আই‌পিএ‌লের সেরা ব্যর্থ একাদশ! অদ্ভুতু‌রে

আইপিএলের গ্রুপ লিগের খেলা শেষ। বাকি শুধু প্লে অফ, তারপর ফাইনাল। আইপিএলে এখন টিকে আছে চারটি দল। বাকিরা ইতিমধ্যে ছিটকে গেছে। বাদ পড়ে গেছে মুম্বই ইন্ডিয়ান্স, দিল্লি ডেয়ার ডেভিলস, রাইজিং পুনে সুপারজায়ান্টস এবং কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব। প্লে অফে গেছে গুজরাট লায়ন্স, রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোর, কলকাতা নাইট রাইডার্স এবং সানরাইজার্স হায়দরাবাদ।

আইপিএল শুরু হওয়ার আগে অনেককে নিয়েই অনেক আশা দেখেছিলো সবাই। কিন্তু তারা অনেকেই ডাহা ব্যর্থ হতে হতাশ করে গিয়েছেন তাদের ফ্র্যাঞ্চাইজি মালিকদের। পাশপাশি ক্রিকেটপ্রেমীদেরও। তাই এই ব্যর্থ ক্রিকেটারদের নিয়ে একটা দল তৈরি করা। 'ব্যর্থ একাদশ'। দেখুন তো দলটা কেমন হয়। আইপিএলের নিয়ম মেনে এই ব্যর্থ একাদশেও খেলবেন চার বিদেশি। তাহলে শুরু করি।

১)
পার্থিব প্যাটেল (ওপেনার)
: পার্থিবের বয়স বাড়ুক আর না বাড়ুক, তিনি আজ অভিজ্ঞ। কিন্তু এবারের পারফরম্যান্সে তিনি একেবারে আনকোরা। ১০ ম্যাচ খেলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সের এই ওপেনারের সংগ্রহ ১৭৭ রান। এর মধ্যে এক ম্যাচেই পার্থিব করেছিলেন ৮১ রান! তাহলেই বুঝুন, বাকি ৯ ম্যাচে পার্থিব রোহিত শর্মার দলকে ঠিক কতটা ঝুলিয়েছেন।

২)
সৌরভ তিওয়ারি (ওপেনার)
: ধোনির রাজ্যের ক্রিকেটার। আইপিএলে শুরুটাও ভালো করেছিলেন একসময়। কিন্তু সৌরভের আর গাঙ্গুলি হওয়া হল না। তিনি তিওয়ারিই থেকে গেলেন। এবারের আইপিএলে পুনের হয়ে ১০ ম্যাচ খেলে করেছেন মাত্র ১৭০ রান। তারমধ্যে এক ম্যাচে ৫৭ রান। তাহলে বাকি ৯ ম্যাচে ধোনি কতটা মাথা কুটেছেন বুঝুন একবার!

৩)
গ্লেন ম্যাক্সওয়েল (প্রথম বিদেশি)
: নামের উপরেই আইপিএলটা কাটিয়ে গেলেন। পাঞ্জাবের হয়ে এই অজি ব্যাটসম্যান এবার খেলেছেন ১১ ম্যাচ। রান করেছেন ১৭৯! এই পারফরম্যান্স ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে যায়? প্রীতি জিন্টা পাগল হয়ে যাবেন না!

৪)
ডেভিড মিলার (দ্বিতীয় বিদেশি)
- ঝোলানোর তো একটা সীমা আছে। প্রথমে ছিলেন ক্যাপ্টেন। দলকে ডোবানোর পর এমনি এমনি খেললেন। কিন্তু ওই খেলাটাই সার। করলেন না কিছুই। ১৪ ম্যাচ খেলে কিলার বাবু তো নিজেই থাক...আর বললাম না। করেছেন মাত্র ১৬১ রান। কী কম্মে লাগে এই পারফরম্যান্সের জন্য বিদেশি ক্রিকেটার?

৫)
সূর্যকুমার যাদব (মিডল অর্ডার)
: তার দল কেকেআর প্লে অফে। তাই তার দিকে কেউ দেখছে না। মাঠে কিংবা মাঠের বাইরে কোথাও সূর্য ওঠছে না। উদীয়মান সূর্যের পারফরম্যান্স ১৪ ম্যাচ খেলে ১৫৯ রান। মেঘে ঢাকা তারার সেরা মডেল হতে পারেন। যদিও তিনি এখনও ম্যাচ খেলার সুযোগ পাবেন। যদি মেঘ সরিয়ে বাইরে বেরোতে পারেন।

৬)
পবন নেগি (মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান এবং স্পিনার)
: সাড়ে আট কোটি টাকার ক্রিকেটার। সাড়ে আট রানও করেননি! কেন খেলেছেন। কোথায় খেলেছেন কেউ জানে না! দিল্লির লাড্ডু নিজেই খেয়ে ফেলেছিলেন বোধহয়। খেলেও পস্তালেন। না খেললে কতটাই বা পস্তাতেন, কে জানে!

৭)
ধোনি (এই দলের অধিনায়ক)
: তিনি মানেই সাফল্য। আইপিএল মানে তো কথাই নেই। এবার কয়েনের উল্টোপিঠটাও দেখে ফেললেন ধোনি। সব ব্যর্থতার দায় তো তাকে নিতেই হবে। ১৪ ম্যাচ খেলে তার দল জয় পেয়েছে মাত্র ৫ ম্যাচে। লাজবাব ক্যাপ্টেন্সি।

৮)
রবীন্দ্র জাদেজা (অলরাউন্ডার)
: এখনো সুযোগ আছে তার সামনে। কারণ, তার দল প্লে অফে। কিন্তু এখন পর্যন্ত জাদেজার যা পারফরম্যান্স, তাতে হানিমুন পিরিয়ড শেষ হয়নি মনে হচ্ছে। ১৩ ম্যাচে ৬ উইকেট আর ১৬৯ রান। এটা করার জন্য রবীন্দ্র জাদেজা হওয়ার দরকার পড়ে না বোধহয়।

৯)
ব্রেথওয়েট (তৃতীয় বিদেশি/অলরাউন্ডার/পেসার)
: টি২০ বিশ্বকাপের নায়ক। টানা ৪ ছক্কা। কিন্তু আইপিএলে ফুরুত। ৮ ম্যাচ খেলে ৭ উইকেট। ব্যাটে? খুঁজেই পাওয়া যায়নি। এবার পাওয়ার সম্ভাবনাও নেই। আসছে বছর আবার হবে!

১০)
মোজেস এনরিক (চতুর্থ বিদেশি/অলরাউন্ডার/পেসার)
: ১৪ ম্যাচ খেলে করেছেন ১৩৬ রান। ওদিকে তাঁর দলের ক্যাপ্টেন ওয়ার্নারের খাটতে খাটতে নাভিশ্বাস উঠেছে। মোজেসবাবু যেন ধর্মপ্রচারে বেরিয়েছেন। কোনও মালুম নেই। দিব্যি ১৪ ম্যাচের সবকটাতেই খেললেন। প্লে অফেও খেলবেন!

১১)
হরভজন সিং (স্পিনার)
: তার কী আর ১৪ ম্যাচে ৯ উইকেট নেওয়ার মতো আর দিন আছে! তিনি তো আর প্রতিশ্রুতিমান নন, তিনি বর্ষীয়ান। অথচ, এই পারফরম্যান্স। হরভজনেরও কী তাহলে ছাড়ার সময় এলো?

তবে এটাই চূড়ান্ত কথা নয়। ও হ্যাঁ, এই দলের কোচ
রাহুল দ্রাবিড়
ছাড়া আর কে হবেন! গোটা সিজনে একটা প্রথম একাদশ বানাতে পারেননি দিল্লির। হাতড়ে বেরিয়েছেন শুধু। কে জানে পরেরবারেও পারবেন কিনা! এই দলের হয়ে পেস বল করবেন ব্রেথওয়েট আর মোজেস। স্পিনার হিসেবে থাকছেন হরভজন, নেগি, জাদেজা, ম্যাক্সওয়েল। দেখি এই দলকে কে জেতায়!

~নয়া দিগন্ত

No comments:

Post a Comment