আধু‌নিক দাস‌ত্বে বাংলা‌দেশ ১৬৭ দে‌শের ম‌ধ্যে চতুর্থ

ভাব‌তেও অবাক লা‌গে যে, আধুনিক দাসত্বের মধ্যে বাংলাদেশে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা প্রায় ১৫ লাখ ৩১ হাজার ৩০০। এ সংখ্যা মোট জনসংখ্যার তুলনায় শতকরা প্রায় ০.৯৫ ভাগ। অস্ট্রেলিয়া ভিত্তিক মানবাধিকার বিষয়ক প্রতিষ্ঠান ওয়াক ফ্রি ফাউন্ডেশনের 'দ্য গ্লোবাল সার্ভে ইনডেক্স'-এর এক জ‌রিপে এই বিষয়‌টি উ‌ঠে এ‌সে‌ছে।
এই জ‌রিপে বলা হয়েছে যে, দাসত্বের এমন পরিণতির দিকে বাংলাদেশের অবস্থান চার নম্বরে। এক নম্বরে রয়েছে ভারত। দুই নম্বরে চীন। তিন নম্বরে পাকিস্তান।
গ্যালাপের সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো বাংলাদেশেও ২০১৫ সালে জরিপ চালিয়ে এ সূচক তৈরি করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে বাংলাদেশে জোর করে বিয়ে দেয়ার চেয়ে জোর করে শ্রমে নিয়োজিত করার ঘটনা বেশি। জোর করে বিয়ে দেয়ার হার শতকরা ২০ ভাগ। আর জোর করে শ্রমে নিয়োজিত করার হার শতকরা ৮০ ভাগ।

জোর করে যেসব খাতে শ্রমে বাধ্য করা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে উৎপাদন খাত (২৫ ভাগ), সাধারণ শ্রম (২৫ ভাগ), নির্মাণ প্রতিষ্ঠান (২৩ ভাগ), ওষুধ শিল্পে (১৫ ভাগ) ও কৃষিকাজ (১২ ভাগ)।
জোর করে কাজে নিয়োজিত করা হয় পুরুষদের বেশি। এর মধ্যে পুুরুষের হার শতকরা ৮২.৫ ভাগ। নারী শতকরা ১৭.৫ ভাগ। তবে জোর করে বিয়ে দেয়ার ক্ষেত্রে নারীর ওপর বেশি প্রভাব পড়ে। শতকরা ৮৮ ভাগ নারীকে বিয়ে দেয়া হয় জোর করে। এক্ষেত্রে পুরুষের হার শতকরা ১২ ভাগ। এতে বলা হয়েছে, ১৫ বছরের নিচে শতকরা ২৯ ভাগ মেয়েকে বিয়ে দিয়ে দেয়া হয় বাংলাদেশে। ১১ বছর বয়সের আগে বিয়ে দেয়া হয় শতকরা ২ ভাগ মেয়েকে।

এশিয়ার মধ্যে আধুনিক দাসত্বের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বিপন্ন দেশের তালিকায় বাংলাদেশের অবস্থান ১১তম।
ব্যাপক দারিদ্র্য, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, ব্যাপক দুর্নীতি এই অবস্থার জন্য দায়ী। দারিদ্র্যের জন্য নারী, পুরুষ, শিশুরা দেশের ভিতরে ও বিদেশে বিপজ্জনক কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। এর ফলে পাচারকারীদের জন্য এসব মানুষকে দলে টানা ও তাদেরকে বিপথে পরিচালিত করার উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হচ্ছে।
২০১০ সালে বাংলাদেশের শতকরা ৩১.৫ ভাগ মানুষ বসবাস করছিলেন দারিদ্র্যসীমার নিচে। এতে বলা হয়েছে, বিশ্বে এখন আধুনিক দাসত্বের শিকার হচ্ছে প্রায় ৪ কোটি ৫৮ লাখ মানুষ। বিশ্বের ১৬৭ টি দেশের ওপর এই সূচক নির্ধারণ করা হয়েছে।

No comments:

Post a Comment