা জুস খাচ্ছে, যার জন্য ডায়রিয়ার মতো হচ্ছে। ঘন ঘন পাতলা পায়খানা হচ্ছে। তবে এ দুটো কিন্তু ডায়রিয়া নয়। এই দুটো জিনিস ছাড়া যদি বাবা মা বুঝতে পারেন, বাচ্চার যে স্বাভাবিক অভ্যাস ছিল, এর চেয়ে অনেক বেশি বার পায়খানা করছে, অথবা পরিমাণে অনেক বেশি হচ্ছে, তারল্য অনেক বেড়ে গেছে, তাহলে বাবা মা মোটামুটি ধরে নিতে পারেন যে তার শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত হচ্ছে।
শিশুর ডায়রিয়া হলে কখন হাসপাতালে নেবেন?
প্রশ্ন : কী লক্ষণ দেখলে বাবা-মা বুঝবে সন্তানকে এখন হাসপাতালে নেওয়া দরকার। সেই লক্ষণগুলো কী?
উত্তর : যে লক্ষণগুলো বাবা-মায়েরা খেয়াল রাখবেন, প্রথম হলো বাচ্চাটি স্যালাইন খেয়ে পেটে রাখতে পারবে কি না। না কি বমি করে সঙ্গে সঙ্গে সব বের করে দিচ্ছে- এটি একটি।
দুই নম্বর লক্ষ করবেন, শিশুর পায়খানার সঙ্গে রক্ত যাচ্ছে কি না। তিন নম্বর লক্ষ করবেন যে শিশুর প্রস্রাবের পরিমাণ অনেক কমে গেছে কি না। চার নম্বর লক্ষ করবেন যে শিশুর প্রস্রাবের পরিমাণ অনেক কমে গেছে কি না। আরেকটি খেয়াল করবেন শিশুর চোখ অক্ষিকোটরে ঢুকে গেছে কি না। মুখের মধ্যের আর্দ্রতা কমে গেছে কি না। শুষ্ক হয়ে গেছে কি না জিহ্বাটা। শিশুকে স্যালাইন খেতে দিলে কি ধীরে ধীরে খাচ্ছে না কি দ্রুততার সঙ্গে খাচ্ছে। এরপর খেয়াল করবেন শিশুর জ্বর চলে এলো কি না। অনেক সময় দেখা যায় যে শিশুর চেতনা কমে যেতে পারে। বাচ্চা অনেক ক্লান্ত বা বিরক্ত হয়ে গেল কি না। আর সবচেয়ে মারাত্মক হলো বাচ্চার খিঁচুনি হতে পারে।
এই ধরনের মারাত্মক বিষয়গুলোর দিকে অভিভাবকরা খেয়াল রাখবেন। এর কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
উত্তর : যে লক্ষণগুলো বাবা-মায়েরা খেয়াল রাখবেন, প্রথম হলো বাচ্চাটি স্যালাইন খেয়ে পেটে রাখতে পারবে কি না। না কি বমি করে সঙ্গে সঙ্গে সব বের করে দিচ্ছে- এটি একটি।
দুই নম্বর লক্ষ করবেন, শিশুর পায়খানার সঙ্গে রক্ত যাচ্ছে কি না। তিন নম্বর লক্ষ করবেন যে শিশুর প্রস্রাবের পরিমাণ অনেক কমে গেছে কি না। চার নম্বর লক্ষ করবেন যে শিশুর প্রস্রাবের পরিমাণ অনেক কমে গেছে কি না। আরেকটি খেয়াল করবেন শিশুর চোখ অক্ষিকোটরে ঢুকে গেছে কি না। মুখের মধ্যের আর্দ্রতা কমে গেছে কি না। শুষ্ক হয়ে গেছে কি না জিহ্বাটা। শিশুকে স্যালাইন খেতে দিলে কি ধীরে ধীরে খাচ্ছে না কি দ্রুততার সঙ্গে খাচ্ছে। এরপর খেয়াল করবেন শিশুর জ্বর চলে এলো কি না। অনেক সময় দেখা যায় যে শিশুর চেতনা কমে যেতে পারে। বাচ্চা অনেক ক্লান্ত বা বিরক্ত হয়ে গেল কি না। আর সবচেয়ে মারাত্মক হলো বাচ্চার খিঁচুনি হতে পারে।
এই ধরনের মারাত্মক বিষয়গুলোর দিকে অভিভাবকরা খেয়াল রাখবেন। এর কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই সঙ্গে সঙ্গে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে।
প্রশ্ন : চিকিৎসকের কাছে নিলে আপনারা কী ধরনের চিকিৎসা দিয়ে থাকেন?
উত্তর : চিকিৎসকের কাছে গেলে আমরা প্রথম যেটা করি ধারণা করি যে তার কী ধরনের ডায়রিয়া হয়েছে। তার কি অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন আছে, না কি নেই।
পাশাপাশি সবচেয়ে জরুরি যেটা যে তাদের পানিশূন্যতা সেটা দেখি। আমরা দেখি শুধু মুখে খাওয়ার স্যালাইন দিলেই তার উন্নতি হবে কি না।
যদি আমরা এ রকম দেখে থাকি সেই ক্ষেত্রে আমরা কিছু করণীয় পরমর্শ দিয়ে দেই। বাবা-মাকে শিখিয়ে দেই। বলে দেই বাসায় গিয়ে আপনি স্বাভাবিক খাবার দেন, পাশাপাশি মুখে বারবার স্যালাইন খেতে দেন, আশা করা যায় ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টার মধ্যে শিশুর উন্নতি হবে।
আর যদি দেখি পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দিচ্ছে, সেই ক্ষেত্রে আমরা বাচ্চাকে হাসপাতালে রাখি। চার ঘণ্টা হাসপাতালে রেখে কিছু স্যালাইনের মাত্রা নির্ধারণ করে দেই, সেটি তাকে খেতে দেই। চার ঘণ্টা পর আমরা আবার তাকে পরীক্ষা করে দেখি। যদি দেখি যে অবস্থার উন্নতি হচ্ছে, বাড়ি পাঠিয়ে দেই। আর যদি দেখি অবস্থার উন্নতি হয়নি, যদি দেখা যায় আরো ঝুঁকির মধ্যে চলে গেছে, সেই ক্ষেত্রে আমরা বাচ্চাকে ভর্তি করে, মারাত্মক পানিশূন্যতার ব্যবস্থাপনা হিসেবে শিরা পথে স্যালাইন দেই।
কোন শিশুদের বেশি ডায়রিয়া হয়?
প্রশ্ন : শিশুদের ডায়রিয়া কেন বেশি হয়?
উত্তর : শিশুদের ডায়রিয়ার হার বেশি। এর কারণ দুটি। একটি হলো শিশুরা মায়ের দুধ খাচ্ছে, মায়ের দুধের মধ্যে ল্যাকজেটিভ উপাদান আছে। এতে শিশুরা একটু ঘন ঘন পায়খানা করতে পারে। একে আমরা সবসময় ডায়রিয়া হিসেবে বলি না। এটি একটি। আর যেটি মারাত্মক, সেটি হলো শিশুরা অনেক সময় অনেক কিছু মুখে দিয়ে দিচ্ছে। না জেনে না বুঝে অনেক কিছু মুখে দিয়ে দিচ্ছে। এতে শিশুদের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের কারণ বেড়ে যায়।
আরেকটি হলো রোটা ভাইরাস ডায়রিয়া। এই ভাইরাসগুলো সাধারণত বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার জন্য সবচেয়ে বেশি আক্রমণ করে। এতে দেখা যায় শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়। সাধারণত ছয় মাস থেকে তিন বছরের বাচ্চারা রোটা ভাইরাস ডায়রিয়া বা অন্যান্য ভাইরাস জনিত ডায়রিয়াতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।
প্রশ্ন : শিশুদের ডায়রিয়া কেন বেশি হয়?
উত্তর : শিশুদের ডায়রিয়ার হার বেশি। এর কারণ দুটি। একটি হলো শিশুরা মায়ের দুধ খাচ্ছে, মায়ের দুধের মধ্যে ল্যাকজেটিভ উপাদান আছে। এতে শিশুরা একটু ঘন ঘন পায়খানা করতে পারে। একে আমরা সবসময় ডায়রিয়া হিসেবে বলি না। এটি একটি। আর যেটি মারাত্মক, সেটি হলো শিশুরা অনেক সময় অনেক কিছু মুখে দিয়ে দিচ্ছে। না জেনে না বুঝে অনেক কিছু মুখে দিয়ে দিচ্ছে। এতে শিশুদের বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণের কারণ বেড়ে যায়।
আরেকটি হলো রোটা ভাইরাস ডায়রিয়া। এই ভাইরাসগুলো সাধারণত বাচ্চাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকার জন্য সবচেয়ে বেশি আক্রমণ করে। এতে দেখা যায় শিশুরা বেশি আক্রান্ত হয়। সাধারণত ছয় মাস থেকে তিন বছরের বাচ্চারা রোটা ভাইরাস ডায়রিয়া বা অন্যান্য ভাইরাস জনিত ডায়রিয়াতে সবচেয়ে বেশি আক্রান্ত হয়ে থাকে।
প্রশ্ন : সাধারণত সব শিশুরই বড়দের তুলনায় রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম থাকে। তাই এটি সব বাচ্চার জন্য একটি প্রচলিত সমস্যা। এই বাচ্চাদের মধ্যেও আবার কারা বেশি ঝুঁকিপ্রবণ?
উত্তর : যেই শিশুরা মায়ের বুকের দুধ খায় না, তাদের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। বাচ্চা যখন মায়ের গর্ভে ছিল, মায়ের কাছ থেকে সে অ্যান্টিবডি পেয়েছে, এটা তাকে প্রতিরোধ দিচ্ছে। এরপর পরবর্তী ছয় মাস পর্যন্ত যদি সে সম্পূর্ণভাবে মায়ের বুকের দুধ খায় সেই ক্ষেত্রে সে ডায়রিয়া থেকে মোটামুটি ঝুঁকিমুক্ত। সুতরাং বুকের দুধ সবচেয়ে জরুরি।
বিভিন্ন রকম ভ্যাকসিন কিন্তু এখন পাওয়া যায়। যেমন রোটা ভাইরাসের বিপরীতে ভ্যাকসিন আছে সেটা দিতে পারে। অথবা পরবর্তী কালে দুই বছরের পর থেকে কলেরার ভ্যাকসিনও কিন্তু পাওয়া যায়। যদি বাচ্চাকে এই ধরনের ভ্যাকসিনগুলো সঠিকভাবে দেওয়া হয়ে থাকে, সেই ক্ষেত্রে বাচ্চাদের ডায়রিয়ার ঝুঁকি অনেকাংশে কমে আসবে।
ভাইরাসজনিত সমস্যায় অ্যান্টিবায়োটিক নয়
প্রশ্ন : কখনো কখনো বাবা-মায়েরা মনে করেন শিশুদের অ্যান্টিবায়োটিক লাগবে। এটা তারা নিজেরাই কিনে খাওয়ান। কখনো চিকিৎসকের কাছে গিয়ে তাঁরা একটু জোর দেন যে আমার সন্তানকে ভালো অ্যান্টিবায়োটিক দিন। এ বিষয়ে আপনার মত কী।
উত্তর : এ বিষয়ে আসলে অভিভাবকদের আরো সচেতন হওয়া জরুরি। আপনি যেটি বলছেন ঠিকই আছে। আসলে দুই ধরনের ঘটনাই ঘটে। কিন্তু মূলত বুঝতে হবে আসলে শিশুটির অ্যান্টিবায়োটিক লাগবে কি লাগবে না। যদি অ্যান্টিবায়োটিক লেগে থাকে, অর্থাৎ যদি ব্যাকটেরিয়াজনিত সমস্যা হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই ভালো করতে হলে তাকে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে। শুধু দিলেই চলবে না, এটি সঠিক মাত্রায়, সঠিক কোর্সে এবং সেই সংক্রমণের জন্য সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হবে।
উত্তর : এ বিষয়ে আসলে অভিভাবকদের আরো সচেতন হওয়া জরুরি। আপনি যেটি বলছেন ঠিকই আছে। আসলে দুই ধরনের ঘটনাই ঘটে। কিন্তু মূলত বুঝতে হবে আসলে শিশুটির অ্যান্টিবায়োটিক লাগবে কি লাগবে না। যদি অ্যান্টিবায়োটিক লেগে থাকে, অর্থাৎ যদি ব্যাকটেরিয়াজনিত সমস্যা হয়ে থাকে, তাহলে অবশ্যই ভালো করতে হলে তাকে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে। শুধু দিলেই চলবে না, এটি সঠিক মাত্রায়, সঠিক কোর্সে এবং সেই সংক্রমণের জন্য সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করতে হবে।
প্রশ্ন : সেটি কীভাবে সম্ভব?
উত্তর : মনে করেন একটি বাচ্চার শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ বা নিউমোনিয়া হয়েছে, সে ক্ষেত্রে আমাদের ধারণা করে বুঝতে হবে যে এটি সাধারণ নিউমোনিয়া নাকি মারাত্মক নিউমোনিয়া। যদি দেখা যায় সেটি মারাত্মক নিউমোনিয়া নয়, সে ক্ষেত্রে হয়তো মুখে খাওয়ার অ্যান্টিবায়োটিক দিলেই আশা করা যায় শিশুটি ভালো হয়ে যাবে। কিন্তু অনেক সময় দেখা যায় মারাত্মক নিউমোনিয়া হয়ে গেছে। সে ক্ষেত্রে কেবল মুখে খাওয়ার অ্যান্টিবায়োটিক দিলেই হবে না। সেই ক্ষেত্রে হয়তো ইন্টারভেনাসলি অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া লাগতে পারে।
অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করল তবে দুদিন, চারদিন পর একটু উন্নতি হলো, অ্যান্টিবায়োটিক কোর্সটা বন্ধ করে দিল। পুরোপুরি কোর্সটা শেষ না করে দিয়ে আগেই বন্ধ করে দিচ্ছেন। আরেকটি যেটা হচ্ছে সেটি হলো ভাইরাসের কারণে ইনফেকশন।
আমরা আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখতে পাই, প্রতিদিনই ৬০ থেকে ৭০ ভাগ বাচ্চা ভাইরাসজনিত সংক্রমণের কারণে আমাদের কাছে আসে। ভাইরাসজনিত সংক্রমণের কারণে দেখা যায় শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ, টনসিলাইটিস বা ফ্যারিংজাইটিস বা ইনফ্লুয়েঞ্জা জাতীয় রোগ নিয়ে আমাদের কাছে আসছে।
সম্প্রতি আমাদের দেশে মহামারীর মতো হয়ে গেল হ্যান্ড ফুট অ্যান্ড মাউথ ডিজিজ। এটা কিন্তু ভাইরাসজনিত। এখানে অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন নেই। হয়তো শিশুটি অনেক অসুস্থ হয়ে যাচ্ছে। বাবা-মা মনে করছেন অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে। চিকিৎসকের কাছে এসে অনেক সময় জোরাজুরি করছেন অ্যান্টিবায়োটিক দিতে। অনেক ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে নিজেরাই হয়তো অ্যান্টিবায়োটিক দিয়ে দিচ্ছেন। এতে রোগ তো ভালো হচ্ছেই না, রোগ হয়তো এমনিতেই একটি সময় ভালো হয়ে যেত, সেই ক্ষেত্রে হয়তো একটি দীর্ঘসূত্রতার মধ্যে শিশুটি প্রবেশ করছে। সুতরাং দুই ধরনের সমস্যারই আসলে আমরা মুখোমুখি হচ্ছি।
শিশুকে কখন অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হয়?
প্রশ্ন : অ্যান্টিবায়োটিক মানে কী? শিশুদের কোন কোন রোগের বেলায় অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয়?
উত্তর : ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করার জন্য আমরা যেসব ওষুধ ব্যবহার করে থাকি, সেগুলোই অ্যান্টিবায়োটিক। অর্থাৎ ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের জন্য যে অসুখগুলো হয়ে থাকে, সেগুলোতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। যেমন বিভিন্ন ধরনের শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ- নিউমোনিয়া, ওটাইটিস মিডিয়া, টনসিলাইটিস, ফ্যারিংজাইটিস, অথবা অন্যান্য সংক্রমণ যেমন- মূত্রনালির ইনফেকশন, টাইফয়েডজাতীয় জ্বর, মেনিনজাইটিস ইত্যাদি ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের জন্য শিশুদের ক্ষেত্রে আমরা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে থাকি। সব ধরনের রোগে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না।
উত্তর : ব্যাকটেরিয়াকে ধ্বংস করার জন্য আমরা যেসব ওষুধ ব্যবহার করে থাকি, সেগুলোই অ্যান্টিবায়োটিক। অর্থাৎ ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের জন্য যে অসুখগুলো হয়ে থাকে, সেগুলোতে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়। যেমন বিভিন্ন ধরনের শ্বাসতন্ত্রের প্রদাহ- নিউমোনিয়া, ওটাইটিস মিডিয়া, টনসিলাইটিস, ফ্যারিংজাইটিস, অথবা অন্যান্য সংক্রমণ যেমন- মূত্রনালির ইনফেকশন, টাইফয়েডজাতীয় জ্বর, মেনিনজাইটিস ইত্যাদি ব্যাকটেরিয়াজনিত সংক্রমণের জন্য শিশুদের ক্ষেত্রে আমরা অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে থাকি। সব ধরনের রোগে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের প্রয়োজন পড়ে না।
ছোট শিশুর জন্য কি অ্যান্টিবায়োটিক প্রযোজ্য?
প্রশ্ন : অনেক সময় হয়তো খুব ছোট বাচ্চার ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক মা-বাবারা দিতে চান না। চিকিৎসক দিতে গেলে কিছুটা শঙ্কাবোধ করেন। এই বিষয়ে কিছু বলুন।
উত্তর : যেখানে প্রয়োজন আছে সেখানে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে। একদিনের বাচ্চাকেও অনেক সময় অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হয়। জীবন বাঁচানোর জন্য শিশুকে সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে হবে। সঠিক মাত্রায় যদি অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। সেই ক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকি নেই। বরং যদি সঠিকমাত্রায় সঠিকভাবে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া না হয়, সেই ক্ষেত্রে অনেক সময় বাচ্চার জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেতে পারে। সুতরাং আমার মনে হয় মা-বাবাদের এই রকম অস্বস্তির কোনো কারণ নেই। বরং চিকিৎসকের কাছে গেলে এর পরামর্শ সঠিকভাবে করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
শিশুদের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। শিশুদের বয়স এবং ওজন অনুযায়ী। শিশু কী ধরনের জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে, সেই এলাকায় এই মুহূর্তে কোন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ভালো কাজ করে সেটি বুঝে দিতে হবে। এক সময় কিন্তু টনসিলাইটিসের জন্য আমাদের দেশে অ্যামোক্সিসিলিন বা কোরটাইম অক্সাসল আরো আগে পেনিসিলিন জাতীয় ওষুধ খুবই ব্যবহার করা হতো। এগুলো ভালো কাজও করত। তবে এখন দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রে এগুলো কাজ করছে না। সুতরাং এই বিষয়গুলো আমাদের মাথায় রাখতে হবে। তাই সবকিছু মূল্যায়ন করে যখন আপনি চিকিৎসকের কাছে যাবেন, তার পরামর্শ সঠিকভাবে পুরোপুরি মেনে চলতে হবে।
উত্তর : যেখানে প্রয়োজন আছে সেখানে অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হবে। একদিনের বাচ্চাকেও অনেক সময় অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হয়। জীবন বাঁচানোর জন্য শিশুকে সঠিক অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করতে হবে। সঠিক মাত্রায় যদি অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়। সেই ক্ষেত্রে কোনো ঝুঁকি নেই। বরং যদি সঠিকমাত্রায় সঠিকভাবে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া না হয়, সেই ক্ষেত্রে অনেক সময় বাচ্চার জীবন ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যেতে পারে। সুতরাং আমার মনে হয় মা-বাবাদের এই রকম অস্বস্তির কোনো কারণ নেই। বরং চিকিৎসকের কাছে গেলে এর পরামর্শ সঠিকভাবে করাই বুদ্ধিমানের কাজ।
শিশুদের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের বিষয়টি খুবই স্পর্শকাতর। শিশুদের বয়স এবং ওজন অনুযায়ী। শিশু কী ধরনের জীবাণু দ্বারা আক্রান্ত হয়েছে, সেই এলাকায় এই মুহূর্তে কোন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ভালো কাজ করে সেটি বুঝে দিতে হবে। এক সময় কিন্তু টনসিলাইটিসের জন্য আমাদের দেশে অ্যামোক্সিসিলিন বা কোরটাইম অক্সাসল আরো আগে পেনিসিলিন জাতীয় ওষুধ খুবই ব্যবহার করা হতো। এগুলো ভালো কাজও করত। তবে এখন দেখা যায় অনেক ক্ষেত্রে এগুলো কাজ করছে না। সুতরাং এই বিষয়গুলো আমাদের মাথায় রাখতে হবে। তাই সবকিছু মূল্যায়ন করে যখন আপনি চিকিৎসকের কাছে যাবেন, তার পরামর্শ সঠিকভাবে পুরোপুরি মেনে চলতে হবে।
প্রশ্ন : কালচার সেনসিভিটি বলে একটি বিষয় রয়েছে। কোন জীবাণুর বিরুদ্ধে কোন অ্যান্টিবায়োটিক ভালো কাজ করবে। এই ফলাফল পেতে তো তার কিছুদিন সময় লেগে যায়। এই ক্ষেত্রে শিশুটি হয়তো রোগ নিয়ে আসল আপনাদের কাছে। রেজাল্টের জন্য কী অপেক্ষা করেন, না কি আগে থেকেই অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করেন? কীভাবে কাজটি করেন?
উত্তর : এটা হলো সম্পূর্ণভাবে একজন বিশেষজ্ঞের বিবেচনা। একজন চিকিৎসক যদি মনে করেন তার রোগটি সংক্রমিত হয়েছে, এটি ব্যাকটেরিয়াজনিত, তাহলে উনি সঙ্গে সঙ্গে একটি অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করে দেবেন। এর আগেই উনি নুমনা বা স্যাম্পল কালচার সেনসিটিভিটির জন্য পাঠিয়ে দেবেন। কালাচার সেনসিটিভিটির রিপোর্ট আপনাদের কাছে আসতে মোটামুটি ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা সময় লাগবে। কিন্তু এর মধ্যে তো বাচ্চাকে ঝুঁকির মধ্যে রাখা যাবে না। এই জন্য আমরা অ্যান্টিবায়োটিক শুরু করে দেই। এর পরে যখন রিপোর্ট আসে, প্রয়োজন হলে অনেক সময় অ্যান্টিবায়োটিকের পরিবর্তন করা লাগতে পারে। অথবা বন্ধ করা লাগতে পারে। বা আমরা হয়তো মুখে খাওয়া অ্যান্টিবায়োটিক দিচ্ছিলাম, সেটা শিরা পথে ইনজেকটেবল ফর্মে দেওয়া হতে পারে। এই ধরনের কিছু পরিবর্তন লাগতে পারে।
#ডায়রিয়া #শিশু #অ্যান্টিবায়োটিক #রোগ
No comments:
Post a Comment