চট্টগ্রামের খৈয়াছড়া ঝর্ণায় মুগ্ধ পর্যটকরা

দূর থেকে শোনা যায় পাহাড়ীয়া ঝর্ণার নুপুরধ্বনি। সবুজ শ্যামল ঘেরা প্রকৃতি দেখলে মনটা ভরে যায়। সৃষ্টি কর্তার অপরূপ সৃষ্টির নির্দশন খৈয়াছড়া ঝর্ণা। আট স্তর বিশিষ্ট এই ঝর্ণা প্রবাহ দেখতে প্রতিদিন দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে ছুটে আসে শত শত পর্যটক।
এখানে গা ভিজিয়ে মানুষ যান্ত্রিক জীবনের অবসাদ ধুয়ে যেন সজীব করে নিজেদের। চট্টগ্রামের মিরসরাই উপজেলার এই খৈয়াছড়া ঝর্ণা এখন অগণিত পর্যটকের প্রধান আকর্ষণ। শুধু খৈয়াছরা নয় আশেপাশের আরো কয়েকটি ঝর্ণায় দর্শনার্থীরা এখন ঘুরে বেড়ায় মনের আনন্দে।

পাহাড়ের সবুজ রঙ আর ঝর্ণার স্বচ্ছ জল মিশে মিশে একাকার হয়েছে প্রাকৃতিক জলপ্রপাত খৈয়াছরা ঝর্ণায়। প্রকৃতির নান্দনিক তুলিতে আঁকা এ ছবি দেখে মুগ্ধ হচ্ছে ভ্রমণ
পিয়াসী মানুষ।
যারা একবার খৈয়াছড়া ঝর্ণা দেখেছেন তাদের মনে একটিই প্রশ্ন উঁকি দেয় বারবার ‘দেশে এমন সৌন্দর্যের ঝর্ণা দ্বিতীয়টি আর আছে কিনা’।
খৈয়াছড়া এলাকার পাহাড়ে অবস্থান বলে এর নামকরণ করা হয়েছে খৈয়াড়রা ঝর্ণা। আর এই ঝর্ণা দেখতে এসে মুগ্ধ হচ্ছে দেশ বিদেশের পর্যটকরা। তারা অবাক হচ্ছেন এই ভেবে, এখানকার পাহাড়ী অরণ্যে এতোকাল কিভাবে লুকিয়ে ছিল এমন নান্দনিক অপরূপ সুন্দর ঝর্ণা?
এখানে আসা অনেক পর্যটকের মতে, ‘দেশের মাধবকুণ্ড ও শুভলং ঝর্ণার থেকেও বেশি অপরূপ এই খৈয়াছড়া ঝর্ণা।’
চট্টগ্রা‌মের মিরসরাই, খৈয়াছড়া ইউনিয়নের বড়তাকিয়া বাজারের উত্তর পার্শ্বে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের ৪.২ কিলোমিটার পূর্বে ঝর্ণার অবস্থান। এর মধ্যে এক কিলোমিটার পথ গাড়িতে যাওয়ার পর বাকী পথ যেতে হবে পায়ে হেঁটে। বাঁশের সাঁকো, ধানক্ষেত, আঁকা-বাঁকা পাহাড়ী পথ, ছরা এবং চারটি পাহাড় পেরিয়ে যেতে হবে প্রকৃতির এই বিস্ময় সান্নিধ্যে।
খৈয়াছড়া ঝর্ণার মোট আটটি ধাপ। বেশিরভাগ পর্যটক প্রথম ধাপের সৌন্দর্য্য দেখেই মাতোয়ারা। পাহাড়ের উঁচুতে হওয়ায় বাকী ধাপগুলোতে যাওয়া কিছুটা কষ্টকর বলে অনেকেই ঝর্ণার প্রথম ধাপের সৌন্দর্য্য দেখেই ফিরে আসেন।
অনেক প্রশস্ত জায়গা জুড়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে শেষ ধাপে। ঝর্ণার শেষ ধাপ পর্যন্ত যারা আসবেন তারা বাংলাদেশের সেরা কোন প্রাকৃতিক ঝর্ণা উপভোগ করবেন নিঃসন্দেহে।
খৈয়াছরা ঝর্ণাকে ঘিরে স্থানীয় স্কুল পড়ুয়া কিছু শিক্ষার্থী এবং এলাকার বেকার যুবকরা গাইড হিসেবে কাজ করছেন। পর্যটকদের ঝর্ণায় নিয়ে যাওয়া-আসায় সহায়তা করছেন তারা। এজন্য পর্যটক ভেদে প্রতিবার ৫০০-৭০০ টাকা পর্যন্ত আয় হয় তাদের। প্রতি শুক্রবার পর্যটকের ভীড় বেশি থাকে। তাই তারা গাইড হিসেবে কাজ করে।
মিরসরাই খৈয়াছড়া ঝর্ণার নিরাপত্তা, যোগাযোগ ও আবাসন ব্যবস্থা খুব নাজুক। এখা‌নে ভা‌লোমা‌নের হো‌টেল, মো‌টেল, খাবা‌রের ব্যবস্থাও অপ্রতুল।
এদিকে কিছু বিষয়ে সতর্ক না থাকায় অনেক সময়ই ঘটে যাচ্ছে দুর্ঘটনা। দর্শনার্থীদের অসতর্কতার জন্য ইতোমধ্যে ঘটে গেছে বেশ কয়েকটি দুর্ঘটনা। তাই নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সহ বেশ কিছু বিষয়ে সতর্ক থাকার পরামর্শ দেন মিরসরাই উপজেলা ও থানা প্রশাসন।
গহীন জঙ্গল হওয়ায় এখা‌নে একা ঘুরে বেড়া‌নো বা অসতর্কতার কার‌ণে বি‌ভিন্ন অনাকা‌ঙ্খিত ঘটনা ঘ‌টে থা‌কে। এমন ঘটনায় গত এক বছরে অন্তত ১০ জন হতাহত হয়েছেন। আবার নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছাড়া খেয়ালখুশি মতো গহীন জঙ্গল সহ বিভিন্ন ঝুঁকিপূর্ণ স্থানে এলোমেলোভাবে বেড়াতে গিয়ে কিংবা অসামা‌জিক কার্যকলাপ কর‌তে গি‌য়ে ছিনতাইয়ের কবলে পড়ছে অনেকে। এর জন্য অনেকেই দর্শনার্থীদর দায়িত্বহীনতা ও অসংযত আচরণকে দায়ী করে‌ছেন।

^
^
মিরসরাই, খৈয়াছড়া পর্যটন স্পট, @ভ্রমন, মিরসরাই, খৈয়াছড়া ঝর্ণায় মুগ্ধ পর্যটকরা, travel,  খৈয়াছড়া পাহা‌ড়ি ঝর্ণা, মিরসরাই চট্টগ্রাম । tour, খৈয়াছড়া ঝর্ণার প্রাকৃ‌তিক সৌন্দর্য মুগ্ধ পর্যটকরা. মিরসরাই, চট্টগ্রাম পাহাড়ী ঝর্ণা, picnic spot bd, বাংলা‌দে‌শের সেরা পর্যটন স্পট,

No comments:

Post a Comment