অনেকেই সখের বশে ছোট্ট প্রাণী খরগোশ পুষতে চান। কিন্তু হঠাৎ করে এ প্রাণীটি কিনে এনে অনেকেই বিপদে পড়েন।
এ কারণে কেনার আগে জেনে নিতে হবে প্রাণীটির জীবনযাপন বিষয়ে কয়েকটি তথ্য। অন্যথায় খরগোশ কিনে মহা ঝাঁমেলায় পড়তে হতে পারে।
১. জীবনকাল
খরগোশ পোষার জন্য এর জীবনকাল সম্বন্ধে জানা থাকা উচিত। গড়ে প্রত্যেকটি খরগোশ ১০ বছর বাঁচে। তবে খাওয়া ও অন্যান্য বিষয়ের ভিত্তিতে এটি ভিন্ন হতে পারে।
২. খাবার
খরগোশ তৃনভোজী প্রাণী। তবে এরা প্রায় সব খাবারই খেতে পারে। যেমন: শাকসবজি, ঘাঁস, কাঁচা তরকারি, ফলমূল, বিভিন্ন গাছের পাতা, ভাত, গম, ভুট্টা ইত্যাদি। খরগোশের প্রিয় খাবার শাকসবজি ও ঘাস। হজমে সমস্যা হয়; যেমন, ভাত, রুটি জাতীয় খাবার বেশি দেয়া যাবে না।
৩. পশম ছাড়াই জন্ম
আপনি হয়তো জানলে অবাক হবেন যে, খরগোশের জন্মের সময় শরীরে কোনো পশম থাকে না। তবে তার কয়েক দিন পরই পশম গজানো শুরু হয়। অন্যদিকে অধিকাংশ খরগোশ শাবকই জন্মের সময় কান ও চোখ বন্ধ থাকে। তবে তারা প্রায় পাঁচ দিন বয়সে শুনতে ও ১০ দিন বয়সে দেখতে শুরু করে।
৪. দারুণ দৃষ্টিশক্তি
খরগোশের দৃষ্টিশক্তি প্রখর। আর তাদের পেছন থেকে কেউ কাছাকাছি যাওয়ার আগেই তারা দেখে ফেলে। কারণ তাদের চোখের অবস্থানটাই এমন। তবে তাদের নাকের একেবারে সোজা সামনের অংশটি ব্লাইন্ড স্পট নামে পরিচিত। এ অংশে তারা কিছু দেখতে পায় না।
৫. ভঙ্গুর
তাদের দেখলে বোঝা যায় না যে, তারা বেশ ভঙ্গুর। হাত দিয়ে ধরলে কিংবা এদিক-ওদিক নিয়ে গেলে তাদের আঘাত লাগার সম্ভাবনা থাকে। তবে খরগোশের পেছনের পায়ে অনেক জোর আছে। এটি দিয়ে তারা এতো জোরে কিক দিতে পারে যে, এতে অনেক সময় নিজেদের দেহের হাড়ই ভেঙে যায়।
৬. একাকী
অনেকেই খরগোশ পোষার জন্য একটি খরগোশের খোঁজ করেন। তবে এটি মোটেই ঠিক নয়। একটা মাত্র প্রাণী কিনলে এটি একা হয়ে যায় এবং নানা সমস্যা তৈরি হয়। তার বদলে জোড়া ধরে কেনা যেতে পারে। আর এক পাল কিনলে তারা ঠিকভাবে থাকছে কি না, তাও দেখা দরকার। অন্যথায় মারামারি বাধিয়ে তারা আহত হতে পারে।
৭. কান
খরগোশের রয়েছে সুন্দর একজোড়া কান। আর বড় এ কানগুলো তাদের জন্য খুবই প্রয়োজনীয়। তারা এ কানের সাহায্যে আশপাশের আগন্তুকদের চিহ্নিত করতে পারে। এ ছাড়াও শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করার জন্যও কান ব্যবহার করে তারা।
আর ঠাণ্ডার সময় তারা কানগুলো ঘাড়ের কাছে নিয়ে শরীর গরম রাখতে চেষ্টা করে।
৮. আক্রমণকারী
অধিকাংশ খরগোশ সারাক্ষণ খেলাধুলায় মেতে থাকে এবং মানুষের সান্নিধ্য পছন্দ করে না। আর অনেক সময় খরগোশ মানুষকে কামড় দেয়। বিশেষ করে কাউকে হুমকিস্বরূপ মনে হলে তারা কামড় দিতে পারে। এ কারণে নতুন খরগোশ কিনে আনলে তাকে ধরার আগে কিছুদিন নিজের মতো করে চলতে দিতে হবে।
৯. পরিচ্ছন্নতা
খরগোশকে সবসময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন জায়গায় রাখতে হবে। কোন রকম ভেঁজা বা স্যাঁতস্যাঁতে স্থানে রাখা যাবে না। এদেরকে নির্দিষ্ট স্থানে পায়খানা করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে।
No comments:
Post a Comment