রংপুর নগরবাসী তাদের জনপ্রতিনিধি হিসেবে লাঙল প্রতীকের মেয়র প্রার্থী জাতীয় পার্টির মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকেই বেছে নিল। লাঙলের দুর্গে জয় হলো লাঙলেরই।
নগরীর জুম্মাপাড়ায় রাত পৌনে ৯টায় দেখা গেল, নারী সমর্থকরা মোস্তফাকে ঘিরে মিষ্টি খাওয়াচ্ছে। এ সময়ই কালের কণ্ঠকে দেওয়া প্রতিক্রিয়ায় মোস্তফা বলেন, নগরীকে বদলে দেওয়ার ব্রত নিয়ে তিনি এগোবেন। তিনি বলেন, ‘রংপুরবাসী আমার প্রতি সম্মান দেখিয়েছে। আমার সম্মান রেখেছে। আমি তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ’
মোস্তফা আশ্বাস দেন, রংপুর নগরীর যোগাযোগব্যবস্থা তিনি বদলে দেবেন। যানজট নিরসন হবে অগ্রাধিকারমূলক কাজের একটি। এ ছাড়া জলাবদ্ধতার নিরসন করবেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে নিজের ভোট দেওয়ার পরও মোস্তফা বলেছিলেন, জয়ী হলে প্রথমেই নজর দেবেন যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নে, নিরসন করবেন নগরীর যানজট।
আওয়ামী লীগের মেয়র প্রার্থী শরফুদ্দিন আহমেদ ঝন্টু নৌকা প্রতীক নিয়েও জিততে পারেননি। রংপুর নগরীর আওয়ামী লীগ সমর্থকদের বড় একটি অংশও সংক্ষুব্ধ হয়ে নৌকায় ভোট না দিয়ে লাঙলে ভোট দিয়েছে বলে ভোটারদের কাছ থেকে জানা গেছে। অনেকেই বলছেন, নির্বাচনে আওয়ামী লীগ হারেনি, হেরেছেন ব্যক্তি ঝন্টু।
ঝন্টুকে গত নির্বাচনে ভোট দিয়েছে—এমন অনেক ভোটার বলেন, ঝন্টু দুর্ব্যবহার করে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে দূরে চলে গেছেন বহু আগেই। আর জাতীয় পার্টির মোস্তফা সাধারণের খুব কাছাকাছি, আপনজন হয়ে অনায়াসে জয় পেয়েছেন।
২০১২ সালের সিটি নির্বাচনে মোস্তফা প্রায় ২৮ হাজার ভোটের ব্যবধানে হেরে যান। এবার সেই মোস্তফাই হারিয়ে দিলেন ঝন্টুকে। মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফা এর আগে রংপুর সদর উপজেলা চেয়ারম্যান ছিলেন। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের কারাবাসকালে তিনি ছিলেন রাজপথের সৈনিক। তিনি এ জন্য নির্যাতনের শিকার হন, জেল খাটেন।
ছাত্রজীবনেই রাজনীতিতে হাতেখড়ি হয়েছিল মোস্তফার। তিনি দলের রংপুর মহানগর কমিটির সভাপতি।
১৯৯১ সালে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এরশাদের মনোনয়নপত্র বাতিল হলে বিক্ষোভে ফেটে পড়ে রংপুর। নির্যাতনের শিকার হন মোস্তফা। ২০০৯ সালে সদর উপজেলা চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। দলের সমর্থন না পেলেও ২০১২ সালে অনুষ্ঠিত প্রথম সিটি নির্বাচনে তিনি প্রায় ৭৮ হাজার ভোট পান। মোস্তফার জন্ম ১৯৫৯ সালে। ১৯৭৯ সালে কারমাইকেল কলেজ থেকে স্নাতক পাস করেন। এরপর কিছুদিন শিক্ষকতা করে রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন।
No comments:
Post a Comment