জঙ্গি জন্ম নেয় না, সৃষ্টি করা হয়

দক্ষিণ ও মধ্য এশিয়াবিষয়ক মার্কিন সহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী নিশা দেসাই বিশওয়াল দুই দিনের ঢাকা সফরে এসে ভর ও ভার কেন্দ্রগুলোর পালস রেট বুঝতে চেষ্টা করেছেন। ভারতের রাষ্ট্রদূতের সাথে তার ১ ঘণ্টার মতবিনিময় তাৎপর্যহীন নয়। তবে যারা বিশ্বরাজনীতিতে মার্কিননীতির ব্যাপারে খোঁজখবর রাখেন, তারা নিশা দেসাইর সফর নিয়ে বাড়তি আবেগ দেখাতে যাবেন না। আরো যারা ইরাক যুদ্ধের খতিয়ান জানেন, আফগান যুদ্ধের দলিল ও বায়া দলিল দেখেছেন, তারা মধ্যপ্রাচ্যে বানরের পিঠা ভাগের কাণ্ডকীর্তি সম্পর্কেও জ্ঞাত। ‘ওরা সর্প হয়ে দংশন করে, ওঝা হয়ে ঝাড়ফুঁক দেয়।’ আমাদের গণতন্ত্র ও নির্বাচন হলো কি হলো না, সরকার নির্বাচিত কি নির্বাচিত নয়, তা নিয়ে পশ্চিমাদের বক্তব্য গতানুগতিক। সে তুলনায়
ভারতের ভূমিকা স্পষ্ট। ভারত তাদের জাতীয় স্বার্থে পড়শির ভিটায় ঘু ঘু চরল কি না তা ভাবতে চায় না, তারা নিজেদের সামগ্রিক স্বার্থে অবস্থান নেয়। সে ক্ষেত্রে শত্রুর শত্রু বন্ধু, উত্তরে বললে দক্ষিণে যাবার নীতিতে ভারতের অবস্থান দৃষ্টিগ্রাহ্য।

সন্ত্রাস এ শতাব্দীর যুদ্ধ ইস্যু, পণ্য ও উপকরণ। এর গুরুত্ব পশ্চিমাদের মতো ভারতের কাছেও রয়েছে। সব বেআইনি ও অনৈতিক যুদ্ধে শক্তিধররা সন্ত্রাসকে পুঁজি করে মানুষ মেরেছে। স্বাধীন দেশের সার্বভৌমত্ব খেয়েছে। দেশ দখল করে বাণিজ্য লুটেছে। তেল হাতিয়েছে; প্রাকৃতিক সম্পদ দখলে নিয়েছে। আফগান, ইরাক, লিবিয়া ও সিরিয়া যুদ্ধের পর এই উপমহাদেশে বাংলাদেশ যদি টার্গেট হয়ে আঞ্চলিক ও বিশ্বরাজনীতিকে নতুন সবক দেয়ার গরজ সৃষ্টি হয়, সে ক্ষেত্রে নিশা দেসাই ও সুষমা স্বরাজ যে আপাতত এক পক্ষে খেলবেন, সেটা বোঝার জন্য সাধারণ জ্ঞানই যথেষ্ট। এই ঋজু মূল্যায়ন মাথায় রেখেই আমাদের সামগ্রিক রাজনীতি এবং সন্ত্রাসের নামে ভূতের বাপের বাসা বদল নিয়ে চিন্তা করা শ্রেয়। জনগণ টের পেলো না, কিন্তু তাদের চোখের সামনেই সন্ত্রাস, জঙ্গিপনা ও চরমপন্থী তৎপরতার ধরন ও প্রকৃতি পাল্টে গেল। সন্ত্রাসীরা মাতৃভূমিকে অভয়ারণ্য ভেবে বসল। শাসক ও রাষ্ট্রশক্তির মধ্যে ফারাক না বুঝেই রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে ‘যুদ্ধে’ নেমে পড়ল। দেশটা মৃত্যু উপত্যকার মুখোমুখি এসে দাঁড়াল। এরিখ মাগোলিস অনেক আগেই বলে রেখেছেন- অত্যাচার, অনাচার, অবিচার, শোষণ, বঞ্চনা, অধিকার হরণ, জুলুম-নির্যাতন-নিপীড়ন, ছদ্মবেশী আগ্রাসন ও দুঃশাসনের পেট থেকেই সন্ত্রাসের জন্ম নেয়। মত প্রকাশের স্বাভাবিক গতি রুদ্ধ হলে চরমপন্থীর উদ্ভব ঘটে। এই বাস্তবতায় বাংলাদেশকে বুঝতে চেষ্টা করলে দ্রুত জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের যবনিকা ঘটবে।

রাজনীতিবিদদের আচরণও আগের মতো নেই। রাজনৈতিক সঙ্কট ও সামাজিক অস্থিরতার উদর থেকে জন্ম নেয়া অনেক অসঙ্গতি এখন আর কারো দৃষ্টি এড়ায় না। এ অসহনীয় অবস্থায় পৌঁছতে এক দশকের বেশি সময় লাগেনি। ক্রসফায়ার ও বন্দুকযুদ্ধের নামে বিচারবহির্ভূত হত্যার আদলে রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের সাথে যোগ হয়েছে অচেনা সন্ত্রাসের নৈরাজ্য। কুপিয়ে হত্যা আর টার্গেট কিলিং মিশন যেন চক্রবৃদ্ধি হারে বেড়ে চলেছে। এখন নিরাপদ নেই বিদেশী, এমনকি পুলিশবাহিনীর সদস্যরাও। এখনো আমরা উপসর্গকে রোগ বলছি, রোগকে রাজনৈতিক প্রলেপ দিয়ে উপশমের সান্ত্বনা খুঁজছি, সেই সাথে ব্লেম গেইম চলছে সমানতালে। সন্ত্রাসের উৎস ও আসল কারণ চিহ্নিত করছি না।
এতটা ভয়াবহ না হলেও আদালতে একসাথে বোমা হামলা, শায়খ আবদুর রহমান- বাঙলা ভাই বিড়ম্বনা, নামে-বেনামে অচেনা সন্ত্রাস শুরু হয়েছিল জোট সরকারের মধুচন্দ্রিমার পরপরই। প্রথমে ‘মিডিয়ার সৃষ্টি’ বললেও জোট সরকার সাফল্যের সাথে পরিস্থিতি মোকাবেলা করেছিল। চরমপন্থী উৎপাত ঠেকাতে সরকার আলেম-ওলামা ও ইমাম সমাজকে আস্থায় নিয়ে সাহায্য নিয়েছিল। সাফল্য পেয়েছিল আশাতীত এবং সুফল পেয়েছিল তাৎক্ষণিক। এই সরকার ধর্মের নামে উদ্ভূত সন্ত্রাস দমন করতে চায়। কিন্তু বন্ধ করছে পিস টিভি, নজরদারি করবে মসজিদের জুমার বয়ানের। মূল ধারার আলেমদের অবজ্ঞা ও কোণঠাসা করে ক’জন দরবারি দিয়ে ইসলাম ব্যাখ্যা করাচ্ছে। বুঝি না, এটা তামাশা না আইওয়াশ।

এখন হত্যাকাণ্ডগুলো ঘটার পর জনগণ জানার আগেই বিভিন্ন নামে দায় স্বীকার কি কোনো বিশেষ অর্থ বহন করে না? সন্দেহভাজনদের গ্রেফতার করে ক্রসফায়ারে লাশ বানিয়ে দেয়া হচ্ছে। কোনো আলামত কেন রাখা হচ্ছে না? এ প্রশ্ন সবার মনে। তাৎক্ষণিকভাবে সরকার অভিযোগ করছে বিএনপি, জামায়াত ও অচেনা সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে। সন্ত্রাসের অন্য নাম হয় না। সন্ত্রাস- সন্ত্রাসই। তা জেএমবি নামে হোক, আর আইএস কিংবা বোকো হারামের নামেই হোক, এর দেশ নেই; ধর্ম নেই। তবে মিথ্যা অভিযোগ ও ব্লেম গেইম সন্ত্রাস কমায় না, উসকে দেয়। আসল দোষীদের আড়াল করে। ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতিশোধস্পৃহা হতে উৎসাহিত করে। বিপদ যায় না, আরো বেশি মাত্রায় ঘাড়ে চেপে বসে।
সরকারকে কেউ আস্থায় নিচ্ছে না। না জনগণ, না বিদেশীরা। বিদেশী বন্ধুদের ভাষায় ‘বৈশ্বিক সন্ত্রাসবাদের’ অংশ হিসেবে খুনখারাবি হচ্ছে। সরকার বলছে, বৈশ্বিক নয়, যা ঘটছে তার নাটের গুরু বিএনপি-জামায়াত কিংবা দেশজ চরমপন্থীরা। এদের সাথে বাইরের সংযোগ থাকতে পারে। সরকারের মন্ত্রী বলছেন, পুলিশের মনোবল ভেঙে দেয়ার জন্য পুলিশ পরিবারের সদস্যদের ওপর প্রতিশোধ নিচ্ছে বিদেশী এজেন্টের সাহায্যে দেশের শত্রুরা। এ দিকে পুলিশও সরকারের মুখপাত্র হয়ে গেছে। কী তাজ্জব ব্যাপার! খুনখারাবি নিয়ে এ ধরনের ব্লেম গেইম কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয়।

প্রথম দিকে খুন হলেন ক’জন কথিত পীর, টিভির ধর্মীয় অনুষ্ঠানের উপস্থাপক, ধর্ম নিয়ে নাড়াচাড়া করেন এমন কিছু মানুষ। দ্রুত সে ধারা নাস্তিক অভিহিত করে ব্লগার হত্যার দিকে ধাবিত হলো। অল্প ক’দিনের মধ্যেই খুন হলেন বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী কিছু সাধারণ মানুষ। এদের কেউ ভ্যানচালক, কেউ সাধারণ সেলুন মালিক, কেউ বা নিম্নবিত্তের দোকানি কিংবা সাধারণ সেবায়েত বা পুরোহিত। এ ধরনের ঘটনা এ দেশে এর আগে কখনো ঘটেনি। এর সাথে এবার গুলশান ট্র্যাজেডি জাতির পিলে চমকে দিয়েছে। গুলশান ও কিশোরগঞ্জ জানান দিলো, সন্ত্রাসযুদ্ধের পক্ষ শুধু সরকার নয়, আরো আছে।

টার্গেট কিলিং বলে প্রশাসন বলে দিচ্ছে ঘরে ঘরে পুলিশ পাহারা বসানো সম্ভব নয়। তাহলে রাষ্ট্র কি অসহায়? কওমি মাদরাসাকে জঙ্গি প্রজননকেন্দ্র বলে, আলেম-ওলামার লেবাসকে কটাক্ষ করে সরকার কী অর্জন করল? এখন প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয় ও ইংরেজি মাধ্যম স্কুলকে টার্গেট করেই বা কী অর্জন করবে? দুর্বৃত্তদের নিয়ন্ত্রণ করতে সরকার কি অপারগ? এখন পর্যন্ত কোনো হত্যাকাণ্ডের বিশ্বাসযোগ্য তদন্ত হয়নি। দোষী সাব্যস্ত হয়নি। প্রতিটি খুনের পর ঘুরেফিরে জঙ্গি সাজিয়ে কিছু চেনা মুখ টিভির সামনে উপস্থাপন করা হয়। খুনের দায়ও স্বীকার করানো হয়। শেষটা জনগণ আর জানতে পারে না। তা ছাড়া এখানে-সেখানে বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ঘটিয়ে বিশ্বাস-অযোগ্য বক্তব্য দিয়ে হত্যার মিছিল দীর্ঘতর করা হচ্ছে। সব কিছু দেখে মনে হয়, জনগণের ধৈর্য এবং নিরাপত্তাঝুঁকি নিয়ে সবাই এসিড টেস্ট করছে। দেশের সার্বভৌমত্ব নিয়ে টম-জেরির মতো খেলছে।

যেসব লোককে নৃশংসভাবে হত্যা করে চাঞ্চল্য সৃষ্টি করা হচ্ছে, তারা অবশ্যই রক্তমাংসের মানুষ। তাদের রক্তের মূল্য কারো চেয়ে কম নয়। তবে তারা এমন খ্যাতিমান কেউ নন- যাদের খুন হওয়ার পর জাতি বিগড়ে গিয়ে রাজপথে নামবে। তাহলে সরকারের কর্তৃত্ববাদকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য কোনো চক্র এ ধরনের মারণ খেলায় মেতে উঠেছে কি না সেটা ভেবে দেখা হচ্ছে না কেন? ভূরাজনীতির গিনিপিগ হিসেবে ষোল কোটি মানুষের এই জনপদটি এখন শকুনের দৃষ্টিতে পড়েনি তো! ‘ব্যর্থ রাষ্ট্র’ বানিয়ে দেয়ার নীলনকশা বাস্তবায়ন হয়ে যাচ্ছে না তো? সাধারণভাবে কোনো সন্ত্রাসই রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা, তৃতীয় কোনো পক্ষ কিংবা সরকারের প্রশ্রয় ছাড়া দিনের পর দিন চলতে পারে না। রাষ্ট্র যদি জড়িত না থাকে, তাহলে এমন কোন শক্তি নেপথ্যে বসে কলকাঠি নাড়ছে, যাদের আমরা চিনি, কিন্তু অচেনা ভাব দেখাই। হত্যা ও গুমের এই মিছিল টার্গেটলেস মনে করার কোনো কারণ নেই। তবে গুমের যে কাহিনী, তার সাথে রাজনীতি ও সরকারের যে হাত ছিল, সেটা আজ আর বিশ্বাস-অবিশ্বাসের পর্যায়ে নেই। ঘরপালানো কিছু দিকভ্রান্ত তরুণের অবস্থানকে সরকার গুমের অভিযোগ খণ্ডানোর ঢাল বানানোর ব্যর্থ চেষ্টা করছে। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুলিশের গুলিতে নিহতের সংখ্যা অতীতের সব রেকর্ড ছাড়িয়েছে। এবার ইউপি নির্বাচনের খেসারতও এক শ’ ত্রিশ অতিক্রম করেছে। এসব মৃত্যু অসহনীয়, ধারণাতীত। তারপরও জাতি সান্ত্বনা পেত যদি অর্জনের একটা হিসাব মেলানো যেত। এখন বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডের শিকার মানুষদের হাড়গোড় আর রক্তমাংস যেন প্রতিশোধ নিতে উদ্যত। জানি না, এমন হঠকারীরাও মানুষ হতে পারে।

এক সময় মাদরাসা-মক্তব থেকে মসজিদ কমিটিকে পর্যন্ত কোণঠাসা করা হলো। এখন ইংরেজি মাধ্যমকে টার্গেট করা হচ্ছে। সরকার আরো কঠোর হতে চায়। এর মানে বোধগম্য নয়। যেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের গুণধর শিক্ষক টকশোতে সরকারকে প্রেসক্রিপশন বাতলে দিচ্ছেন, তারা বরং সন্ত্রাসকে ছড়িয়ে দিতে উসকানি দিচ্ছেন। ভারতীয় লেখক সব্যসাচীরা পেট্রো ডলারের ভেল্কিটা দেখছেন বাংলাদেশের বেলায়। অথচ মধ্যপ্রাচ্যের ক্রিম খাচ্ছে ভারতীয়রা। সেই শুমারি কি সব্যসাচীরা জানেন না? এই প্রেসক্রিপশন ভুল। এতে আস্থার সঙ্কট আরো বাড়বে। নির্দোষ মানুষকেও ক্ষেপিয়ে তোলা হবে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধে জনগণ, আলেম-ওলামা ও ইমামদের সম্পৃক্ত করতে হবে। হেফাজতের ওপর সরকারের নিষ্ঠুরতার কৈফিয়ত না দিলেও সরকারের অবস্থান পরিবর্তন করে প্রমাণ করতে হবে, সরকার আলেম-ওলামা ও ইসলামের বিরুদ্ধে নয়। সন্ত্রাস আর ইসলাম এক নয়। একইভাবে সংলাপ-সমঝোতার পথে সুস্থ ও গঠনমূলক গণতন্ত্রচর্চার সড়কে উঠতেই হবে। সবাইকে এতটা স্পেস দিতে হবে যাতে ক্ষোভ প্রকাশ করতে পারে। এতটা সুযোগ দিতে হবে, যতটা গণতন্ত্র অনুমোদন করে।

সব ব্লেম গেইমের পরও বেগম খালেদা জিয়া ঐক্যের পথে সরকারকে সহযোগিতা করতে চান, আপনারাও হাত বাড়ান। সরকার একটা মিথ তৈরি করতে চেয়েছিল- ‘তারা যা ইচ্ছে তাই করতে পারে। সংবিধান, গণতন্ত্র, আইনকানুন, বিচার-আচার সব একসাথে নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।’ না, সরকার ইচ্ছে করলেই জনগণকে আস্থায় না নিয়ে সব সময় সব কিছু করতে পারে না। নিয়তিবাদী না হলেও এই শিক্ষা ইতিহাসের। একটা স্বল্প সময় কর্তৃত্বপরায়ণ হয়ে টিকে থাকা যায়, কিন্তু সেটা চিরস্থায়ী করা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের বর্তমান পরিস্থিতি বৈশ্বিক, আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক রাজনীতিমুক্ত নয়। জাকির নায়েকের মতো একজন পরমতসহিষ্ণু মধ্যপন্থী ধর্মপ্রচারক এবং আন্তঃধর্ম সংলাপের উদ্যোক্তাকে আক্রমণের টার্গেট বানানোর পর যারা বগল বাজাচ্ছেন, তাদের জন্য কোনো সুখ সংবাদ অপেক্ষা করার কথা নয়। কারণ জনগণ ও তারুণ্য বার্তাটা নিচ্ছে এভাবে ভারতের সহযোগিতায় আসলেই ইসলাম আক্রান্ত, মুসলিম জাতি মুশরিক, ইহুদি-নাসারা ও তাদের বশংবদদের টার্গেট হয়ে গেছে। মোদি সরকার ও উগ্রপন্থী শিবসেনা আলাদা নেই। হিন্দুত্ববাদের দায় বাংলাদেশ কেন নেবে? ভারতীয় মুসলিম সমাজ নিরাপদ না থাকলে এর দায় বাংলাদেশের জনগণ নেবে কি নেবে না, সেটা এখন প্রাসঙ্গিক। কারণ, সরকার ভারতের সাথে রাষ্ট্রাচারের বাইরেও জড়িয়ে গেছে। আফগানিস্তানে যা ঘটেছে, ইরাকে তারই প্রতিফলন ঘটানো হয়েছে। লিবিয়া-সিরিয়া কেন, মুসলিম রাষ্ট্রগুলো ও উম্মাহর সদস্যরা কোথাও নিরাপদ নয়। এ ধরনের সরল সমীকরণ তারুণ্যের ভেতর দ্রোহের জন্ম নিচ্ছে। দ্রোহের ভাষায় সংযম এবং আইনের ও নীতিকথার ব্যাকরণ অর্থহীন। অথচ তারা ভেবেও দেখছে না, কোনো ভালো কাজ খারাপ পদ্ধতিতে হয় না। হঠকারিতা জিহাদ হতে পারে না। বিনা বিচারে ধর্মের নামে মানুষ হত্যাও বৈধতা পেতে পারে না। তাই যেকোনো ধরনের সন্ত্রাস দমনে অন্যদের প্রেসক্রিপশন নয়, ধার্মিক মানুষদের আস্থায় নিন। সন্ত্রাসী ও জঙ্গিবাদী জন্ম নেয় না, শাসক-শোষকেরা এদের সৃষ্টি করে। বুশ-ব্লেয়ার একমাত্র উপমা নয়, দেশে দেশে এর উপমা অজস্র।

© DailyNayaDiganta
Written by @ মাসুদ মজুমদার > masud2151@gmail.com

No comments:

Post a Comment