আমাশয় কেন হয়? এর চি‌কিৎসা কী?

আমাশয় কেন হয়?
আমাশয় একটি প্রচলিত রোগ।
প্রশ্ন : আমাশয়ে আমরা আক্রান্ত হই কেন?
উত্তর : আমাশয় হলো একটি বিশেষ ধরনের পাতলা পায়খানাজনিত রোগ। এখানে মলের সঙ্গে মিউকাস বা সাধারণ মানুষ যাকে আম বলে থাকেন অথবা রক্ত অথবা দুটোই গিয়ে থাকে। আমাশয় বা পাতলা পায়খানাজনিত বিশেষ রোগের প্রধান কারণ সংক্রমণ। বিভিন্ন রকমের সংক্রমণ হয়। জীবাণুঘটিত, পরজীবীঘটিত। এটি অপরিচ্ছন্ন খাবার, হাত ও পানীয়র মাধ্যমে আমাদের শরীরে প্রবেশ করে। পাশাপাশি কিছু ব্যাকটেরিয়া রয়েছে। এর মধ্যে প্রধান হলো সিগেলাফ্লেক্সেরি নামক এক প্রকার জীবাণু অথবা ক্যামপাইলোব্যাকটর জেজোনি নামের এক প্রকার জীবাণু। এগুলো সাধারণত আমাশয় রোগের কারণ। এটি হচ্ছে এক ধরনের সংক্রমণ। আবার রক্ত ও মিউকাস, যেটা মলের সঙ্গে যায়, সংক্রমণ ছাড়াও কিছু কিছু রোগের মধ্যে হয়। একেও আমরা আমাশয় বলি। তবে সেদিক থেকে আমাশয়কে আমরা দুই ভাগে ভাগ করি। একটি হলো স্বল্পমেয়াদি আমাশয়, আরেকটি হলো দীর্ঘমেয়াদি আমাশয়। স্বল্পমেয়াদি আমাশয় সাত দিনের মধ্যেই ভালো হয়ে যায়। অনেক ক্ষেত্রে চিকিৎসা ছাড়াই ভালো হয়ে যায়। আরেকটি হলো দীর্ঘমেয়াদি আমাশয়। এটি সাধারণত এক মাসের বেশি সময় ধরে স্থায়ী হয়। সেখানেই আমাদের সত্যিকার অর্থে চিকিৎসা নিতে হয়। সত্যিকার অর্থে রোগীকে পর্যবেক্ষণ করতে হয়। দেখতে হয় আসলে আমাশয়ের কারণ কী, কেন তিনি ভালো হচ্ছেন না। সারা বিশ্বে ৩৫ থেকে ৪০ লাখ রোগী এ রোগে আক্রান্ত হয়।

স্বল্পমেয়াদি আমাশয়ের চিকিৎসা কী
আমাশয় দুই ধরনের হয়। স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি।

প্রশ্ন : স্বল্পমেয়াদি আমাশয়ের চিকিৎসায় কী দিয়ে থাকেন?
উত্তর : স্বল্পমেয়াদি আমাশয়, যেটি সাতদিন পর্যন্ত স্থায়ী হয়। আমরা প্রথমে খুঁজে বের করি যে তার কী হলো। খুঁজে বের করে আমরা চিকিৎসা দিই। কালচার সেনসিটিভিটি আসতে অনেকদিন সময় লেগে যায়, ৪০ থেকে ৭২ ঘণ্টা। রোগীর যদি রোগটি খুব বেশি তীব্র হয়ে থাকে, তখন দ্রুত চিকিৎসা দিই। পাঁচ থেকে সাত দিন ওষুধ দিই। মেট্রোনিডাজল নামে এক প্রকার বিশেষ ধরনের ওষুধ রয়েছে, সিপ্রোপ্রক্সাসিন নামে এক ধরনের ওষুধ রয়েছে, সেগুলোর সমস্বয় অনেক সময় দেওয়া লাগে। অথবা কারণ বুঝে কেবল একটি ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করলে রোগী সাধারণত ভালো হয়ে যায়।

ডা. এ কে এম শফিকুল ইসলাম
বারডেম হাসপাতালে গ্যাস্ট্রোএন্ট্রোলজি বিভাগের পরামর্শক হিসেবে কর্মরত।

No comments:

Post a Comment