দুধ শিশু সন্তানের জন্য সবচেয়ে ভালো ও সুষম খাবার। মায়ের দুধে নবজাতকের জন্য সব ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকায় শিশুর অন্য খাবার প্রয়োজন হয় না। এ বিষয়ে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসারে নবজাতককে প্রথম ছয় মাস শুধু মায়ের দুধ খাওয়ালেই চলে। তবে বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গেও অন্যান্য খাবারের সঙ্গে মায়ের দুধ চালানো উচিত দুই বছর বয়স পর্যন্ত।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মায়ের দুধ শিশুর জন্য সবচেয়ে পুষ্টিকর খাবার। শিশু জন্মের পরেই তাকে খাওয়ানো উচিত মায়ের শালদুধ। এটি অনেকটা হালকা হলুদ বর্ণের বা বর্ণহীন হয়ে থাকে। এটি শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধিসহ নানা উপকার করে।
মায়ের দুধের বদলে শিশুকে সাধারণত বাইরের খাবার দেওয়ার প্রয়োজন হয় না। মায়ের দুধের ফ্যাটি অ্যাসিড তার মস্তিষ্ক বিকাশে সহায়তা করে। মায়ের দুধ শিশুকে বেশ কিছু রোগের হাত থেকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজনীয় প্রতিরোধক্ষমতা অর্জনে সহায়তা করে। এ কারণে মায়ের দুধ খাওয়া শিশুরা সংক্রমণ, ডায়রিয়া, অ্যাজমা, স্থূলতা ও অ্যালার্জিতে কম আক্রান্ত নয়।
মায়ের দুধের অ্যান্টিবডি শিশুর রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা অর্জনের পাশাপাশি বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কাও কমিয়ে দেয়। এ কারণে মায়ের দুধ খাওয়া শিশুদের হঠাৎ মৃত্যুর আশঙ্কা কমে যায়।
যে মা তাঁর শিশুকে বুকের দুধ পান করান সেই মায়ের জরায়ু, স্তন ও ডিম্বাশয়ের ক্যানসারের ঝুঁকি কমে যায়৷ তাছাড়া দুধ খাওয়ানোর মধ্য দিয়ে সন্তান ও মায়ের মধ্যে তৈরি হয় এক নিবিড় সম্পর্ক৷
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মায়ের দুধ শিশুদের শরীরে ম্যাজিকের মতো কাজ করে৷ শিশুর জন্মের প্রথম সপ্তাহে মায়ের দুধ পান করলে তা বাচ্চাকে অন্ত্র সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে এবং হজম করতে ও দুধ পান করার সময় পেটে বাতাস জমা থেকে রেহাই পেতেও সহায়তা করে৷ তাছাড়া মায়ের দুধ পান করার কারণে শিশুর মুখের তালু এবং মাড়ি শক্ত হয়৷
মায়ের দুধ যখন নিষিদ্ধ
মায়ের কিছু শারীরিক সমস্যায় সন্তানকে স্তন্য পান করাতে পারেন না। এক্ষেত্রে স্তন্য ক্যানসার একটি কারণ। মায়ের স্তন ক্যান্সার হলে তা যেন শিশুর কোনো ক্ষতি না করে সেজন্য শিশুকে দুধ প্রদান করতে নিষেধ করা হয়। এছাড়া আরেকটি জটিলতা তৈরি হয় মায়ের এইচআইভি সংক্রমণ থাকলে। এক্ষেত্রে শিশুকে কোনোভাবেই স্তন্য পান করানো উচিত নয়। এটি শিশুকেও এইচআইভি আক্রান্ত করে তুলতে পারে। এছাড়া বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মায়ের কেমোথেরাপি দেওয়া হলেও শিশুকে স্তন্য পান করানো বিপজ্জনক হতে পারে। তাই এসব ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে সঠিক উপায়টি জেনে নিতে হবে।
#breast-feeding-and-child
No comments:
Post a Comment