১৪৭৯ জন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা চেয়ে বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। অনলাইনে আবেদনের শেষ তারিখ ৩০ জুন। কর্মস্থল হবে দেশের যেকোনো ইউনিয়ন পরিষদ বা উপজেলা।
আবেদনের যোগ্যতা ও বেতন
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিভাগীয় বাছাই কমিটির সদস্যসচিব মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে আবেদনের জন্য স্বীকৃত ইনস্টিটিউট থেকে কৃষি বিজ্ঞানে চার বছরমেয়াদি ডিপ্লোমা থাকতে হবে। বাংলাদেশের নাগরিক হতে হবে। ৩১ মে ২০১৬ তারিখে সাধারণ কোটার প্রার্থীদের বয়স থাকতে হবে ১৮ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে। মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের সন্তান ও প্রতিবন্ধী প্রার্থীদের বয়সসীমা ১৮ থেকে ৩২ বছর। তবে মুক্তিযোদ্ধা/শহীদ মুক্তিযোদ্ধাদের ছেলেমেয়ের সন্তানদের বয়সসীমা ১৮ থেকে ৩০ বছর। উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তারা ২০১৫ সালের বেতন কাঠামোতে ১২৫০০-৩০২৩০ টাকা স্কেলে বেতন পাবেন। এ ছাড়া পাবেন নির্ধারিত যাতায়াত ভাতা।
আবেদনের সময়সীমা
অনলাইনে আবেদন ফরম পূরণ ও সাবমিট করতে হবে। আবেদন প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছে, চলবে ৩০ জুন সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত। আবেদন জমা দেওয়ার পর মোবাইলে একটি পিন কোড বা ইউজার আইডি আসবে। ইউজার আইডি পাওয়ার পর ৩ জুলাই সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত এসএমএসের মাধ্যমে ফি জমা দেওয়া যাবে। টেলিটক নম্বর থেকে ১৬২২২ নম্বরে এসএমএসের মাধ্যমে নিয়োগ পরীক্ষার ফি বাবদ ১১২ টাকা পরিশোধ করতে হবে।
আবেদন পদ্ধতি
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, অনলাইনে আবেদন ফরম পাওয়া যাবে টেলিটকের ওয়েবসাইট (http:/dae.teletalk.com.bd) এবং কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের ওয়েরসাইটে (www.dae.gov.bd)। ওয়েবসাইটে তিনটি অপশন আসবে—নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, অনলাইনে আবেদনপত্র পূরণের নির্দেশনাবলি এবং আবেদন ফরমের (Application form) লিংক। Application form-এর লিংকে ক্লিক করলে দেখা যাবে Sub Assistant Agriculture Officer বাটন। এটি সিলেক্ট করে ঘবীঃ বাটনে ক্লিক করলে Application form পাতায় প্রবেশ করা যাবে। ফরমে লাল তারকা চিহ্নিত ঘরগুলো অবশ্যই পূরণ করতে হবে। আপলোড করতে হবে জেপিজি/জেপিইজি ফরম্যাটের 300×300 পিক্সেলের রঙিন ছবি ও 300×80 পিক্সেলের স্ক্যান করা জেপিজি/জেপিইজি ফরম্যাটের প্রার্থীর স্বাক্ষর। আবেদন করার আগে দেখে নিতে হবে আবেদন ফরম পূরণের নির্দেশনা।
কোটা অনুসারে নিয়োগ
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পরিচালক এবং উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা বিভাগীয় বাছাই কমিটির সভাপতি মঞ্জুরুল হান্নান জানান, নিয়োগের ক্ষেত্রে সরকারি কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করা হবে। জেলা অনুসারে সাধারণ কোটা, মুক্তিযোদ্ধা কোটা, আনসার, উপজাতি, প্রতিবন্ধীসহ অন্যান্য কোটায় প্রার্থীদের নিয়োগ করা হবে। রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি ও বান্দরবান পার্বত্য জেলার প্রার্থীরা কোটায় শূন্য পদ না থাকায় আবেদন করতে পারবে না। মানিকগঞ্জ, শেরপুর, নাটোর, বগুড়া, গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, মেহেরপুর, নড়াইল, ঝালকাঠি, পিরোজপুর, ফরিদপুর ও রাজবাড়ী ব্যতীত অন্য সব জেলার প্রার্থীরা আবেদন করতে পারবে। তবে সব জেলার এতিমখানা নিবাসী ও প্রতিবন্ধীরা আবেদন করতে পারবে।
পরীক্ষা পদ্ধতি
কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, প্রার্থী নির্বাচনে দুই ধরনের পরীক্ষা নিয়ে থাকে নিয়োগ কর্তৃপক্ষ। আবেদনপত্র যাচাই-বাছাই শেষে ওয়েবসাইটে যোগ্য প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করবে অধিদপ্তর। পরবর্তী সময়ে ওয়েবসাইট থেকে ইউজার আইডি ও পাসওয়ার্ড ব্যবহার করে প্রবেশপত্র ডাউনলোড করতে বলা হবে। প্রবেশপত্রে পরীক্ষার তারিখ, সময় ও স্থান উল্লেখ থাকবে। প্রবেশপত্র ডাউনলোড বা প্রিন্ট করার নির্ধারিত সময়সীমা অনলাইন নোটিশ এবং এসএমএসের মাধ্যমে জানানো হবে।
লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষা
মোয়াজ্জেম হোসেন জানান, প্রথমে বসতে হবে এমসিকিউ পদ্ধতিতে লিখিত পরীক্ষায়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট অব বিজনেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশনের (আইবিএ) মাধ্যমে পরীক্ষা নেওয়া হয়। পরীক্ষার মোট নম্বর ১০০। ৭০ নম্বরের ১ ঘণ্টার লিখিত পরীক্ষা নেওয়া হয়। বাকি ৩০ নম্বরের মধ্যে ভাইভা ২০ নম্বর ও ১০ নম্বর বরাদ্দ থাকে শিক্ষাগত যোগ্যতার ওপর। লিখিত পরীক্ষার ফল প্রকাশের পর উত্তীর্ণ প্রার্থীদের প্রয়োজনীয় কাগজপত্র অনলাইনে জমা দিতে বলা হবে। লিখিত পরীক্ষায় উত্তীর্ণদের বসতে হয় মৌখিক বা ভাইভা বোর্ডে। মৌখিক পরীক্ষা নিয়ে থাকে নিয়োগ কর্তৃপক্ষ। লিখিত ও মৌখিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীদের তালিকা প্রকাশ করা হয় ওয়েবসাইটে।
পরীক্ষা প্রস্তুতি
কুষ্টিয়ার মিরপুর উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুল আলীম সুমন জানান, ৭০ নম্বরের এমসিকিউ পরীক্ষায় মোট ১০০টি প্রশ্ন থাকবে। ৩৫ নম্বরের কৃষিবিষয়ক প্রশ্ন থাকে ৫০টি। পাঠ্য বই থেকেই করা হয় সব প্রশ্ন। ফসলের রোগবালাই, পোকামাকড় দমন, মাঠ-ফসলের চাষাবাদ, উদ্যান-ফসলের চাষাবাদ, সবজি চাষ, উদ্ভিদ, পুষ্টি, সারব্যবস্থাপনা—এসব বিষয়ে বেশি প্রশ্ন করা হয়।
বাংলা, সাধারণ গণিত, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে ৩৫ নম্বরের ৫০টি প্রশ্ন থাকে। বাংলায় ব্যাকরণ ও সাহিত্য থেকে প্রশ্ন করা হয়। ইংরেজি বিষয়েও গ্রামার অংশ থেকে প্রশ্ন আসে। সাধারণ গণিতে সপ্তম, অষ্টম শ্রেণির বইগুলোর অঙ্ক দেওয়া হয়। বিশেষ করে পাটিগণিত অংশের অঙ্কগুলোই বেশি দেওয়া হয়।
মৌখিক পরীক্ষায় সংশ্লিষ্ট কৃষিবিষয়ক ডিপ্লোমা কোর্সের প্রশ্ন করা হয়। প্রশ্ন করা হয় সামপ্রতিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক বিষয় জানতে পড়তে হবে নতুন সংস্করণের আজকের বিশ্ব, জ্ঞানকোষ, তথ্যভাণ্ডারসহ বিভিন্ন সাধারণ জ্ঞানের বই এবং মাসিক কারেন্ট অ্যাফেয়ার্স, কারেন্ট ওয়ার্ল্ড, কারেন্ট নিউজসহ বিভিন্ন সাধারণ জ্ঞানবিষয়ক মাসিক। পত্রিকার পাতায় প্রতিদিনের নিত্যনতুন তথ্য পাওয়া যায়। তাই চোখ রাখতে হবে জাতীয় দৈনিকগুলোতে।
পরীক্ষায় ভালো করার উপায়
চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা তৌহিদুল ইসলাম এবং একই উপজেলার শাহবাজপুর ইউনিয়নের উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আসাদুজ্জামান জানান, সবচেয়ে বেশি জোর দিতে হবে পাঠ্য বইয়ে। এমসিকিউ পরীক্ষায় ভালো করার জন্য ডিপ্লোমা কোর্সের বইগুলো সবচেয়ে বেশি সহায়ক। বাজারে এ পদের নিয়োগ গাইড পাওয়া যায়। বিগত বছরের প্রশ্ন পাওয়া যাবে এসব বইয়ে। বিগত বছরের প্রশ্ন দেখলে প্রশ্নের ধরন সম্পর্কে ভালো ধারণা পাওয়া যায়, প্রস্তুতিতেও অনেক কাজে আসে।
© dailyKalerkantho
^
^
উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা নিয়োগ, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা পদে নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি, সরকারি নিয়োগ ।
No comments:
Post a Comment