নেটওয়ার্ক মার্কেটিং-এ গ্রুপের সুবিধাসমূহ: শেষ পর্ব

মানুষ সামাজিক জীব। প্রাচীন কাল থেকে মানুষ দলবদ্ধ হয়ে বসবাস করে আসছে। কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্য অর্জনের জন্য মানুষ দল গঠন করে। মানুষ এককভাবে যা সম্পাদন করতে পারে না, তা দলীয়ভাবে সম্পন্ন করতে পারে। নিজের ও সংগঠনের প্রয়োজনেই মানুষ দল বা গ্রুপ তৈরী করে। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় দল গঠন করতে লিডাররাই মূল ভূমিকা পালন করে। লিডাররা এক-একটি দল বা গ্রুপের নেতৃত্ব প্রদান করে ডিস্ট্রিবিউটরদের প্রেরণা যোগাতে সহায়তা করে। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং এ দল গঠনের সুবিধা সমূহ নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ

১. সহজে কার্য সম্পাদনঃ
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং বা অন্য যে কোন কাজ যখন একজন ডিস্ট্রিবিউটর একক প্রচেষ্ঠায় সম্পন্ন করতে পারে না; তখন অনেকে মিলে সে কাজ সম্মেলিতভাবে সহজেই সম্পন্ন করতে পারে। এতে দলের সকলেই কম বেশি উপকৃত হয়ে থাকে। অবশ্য দলীয় সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে একজন অন্যের উপর আস্থা রাখতে হবে।

২. কাজের প্রতি আগ্রহ বৃদ্ধিঃ
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং ব্যবসায় বিক্রয়কর্মী বা ডিস্ট্রিবিউটরদের কাজের প্রতি আগ্রহের উপরই নির্ভর করে সাফল্য। দলবদ্ধভাবে কাজ করার মাধ্যমে প্রত্যেকের আগ্রহ অনেকাংশে বেড়ে যায়। দলের অনেকের সফলতা দেখে নতুনরা কাজ করার আগ্রহ প্রদর্শন করে। এ ধরনের পদ্ধতিতে একজনের সফলতা অনেকাংশে অন্যের উপর নির্ভরশীল যার দরুন একে অন্যের সহযোগিতায় এগিয়ে আসে।

৩. মর্যাদা ও তৃপ্তি লাভঃ
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে দল গঠনের মাধ্যমে ডিস্ট্রিবিউটরগণ সাফল্য অর্জন করে যেমন তৃপ্তিলাভ করে; তেমনি বড় দলে কাজ করার দরুন মর্যাদা বৃদ্ধি পায়। একজন ডিস্ট্রিবিউটর পর্যায়ক্রমে যখন দলের নেতৃত্ব লাভ করে দলের অন্যরাও অধিক পরিশ্রম করে সাফল্য অর্জনের প্রচেষ্ঠা করে।

৪. দলীয় শক্তি বৃহৎ শক্তিঃ
একটি দল বা গ্রুপে একাধিক ডিস্ট্রিবিউটর ও লিডার থাকে বিধায় সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্ঠায় একটি বৃহৎ শক্তি গড়ে উঠে। এ শক্তির উপর ভিত্তি করে অনেক জটিল কাজ সহজে সমাধান করা যায়। দলীয় শক্তির উপর ভিত্তি করে তৈরী হয় বড় নেটওয়ার্ক যা সম্ভাবনার দ্বার খুলে দেয়।

৫. সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহনঃ
দলীয় সিদ্ধান্ত নেটওয়ার্ক পদ্ধতিতে খুবই ফলপ্রসু। এককভাবে গৃহীত সিদ্ধান্তের চেয়ে দলীয় সিদ্ধান্ত অনেক বেশি কার্যকর। অনেকগুলো মস্তিষ্ক যখন আলোচনায় বসে কোন সিদ্ধান্তগ্রহন করে তা সফল হয়েই থাকে। কারন এক্ষেত্রে অনেক মেধা ও অভিজ্ঞতার সমন্বয় ঘটে।

৬. নিয়ম শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠাঃ
প্রত্যেকটি দল বা গ্রুপের কিছু নিয়ম-নীতি, আচরনবিধি ও দলীয় আদর্শ থাকে। একজন ডিস্ট্রিবিউটর দল ভূক্ত হওয়ার সাথে সাথে ঐ নিয়মনীতি ও বিধিসমূহ মেনে চলে। প্রত্যেক দল বা গ্রুপের দলীয় নিয়ম শৃঙ্খলার দরুন সম্পূর্ন প্রতিষ্ঠানে শৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হয়।

৭. প্রেষণা বৃদ্ধিঃ
দলে অন্তর্গত একে অন্যের কাজে সহযোগিতা ও পরামর্শ প্রদানের দরুন কাজের গতি বৃদ্ধি পায়। দলীয় গতিশীলতা ডিস্ট্রিবিউটরদের প্রেষণা যোগায়। নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে আপ-লাইন ডিস্ট্রিবিউটর নিজের অগ্রগতির জন্য ডাউন লাইন ডিস্ট্রিবিউটরদের প্রেষণা প্রদান করে। এসব প্রেষণা প্রদানের জন্য বিভিন্ন প্রকার পুরষ্কার ও বোনাস প্রদান করে দলের পক্ষ হতে। পারস্পরিক সম্পর্ক সৃষ্টির জন্যই দলে প্রেষণামূলক পরিবেশ বজায় থাকে।

৮. মনোবল বৃদ্ধিঃ
নেটওয়ার্ক মার্কেটিং পদ্ধতিতে প্রতিটি গ্রুপ বা দল মনোবল বৃদ্ধির ক্ষেত্র হিসেবে কাজ করে। এক একটি দলে ডিস্ট্রিবিউটর, সিনিয়র ডিস্ট্রিবিউটর ও নতুনদের সহিত আপ-লাইন লিডারদের যোগাযোগ থাকে বিধায় একের সাফল্য অন্যের মনোবল বৃদ্ধিতে সহায়ক হয়। স্বাভাবিকভাবেই নিজেদের মধ্যে বোঝাপড়া ও আন্তরিকতা থাকে বিধায় এ পদ্ধতিতে ইতিবাচক মনোভাব গড়ে উঠে যা নতুনদের মনোবল বাড়িয়ে দেয়।

৯. যোগাযোগ উন্নয়নঃ
নেটওর্য়াকারদের সহিত ডিস্ট্রিবিউটর ও নতুনদের যোগাযোগ যত সহজতর হয় তত বেশি সফলতা অর্জিত হয়। লিডার ও ডিস্ট্রিবিউটর একে অন্যের সহিত দুরত্ব বা ব্যবধান কমানোর মাধ্যমে দলীয় তৎপরতা বৃদ্ধি ঘটে। এককথায় তথ্যের আদান প্রদান আন্ত:সম্পর্ক তৈরীর জন্য যোগাযোগ অপরিহার্য যা অর্জিত হয় দল গঠনের মাধ্যমে।

১০. প্রশিক্ষনঃ
সাধারণত নেটওয়ার্ক মার্কেটিং প্রতিষ্ঠান নানাধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা গ্রহন করে থাকে। এছাড়াও লিডাররা গ্রুপ বা দলের অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রশিক্ষনের ব্যবস্থা গ্রহন করে যা দলীয় লক্ষ্য অর্জনে ফলপ্রসু হয়ে থাকে। সার্বিক প্রশিক্ষণ কার্যক্রম সফল হওয়ার জন্য কোম্পানী বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করলেও বিভিন্ন দলের সহযোগিতায় প্রশিক্ষণ কর্মসূচী সফলভাবে সম্পন্ন হয়।

No comments:

Post a Comment