সকালে ঘুম থেকে ওঠার উপায়

আমা‌দের সুস্বাস্থ্য ও ফ্রেস ম‌নের মূল চা‌বিকা‌ঠি হচ্ছে সকাল সকাল ঘুম থেকে ওঠা। কিন্তু সাত-সকা‌লে ঘুম থে‌কে ওঠার সামর্থ আমা‌দের অ‌ধিকাংশ লো‌কেরই নেই। অ‌নে‌কে ইচ্ছাকৃতভা‌বে ঘুম থেকে দেরী‌তে উ‌ঠি। আবার অ‌নে‌কেই সকা‌লে উঠার ইচ্ছা থাক‌লেও উঠ‌তে পা‌রি না।

অসংখ্য পরিশ্রমী মানুষ এই সমস্যার সম্মুখীন। সোশাল মিডিয়া 'কুয়োরা' বা বিভিন্ন বইয়ে এ বিষয়ে নানা পরামর্শ মিললেও লাভ হয় না। ত‌বে ইচ্ছা থাক‌লে উপায়‌তো বের হবেই। সূর্য ওঠার আ‌গেই কিভা‌বে ঘুম থে‌কে ওঠা যায় এর জন্য র‌য়ে‌ছে বিশেষজ্ঞ প্রদত্ব অত্যন্ত কার্যকর কিছু উপায়।

** দি‌নের বেলা অ‌ধিক কা‌য়িক প‌রিশ্র‌মের পাশাপা‌শি দৈ‌নিক প্রচুর ব্যায়া‌মের অভ্যাস গ‌ড়ে তুলুন। প‌রিশ্রম ও ব্যায়া‌মের ফ‌লে শরীর ক্লান্ত হয়। ফ‌লে ঘুম হয় আরা‌মের। ত‌বে অবশ্যই দি‌নের ঘুম বাদ দি‌তে হ‌বে।

** ঘুম শা‌ন্তির হোক বা অশা‌ন্তির; কিন্তু প্রতি‌দিন একই সময়ে ঘুমা‌তে যে‌তে হ‌বে এবং একই সম‌য়ে উঠ‌তে হ‌বে। প্র‌ত্যেক‌দিন ঘুম থে‌কে উ‌ঠে সংকল্প করুন যে, আজ রা‌তে ১১ টায় ঘুমা‌বো আর সকাল ৫ টায় ঘুম থে‌কে উঠ‌বো।
এছাড়াও ঘুম থে‌কে উ‌ঠে ব্যায়াম বা হাটাচলার জন্য বাই‌রে বের হবার চেষ্টা করুন নিয়‌মিত।

** শয়নকক্ষে অবশ্যই অ্যালার্ম ঘড়ি বা স্মার্টফোনের অ্যালার্ম ব্যবহার করবেন। স্মার্টফোনটি অ্যালার্ম ঘড়ি হিসাবে ব্যবহার করতে হলে মাথার কাছাকাছি রাখা ভালো।

** দুপুরের পর বা বিকাল থেকে ক্যাফেইন খাওয়ার পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে আনবেন। এক গবেষণায় বলা হয়, ৪০০ মিলিগ্রাম ক্যাফেইন খেলে ৬ ঘণ্টা পর তা ঘুমের সমস্যা করে। স্বাভাবিক আকারের এক কাপ কফিতেই এ পরিমাণ ক্যাফেইন থাকে। বিকাল ৫টার আগে থেকেই কফি খাওয়া বন্ধ করা উচিত।

** সকালে নতুন ধরনের কিছু করার কর্মসূচি ঠিক করে রাখুন। যদি ঘুম থেকে ওঠার পর দাঁত মাজা ও গোসল করা একমাত্র কাজ হয়ে থাকে, তবে আলসেমি চলে আসবেই। যদিও এগুলো প্রতিদিনের নির্দিষ্ট কাজ। তবুও নতুন কিছু করার পরিকল্পনা রাখুন। এতে ঘুম থেকে ওঠার কারণ খুঁজে পাবেন।

** সবার মাথায় থাকে পরদিন সকালে ঘুম থেকে ওঠার জন্যে অ্যালার্ম দিয়ে রাখা। কিন্তু রাতে সময়মতো ঘুম হলেই না সকালে ওঠা সহজ কাজ হবে। তাই বিশেষজ্ঞদের মতে, রাতে ঘুমাতে যাওয়ার ক্ষেত্রেও অ্যালার্ম দেওয়া উচিত। অবশ্য অ্যালার্ম বাজার অর্থ এই নয় যে, দ্রুত ঘুমের পোশাক পড়তে হবে। এর মাধ্যমে সময়মতো ঘুমের অভ্যাগ গড়ে উঠবে।

** রাতে বিছানায় শোয়ার পর তা যেন আনন্দময় হয়। অনেকে স্মার্টফোন নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়েন। কিন্তু এতে ঘুমের বারোটা বাজে। তাই প্রার্থনাকে সর্বোত্তম বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা। রাতে খাওয়ার পর কম্পিউটার ও স্মার্টফোন বন্ধ করে, দাঁত মেজে এবং ঘরের বাতি বন্ধ করে প্রার্থনা করতে পারেন।

** এমন কোনো প্রতিষ্ঠানে রেজিস্ট্রেশন করুন যার জন্যে অনেক সকালে উঠতে হয়। ইয়োগা ক্লাস বা জিমনেশিয়ামে ভর্তি হতে পারেন। সাধারণত সকাল ৬টা বা ৭টার দিকে এসব কাজের জন্যে উঠতেই হবে। স্বাস্থ্যচর্চাও হবে আবার সকাল সকাল দিনটাও শুরু করতে পারবেন।

** সকালে ঘুম থেকে ওঠাতে পরিবারের অন্য কোনো সদস্যকে দায়িত্ব দিন। অনেকে অ্যালার্ম ঘড়ির শব্দেও উঠতে পারেন না। কিংবা অ্যালার্ম বন্ধ করে আবারো ঘুমিয়ে পড়েন। এ ক্ষেত্রে বাড়ির কোনো সদস্য আপনাকে উঠতে বাধ্য করবেন।

** অনেকের ডিজিটাল কফি মেকার রয়েছে। কফি যখন প্রস্তুত তখন তা হুইসের দেয়। কফি প্রস্তুতের সময়কার ঠিকঠাক করে দেওয়া যায়। যখন ঘুম থেকে উঠতে হবে, সে সময়টি কফি মেকারে নির্দিষ্ট করে দিন।

** নেটফ্লিক্স বা ইন্সটাগ্রাম বা টুইটার ব্যবহার রাতে ঘুমের আগের নেশা হয়ে গেছে অনেকের। ডিজিটাল পর্দার ব্লু লাইট মস্তিষ্ককে উত্তেজিত করে দেয়। এতে ঘুম নষ্ট হয়। এই আলো দেহে মেলাটোনিন হরমোনের ক্ষরণ রোধ করে। এই হরমোন দেহকে প্রশান্তি আনে ও ঘুমের জন্যে প্রস্তুত করে।

** কুয়োরাতে আরেকটি বুদ্ধি দিয়েছেন এক ব্যবহারকারী। বিছানায় ওঠার আগে এক গ্লাস পানি গিলে ফেলবেন। এতে ঠিক সকালে মূত্র ত্যাগের জন্যে উঠতেই হবে। ধরুন রাতে ৩০০ মিলিলিটার পানি খেয়ে বিছানায় গেলে সকাল ৬টায় ঘুম থেকে উঠতেই হবে।

প‌রি‌শে‌ষে বলা যায়, যে কোন অভ্যাস গ‌ড়ে তুল‌তে ধারাবা‌হিকতার বিকল্প নেই। তাই সাতসকা‌লে ঘুম থে‌কে উঠ‌তে ধারাবা‌হিকতা ধ‌রে রাখ‌তে হ‌বে। এছাড়াও নি‌জের দৃঢ় ইচ্ছাশ‌ক্তির সফল প্রয়োগ ঘটা‌নোর সামর্থ থাক‌তে হ‌বে।

^
^
কিভা‌বে তারাতা‌রি ঘুম থে‌কে ওঠা যায় ? ভো‌রে ঘুম থে‌কে ওঠার উপায়, সকা‌লে ওঠার কার্যকর পরামর্শ, সকাল, ভোর, ঘুম, কিভা‌বে সকা‌লে ঘুম থে‌কে ওঠা যায় ? উঠা

No comments:

Post a Comment