স্মার্টফোন ব্যবহারকারীদের মধ্যে ছবি সম্পাদনার অ্যাপ প্রিজমা নিয়ে মাতামাতি বেড়েই চলেছে৷ কারণ এই অ্যাপের রয়েছে নিজস্ব বুদ্ধিমত্তা, যা একে এই ধরণের বাকি সব অ্যাপ থেকে আলাদা করেছে।
স্মার্টফোন আর সামাজিক যোগাযোগের এই স্বর্ণযুগে ছবি তোলা আর শেয়ার করা সবার হাতের মুঠোয়। নতুন সব সার্ভিস আর অ্যাপ আসছে প্রতিনিয়ত, কিন্তু সাড়া ফেলতে পারছে কয়টি? স্ন্যাপচ্যাট আর ইনস্টাগ্রামের পর বহুদিন কেউ মাথা তুলে দাঁড়াতে পারেনি সেভাবে, কিন্তু গত মাসে প্রিজমা চালু হওয়ার পর থেকেই ঝড় তুলছে৷
রাশিয়া ও তার আশেপাশের দেশগুলোতে শুরুতে জনপ্রিয় হলেও খুব দ্রুত সেই হওয়া এসে লেগেছে বাংলাদেশ আর ভারতে৷ সাধারণ মানুষের পাশাপাশি তারকারাও কাঁপছেন এই প্রিজমা জ্বরে৷ বলিউডের
বড় বড় তারকা থেকে শুরু করে বাংলাদেশের জনপ্রিয় টিভি অভিনেতা, কে নেই সেই দলে!
সবাই মেতেছেন নিজেদের তোলা ছবি আর সেলফিকে শিল্পকর্মের রূপ দিতে৷ আসলে সেই প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে প্রিজমা- ক্যামেরায় তোলা ছবিকে ‘শিল্পকর্মে' রূপ দিচ্ছে অ্যাপটি।
যে-কোনো ছবিকে তারা দুর্দান্তভাবে বদলে দিচ্ছে বিশ্বখ্যাত শিল্পীদের আঁকা ছবির আদলে, অথবা ডিসি কমিকসের মতো কার্টুনের স্টাইলে৷
গত জুনে অ্যাপলের আইটিউনস স্টোরে প্রথম আসার পর এখন পর্যন্ত দেড় কোটির বেশিবার ডাউনলোড হয়েছে অ্যাপটি৷ বিপুল জনপ্রিয়তার কারণে অ্যান্ড্রয়েড ফোনের জন্য গুগল প্লে স্টোরে অ্যাপটি আসে ২৪শে জুলাই, এবং সপ্তাহ ঘোরার আগেই ২০ লক্ষ বারের বেশি ডাউনলোড হয়েছে অ্যাপটি।
তবে শুধুমাত্র সেলফিতেই সীমাবদ্ধ নেই প্রিজমার তেলেসমাতি -- যে-কোনো ছবিতেই ফলাফল পাওয়া যাচ্ছে চমৎকার৷
এদিকে, সম্প্রতি প্রিজমা ঘোষণা দিয়েছে যে, তারা ভিডিও আর ভার্চুয়াল রিয়েলিটিতেও শিগগিরই আসছে৷ কেন এই উন্মাদনা? নিশ্চয়ই এমন কিছু করছে প্রিজমা যা আগে কেউ করেনি৷
রাশিয়ান প্রোগ্রামার আলেক্সেই মইসেনকভের তৈরি করা এই অ্যাপ আর দশটা ফিল্টার অ্যাপের মতো ছবির ওপরে একটা নির্ধারিত ফিল্টার সেঁটে দেয় না৷ ছবিটা প্রথমে আপলোড হয় প্রিজমার সার্ভারে, এবং সেখানে নিউরাল নেটওয়ার্ক ও আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ব্যবহার করে ব্যবহারকারীর পছন্দ করা স্টাইল অনুযায়ী ছবিটিকে আঁকা হয় নতুন করে৷
অর্থাৎ, একজন শিল্পী ছবিটিকে দেখলে যেভাবে তার নিজের শৈল্পিক দৃষ্টিতে তাকে আঁকতেন, প্রত্যেকটি ‘ফিল্টার' তেমন একজন শিল্পীর ভূমিকায় কাজ করে থাকে এবং সে কারণেই অন্য অ্যাপের তুলনায় প্রিজমায় ফিল্টারটি বসতে কিছুটা সময় নিয়ে থাকে৷
অ্যাপটি নিউরাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে থাকে। অর্থাৎ যত বেশি ছবি আপলোড হবে এর সার্ভারে, ততই আরো পরিপক্ক আর নিখুঁত হয়ে উঠবে তার কাজ৷
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই নিয়ে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জগতের রয়েছে অপার আগ্রহ, কারণ একেই ধরা হচ্ছে প্রযুক্তির ভবিষ্যৎ৷
শুধুমাত্র স্মার্টফোনের প্রসেসিং শক্তি আর নিউরাল নেটওয়ার্ক ব্যবহার করে এতো দারুণ একটি কাজ অবশ্যই সেই ভবিষ্যতের দিকে এক প্রত্যয়ী পদক্ষেপ।
© RTNN
No comments:
Post a Comment