কোরআন-হাদিসে হিজড়াদের নিয়ে কোনো কথা আছে কি?

নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। জয়নুল আবেদীন আজাদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ।
আপনার জিজ্ঞাসার ১৯৮২তম পর্বে কোরআন-হাদিসে হিজড়াদের নিয়ে কোনো কথা আছে কি না, সে সম্পর্কে ঢাকা থেকে চিঠিতে জানতে চেয়েছেন নূরমহল বেগম। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।

প্রশ্ন : কোরআন-হাদিসে হিজড়াদের নিয়ে কোনো কথা আছে কি? অনেক পরিবারে অনেক অটিস্টিক শিশু জন্মগ্রহণ করে। তারা কেউ বোবা, কারো মেধা থাকে না; আচরণগত ত্রুটি, লেখাপড়া করতে পারে না। এ ধরনের সমস্যা নিয়ে শিশুরা জন্মগ্রহণ করে। অনেক বন্ধ্যা নারী-পুরুষ, যারা সন্তান জন্ম দিতে অক্ষম, তারা তো সংসারেই থাকে। তাদেরও তো ফেলে দেওয়া হয় না। হিজড়াদের মেধা আছে, শারীরিক শক্তি আছে, শুধু সন্তান জন্ম দেওয়ার ক্ষমতা নেই। তাদের সুযোগ দিলে লেখাপড়া করে সমাজে বিভিন্ন কাজে লাগতে পারে। কিন্তু তাদের সমাজের বোঝা করে রাখা হয়। এ বিষয়ে সরকার ব্যবস্থা নিতে পারে, আইন করে তাদের মানুষের অধিকার দিয়ে এবং মা-বাবার সম্পত্তির পূর্ণ অধিকার দিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠা করার কোনো বিধান কি নেই? কিংবা করা যায় না?

উত্তর : ইসলাম হিজড়া বলতে কোনো জিনিস আবিষ্কার করেনি। এরা তৃতীয় লিঙ্গ বা চতুর্থ লিঙ্গ ব্যাপারটি এমন না, একেবারেই ভুল কথা। এদের ইসলাম মানবসন্তান হিসেবে আখ্যায়িত করেছে এবং মানবসন্তানদের মধ্য থেকে তাদের বিধান দেওয়া রয়েছে ইসলামে। এ ব্যাপারে একেবারে বিস্তারিত আলোচনা রয়েছে। যাদের ইসলামের জ্ঞান নেই, তারা হয়তো বলতে পারবে না। তারা হয়তো পুরুষদের মধ্যে অথবা নারীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে। সেটি ইসলামী বিধান অনুযায়ী তাদের ফয়সালা করা হবে। কোনোভাবেই তৃতীয় লিঙ্গ হিসেবে তাদের আখ্যায়িত করা হবে না। কিন্তু দুঃখের বিষয় হচ্ছে, ইসলাম সম্পর্কে জ্ঞান না রাখার কারণে আমরা এদেরকে ভিন্ন একটি লিঙ্গ হিসেবে আখ্যায়িত করে তাদের সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন করার চেষ্টা করছি, তাদের ভিন্ন সম্প্রদায় হিসেবে আখ্যায়িত করার চেষ্টা করছি, এমনকি রাষ্ট্রীয় ও সামাজিক যেই অধিকার রয়েছে, সেগুলো থেকে তাদের বঞ্চিত করছি। এটি একেবারেই ভুল কাজ, ইসলাম এটা মোটেও স্বীকার করে না। ইসলাম তাদের মানবিক জীবন এবং মানবসন্তান হিসেবে যেভাবে জীবনযাপন করার বিধান রয়েছে, সেভাবে জীবনযাপনের বিধান দিয়েছে। সম্পত্তিসহ সব ক্ষেত্রে তাদের অধিকার রয়েছে। কোনোভাবেই ইসলামে তাদের অবহেলা করা হয়নি। মূলত অবহেলা করা হয়েছে আমাদের সমাজে, সামাজিকভাবে। সমাজে তাদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করার জন্য আমাদের চেষ্টা করতে হবে।

No comments:

Post a Comment