নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, পরিবার, সমাজসহ জীবনঘনিষ্ঠ ইসলামবিষয়ক প্রশ্নোত্তর অনুষ্ঠান ‘আপনার জিজ্ঞাসা’। শরীফ বায়জীদ মাহমুদের উপস্থাপনায় এনটিভির জনপ্রিয় এ অনুষ্ঠানে দর্শকের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন বিশিষ্ট আলেম ড. মুহাম্মদ সাইফুল্লাহ ।
আপনার জিজ্ঞাসার ২০৩৫তম পর্বে ক্যামেরায় ছবি তোলা জায়েজ কি না, সে সম্পর্কে রাজশাহী থেকে ই-মেইলে জানতে চেয়েছেন মিনহাজ পারভেজ। অনুলিখনে ছিলেন জহুরা সুলতানা।
প্রশ্ন : ক্যামেরায় ছবি তোলা কি জায়েজ? অনেকেই মনে করেন ক্যামেরায় ছবি তোলা হারাম, কোনটি সঠিক?
উত্তর : আসলে ক্যামেরার মাধ্যমে যে ছবিগুলো তোলা হয়ে থাকে, সেগুলো অনেকটাই ইমেজ এবং এই ইমেজগুলোতে সুস্পষ্টভাবে কোনো প্রতিকৃতি অথবা পরিপূর্ণ আকার ধারণ করা হয় না। ক্যামেরায় এমন একটি ছবি আসে, যেখানে তেমন কিছুই থাকে না।
রাসুল (সা.) যেখানে ছবির কথা হারাম করেছেন, সেখানে কি তিনি এই ছবির কথা বলেছেন, নাকি একজন মানুষের মূর্তি আবিষ্কার করা বা পরিপূর্ণ ছবি ধারণ করা সেটা বুঝিয়েছেন? এই নিয়ে পরবর্তী যুগের আলেম বা এই যুগের আলেমদের মধ্যে মতবিরোধ আছে।
মূল কথা হচ্ছে, ক্যামেরার যে ইমেজগুলো আছে, রাসুল (সা.)-এর হাদিস দ্বারা সেগুলোকে বোঝানো হয়নি। তাই এই ইমেজ যদি কেউ ধারণ করে থাকেন, সেটাকে যতক্ষণ পর্যন্ত আপনি ছবির আকার না দেবেন, ততক্ষণ পর্যন্ত এটি ধারণ করা জায়েজ, নাজায়েজ নয়। ক্যামেরার মাধ্যমে এটি করতে পারেন।
কিন্তু এক্ষেত্রে আলেমদের একটি দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে। এটি ইশতেহাদি বিষয়, সেটি হচ্ছে, সুস্পষ্ট কোনো দলিলের মাধ্যমে বা রাসুলের (সা.) কোনো সুস্পষ্ট হাদিসের মাধ্যমে এটি সাব্যস্ত হয়নি, সেটি হল— অপ্রয়োজনীয়, অহেতুক কারণে বারবার ছবি তোলা বা ছবির কাজেই লিপ্ত থাকা। অনেক সময়ই দেখা যায় যে, হজ করার সময় আল্লাহর ঘরে তাওয়াফ করছেন, তখন তিনি ছবি তুলছেন। অথচ তাওয়াফের ইবাদত গুরুত্বপূর্ণ একটি সময়, ইবাদত কবুলের সময়, তখন আপনি ছবি তুলবেন কেন! তাই প্রয়োজন যদি না থাকে, সেক্ষেত্রে ছবি না তুলে, প্রয়োজনীয় কাজ শেষ করা আপনার জন্য উত্তম। প্রয়োজনীয় সময়ে ছবি তোলা বৈধ, এটি জায়েজ, আপনি ছবি তুলতে পারেন। এটি রাসুল (সা.) যে নিষেধ করেছেন, তার আওতাভুক্ত হবে না।
No comments:
Post a Comment