অনেক মানুষের স্বপ্ন থাকে রাতারাতি ধনী হওয়ার। ধনী হতে পারলেও এ আয়ের অর্থ বেশির ভাগ সময় থাকে অনিশ্চয়তা আর শঙ্কার মধ্যে।
খুব কম লোকই আছেন যারা হঠাৎ সংক্ষিপ্ত পথের আয় নিজের পকেটে পুরতে পারেন। রাতারাতিই চলে যান কোটিপতি বনে। আর তাদের ভিতরে অল্পসংখ্যক মানুষ সেগুলো ধরে রাখতে সক্ষম হন। এমন কিছু লোক নিয়ে আজকের আয়োজন।
ছিলেন সাধারণ কৃষক
কৃষকের সাধারণ জীবন। প্রকৃতির ওপর নির্ভর তাদের অনেকটা। প্রকৃতির দয়ায় কোনো বছর ভালো ফলন তো পরের বছর হয়তো বিপাকে পড়া। পরিকল্পিত কৃষি হয়তো সবাইকে বিপাকে ফেলতে পারে না। আর্থিক দৈন্যতা কাটিয়ে করে তোলে স্বাবলম্বী।
তবে পুরো ব্যাপারটিই ঘটে দিনের পর দিন। কৃষিতে রাতারাতি ধনী হয়ে যাওয়ার কোনো উপায় এখন পর্যন্ত আবিষ্কার হয়নি। অথচ র্যাঙ্কার অস্কার স্টোহলারকে দেখলে তার বিপরীত প্রমাণ মিলবে। তিনি পশ্চিম নর্থ ডাকোটা খামারে কাজ করতেন। খামারে ড্রিলিং করার আগেও ভাবছিলেন ভাগ্য কেন সহায় হয় না? এমন ভাবনা বাসি হওয়ার আগেই জমিতে অশোধিত তেল খনি আবিষ্কার হলো। একই সঙ্গে আবিষ্কার হলো তার পরিচয়ে মিলিয়নিয়ার শব্দটি। তখন কে আর পেছনে তাকায়? ব্যবহার করতে হবে না সেই পুরনো পিকআপ ট্রাক আর ময়লাযুক্ত খামারের ক্যাপ। তার সঙ্গে ভাগ্য ফেরে আরও শতাধিক কৃষকের।
পোকার খুলে দেয় ভাগ্য
জনাথন ডুহামেলের বর্তমান পরিচয় ধনী পোকার প্লেয়ার হিসেবে। অথচ এর আগে দীর্ঘদিন ধরে তিনি মনেপ্রাণে স্বপ্ন লালন করে যেতেন এনএইচএল-এর একজন হকি স্টার হবেন। কিন্তু সবসময় কি চাওয়া আর পাওয়ার মিল থাকে? বেশির ভাগ সময় দেখা যায় চাওয়ার তুলনায় পাওয়া খুবই সামান্য অথবা কাছাকাছি যায়। এদিকে জনাথন ডুহামেলের ক্ষেত্রে ঘটে গেল ভাবনার থেকেও অনেক ভিন্ন কিছু। হকি প্লেয়ার না হয়ে শেষ পর্যন্ত হলেন অন্যকিছু। নিতান্তই শখের বশে মন্ট্রিলের বাসিন্দা জনাথন ডুহামেল তার ভাগ্য পরীক্ষা করতে চেয়েছিলেন। ২০১০ সালের ৮ নভেম্বর ২৩ বছরের ডুহামেল ৯ মিলিয়নের একটি প্রাইজ জিতে নেন। আর এটি তার হাতে আসে পোকারের হাত ধরে। খেলাটি ছিল লাস ভেগাসের পোকারের ওয়ার্ল্ড সিরিজের। এত বড় একটি টুর্নামেন্টে পোকার বিজেতা হবেন কখনো স্বপ্নেও ভাবেননি। এমনকি তিনি প্রথম কানাডিয়ান যিনি খ্যাতিটি অর্জন করেন।
ছিলেন সামান্য ইলেক্ট্রিশিয়ান
সামান্য একজন ইলেক্ট্রিশিয়ানের কতই বা অর্থ-সম্পদ থাকতে পারে। তার পক্ষে আর যাই হোক, রাতারাতি মিলিয়নিয়ার বা বিলিয়নিয়ার হওয়া বোধহয় কখনই সম্ভব নয়। নিজের পেশার পাশাপাশি অন্য কোনো ব্যবসা হয়তো তাকে কিছুটা অর্থের মুখ দেখাতে পারে। কিন্তু না, সব ধারণার অবসান হবে যখন পিয়ের লে গুয়েননেককে দেখবেন। তিনি ছিলেন একজন অবসরপ্রাপ্ত ফ্রেন্স ইলেক্ট্রিশিয়ান। কিন্তু হঠাৎই তার পরিচয়ের সঙ্গে যোগ হয় মিলিয়নিয়ার শব্দটি। সাম্প্রতিক কিছু মিডিয়া রিপোর্ট বলে ১৯৭০-এর শুরুর দিকে লে গুয়েননেক ছিলেন পাবলো পিকাসোর নিয়োজিত কর্মী। পিকাসো তাকে দুর্লভ ২৭১টি হস্তনির্মিত বস্তু দান করেছিলেন। যদিও এ কর্মগুলো নিয়ে যথেষ্ট বিতর্ক আছে। সেই টুকরোগুলোর মধ্যে আঁকা ছবি, লিথোগ্রাফ, কোলাজ, নোটবুকসহ আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ জিনিস পাওয়া যায়। হঠাৎ তিনি এগুলো বিক্রির সিদ্ধান্ত নেন, মূল্য পান ৫০ মিলিয়ন ডলার!
মামলায় জিতে ধনী
একজন ক্যান্সার রোগীর নাম মারভ ডোনিগার। জটিল এ রোগ যে ব্যক্তি বহন করে তাকে সাধারণত জীবন সায়াহ্নের কোনো পথিক হিসেবেই ভাবা যেতে পারে। সাধারণ একজন মানুষের পক্ষে অনেক সময় এ রোগের ব্যয়বহুল চিকিৎসা খরচও বহন করা সম্ভব হয়ে ওঠে না। অথচ সেই রোগ কিনা মারভ ডোনিগারকে রাতারাতি করে তুলল মিলিয়নিয়ার? প্রথমেই মাথায় আসতে পারে তিনি হয়তো ধনীদের অনুদান পেয়েছিলেন পর্যাপ্ত পরিমাণে, কিন্তু না। রোগ নিরাময়ে যে চিকিৎসকের কাছে গিয়েছিলেন ত্রুটি ছিল তার। মারভ ডোনিগারের শরীরে ক্যান্সার ছিল তা তিনি আবিষ্কার করতে পারেননি। দিয়েছিলেন ভুল তথ্য, যা পরবর্তীতে মারভকে বিপাকে ফেলে। এ ভোগান্তির জন্য মারভ চিকিৎসকের বিরুদ্ধে মামলা ঠুকে দেন আদালতে। বিজ্ঞ আদালত পুরো বিষয় বিবেচনা করে মারভের পক্ষে রায় দেয়। তিনি হয়তো এমন একজন সৌভাগ্যবান ব্যক্তিতে পরিণত হন যিনি এক মামলার মাধ্যমে কোটি কোটি অর্থের সুযোগ পান। চিকিৎসককে মামলার রায় অনুযায়ী মারভকে পরিশোধ করতে হয় ৩.৩ মিলিয়ন ডলার। সেই অর্থে বাকি জীবন ভালোভাবেই চলে যায় তার।
লটারিতে কর্মচারীর কপাল খোলে
কারও কারও লটারির ভাগ্য অনেক ভালো। কারও আবার মোটেও না। কেউ কেউ তো সারাজীবন লটারির টিকিট জমিয়ে গেলেন কিন্তু কোনোদিন একটি চকলেটের মুখও চোখে দেখলেন না। তাই হতাশ হয়ে লটারিকে ভুয়া বলতেও দ্বিধা বোধ করেন না। কিন্তু এ লটারিই হয়তো কারও কারও ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দেয়। তাই বলে একেবারে তাকে মিলিয়নিয়ারে পরিণত করবে এমনটি নিশ্চয় ঘটে না। কিন্তু কখনো আবার তাও ঘটে। কনগরা ফুডস-এর প্রাক্তন কর্মচারী ডেভ গেহেল হলেন সেই ভাগ্যবান যিনি লটারির মাধ্যমে মিলিয়নিয়ার হন। কয়েক লাখ ভাগ্যবানের মধ্যে তিনি অন্যতম ভাগ্যবান বলেই হয়তো তা সম্ভব হয়েছে। ২০০৬ সালে নেরাস্কা লটারি অনুষ্ঠিত হয়। তাতে প্রথম পুরস্কার জয়ী হন ডেভ গেহেল। ভাবছেন, হঠাৎ এত অর্থ নিশ্চয় ডেভ গেহেলের জীবনে অনেক বড় পরিবর্তন এনে দেয়। না, এত অর্থ প্রাপ্তিও তাকে আগের জীবনধারা থেকে মোড় ঘোরাতে পারেনি। তিনি এখনো সেই আগের পুরনো বাড়িতেই থাকেন। চলাচলে ব্যবহার করেন সেই আগের গাড়িটিই।
সহায় পাওয়ারবল জ্যাকপট
জ্যাক হোয়াইটেকার কখনোই গরিব ছিলেন না। বেশ কিছু অর্থ উপার্জন করেছিলেন নিজের কন্সট্রাকশন ব্যবসা থেকে। ব্যবসায়ীমনা এই মানুষটি মনে মনে বিপুল অর্থের স্বপ্নও হয়তো দেখতেন। কিন্তু হঠাৎ করে পেয়ে যাবেন তা ভাবেননি। ২০০২ সালে রাতারাতি তার অর্থ বেড়ে ৩১৪ মিলিয়ন ডলারে গিয়ে ঠেকে। সহায় হয় পাওয়ারবল জ্যাকপট নামে দেশটির পরিচিত লটারি সিস্টেম। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত পরবর্তীতে বেশ কিছু অর্থ সম্পদ হারিয়ে বসেন ডাকাতি, স্ট্রিপ ক্লাব, নারী আসক্তি, মামলা ও ক্যাসিনোতে জুয়া খেলে।
কি ক্ল্যাপস হয় ভাগ্যের চাবি
বড় জিনিস চোখের সামনে থেকে হারিয়ে যেতেও কিছুটা সময় নেয়, কিন্তু ছোট্ট জিনিস একেবারেই নেয় না। এ ধরনের অভিজ্ঞতা প্রায় প্রতিটি মানুষের জীবনে আছে। ছোট্ট পার্টসে রাখা রিং অথবা চাবি কতবার হারিয়েছেন হয়তো তার ইয়ত্তাও নেই। এমন সমস্যা যখন নিত্যনৈমিত্তিকের ঘটনা তখন ৫২ বছর বয়সী বিমানবাহিনীর স্টুয়ার্ডি স্যান্ডি স্টিনের মাথায় খেলে গেল একটি বুদ্ধি। তিনি অনায়াসে তৈরি করে ফেললেন একটি কি ক্লাপস। এ সাধারণ আবিষ্কার নারীদের ছোট পার্টস থেকে চাবি হারানো বন্ধ করতে সহায়তা করল দারুণভাবে। স্যান্ডি জানান, আবিষ্কৃত এ বস্তুটি চাবি সংরক্ষণের একটি কার্যকরী পার্টস। মাত্র চার মাস পার্টসটি বাজারে আসার পর স্যান্ডির কোম্পানি ১ মিলিয়ন ডলার পরিমাণ বিক্রি করতে সক্ষম হয়, যা তার কল্পনাতেও ছিল না। এ সফলতা তাকে নতুন উদ্যমে কাজ করার জন্য উৎসাহ দেয়। এরপর মাত্র আট মাসের মাথায় ১ মিলিয়ন ইউনিট পার্টস বিক্রি করতে সক্ষমতা দেখায় তার কোম্পানি। তাতে কোম্পানিটির লভ্যাংশ দাঁড়ায় ৬.৫ মিলিয়নে।
ফেসবুকের বিরুদ্ধে মামলা
যে ফেসবুকে আজ তরুণসমাজ দিনভর বুঁদ থাকেন তার ধারণাটি নাকি চুরি করা। এই দায়ে অভিযুক্ত মার্ক জুকারবার্গ নিজেই। অবশ্য এ জন্য তাকে গুনতে হয় ২০ মিলিয়ন ডলার। আর তার ভাগিদার হন উইঙ্কলেভি জমজ। উইঙ্কলেভি জমজরা ফেসবুকের প্রতিষ্ঠাতা মার্ক জুকারবার্গের ক্লাসমেট ছিল। তারা সিদ্ধান্তে পৌঁছান মার্কের সঙ্গে সামাজিক এই মাধ্যমের আইডিয়া চুরির বিষয়কে চুকিয়ে নেবেন। তখন তারা মার্কের বিরুদ্ধে মামলা করেন। মামলাকে কেন্দ্র করে হলিউডে কতশত সিনেমাও তৈরি হয়। যা হোক, জমজদের দাবি ছিল এ মামলার নিষ্পত্তি তারা করবেন, তবে সে সময় ৪৫ মিলিয়ন মূল্যের ফেসবুকের বাবদ তাদের ২০ মিলিয়ন পরিশোধ করতে হবে। যদিও এর জুনিয়র স্টকের মূল্য আরও অনেক বেশি ছিল। পাওয়া অর্থ দিয়েই তারা ধনীদের তালিকায় ওঠেন।
সফটওয়্যার দেখায় সফলতা
আর দশজন সাধারণ কর্মজীবী নারীর মতো জীবন বয়ে যাচ্ছিল ট্রেসি হাও-এর। পড়াশোনা শেষে একটি প্রতিষ্ঠানে চাকরি নেন। বেতনও পান সাধারণ বিবেচনা মতে। ভাবেননি, জীবনটা তার এত বেশি পরিবর্তনের মুখ দেখাবে। চাকরি জীবনের প্রথম ৮ বছর পার করেন খুবই সাধারণ মানুষের মতো। কিন্তু হঠাৎ ট্রেসির মাথায় একটি বুদ্ধি চাপে। তিনি কলেজে পড়া অবস্থায় তৈরি করেছিলেন একটি সফটওয়্যার। বিনা ব্যবহারে সফটওয়্যারটি সংরক্ষিত ছিল তার কাছেই। তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন সফটওয়্যারটি বিক্রি করে দেবেন। যেই ভাবা সেই কাজ। তার কল্পনাতেও ছিল না এটির বাজারমূল্য এত দাঁড়াতে পারে। সফটওয়্যারটি বিক্রির সুবাদে ট্রেসি হাও-এর পকেটে ঢুকে যায় লাখ কোটি ডলার। হঠাৎ তিনি নাম লেখান বিত্তবানের তালিকায়। অর্জিত এই অর্থ তিনি বসিয়ে রাখেননি। সেই টাকা দিয়ে তিনি ঘোড়া কেনেন, বড় সম্পত্তিতে এবং তার বাচ্চাদের শিক্ষায় বিনিয়োগ করেন। সে এখন একটি মানবপ্রেমিক ভিত্তিক নেটওয়ার্ক চালাচ্ছেন, যা সিকুয়ালাল নামে পরিচিত।
পণ্য বিক্রেতা থেকে মিলিওনিয়ার
নর্থওয়েস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র অ্যান্ড্রু ম্যাসন। মাত্র ২৯ বছরের একটি ছেলের কর্মপ্রচেষ্টায় দেশবাসীর দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারা স্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু হঠাৎ করেই মিলিয়নিয়ার বনে যাওয়া কি চাট্টিখানি কথা? এই ছেলে ছিলেন সংগীত অনুরাগী। সবার প্রিয় শিল্পীও বটে। তিনি সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে মানুষের ভালোলাগার গভীরে প্রবেশ করে ফেলেছিলেন। এ সুযোগটি তিনি কাজে লাগিয়েছিলেন পুরোপুরি। তার পরিচালিত সাইটটির নাম গ্রুপঅন.কম। সাইটটি প্রতিদিনের পণ্যসামগ্রী যেমন খাদ্যদ্রব্য, প্রসাধনী, স্পা, পোশাক, অনুষঙ্গ ইত্যাদি সার্ভিসের কাজও করত। কিন্তু সেখানে নিজেস্ব কিছু কৌশল প্রয়োগের মাধ্যমে অ্যান্ড্রু প্রায়ই পণ্যের ওপর আকর্ষণীয় ডিসকাউন্ট দিত। তার ভক্তর বাইরেও অন্য সাধারণ ক্রেতা ছিলেন অনেক। প্রতিদিন অনেক বেশি বার সাইটটি ভিজিট হলো। পণ্যের বিক্রিও ছিল উল্লেখ করার মতো। কিন্তু হঠাৎ করেই দেখা গেল ২০১০ সালে তার সাইটের আয় গিয়ে দাঁড়ায় ৩৫০ মিলিয়ন ডলারে। তখন সবার নজরে আসে। গুগলও ৫.৩ মিলিয়ন ডলারে গ্রুপঅন.কম কিনে নেওয়ার প্রস্তাব দেয়।
বাজি ছিল শেষ সম্বল
গ্রান্ডমা প্যাট্রিসিয়া ডিমাওরোর জীবনে ঘটে যায় এক অভূতপূর্ব ঘটনা। তিনি সর্বস্ব দিয়ে দ্বিতীয়বারের মতো জুয়া খেলতে নামেন। এক বন্ধুর দেওয়া ব্রিফ শুনে খেলাটির সিদ্ধান্ত ছিল খুব অল্প সময়ের জন্য। এরপর আটলান্টিক শহরের বোর্গাতে করপস টেবিলে ঢুকতে শুরু করলেন। একটি বিস্ময়কর জয়ও পেলেন। এ খেলার ফলে দেখা যায় তিনি বিজয়ী হন। তবে যে পরিমাণ অর্থ তিনি লুটে নেন, যা আগে কখনো দেখেননি। তিনি নাকি ওই খেলায় শেষ সম্বল ১০ ডলার ব্যয় করেছেন। একেই বলে ক্যাসিনো ভাগ্য।
জুয়া ফেরায় ভাগ্য
সৌভাগ্য নাকি দুর্ভাগ্যকেই অনুসরণ করে মানুষের কাছে ধরা দেয়। আর তার প্রমাণ মেলে সিনথিয়া জয়কে দেখলে। সিনথিয়া পেশায় ছিলেন ককটেল ওয়েট্রেস। বিয়ে করার মতো যথেষ্ট অর্থও তার কাছে ছিল না। তিনি লাস ভেগাসের মনটি কার্লোতে চাকরি করতেন। তিনি চাচ্ছিলেন খুব দ্রুত নিজের বিয়েটা সেরে ফেলতে। কিন্তু কোনো উপায় ছিল না। তবে সে যাই হোক, ২০০০ সালের ২৬ জানুয়ারি সিনথিয়া তার মায়ের জন্মদিন উদযাপন করেন ঘটা করে। এ সময় কি মনে করে মেগাবক্সের স্লট মেশিনে নিজের ভাগ্য পরীক্ষা করাকে হাতছাড়া করতে চাননি। এটি একটি সুপরিচিত রাষ্ট্রীয় লটারি জ্যাকপট। তিনি একবার সেখানে খেলেন। সিনথিয়া জানত না যে এই খেলায় বিজয়ীর ভাগ্যে জুটে যেতে পারে লাখো কোটি ডলার। খুব অভাবনীয়ভাবে ঘোষণা হয় তার নাম। এ সময় তিনি হঠাৎই বিপুল পরিমাণ অর্থের মালিক বনে যান। তার আনন্দ আর ঠেকায় কে? এর দুই সপ্তাহের মধ্যে তিনি বিয়ে করেন। কিন্তু সুখ কপালে বেশিদিন সইল না। বিয়ের মাত্র এক মাস পরে তিনি একটি দুর্ঘটনার শিকার হন।
ভুলে আসা অর্থ
কেভিন লুইসের মতো মনে হয় দুনিয়াতে এমন ভাগ্যবান খুঁজে পাওয়া যাবে না। যিনি ২০১৩ সালে ভুলবশত ১ মিলিয়ন ডলার পেয়ে যান নিজের হাতে। সিনসিনাটিতে হর্সেস ক্যাসিনোতে একটি গ্রীষ্মকালীন ইভেন্ট চলে। তাতে বিজয়ী পাবেন ১ মিলিয়ন ডলার। ভাগ্যের কী খেলা, কেভিন লুইস নামের অপর একজন ব্যক্তি এ লটারি কেনেন। কিন্তু নাম এক হওয়াতে বিজয়ী হিসেবে দুজনই হাজির হন। অবশেষে ক্যাসিনো উভয়কে ১ মিলিয়ন করে প্রদান করার সিদ্ধান্ত নেয়। আর এ সুযোগে কেভিন লুইস একজন মিলিয়নিয়ার হয়ে যান।
সাধারণ থেকে
রিক নরসিজিয়ান ছিলেন একজন লোকাল পেইন্টার। হয়তো তার আঁকা শতাধিক পেইন্ট মাত্র ৫০ ডলারে বিক্রি করতেও হিমশিম খেতে হয়েছে। অথচ হঠাৎ করে তার জীবনের মোড় বদলে গেল। জীবনে আসা একটি সুযোগ তাকে তার প্রমাণ দিয়ে যায়। তার আঁকা ছবি নিয়ে চলল গবেষণা। ঐতিহাসিকরা নিশ্চিত করলেন, তার আঁকা গ্লাস নেগেটিভ সংগ্রহটি কিংবদন্তি প্রকৃতির ফটোগ্রাফার আনাসেল অ্যাডামসের অন্তর্গত। এ রায়ের পরে তার আর পেছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। তখন তার একটি মাত্র ছবিই বিক্রি হলো ২০০ মিলিয়ন ডলার।
No comments:
Post a Comment