গান প্রকাশ এবং এ থেকে আয়ের অন্যতম উৎস এখন ইউটিউব। ইউটিউব থেকে আয় এবং এর নানা দিক নিয়ে কথা বলেছেন মাল্টি চ্যানেল নেটওয়ার্ক (এমসিএন) প্রতিষ্ঠান ‘কাইনেটিক’-এর ক্লায়েন্ট সার্ভিস ডিরেক্টর জুয়েল মোর্শেদ। শুনেছেন রবিউল ইসলাম জীবন।
যেভাবে যুক্ত
২০১৩ সালে শিরোনামহীন ব্যান্ডের জিয়া ভাইয়ের কাছ থেকে কাইনেটিকের মাধ্যমে ইউটিউব থেকে আয়ের বিষয়টি প্রথম জানতে পারি। তাঁর মাধ্যমেই কাইনেটিকের কো-ফাউন্ডার শারাফ নাযার এবং পিআর ডিরেক্টর জামশেদের সঙ্গে পরিচয়।
আমার কিছু গান নিয়ে তারা কাজ করে। যখন দেখলাম ভালো আয় আসছে, তখন বিষয়টি বিভিন্ন শিল্পী ও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে শেয়ার করি। একপর্যায়ে নাফিসের উত্সাহে কাইনেটিক নেটওয়ার্কে যোগদান করি।
ইউটিউব আয়
শিল্পী কিংবা প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান, যিনি গানটির আইনসিদ্ধ মালিক তিনিই মূলত ইউটিউবের আয় ভোগ করে থাকেন। এটা নির্ভর করে তাঁদের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তির ওপর। একটি গানে কী পরিমাণ আয় হয় তা ইউটিউবের ড্যাশবোর্ডে সরাসরি দেখা যায়। এই ড্যাশবোর্ড গুগলের দেওয়া। সেখান থেকে একটি গানের আয়ের সব হিসাব পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে দেখা যায়। অনেক বিষয়ের ওপর ইউটিউবের আয় নির্ভর করে।
কত ভিউ, কত মিনিট দেখা হলো, কোন কোন দেশ থেকে দেখা হলো, কত দামের অ্যাড বসল—সবই সেখানে দেখা যায়। ইউটিউবের প্রধান আয়টা আসে অ্যাংগেজমেন্ট থেকে। কতজন মানুষ একটি ভিডিও দেখল, কতজন শেয়ার দিল, কতজন কমেন্ট করল, কতজন লাইক-ডিজলাইক দিল—সব কিছু মিলেই অ্যাংগেজমেন্ট। অনেকে শুধু ভিউয়ের হিসাব করে। কিন্তু ভিউয়ের পাশাপাশি অ্যাংগেজমেন্টের হিসাব জরুরি। অ্যাংগেজমেন্টের হার বেশি হলে ইউটিউব তখন ভিডিওটিকে ট্রেন্ডিংয়ে দিয়ে দেয়। ট্রেন্ডিংয়ে গেলে ভিউ অটোমেটিক বাড়তে থাকে। কারণ ইউটিউব নিজেই তখন এটা দেখার জন্য সাজেস্ট করে। এ ক্ষেত্রে ওয়াচ টাইমও খুব গুরুত্ব্বপূর্ণ। ওয়াচ টাইম বেশি হলে অ্যাডের পরিমাণও বেশি হয়। একটা মিউজিক ভিডিওতে একটাই অ্যাড বসে। কারণ একটি মিউজিক ভিডিওর টাইম সচরাচর তিন থেকে পাঁচ মিনিট। একের বেশি অ্যাড বসাতে হলে সেই গান বা কনটেন্টকে কমপক্ষে ১০ মিনিট হতে হবে। এ কারণে শর্টফিল্ম, নাটক ও সিনেমায় আয় বেশি।
সিপিসি ও সিপিএম
সিপিসি হচ্ছে ‘কস্ট পার ক্লিক’। দেখা যায়, প্রতি হাজার সিপিসির জন্য একটা দাম থাকে। আর অ্যাডের দাম নির্ভর করে সিপিএম ‘কস্ট পার মিল’ রেটের ওপর। আমেরিকা ও আরব দেশগুলোতে সিপিএম রেট বেশি। সিপিএম রেট তখনই বেশি হয় যখন বড় বড় কম্পানির বেশি বিডের অ্যাড বসে। বাংলাদেশে সিপিএম তুলনামূলক কম। কারণ এখানে এখনো ডিজিটাল অ্যাডের বিষয়টি অত জনপ্রিয় নয়। এটা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আয়ও বাড়বে।
এমসিএন (মাল্টি চ্যানেল নেটওয়ার্ক)
একটা গান বা কনটেন্টের একটাই আইডি হয়। এমসিএন কনটেন্টের আইডি করে দেয়, যাতে সে কনটেন্ট পরে আর পাইরেসি হতে না পারে। কেউ যদি আপ করে তখন সেটি মূল কনটেন্টের অধীনে চলে আসে। একবার যদি কনটেন্ট আইডি হয় পরে আর সেটি কেউ অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করতে পারে না। এর ফলে মূল আপলোডকারী বা মালিক পাইরেটেড কনটেন্টের লাভও ভোগ করে। মালিক চাইলে পাইরেটেড কনটেন্টটিকে অটো ব্লক করে দিতে পারে। ব্লক পলিসিতে দ্রুত সাবস্ক্রাইবার বাড়ে চ্যানেলের।
ডিজিটাল পোস্টারিং
একসময় অ্যালবাম বের হলে মানুষ দেয়ালে দেয়াল পোস্টার লাগাত। এ জন্য বড় অঙ্কের টাকাও খরচ হতো। কিন্তু হিসাব পাওয়া যেত না যে কয়জন পোস্টারটি দেখল। কখনো কখনো দেখা যেত পোস্টারটি লাগানোর সঙ্গে সঙ্গেই কেউ ছিঁড়ে ফেলছে। ইউটিউব কিংবা ফেসবুক প্রমোশনকে বলা হয় ডিজিটাল পোস্টারিং। এর সুবিধা হলো কয়জন পোস্টারটি দেখল, কয়জন পোস্টারটি দেখে ভিডিওতে ক্লিক করল, কয়জন ভিডিওটি শেয়ার করল—সব দেখা যায়। ডিজিটাল পোস্টারিং অনেক নিখুঁত, নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য। পুরো দুনিয়াই প্রমোশনের ওপর চলছে। একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত প্রমোশন করতেই হবে, সেটা যার গানই হোক। দিন শেষে ভালো গানটাই মানুষ নেবে। জোর করে কখনো ৫-১০ মিলিয়ন ভিউ আনা সম্ভব নয়। হয়তো এক-দুই লাখ আনা যায়। ১০ লাখ ভিউ আনতে লাগে ১০ লাখ টাকা (যদি সর্বনিম্ন বিড এক সেন্টও ধরা হয়)। এই সামর্থ্য কয়জনের আছে! যতগুলো গান কোটি ভিউ পেয়েছে সবই নিজ গুণে কিংবা ভাইরাল হওয়ার কারণে। নরমালি যে ভিউ হয় সেটাকে বলা হয় অর্গানিক। টাকা দিয়ে যেটা নেওয়া হয় সেটা পেইড। পেইড ভিউ দিয়ে গান মানুষের কাছে পৌঁছানো গেলে, মানুষের ভালো লাগলে সেটা এমনিতেই ভাইরাল হয়ে যাবে। চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর জন্যও প্রমোশন গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পরে সাবস্ক্রাইবারের কাছে কনটেন্টের তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবেই চলে যায়।
একসময় অ্যালবাম বের হলে মানুষ দেয়ালে দেয়াল পোস্টার লাগাত। এ জন্য বড় অঙ্কের টাকাও খরচ হতো। কিন্তু হিসাব পাওয়া যেত না যে কয়জন পোস্টারটি দেখল। কখনো কখনো দেখা যেত পোস্টারটি লাগানোর সঙ্গে সঙ্গেই কেউ ছিঁড়ে ফেলছে। ইউটিউব কিংবা ফেসবুক প্রমোশনকে বলা হয় ডিজিটাল পোস্টারিং। এর সুবিধা হলো কয়জন পোস্টারটি দেখল, কয়জন পোস্টারটি দেখে ভিডিওতে ক্লিক করল, কয়জন ভিডিওটি শেয়ার করল—সব দেখা যায়। ডিজিটাল পোস্টারিং অনেক নিখুঁত, নির্ভরযোগ্য ও বিশ্বাসযোগ্য। পুরো দুনিয়াই প্রমোশনের ওপর চলছে। একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত প্রমোশন করতেই হবে, সেটা যার গানই হোক। দিন শেষে ভালো গানটাই মানুষ নেবে। জোর করে কখনো ৫-১০ মিলিয়ন ভিউ আনা সম্ভব নয়। হয়তো এক-দুই লাখ আনা যায়। ১০ লাখ ভিউ আনতে লাগে ১০ লাখ টাকা (যদি সর্বনিম্ন বিড এক সেন্টও ধরা হয়)। এই সামর্থ্য কয়জনের আছে! যতগুলো গান কোটি ভিউ পেয়েছে সবই নিজ গুণে কিংবা ভাইরাল হওয়ার কারণে। নরমালি যে ভিউ হয় সেটাকে বলা হয় অর্গানিক। টাকা দিয়ে যেটা নেওয়া হয় সেটা পেইড। পেইড ভিউ দিয়ে গান মানুষের কাছে পৌঁছানো গেলে, মানুষের ভালো লাগলে সেটা এমনিতেই ভাইরাল হয়ে যাবে। চ্যানেলের সাবস্ক্রাইবার বাড়ানোর জন্যও প্রমোশন গুরুত্বপূর্ণ। কারণ পরে সাবস্ক্রাইবারের কাছে কনটেন্টের তথ্য স্বয়ংক্রিয়ভাবেই চলে যায়।
সাংঘর্ষিক
অনেক টিভি চ্যানেল একটি নাটক বা কনটেন্ট প্রচারের পর পরই ইউটিউবে দিয়ে দেয়। এটা সাংঘর্ষিক। তাদের উচিত টিভিতে যাওয়ার আগেই সেই কনটেন্ট ইউটিউবে ব্লক পলিসি দিয়ে রাখা। তাতে ওই কনটেন্ট প্রচারিত হওয়ার পর কেউ আর সঙ্গে সঙ্গে আপলোড দিতে পারবে না। এখানে টিভি চ্যানেলের লাভ, যে কয় দিন কনটেন্টটি দেখানো হবে মানুষ টিভিতেই দেখবে। পরে ব্লক পলিসি খুলে দেওয়ার পর তারা ইউটিউবে দেখবে। শুরুতেই যদি ইউটিউবে পাওয়া যায় তখন মানুষ টিভির প্রতি আগ্রহ দেখাবে না। নিজের ইচ্ছামতো পরে ইউটিউবে দেখে নেবে। এ কারণে বাংলাদেশের অনেক টেলিভিশন দর্শক হারাচ্ছে।
অনেক টিভি চ্যানেল একটি নাটক বা কনটেন্ট প্রচারের পর পরই ইউটিউবে দিয়ে দেয়। এটা সাংঘর্ষিক। তাদের উচিত টিভিতে যাওয়ার আগেই সেই কনটেন্ট ইউটিউবে ব্লক পলিসি দিয়ে রাখা। তাতে ওই কনটেন্ট প্রচারিত হওয়ার পর কেউ আর সঙ্গে সঙ্গে আপলোড দিতে পারবে না। এখানে টিভি চ্যানেলের লাভ, যে কয় দিন কনটেন্টটি দেখানো হবে মানুষ টিভিতেই দেখবে। পরে ব্লক পলিসি খুলে দেওয়ার পর তারা ইউটিউবে দেখবে। শুরুতেই যদি ইউটিউবে পাওয়া যায় তখন মানুষ টিভির প্রতি আগ্রহ দেখাবে না। নিজের ইচ্ছামতো পরে ইউটিউবে দেখে নেবে। এ কারণে বাংলাদেশের অনেক টেলিভিশন দর্শক হারাচ্ছে।
ইউটিউব ভ্লগিং
বিশ্বের অন্যান্য দেশের শিল্পীরা ইউটিউবে গানের চেয়ে স্টেজ পারফরম্যান্স, কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন, লাইফস্টাইল—এসব ভিডিও আপ করছেন। সেখান থেকে আয় আরো বেশি হয়। কারণ সেলিব্রিটিদের লাইফস্টাইল সম্পর্কে মানুষের জানার আগ্রহ বেশি। আয়ও বেশি হয়। এগুলোকে বলা হয় ইউটিউব ভ্লগিং। ইউটিউবেও এখন লাইভ অপশন শুরু হয়েছে। তারকারা সেখান থেকেও আয় করতে পারে। বিশ্বের নাম করা ভ্লগারের মধ্যে লোগান পল, জেইক পল অন্যতম। এ ছাড়া বিখ্যাত মেকআপ আর্টিস্ট শান মু-ও আছেন। এটা বাংলাদেশে জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। ইতিমধ্যেই অনেকে এ ক্ষেত্রে জনপ্রিয়ও হয়েছেন।
বিশ্বের অন্যান্য দেশের শিল্পীরা ইউটিউবে গানের চেয়ে স্টেজ পারফরম্যান্স, কোথায় যাচ্ছেন, কী করছেন, লাইফস্টাইল—এসব ভিডিও আপ করছেন। সেখান থেকে আয় আরো বেশি হয়। কারণ সেলিব্রিটিদের লাইফস্টাইল সম্পর্কে মানুষের জানার আগ্রহ বেশি। আয়ও বেশি হয়। এগুলোকে বলা হয় ইউটিউব ভ্লগিং। ইউটিউবেও এখন লাইভ অপশন শুরু হয়েছে। তারকারা সেখান থেকেও আয় করতে পারে। বিশ্বের নাম করা ভ্লগারের মধ্যে লোগান পল, জেইক পল অন্যতম। এ ছাড়া বিখ্যাত মেকআপ আর্টিস্ট শান মু-ও আছেন। এটা বাংলাদেশে জনপ্রিয় হওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল। ইতিমধ্যেই অনেকে এ ক্ষেত্রে জনপ্রিয়ও হয়েছেন।
No comments:
Post a Comment