রোজার বিস্ময়কর উপকারিতা সম্পর্কে আজ আমি এমন কিছু কথা বলার চেষ্টা করব, যা সচরাচর উচ্চারিত হয় না। আমাদের শরীরের ভেতরে তিনটি জিনিস প্রায় সব সময় পরস্পরের সাথে ঝগড়াবিবাদ করতে থাকে। আমাদের মস্তিষ্ক ও বিবেক, মন ও শারীরিক চাহিদা প্রায় সব ক্ষেত্রেই একে অপরের সাথে প্রতিনিয়ত ঐকমত্য পোষণ করতে পারে না।
ধরুন আপনার বুদ্ধি বলল- ডানে যাও। বিবেক বলল- যাওয়া ঠিক হবে না। মন বলল- সখিনাদের বাড়িতে চলো। শরীর বলল- একটু বিশ্রাম দরকার। পেট বলল- কলা খাবো, চোখ বলল- টিয়া পাখি দেখব, অন্য দিকে কান বলল- আমি রবীন্দ্রসঙ্গীত শুনব, এসব কথা শুনে জিহ্বা বলল- আমিই বা বসে থাকব কোন, আমার চাই তরতাজা খাসির গোশতের রেজালা এবং মচমচে গরম গরম ঘিয়ে ভাজা পরোটা এবং ফরিদপুরের টসটসে রসগোল্লা।
মানব মন-মস্তিষ্ক ও শরীরের পরস্পরবিরোধী অবস্থানের তীব্রতার কারণে আমাদের কোষগুলো অধিকহারে মরে যায়- চিন্তাশক্তি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং আমরা এক সময় বার্ধক্যের কবলে পড়ি ও মৃত্যুর দিকে এগিয়ে যাই।
আপনারা জেনে অবাক হবেন, শরীর, মন ও মস্তিষ্কের এই ত্রিমুখী লড়াইয়ের একটি বিরাট অংশ রোজাদারদের আক্রমণ করতে পারে না।
রোজা ইসলামের গুরুত্বপূর্ণ ইবাদতগুলোর মধ্যে অন্যতম। অন্য দিকে, রমজান মাসে রোজা রাখা মুসলমানদের জন্য ফরজ করা হয়েছে। বিভিন্ন কারণে রমজান মাসটিকে ইসলাম ধর্মে অতীব গুরুত্বপূর্ণ এবং পবিত্রময় বলে ঘোষণা করা হয়েছে। এই মাসের প্রকৃতি, পরিবেশ এবং সব ফরজ ও নফল ইবাদতের মান-মর্যাদা বছরের অন্য মাস থেকে সম্পূর্ণ আলাদা বৈশিষ্ট্যের অধিকারী।
পবিত্র আল কুরআনের তাফসিরকারকেরা এবং বিশ্ব বিখ্যাত মুহাদ্দিসেরা পবিত্র মাহে রমজানের বহুমুখী বরকত, রহমত এবং গুনাহ মুক্তি অর্থাৎ মাগফিরাতের হাজারো ফজিলত বর্ণনা করেছেন। এই পবিত্র মাসে জান্নাতের দরজা খোলা থাকে, জাহান্নামের দরজা বন্ধ থাকে, বান্দার গুনাহমুক্তি এবং পুণ্যকর্মের মহাসুযোগ সৃষ্টি হয়। দুনিয়া ও আখেরাতের মহাসাফল্য ইত্যাদি বিষয়ে অসংখ্য ওয়াজ-নসিহত চৌদ্দ শ’ বছর ধরে চলে আসছে বলে মুসলমানেরা কম-বেশি সবাই তা জানেন। কাজেই আমি ওসব প্রসঙ্গে না গিয়ে ভিন্নতর উপায়ে রোজার ফজিলত বর্ণনার চেষ্টা করব।
শিরোনামের প্রথমেই বলা হয়েছে- রোজা কেন রাখবেন। এরপর বলা হয়েছে, কখন এবং কিভাবে রাখবেন। ইসলামের বিধান মতে, সুবহে সাদিকের আগে পানাহার শেষ করে সারা দিন অভুক্ত থেকে সূর্যাস্তের ঠিক পরক্ষণেই ইফতারের অছিলায় খাদ্য ও পানীয় গ্রহণের মাধ্যমে একজন মুমিন তার রোজার প্রাথমিক শর্তটি পূর্ণ করেন।
পানাহারমুক্ত অভুক্ত জীবনযাপনের বাইরে একজন রোজাদারকে আরো অনেক শর্ত পালন করতে হয়। কম কথা বলা, অন্যের অনিষ্ট চিন্তা না করা, ভালো ভালো কর্ম এবং সুচিন্তার অনুশীলন রোজার অন্যতম শর্ত। যুদ্ধবিগ্রহ, ঝগড়া, ফাসাদ, মিথ্যাচার, অনাচার, ব্যভিচারসহ যাবতীয় কুকর্ম থেকে নিজেকে যদি রোজদার নিবৃত করতে না পারেন, তাহলে তার রোজা কবুল হবে না। রোজাদার পুরুষ ও মহিলারা রোজা অবস্থায় শরিয়তের কিছু হালাল ও বৈধ কর্মও করতে পারবেন না। এর বাইরে রাগ না হওয়া, উত্তেজিত না হওয়া, মন্দ সংসর্গ ত্যাগ করা, অধিক পরিশ্রম, অধিক নিদ্রা, অধিক বিশ্রাম ইত্যাদি নানাবিধ কারণ রয়েছে, যার ফলে রোজা ভঙ্গ হয়ে যেতে পারে। আজকের নিবন্ধে আমি এসব বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনায় যাবো না।
নিবন্ধের শুরুতে বলেছিলাম রোজার বিস্ময়কর উপকারিতা সম্পর্কে। আপনি যদি একজন সুস্থ ও সবল মানুষ হন তবে জেনে নিন রোজার ফলে আপনার শরীর, মন, মস্তিষ্ক ও আত্মার কী কী উপকার হতে পারে।
প্রথমে শরীর সম্পর্কে বলি। আপনারা অনেকেই জানেন, দিনের মধ্যে আপনার পুরো শরীর প্রাকৃতিক নিয়মে বেশ কয়েকবার একটু মোটাসোটা ও ভারী হয়ে যায়। আবার কিছুক্ষণ পর শরীরটা যেমন চিকন হয়ে পড়ে তেমনি কিছুটা ওজনও হারায়। শরীরের এই প্রসারণ-সঙ্কোচন প্রক্রিয়াটি যত সুন্দর ও সুচারু রূপে হবে, ততই মঙ্গলজনক। আপনার শরীরের প্রতিটি কোষ প্রকৃতি থেকে জলীয়বাষ্প টেনে নিয়ে একবার মোটাতাজা হয় এবং পরে তা নিঃসরণ করে চিকন হয়ে যায়। যে কোষটি যত বেশি মোটা এবং যত বেশি চিকন হওয়ার সামর্থ্য রাখে, সেটি আপনার শরীরের জন্য তত বেশি উপকারী বস্তু হিসেবে নিজে বেঁচে থাকে এবং আপনাকে বেঁচে থাকতে সাহায্য করে। কোনো কোষ যদি মোটা ও চিকন হওয়ার শক্তি হারিয়ে ফেলে তবে সেটি মরে যায় এবং আপনাকেও মৃত্যুর দিকে টানতে আরম্ভ করে। রোজাদার অবস্থায় একজন মানুষের শরীরের কোষগুলো যেমন সর্বোচ্চ পর্যায়ে শরীরের পানি নিঃসরণ করে নিজেকে চিকন বানিয়ে ফেলে ঠিক তেমনি ইফতারের পর কোষগুলো সর্বাধিক স্ফীত আকার ধারণ করে।
আমাদের অজান্তে শরীরের একেকটি অঙ্গপ্রত্যঙ্গ মস্তিষ্কের কাছে নিজেদের অভাব-অভিযোগ এবং প্রয়োজনের চাহিদাপত্র পাঠায়। মস্তিষ্ক পরিবেশ-প্রতিবেশ অনুযায়ী সেসব চাহিদাপত্র নিষ্পত্তি করে। এগুলোকে বলা হয় ‘অটো সাজেশন’। আপনার শরীর ও মস্তিষ্কের মধ্যে যত বেশি অটো সাজেশনের লেনদেন হবে আপনি ততই সুন্দর, সুস্থ সবল দেহ ও মনের অধিকারী হয়ে উঠবেন। রোজাদার ব্যক্তির শরীরে এত বেশি অটো সাজেশনের লেনদেন শুরু হয়ে যায়, যা আধুনিক বিজ্ঞানকে পর্যন্ত চমকিত করে দিয়েছে।
রোজাদারের শরীর তার মস্তিষ্কের কাছে কাজ করার জন্য শক্তি চেয়ে আবেদন করে। মস্তিষ্ক তখন শরীরের বিভিন্ন স্থানে জমে থাকা চর্বিকে পুড়িয়ে শক্তি উৎপন্ন করার পরামর্শ দেয়। বিজ্ঞান প্রমাণ করেছে, মস্তিষ্কের পরামর্শে শরীরের প্রয়োজনে প্রতি ঘণ্টায় যে পরিমাণ চর্বি ঝরানো সম্ভব, তা যদি ব্যায়াম অথবা কায়িক পরিশ্রম করে ঝরাতে হতো, তবে সময় লাগত কমপক্ষে পঁচিশ গুণ বেশি। তা ছাড়া রোজার ফলে শরীরের এমন সব দুর্ভেদ্য ও স্পর্শকাতর স্থানের চর্বি ঝরে পড়ে, যা কিনা ব্যায়াম বা পরিশ্রম করে সম্ভব নয়। এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে অপারেশনের মাধ্যমেও সেইসব চর্বি অপসারণ সম্ভব নয়।
রোজার ফলে আপনার শরীরের পরিপাকতন্ত্র সবল ও সতেজ হয়ে অধিকতর কার্যক্ষম হয়ে ওঠে। কারো যদি হজমে গণ্ডগোল থাকে এবং মলত্যাগে সমস্যা হয়, তবে রোজার চেয়ে উত্তম চিকিৎসা আর কিছুই হতে পারে না। রোজাদারের পাকস্থলী সারা দিন বিশ্রামে থাকার সুযোগ পায়। অন্য দিকে রেচনতন্ত্রে এমন কতগুলো রাসায়নিক ক্রিয়া-বিক্রিয়া শুরু হয়, যা কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে এবং প্যানক্রিয়াসে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনাগুলো নিঃসরণ করে দেয়। ফলে শরীর তুলনামূলকভাবে শীতল হয়, ত্বক মসৃণ ও উজ্জ্বল হয় এবং মনমানসিকতায় একধরনের প্রশান্তি চলে আসে।
রোজার ফলে শরীরের ওজন কমে যায়। শরীরের জমে থাকা চর্বির স্তরকে রোজাদারের শরীর শর্করার পরিবর্তে প্রাথমিক শক্তির উৎস হিসেবে ব্যবহার করে। এটি একটি নিখুঁত ও সুষম মহাজাগতিক বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া, যা মানুষের আবিষ্কৃত বিজ্ঞান দিয়ে সম্ভব নয়। ফলে আধুনিককালের শ্রেষ্ঠ ক্রীড়াবিদেরা নিজেদের শরীরকে মেদমুক্ত রাখার জন্য নিয়মিত উপবাস করেন।
রোজার কারণে শরীরে ইনসুলিনের মাত্রা নিয়ন্ত্রিত থাকে। শরীরের ইনসুলিনের ক্রিয়া-বিক্রিয়ায় সমতা আনে। রোজাদারের শরীর চিনিসহ অন্যান্য শর্করাজাতীয় খাদ্য (কার্ব হাইড্রেড) এমনভাবে গ্রহণ করে, যেমনটি অরোজাদারের শরীর পারে না। নিয়মিত রোজা রাখার ফলে শরীরের এমন অটো সাজেশনের সৃষ্টি হয় যখন কোষগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে রক্ত থেকে প্রয়োজনীয় গ্লুকোজ টেনে নিয়ে যায়। ফলে রোজাদারের ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক কমে যায়।
রোজা মানুষকে দীর্ঘজীবী করে। আপনি বিশ্বাস করুন অথবা না-ই করুন বিজ্ঞান কিন্তু ঠিকই প্রমাণ করে ছেড়েছে যে মানুষের জীবন খাদ্যাভ্যাসের ওপর নির্ভরশীল। আপনি যত কম খাবেন, আপনার পরিপাকতন্ত্র ততই সুস্থ থাকবে। আর সুস্থ পরিপাকতন্ত্র আপনার খাদ্য থেকে প্রয়োজনীয় প্রাণরস নিখুঁতভাবে আলাদা করা এবং পরবর্তী সময়ে তা সংরক্ষণ এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে বিতরণের মাধ্যমে আপনাকে ধরাধামে দীর্ঘ দিন বেঁচে থাকার সুযোগ করে দেবে। এ কারণেই আধুনিক চিকিৎসা বিজ্ঞানের স্লোগান হলো- আপনি যত কম খাবেন ততই দীর্ঘজীবী হবেন।
রোজা আপনার ক্ষুধার পরিমাণ বাড়ায়। ক্ষুধার গুণগত মানও রোজার কারণে সৃষ্টি হয়ে যায়। আমাদের অতিভোজনের মূল কারণ অপ্রয়োজনীয় ক্ষুধা, যাকে আমরা গ্রামবাংলায় ঠাট্টা করে চোখের ক্ষুধা বলে থাকি। দৈনিক বহুবার খাবার খাওয়া অথবা ৩-৪ ঘণ্টা পর পর খাবার খেলে এক দিকে যেমন ক্ষুধা সৃষ্টি হয় না, তেমনি ক্ষুধাহীন অবস্থায় কোনো খাদ্যের স্বাদ পরিপূর্ণভাবে গ্রহণ করা সম্ভব হয় না।
রোজার সময় মানুষের শরীর থেকে একধরনের হরমোন নিঃসৃত হয়, যা তাকে সত্যিকার অর্থে ক্ষুধার্ত করে তোলে এবং শরীর-মনকে ক্ষুধার মর্ম অনুধাবন করতে বাধ্য করে। ক্ষুধার্তের শরীর যেকোনো খাদ্য সহজে গ্রহণ করতে পারে এবং ক্ষুধা নিবৃত্তির পর শরীর ও মনে একধরনের অনাবিল প্রশান্তি সৃষ্টি হয়ে যায়। যাদের ক্ষুধামন্দা রোগ আছে অথবা খাদ্যে অরুচি রয়েছে, তাদের জন্য রোজা হলো এক মহাবিস্ময়কর মহৌষধ।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়াতে রোজা ব্যাপক ভূমিকা রাখে। রোজাদারের মস্তিষ্কে একধরনের প্রোটিন সৃষ্টি হয়, যার নাম বিডিএনএফ (ব্রেইন-ডেরাইভড নিউরোট্রফিক ফ্যাক্টর)। বিডিএনএফ মস্তিষ্ককে সচল এবং অধিক মাত্রায় সচেতন ও সক্ষম করে তোলে। মানুষের মস্তিষ্কের চিন্তাভাবনার এককটির নাম নিউরন। বিডিএনএফ নতুন নতুন নিউরন সৃষ্টি করে এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় রাসায়নিক উৎপন্ন করে, যা মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। এর ফলে মানুষ মস্তিষ্কসংক্রান্ত দু’টি মারাত্মক রোগ আলঝেইমার ও পারকিনসন থেকে নিজেদের হেফাজত করতে পারে।
রোজা মানুষের শরীরের স্বাভাবিক রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়। রোজাদারের শরীরে ক্যান্সার বাসা বাঁধতে পারে না। শরীরের ভেতরে যে ক্ষতগুলো সৃষ্টি হয় তা রোজাকালীন সময়ে সেরে ওঠে। প্রকৃতির দিকে লক্ষ করলে আমরা দেখতে পাই, কোনো পশু বা পাখি রোগাক্রান্ত হলে খাওয়া-দাওয়া বন্ধ করে অধিক হারে বিশ্রাম গ্রহণ করে। এভাবে তারা শরীরকে এমনভাবে রিলাক্স মুডে নিয়ে যায়, যার ফলে শরীর তার ভেতরের রোগবালাইয়ের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে জয়ী হওয়ার সক্ষমতা পেয়ে যায়।
রোজা মানুষের আত্ম-উন্নয়ন, অন্যের দুঃখ-যাতনা বুঝতে পারার ক্ষমতা সৃষ্টি করা, কোনো কিছুতে একাগ্রচিত্তে মনোনিবেশ করা, নিজেকে চেনা এবং মানবিক মূল্যবোধকে হৃদয়ে ধারণ করার সুযোগ দেয়। ইফতারের সময় মানুষ যে অপার্থিব আনন্দ এবং প্রশান্তি লাভ করে, তা কেবল রোজাদারই অনুধাবন করতে পারেন। রোজাদারদের গায়ের রঙ দিনদিন উজ্জ্বল হতে থাকে। তাদের মুখমণ্ডলের কালো দাগ, ব্রণ, ফোসকাজাতীয় ক্ষতসহ অন্যান্য চর্মরোগ দূরীভূত হয়। শরীরের ভেতরে জমে থাকা ময়লা-আবর্জনা বের হয়ে যায়। লিভার, কিডনিসহ অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ রোজার সময়ে অধিকতর কার্যক্ষমতা লাভ করে। এ অবস্থায় কেউ যদি প্রশ্ন করেন- কেন রোজা রাখবেন, তাহলে আজকের নিবন্ধের পাঠকেরা নিশ্চয়ই সুন্দর একটি জবাব দিতে ভুল করবেন না।
এবার শিরোনামের দ্বিতীয় অংশ নিয়ে আলোচনা করা যাক। কখন এবং কিভাবে রোজা রাখবেন। সব সুস্থ ও সবল মানুষকে অবশ্যই পবিত্র মাহে রমজানের পুরোটা সময় রোজা রাখতে হবে। দ্বীনদার মুমিন ও মুত্তাকিরা রমজানের পূর্ববর্তী শাবান মাসে একাধিক নফল রোজা রাখেন এবং রমজান-পরবর্তী শাওয়াল মাসেও ছয়টি রোজা রাখেন। এ ছাড়া মহররম, জিলহজ ও রজব মাসেও অনেকে নফল রোজা রাখেন। রাসূল সা: সপ্তাহে দুই দিন রোজা রাখতেন বলে অনেক মুহাদ্দিস উল্লেখ করেছেন। ওলি আল্লাহ, গাউস-কুতুবদের অনেকে নিজের জন্মদিন এবং রাসূল সা:-এর জন্মদিন উপলক্ষে সপ্তাহে দুই দিন রোজা রেখে দুনিয়া ও আখেরাতের কামিয়াবি হাসিল করেছেন বলে ইসলামি বইপুস্তকে উল্লেখ রয়েছে।
একটি বিষয় এখানে আবারো উল্লেখ করা প্রয়োজন আর তা হলো- রোজা সুস্থ ও সবল মানুষের জন্য ফরজ। রোজার রূহানি ফজিলত, রহমত ও বরকত প্রাপ্তির জন্য ধর্মীয় বিধিবিধান পালন অত্যাবশ্যক। অসুস্থ কিংবা রোগাক্রান্ত মানুষের উচিত ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক রোজা রাখা। নিজের জীবন ও শরীরকে বিপন্ন করে রোজার ফরজ আদায় একধরনের বাড়াবাড়ি যা কোনোভাবেই ইসলাম সমর্থন করে না।
পরিশেষে মহান আল্লাহ আমাদের সবাইকে সহি ও শুদ্ধভাবে রোজা পালন এবং মাহে রমজানের অশেষ রহমত ও বরকত হাসিল করার তৌফিক এনায়েত করুন, এই প্রার্থনা করে আজকের প্রসঙ্গের ইতি টানছি।
আমিন।
লিখেছেন_ © গোলাম মাওলা রনি
@ রোজা কেন রাখবেন! রোজা কখন রাখবেন, রোজা কিভাবে রাখবেন ! রোজার মহাত্ব; রোযা । রোজার ফরজ, উপকারীতা, রোজার সুফল
No comments:
Post a Comment