যেসব প‌ণ্যের দাম আরও বাড়বে

আগামী অর্থবছরের (২০১৬-১৭) জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত বেশ কিছু পণ্যের ওপর কর বা শুল্কহার বাড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এর ফলে এসব পণ্যের দাম বেড়ে যেতে পারে। দাম বাড়ার তালিকায় উল্লেখযোগ্য হলোÑ বিড়ি, সিগারেট, তামাকজাত পণ্য, নির্মাণসামগ্রী যেমন- পাথর, রড, মোবাইল সেবা, বৈদ্যুতিকসামগ্রী, রাসায়নিক পণ্য, সুগন্ধি, ওয়াশিং মেশিন, এসি, বাস ও লরির টায়ার, বায়োমেট্রিক স্ক্যানার, ইউপিএস, আইপিএস, ট্রান্সফরমার, মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকের আমদানি করা বই, কাগজ ও কাগজজাত পণ্য, অপটিক্যাল ফাইবার ও মশা মারার ব্যাট, হোটেল নির্মাণ যন্ত্রাংশ, আমদানি করা চাল ইত্যাদি পণ্যের দাম
বাড়ছে।

তামাক পণ্য : জনস্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে প্রস্তাবিত বাজেটে হাতে তৈরি বিড়ি ও অযান্ত্রিক পদ্ধতিতে তৈরি বিড়ির ওপর সম্পূরক শুল্ক ১০০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৫০ শতাংশ আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। একই সাথে অন্যান্য তামাকজাত পণ্যের ওপর সম্পূরক শুল্ক বাড়িয়ে ১০০ শতাংশ থেকে ১৫০ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে বিড়িসহ সব ধরনের তামাকতাজ পণ্যের দাম বাড়তে পারে।

মোবাইল সেবা : মোবাইল ফোনের সিম ব্যবহার করে কথা বলাসহ অন্যান্য সেবার ওপর সম্পূরক শুল্ক ৩ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। ফলে মোবাইল ফোন গ্রাহকদের ব্যয় বাড়বে।

ওয়াশিং মেশিন : প্রস্তাবিত বাজেটে গৃহস্থালীতে ব্যবহার উপযোগী ওয়াশিং মেশিনের ওপর আমদানি শুল্ক ১ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে এ পণ্যটির দাম বাড়তে পারে।

নির্মাণ সামগ্রী : প্রস্তাবিত বাজেটে নির্মাণ সামগ্রীর ওপর নতুনভাবে শুল্ক আরোপ ও বিদ্যমান শুল্ক বাড়ানো হয়েছে। যেমন- নুড়ি পাথরে আগে শুল্কমুক্ত ছিল। প্রস্তাবিত বাজেটে নুড়ি পাথরের ওপর নতুন করে ১০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা হয়েছে। পাশাপাশি ভাঙা বা চূর্ণ পাথরের ওপর ২০ শতাংশ থেকে শুল্ক বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করা করা হয়েছে। এ ছাড়া সব ধরনের রড, কাঠের কয়লা, লোহা ও স্টিলের ওপর নতুন করে ২০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে। এ ছাড়া ফেরো অ্যালয়, বিলেট, বার রড, অ্যাঙ্গেল, ফ্লই অ্যাশের শুল্ক বাড়ানো হয়েছে।
সুগন্ধি : সুগন্ধির ওপর ২০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ হারে শুল্ক আরোপের প্রস্তাব করায় সুগন্ধির দাম বাড়বে।
ওষুধ : আগামী অর্থবছরের বাজেটে ওষুধ শিল্পের কাঁচামালের ওপর আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করার প্রস্তাব করায় ওষুধের দাম বাড়বে।
আমদানি করা বই : আগামী অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে আমদানি করা প্রাইমারি ও সেকেন্ডারি শিক্ষার পাঠ্য বাইয়ের ওপর আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়েছে। একই সঙ্গে শিশুদের ছবি, অঙ্কন ও রঙিন বইয়ের ওপর আমদানি শুল্ক ৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করা প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে এসব বইয়ের দাম বাড়বে।
বৈদ্যুতিক সামগ্রী : ল্যাম্পহোল্ডার, অপটিকাল ফাইবার, তার ও অন্যান্য যন্ত্রাপাতির ওপর নতুন করে ১০ শতাংশ হারে সম্পূরক শুল্ক আরোপ করার বৈদ্যুতিক সামগ্রীর দাম বাড়বে।
রাসায়নিক পণ্য : টেলকাম পাউডার, ইসিজি ও আল্ট্রাসাউন্ড পেপার, পাল্পের তৈরি ফিল্টার ব্লকস-এর শুল্ক বাড়ানোর কারণে এসব রাসায়নিক পণ্যের দাম বাড়বে।
এছাড়া দেশে খাদ্য সামগ্রী উৎপাদন বেড়ে যাওয়ায় এসব পণ্যের আমদানিকে নিরুৎসাহিত করতে আমদানি করা কারা চাল ও ভাঙা চালের ওপর ১০ শতাংশ থেকে শুল্ক বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে আমাদনি করা চালের দাম বাড়তে পারে। ভুট্টার আটার ওপর আমদানি শুল্ক ১০ শতাংশ থেক বাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করার প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে ভুট্রা ও গমজাতীয় পণ্যের দাম বাড়তে পারে।

No comments:

Post a Comment