তাবীর বা স্বপ্ন ব্যাখ্যার ইমাম মুহাম্মাদ ইবনে সীরিন রহ.- এর কাছে এক মহিলা আসল। তিনি তখন দুপুরের খাবার খাচ্ছিলেন। মহিলা বলল, হে আবু বকর! আমি একটি স্বপ্ন দেখেছি। ইবনে সীরিন রহ. বললেন, তুমি এক্ষুণি বলবে না আমাকে খেতে দেবে? মহিলা বলল, ঠিক আছে, আপনি খাওয়া শেষ করুন। খাওয়া শেষ করার পর তিনি মহিলাকে বললেন: এখন বল, তোমার দেখা স্বপ্ন। মহিলা বলল : আমি দেখলাম, আকাশের চন্দ্র সাতটি তারা (সূরাইয়া) র মধ্যে ঢুকে গেল। এরপর স্বপ্নের মধ্যে লোকেরা আমাকে বলল, ইবনে সীরিনের কাছে খবরটা তাড়াতাড়ি পৌঁছে দাও।
ইবনে সীরিন বললেন, ধিক! তোমাকে। কি দেখলে? আবার বল। এভাবে কয়েকবার তিনি বললেন। আর তিনি খুব অস্থির হয়ে গেলেন। তার চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। তার বোন তাকে জিজ্ঞেস করল, কি হয়েছে?
ইবনে সীরিন বললেন, ধিক! তোমাকে। কি দেখলে? আবার বল। এভাবে কয়েকবার তিনি বললেন। আর তিনি খুব অস্থির হয়ে গেলেন। তার চেহারা বিবর্ণ হয়ে গেল। তার বোন তাকে জিজ্ঞেস করল, কি হয়েছে?
তিনি বললেন, এ মহিলাটি বলছে আমি সাত দিন পর মৃত্যু বরণ করব।
বর্ণনাকারী আসআছ বলেন : ঠিক সাত দিনের মাথায় আমরা ইমাম ইবনে সীরিন- রহ.-কে দাফন করলাম।
(আল কাওয়ায়েদুল হুসনা ফী তাবীলির রুইয়া : শায়খ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আস সাদহান)
আনাস (রাঃ) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসূল (সঃ) স্বপ্নের কথা শুনতে পছন্দ করতেন। তিনি একদিন জিজ্ঞেস করলেন, তোমাদের মধ্যে কেউ গত রাতে স্বপ্ন দেখেছ?
আয়েশা (রাঃ) বললেন : আমি স্বপ্ন দেখেছি, আকাশ থেকে তিনটি চাঁদ আমার ঘরের মধ্যে পতিত হয়েছে।
রাসূল (সঃ) বললেন: তোমার স্বপ্ন যদি সত্যি হয়, তাহলে তোমার ঘরে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ তিন জন মানুষকে দাফন করা হবে।
এরপরে তো পর্যায়ক্রমে রাসূল (সঃ), আবু বকর (রাঃ) ও ওমর (রাঃ)কে তার ঘরে দাফন করা হয়েছে।
(আল কাওয়ায়েদুল হুসনা ফী তাবীলির রুইয়া : শায়খ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আস সাদহান। বর্ণনায় : মুস্তাদরাক হাকেম)
আয়েশা (রাঃ) বললেন : আমি স্বপ্ন দেখেছি, আকাশ থেকে তিনটি চাঁদ আমার ঘরের মধ্যে পতিত হয়েছে।
রাসূল (সঃ) বললেন: তোমার স্বপ্ন যদি সত্যি হয়, তাহলে তোমার ঘরে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ তিন জন মানুষকে দাফন করা হবে।
এরপরে তো পর্যায়ক্রমে রাসূল (সঃ), আবু বকর (রাঃ) ও ওমর (রাঃ)কে তার ঘরে দাফন করা হয়েছে।
(আল কাওয়ায়েদুল হুসনা ফী তাবীলির রুইয়া : শায়খ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আস সাদহান। বর্ণনায় : মুস্তাদরাক হাকেম)
ইরাকের শাসক হাজ্জাজ বিন ইউসূফ একদিন স্বপ্নে দেখলেন, আকাশ থেকে বেহেশতের হুর সাদৃশ দুটো দাসী অবতীর্ণ হল। একজনকে তিনি ধরতে পারলেন অন্য জন আকাশে উঠে গেল।
স্বপ্ন দেখে তিনি খুব খুশী হলেন। এর ব্যাখ্যা জানার জন্য ইমাম ইবনে সীরিন রহ.-কে ডাকলেন।
ইবনে সীরিন রহ. বললেন: এর ব্যাখ্যা হল, দুটো বিদ্রোহ (ফিতনা) সংঘটিত হবে। আপনি একটির মোকাবেলা করবেন। অন্যটিকে আপনি পাবেন না। (হয়ত আপনার পরে আসবে)
পরে দেখা গেল হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ, ইবনুল আসআছের বিদ্রোহ মোকাবেলা করলেন। আর ইবনুল মুলাহহাবের বিদ্রোহ তিনি দেখে যাননি।
স্বপ্ন দেখে তিনি খুব খুশী হলেন। এর ব্যাখ্যা জানার জন্য ইমাম ইবনে সীরিন রহ.-কে ডাকলেন।
ইবনে সীরিন রহ. বললেন: এর ব্যাখ্যা হল, দুটো বিদ্রোহ (ফিতনা) সংঘটিত হবে। আপনি একটির মোকাবেলা করবেন। অন্যটিকে আপনি পাবেন না। (হয়ত আপনার পরে আসবে)
পরে দেখা গেল হাজ্জাজ ইবনে ইউসুফ, ইবনুল আসআছের বিদ্রোহ মোকাবেলা করলেন। আর ইবনুল মুলাহহাবের বিদ্রোহ তিনি দেখে যাননি।
কিভাবে এ ব্যাখ্যা দেয়া হল? এর রহস্য কী?
এ স্বপ্নে দুটো ইঙ্গিত ছিল। প্রথমটি দাসী আর দ্বিতীয়টি হল বেহেশতের হুর।
দুটো ইঙ্গিত পরস্পর বিরোধী। কারণ, হুর হল সুরক্ষিত। কিন্তু দাসী সুরক্ষিত নয়। অপর দিকে হুরের বিষয়টি দৃশ্যমান নয়, আর দাসীর বিষয়টি দৃশ্যমান। স্বপ্ন ব্যাখ্যার নিয়ম হল, এ রকম পরস্পর বিরোধী ইঙ্গিত দেখলে বাস্তব বা দৃশ্যমান ইঙ্গিত গ্রহণ করা হবে। এ বিবেচনায় এখানে দাসী দেখার বিষয়টি গ্রহণ করা হল আর হুরের বিষয়টি গ্রহণ করা হল না।
আর দাসী হল স্ত্রী নয়, এমন মেয়ে লোক। আর মেয়ে লোক হল ফিতনা-বিশৃংখলার উপকরণ। কেননা রাসূল (সঃ) বলেছেন: আমার চলে যাওয়ার পর আমার উম্মতের উপর সবচেয়ে ক্ষতিকর ফিতনা হিসাবে মেয়েদের রেখে গেলাম।
তাই ইমাম ইবনে সীরিন রহ. এ রকম ব্যাখ্যা করেছেন।
(আল কাওয়ায়েদুল হুসনা ফী তাবীলির রুইয়া : শায়খ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আস সাদহান)
এ ব্যক্তি ইমাম জাফর সাদিকের কাছে এসে বলল, আমি একটি স্বপ্ন দেখেছি। স্বপ্নটি হল, একটি কাঁচের পেয়ালা আছে আমার। আমি তা থেকে পানাহার করি। কিন্তু তার মধ্যে একটি পিঁপড়া দেখলাম। সেও তা থেকে খাবার খায়।
এর অর্থ কী?
ইমাম সাহেব বললেন, তোমার কি স্ত্রী আছে? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, তোমার বাসায় কি কোনো পুরুষ কাজের লোক (দাস) আছে? সে বলল, হ্যাঁ আছে। তিনি বললেন, কাজের লোকটিকে বিদায় করে দাও। তাকে রাখায় তোমার কোনো কল্যাণ নেই।
লোকটি বাড়ী গিয়ে স্ত্রীকে স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যার কথা বলল। স্ত্রী বলল, এখন তোমার সিদ্ধান্ত কী?
লোকটি বলল, আমি দাসটিকে বিক্রি করে বিদায় করে দেব।
স্ত্রী বলল, যদি তাকে বিদায় করো তাহলে আমাকে তালাক দাও। লোকটি স্ত্রীকে তালাক দিল। স্ত্রী দাসটিকে কিনে নিল ও তাকে বিয়ে করল।
এর অর্থ কী?
ইমাম সাহেব বললেন, তোমার কি স্ত্রী আছে? সে বলল, হ্যাঁ। তিনি আবার জিজ্ঞেস করলেন, তোমার বাসায় কি কোনো পুরুষ কাজের লোক (দাস) আছে? সে বলল, হ্যাঁ আছে। তিনি বললেন, কাজের লোকটিকে বিদায় করে দাও। তাকে রাখায় তোমার কোনো কল্যাণ নেই।
লোকটি বাড়ী গিয়ে স্ত্রীকে স্বপ্ন ও তার ব্যাখ্যার কথা বলল। স্ত্রী বলল, এখন তোমার সিদ্ধান্ত কী?
লোকটি বলল, আমি দাসটিকে বিক্রি করে বিদায় করে দেব।
স্ত্রী বলল, যদি তাকে বিদায় করো তাহলে আমাকে তালাক দাও। লোকটি স্ত্রীকে তালাক দিল। স্ত্রী দাসটিকে কিনে নিল ও তাকে বিয়ে করল।
এ স্বপ্নের মধ্যে তিনটি বিষয়কে ইঙ্গিত হিসাবে ধরা হয়েছে। প্রথম হল, পুরুষ লোকটি। দ্বিতীয় হল, পেয়ালা। আর তৃতীয়টি হল, পিঁপড়া।
ইমাম জাফর সাদেক রহ. ব্যাখা করার আগে পুরুষ লোকটিকে জেনে নিলেন। আর এভাবেই কারো স্বপ্ন ব্যাখ্যা করার আগে তার সম্পর্কে জেনে নিতে হয়।
দ্বিতীয় ইঙ্গিত, কাঁচের পেয়ালা দ্বারা স্ত্রীকে বুঝায়। কারণ রাসূল (সঃ) নারীদের কাঁচের পাত্রের সাথে তুলনা করেছেন।
তার থেকে পানাহার করার অর্থ হল সহবাস। আর পিঁপড়া ও তার খাওয়ার অর্থ হল সে তার স্ত্রীতে অংশ গ্রহণ করে। পিঁপড়া দ্বারা দুর্বল সত্বা ও চোর বুঝায়। সে এমনভাবে খায়, কেউ দেখে না। এর মানে কাজের লোকটি পিঁপড়ার মত চুপিসারে তার স্ত্রীকে ভোগ করে।
(আল কাওয়ায়েদুল হুসনা ফী তাবীলির রুইয়া : শায়খ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আস সাদহান)
ইমাম জাফর সাদেক রহ. ব্যাখা করার আগে পুরুষ লোকটিকে জেনে নিলেন। আর এভাবেই কারো স্বপ্ন ব্যাখ্যা করার আগে তার সম্পর্কে জেনে নিতে হয়।
দ্বিতীয় ইঙ্গিত, কাঁচের পেয়ালা দ্বারা স্ত্রীকে বুঝায়। কারণ রাসূল (সঃ) নারীদের কাঁচের পাত্রের সাথে তুলনা করেছেন।
তার থেকে পানাহার করার অর্থ হল সহবাস। আর পিঁপড়া ও তার খাওয়ার অর্থ হল সে তার স্ত্রীতে অংশ গ্রহণ করে। পিঁপড়া দ্বারা দুর্বল সত্বা ও চোর বুঝায়। সে এমনভাবে খায়, কেউ দেখে না। এর মানে কাজের লোকটি পিঁপড়ার মত চুপিসারে তার স্ত্রীকে ভোগ করে।
(আল কাওয়ায়েদুল হুসনা ফী তাবীলির রুইয়া : শায়খ আব্দুল্লাহ বিন মুহাম্মাদ আস সাদহান)
স্বপ্ন নিয়ে আরও পোস্ট:
স্বপ্ন নিয়ে ধারাবাহিক প্রতিবেদনের আজ ১ম পর্ব
No comments:
Post a Comment