সব চুলকানিতে অ্যান্টি হিসটামিন-জাতীয় ওষুধ কাজ করে?

শরীর চুলকানো একটি প্রতিদিনের সমস্যা। শরীর একটু চুলকালেই অধিকাংশ লোক অ্যান্টি হিস্টামিন-জাতীয় ওষুধ, যেমন হিস্টাসিন, অ্যান্টি হিসটাসিন, হিস্টাল, এভিল, অ্যালাট্রল, লোরাটিন ইত্যাদি খেয়ে থাকেন। এসব অ্যান্টি হিসটামিন-জাতীয় ওষুধ সব ধরনের চুলকানিতে কার্যকর নয়। কিন্তু অনেকেই যে কোনো চুলকানিতে অ্যান্টি হিসটামিন ওষুধ খেয়ে ফেলেন। এটি মোটেও ঠিক কাজ নয়। চুলকানোর কারণ না জেনে অযথা অ্যান্টি হিসটামিন-জাতীয় ওষুধ খেয়ে কোনো লাভ নেই। এতে ওষুধগুলোর অপচয় হচ্ছে।

শরীর চুলকানোর অনেক কারণ রয়েছে। আবার অন্যদিকে অ্যান্টি হিসটামিন জাতীয় ওষুধ হিসটামিনের বিপরীতে কাজ করে। শরীর বিশেষ কিছু বিরূপ পরিবেশের মুখোমুখি হলে রক্তে হিসটামিন নামক একধরনের পদার্থ বেরিয়ে আসে। হিসটামিন নামক এই পদার্থটি চুলকানির উদ্রেক করে থাকে। সাধারণত অ্যালার্জিজনিত কারণে শরীরে হিসটামিনের আগমন ঘটে এবং শরীর চুলকায়। কাজেই যেসব চুলকানি হিসটামিনের কারণে হয়, শুধু মাত্র সেসব ক্ষেত্রে অ্যান্টি হিসটামিন জাতীয় ওষুধ কার্যকর হবে। অন্য কারণে শরীর চুলকালে সেক্ষেত্রে অ্যান্টি হিসটামিন জাতীয় ওষুধ বিশেষ কোনো কাজে আসবে না। শরীর চুলকায়, অথচ অ্যান্টি হিসটামিনের কোনো ভূমিকা নেই, তেমন কিছু পরিস্থিতি :

• ডায়াবেটিসের কারণে ত্বক শুষ্ক হয়ে গেলে।
• মানসিক কারণে কিংবা চকলেট খেলে এড্রেনার্জিক আর্টিকেরিয়া দেখা দিলে।
• অতিরিক্ত পরিশ্রম ও অতিরিক্ত তাপমাত্রা।
• রৌদ্রের প্রভাবে চুলকালে বা সোলার আর্টিকেরিয়া হলে।
• রক্তশূন্যতা
• অবস্ট্রাকটিভ জন্ডিস
• কিডনির দুর্বল কার্যকারিতার কারণে ইউরিয়ার পরিমাণ বেড়ে গেলে।
• কিছু কিছু চর্মরোগ প্যারক্সিসমাল প্ররাইটিস বা হঠাৎ চুলকানি হলে।
• গর্ভাবস্থায়।
• শীতকালে অতিরিক্ত সাবান ব্যবহার করলে।
• মাথা চুলকালে
কৃমি, ফাঙ্গাস ও ব্যাকটেরিয়ার জন্য পায়ুপথ এবং প্রসবপথের আশপাশে চুলকালে।
উল্লিখিত চুলকানিতে অ্যান্টি হিস্টামিন-জাতীয় ওষুধ খেলে কোনো লাভ হয় না। কাজেই চুলকালেই অ্যান্টি হিস্টামিন-জাতীয় ওষুধ খেতে হবে এ ধারণা মোটেও ঠিক নয়। অ্যান্টি হিস্টামিন সব চুলকানির বিরুদ্ধে কার্যকর ওষুধ নয়।

ডা. সজল আশফাক
সহযোগী অধ্যাপক, হলিফ্যামিলি রেডক্রিসেন্ট মেডিকেল কলেজ।

No comments:

Post a Comment