ক‌য়েকজন মি‌লে ক্ষুদ্র থেকে ব্যবসা শুরুর প‌রিকল্পনা

মি‌লে‌মি‌শে ক‌রি কাজ, হা‌রি জি‌তি না‌হি লাজ।। দ‌শের লা‌ঠি এ‌কের বোঝা।। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বা‌লু কণা, বিন্দু বিন্দু জল; গ‌ড়ে তো‌লে মহা‌দেশ- সাগর অতল।। একজন ক্ষুদ্র উ‌দ্যোক্তা একা একা সফলতার দেখা পান অ‌নেক প‌রে। কিন্তু ক‌য়েকজনের সম‌ন্বিত উ‌দ্যোগের সফলতা ধরা দেয় খুব তারাতা‌রি। ক‌য়েকজন মি‌লে এরকমই কিছু উ‌দ্যো‌গের কথা জানা‌বো আজ। তো আর দে‌রি না ক‌রে, আসুন ক্ষুদ্র থেকে ব্যবসা শুরু করি সবাই মিলে
মিশেঃ (১০০০০-১৫০০০টাকার মধ্যে)

উদ্দেশ্যঃ
১) বাসায় বসে যেসব ব্যবসা করা যায়, সেসব করা।
২) অল্প পুঁজির সাথে মেধার সমন্বয় ঘটিয়ে ক্রিয়েটিভ ব্যবসা করা।
৩) অবসর সময়কে কাজে লাগানো।
৪) আস্তে আস্তে নিজের ব্র্যান্ড তৈরি।
৫) ক্ষুদ্র পুঁজিকে আস্তে আস্তে বড় ব্যবসায় কাজে লাগানোর উপযোগী করা।
৬) টিমওয়ার্ক এর মাধ্যমে নিজের; তথা আর্থসামাজিক উন্নয়ন।
৭) উদ্যোমী মানুষদের নিয়ে সোস্যাল নেটওয়ার্ক তৈরি।

পরিকল্পনাঃ
১) সমগ্র ঢাকাকে কয়েকটা টিম এ ভাগ করে ব্যবসা বন্টন (যে কোন বিভাগ বা জেলা হ‌তে পা‌রে)।
২) সেন্ট্রাল পয়েন্ট থেকে পন্য সরবরাহ।
৩) একটি ইকমার্স ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেজের মাধ্যমে পন্যের প্রচার ও প্রসার।
৪) নতুন নতুন আইডিয়াকে ব্যবসায়িক লাভের ভিত্তিতে সামগ্রিক ভাবে কাজে লাগানো।
৫) সমাজের উন্নয়ন, দেশ ও মানব সেবা মুলক কাজে অংশগ্রহন।
৬) প্রত্যেককে তার নিজের ব্যবসা দাঁড়া করানোর জন্য পারস্পারিক সাহায্য।

যা যা লাগবেঃ
১) প্রচন্ড ইচ্ছা শক্তি,
২) নতুন কিছু করার ইচ্ছা,
৩) বাধা উপেক্ষা করার মন মানসিকতা,
৪) ১০০০০ টাকা মাত্র বা কম বে‌শিও হ‌তে পা‌রে (আপনার টাকা বা পন্য আপনার কাছেই থাকবে),
৫) কথা ও কাজে মিল এবং সময়ের কাজ সময়ে করা।

কি কি করা যেতে পারে
১) টি সার্ট, জিন্স, শার্ট বিক্রি ইত্যা‌দি (বাসায় বসে! সেল বাজারে যদি ৫-৫০০০০ টাকার জিনিস বাসায় বিক্রি হতে পারে তাহলে বাসায় বসে কাপড়ের ব্যবসা করা যাবে না কেন? )
২) একসময় ডিভিডির বিজনেস খুব ভাল চলত, এখন ঘরে ঘরে কম্পিউটার থাকায় ডিভিডি সেল কম হয়, তবে আমরা যদি পোর্টেবল হার্ড ড্রাইভে মুভি, নাটক, ডকুমেন্টারি ইত্যাদি রেখে সেল করি ,পার পিস হয়ত খুব কম টাকা কিন্তু ৫০-১০০ করে সেল করলে বার বার বিনা ইনভেস্ট এ ভাল টাকা আয় করা যাবে। তাছাড়া পারস্পারিক সহযোগিতার মাধ্যমে মুভি কালেকশন করা খুব একটা কঠিন কাজ না।
৩) বেশি সেল হলে নিজেরাই টি শার্ট প্রোডাকশন এ যেতে পারি।
৪) টিম বড় হয়ে গেলে বিভিন্ন ইকমার্স সাইট এর পন্য সেল করতে পারি, সরবরাহ করতে পারি।
৫) বিভিন্ন প্রফেশনালদের জন্য কাজ এনে দেয়া। যেমন কেউ ওয়েবসাইট বানাবে, আমাদের টিম এর কেউ করে দিল, তাতে আমাদের টিম মেম্বার কাজ পেল, যে কাজ দিল সেও কাজ বুঝে নিল।
৬) ল্যাপটপ, মোবাইল, ইলেক্ট্রনিক্স প্রোডাক্ট ইম্পোর্ট বা হোলসেলার থেকে কিনে সেল করতে পারি, অবশ্যই বাজার থেকে কম দামে।
৭) ইনফরমেশন সেল করে যেসব বিজনেস করা যায় সেসবও করতে পারি (কমিশন ভিত্তিক)।
৮) অ্যাকুরিয়ামে মাছ চাষসহ আরও অ‌নেক অ‌নেক কিছু।

যে ভাবে করা হবে
১) একেকজন একেক ধরনের পন্য বিশাল পরিমানে কিনবে, সে সামান্য লাভে অন্যদের কাছে সেল করবে (৫০০০০ টাকার পোষাক কেনা হল। ১০টা টিম ৫০০০ টাকা করে পন্য কিনে নিবে, লস হলে সে দায়ভার নিবে)।
২) সবার কাছেই একইরকম পন্য থাকবে (টি শার্ট বা পোশাক হলে) ওয়েবসাইট বা ফেসবুক শপ এ পন্যের দাম ও যোগাযোগ ঠিকানা দেয়া থাকবে, এরিয়া ভিত্তিক ভাবে ক্রেতা সেই এরিয়ার টিম থেকে সংগ্রহ করবে।
২) পন্য খারাপ হলে সরবরাহকারী দায়ভার নিবে।
৩) অবিক্রিত পন্য কেউ চাইলে ফেরত দিতে পারবে তবে একটা পারসেন্ট মাইনাস হবে।
৪) কমিশন ভিত্তিক কাজগুলোতে সরাসরি যে কাজ আনবে সে পাবে।
৫) সর্বোপরি বিশাল একটা নেটওয়ার্ক তৈরী করা এবং সেটাকে কাজে লাগিয়ে আয় করা।

লাভ ক্ষতি
১) ইনভেস্ট খুব কম, তাই লসের পরিমান খুবই কম হবে, তাছাড়া একজন যেহেতু সেন্টাল্ভাবে বেশি টাকা ইনভেস্ট করে পন্য সরবরাহ করবে এবং অবিক্রিত পন্য ফেরত নিবে তাই টিমের লস নেই বললেই চলে।
২) মেধা ভিত্তিক কাজ গুলোতে আর্থিক ভাবে ক্ষতি হবে না বলে আশা করি।
৩) ১০০০০ টাকার ৫০ টি শার্ট কিনে যদি ৫০ টাকা করে লাভে সেল করা হয় তাহলে মাসে ২৫০০ টাকা লাভ। মুভি যদি সেল করা যায় তাহলে ২০০০-৩০০০ টাকা বাড়তি আয় করা যাবে। আস্তে আস্তে আরো নতুন কিছু করে আয়ের পরিমান বাড়ানো যাবে ।
৪) নিজেরা যদি টি শার্ট প্রোডাকশন এ যাই তাহলে খরচ কমে লাভের পরিমান বেড়ে যাবে, যেহেতু কম কোয়ান্টিটি প্রোডাকশন করা যায় না, তাই টিম বড় হলে সহজেই সেটা করা যাবে।

প্রচার ও প্রসার
১) যেহেতু আমাদের ইনভেস্ট কম। তাই মুখে মুখে আর ফেসবুকই আমাদের ভরসা।
২) একটা পেজে সবাই অ্যাডমিন হিসেবে থাকা এবং সবাই মিলে একসাথে প্রচার করা।
৩) দেয়াল লিখন ও পোস্টারিং ।
৪) ভার্সিটি গুলোতে প্রদর্শন (টি শার্ট বা পোশাক ) ।
৫) অনলাইনে বিজ্ঞাপন (পরিচিত ভাই ব্রাদারের ওয়েবসাইটে ফ্রিতে অ্যাড দেয়া )।
৬) ফেসবুক পেজে সপ করা এবং সেখানে বিভিন্ন লোকেশনে থাকা টিম এর নাম্বার দেয়া।

ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা
১) টি শার্ট এর প্রোডাকশন হাউজ দেয়া।
২) প্রত্যেক টিম এর একটি শো রুম নেয়া।
৩) প্রফেসনাল টিম তৈরী।
৪) আইটি উদ্দ্যোক্তা তৈরী করা।
৫) শেয়ার অফিস নেয়া।

আরো আরো আইডিয়া আসবে ………………………….
এটা এমএলএম বা এমন কোন ব্যবসা হবে না, যাতে শুধু আমি লাভবান হব, যার যার ব্যবসা সেই করবে, টাকাও তার পন্যও তার, কিন্তু সবাই মিলে আইডিয়া শেয়ার করে ব্যবসাটা দাঁড় করাবে। এমন অনেক ব্যবসা আছে যা অল্প পুঁজি নিয়ে করতে গেলে খরচ অনেক বেশি পরবে কিন্তু সবাই মিলে করলে অতটা সমস্যা হবে না। ধরুন টি শার্ট আপনি ২০ টা কিনতে গেলে দাম নিবে ১৫০-২০০ টাকা ক‌রে কিন্তু যদি ৫০০ পিস নেন তাহলে দাম কম পরবে, লাভটাও বেশি হবে। কেউ ল্যাপটপ কিনবে। টিম এর কারও এই বিজনেসটা আছে, তাহলে একজন পেল ক্রেতা, আরেক জন পেল পরিচিত মানুষের কাছে কম দামে পন্য, তাছাড়া এমন অনেক সার্ভিস আছে আমরা আমাদের মধ্য থেকেই করে নিতে পারব, বাইরে যেতে হবে না। পরস্পরকে ইনফরমেশন দিয়ে সাহায্য করা যাবে। যেহেতু কারো টাকা কারো কাছে থাকবে না তাই প্রতারিত হবার ভয় নেই, কাজটা হবে অনেকটা সমবায় ভিত্তিক কিন্তু কারো কাছে কারো টাকা বা পন্য থাকবে না যাতে কেউ কারো টাকা মেরে দেয়ার সুযোগ থাকে, তাছাড়া আমরা চাচ্ছিনা অসৎ লোক আমাদের মাঝে এসে সুন্দর পরিকল্পনা নস্ট করে দেয়। কারো সাথে যদি রিলেশন খুব ভাল হয়ে যায় তারা নিজেদের দায়িত্তে অংশীদারি ব্যবসা করবে সেটা তাদের বিষয়। আশা করি বুঝাতে পেরেছি।
© Somewhereinblog

No comments:

Post a Comment