উচ্চ রক্তচাপ একটি নীরব ঘাতক। এটি ধীরে ধীরে মানুষের হৃদযন্ত্র, কিডনি, চোখ ইত্যাদি অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ক্ষতি করতে থাকে। অনেকে অজান্তেই উচ্চ রক্তচাপ বয়ে বেড়ান। মাত্রা বেড়ে গেলে রোগীকে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে।
হঠাৎ করে রক্তচাপ খুব বেশি বেড়ে মানুষের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে।
সাধারণত রক্তচাপ ১৮০/১২০ মিলিমিটার পারদের ওপরে উঠে গেলেই এমন আশঙ্কা তৈরি হয়। এ সময় রোগীর দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসতে পারে। পাশাপাশি মাথাব্যথা, বুকে ব্যথা বা চাপ অনুভব, শ্বাসকষ্ট, লাল রঙের প্রস্রাব হতে পারে। নাক দিয়ে রক্ত পড়তে পারে, গর্ভকালীন খিঁচুনি বা শরীরের কোনো অংশ অবশ হয়ে যেতে পারে। এ ধরনের যেকোনো লক্ষণ ও উচ্চ রক্তচাপ থাকলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে।
উচ্চ রক্তচাপ রোগীদের জন্য কয়েকটি পরামর্শ:
* রক্তচাপ অতিরিক্ত বেড়ে গেলে নিজে নিজে নানা ওষুধ বাড়িয়ে খেয়ে নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করবেন না। জরুরি অবস্থায় রক্তচাপ কমানোর ওষুধ ও চিকিৎসা পদ্ধতি ভিন্ন। সেটা চিকিৎসকের ওপর ছেড়ে দিন।
* রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণের জন্য নিয়মিত যে ওষুধ সেবন করেন, সেটা হঠাৎ বাদ দিলে এ ধরনের বিপত্তি ঘটতে পারে। তাই চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া এ রকম ওষুধ খাওয়া বন্ধ করা বা বদলানো যাবে না।
* ৫ শতাংশ ক্ষেত্রে অনিয়ন্ত্রিত ও খুব বেশি উচ্চ রক্তচাপের বিশেষ কারণ থাকে। যেমন: কিডনি রোগ, হরমোনজনিত রোগ, স্টেরয়েডজাতীয় ওষুধের প্রতিক্রিয়া, হৃৎপিণ্ডে জন্মগত ত্রুটি, হরমোন নিঃসরণকারী টিউমার ইত্যাদি। সে ক্ষেত্রে কারণ অনুসন্ধান করা জরুরি, বিশেষত যদি রোগীর বয়স কম হয়ে থাকে।
* গর্ভকালীন শনাক্ত হওয়া উচ্চ রক্তচাপ হঠাৎ বেড়ে প্রাণসংহারী হতে পারে। তাই গর্ভাবস্থায় রক্তচাপ নিয়মিত মাপতে হবে এবং নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে।
ডা. শরদিন্দু শেখর রায়
জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল
No comments:
Post a Comment